‘পাকিস্তান আমাদের’ বাংলা -উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
‘পাকিস্তান আমাদের’ বাংলা -উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
——- ডাউনলোড লিংক ——
সংস্করণ-১
ডকুমেন্ট লিংকঃ ডকু – পাকিস্তান আমাদের – সংস্করণ ১
পিডিএফ লিংকঃ পিডিএফ – পাকিস্তান আমাদের – সংস্করণ ১
সংস্করণ-২
ডকুমেন্ট লিংকঃ ডকু – পাকিস্তান আমাদের – সংস্করণ ২
পিডিএফ লিংকঃ পিডিএফ – পাকিস্তান আমাদের – সংস্করণ ২
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৪৫৬কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/nAosycNbaGbCPYZ
https://archive.org/download/PakistanAmader3_201906/pakistan%20amader3.pdf
https://www.file-upload.com/9og02lgun2ly
http://www.mediafire.com/file/kc535h25bbrdkt8/pakistan_amader3.pdf/file
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [১৭১কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/ygSsTwEs9Fzpsai
https://archive.org/download/PakistanAmader3_201906/pakistan%20amader3.docx
https://www.file-upload.com/z1jksyo9bp8z
http://www.mediafire.com/file/vggw52sf0z2mlsi/pakistan_amader3.docx/file
======================
بسم الله الرحمن الرحيم
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
الحمد لله رب العامين والصلاة والسلام على رسوله الكريم
সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালার জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর সম্মানিত রাসুলের উপর।
رب اشرح لي صدري ویسّرلي أمري واحلل عقدۃ من لساني یفقھوا قولي
হে আমার পালনকর্তা আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন! এবং আমার কাজ সহজ করে দিন! এবং আমার জিহবা থেকে জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে! (সুরা ত্ব-হাঃ ২৫-২৮)
পাকিস্তানে বসবাসরত আমার প্রাণপ্রিয় মুসলমান ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে খোদাপ্রদত্ত রাষ্ট্র পাকিস্তান। পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি কি? মূলত পাকিস্তান কাদের? কারা এই পাকিস্তানের রক্ষাকারী? তার আজাদি ও নিরাপত্তার জন্য কুরবানি দিচ্ছে কারা? আর কারা সার্থ হাসিলের জন্য পাকিস্তানের ধ্বংস সাধন করে যাচ্ছে?!
কিন্তু এই মূল আলোচনার পূর্বে কোয়েটা হাসপাতালের ট্র্যাজেডির ব্যাপারে কিছু কথা বলতে চাচ্ছি, যেখানে বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ৭০ জন মানুষ মারা গিয়েছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সাধারণ মানুষের অবস্থানের জায়গাসমূহে বিস্ফোরণ ঘটানোর এই অপরাধ যেহেতু এখনো অবধি বন্ধ হয়নি, এই জন্য এই সকল ঘটনা থেকে দায়মুক্তির ঘোষণার সাথে সাথে হামলাকারীদের উদ্দেশ্যসমুহ স্পষ্ট করে দেওয়াও জরুরি।
মুহতারাম ভাইয়েরা!
পাকিস্তানে জুলুম ও ফাসাদের মূল গোঁড়া এখানকার আমেরিকার গোলাম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও খেয়ানতকারি শাসকবর্গ। এই পুরাতন ক্ষতগুলোকে ছেড়ে সাধারণ মুসলমানদের ভীত সন্ত্রস্ত করা এবং তাদের ক্ষতি সাধন করা একটি চূড়ান্ত বর্বর অপরাধ। এটা একটি খতরনাক চক্রান্ত, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে জিহাদ ও মুজাহিদদের বদনাম করা। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান জিহাদের ক্ষতি সাধন করা। এবং এখানে আমেরিকা ও তার গোলামদের দখলদারিত্বকে দীর্ঘস্থায়ী করা। এই ধরণের চক্রান্ত এই পূর্বেও অনেক মুসলিম ভূমিসমূহেও করা হয়েছিল। যেখানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত কিছু অপরাধীকে সাথে নিয়েছে। মুসলমানদেরকে জিহাদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে সাধারণ মানুষের বসবাসের স্থানে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এবং সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। বাস্তবতা হল এই যে জিহাদের বিরুদ্ধে এই ধরণের হত্যাকাণ্ড পূর্বেও কখনো সফল হয়নি। এবং সামনের দিনগুলোতেও আল্লাহ তায়ালা তাদের চক্রান্তসমূহকে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টে দিবেন। তার কারণ হল জিহাদ জারি থাকবে। এটা আল্লাহ তায়ালা ওয়াদা। আর বাতিল হক থেকে পৃথক হয়ে হককে উজ্জ্বল করে দিবে ইনশা আল্লাহ। এখন আমি আমার মূল আলোচনার দিকে যাচ্ছি।
পাকিস্তানে বসবাসকারী আমার প্রিয়তম মুসলমান ভাইয়েরা!
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের বাপ দাদাগণ অনেক কুরবানি দিয়েছেন। লক্ষ লক্ষ মুসলমান শহীদ, অসংখ্য গৃহহীন ও উদ্ধাস্তু হয়েছে। বাচ্চাদেরকে মায়ের গর্ভ থেকে বের করে নেঝায় গাঁথা হয়েছে। বোনদের সম্ভ্রম ও পবিত্রতাকে লুট করা হয়েছে। কিন্তু এই সব কিছু হওয়া সত্ত্বেও প্রতিটি বাচ্চা, বৃদ্ধ ও নওজয়ানের মুখে একটাই ধ্বনি ছিল “পাকিস্তানের উদ্দেশ্য কি? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!” এটা কোন রাজনৈতিক স্লোগান ছিলো না। বরং এটা ছিল একটি জোশ! একটি টার্গেট। একটি আকিদা ও প্রতিষ্ঠিত সত্য বিষয়। মঞ্জিল সুস্পষ্ট ছিল “ইসলামের স্বাধীনতা” এবং “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর বিজয়”। একটি আজম ছিল যে হিন্দুদের শাসন গ্রহণযোগ্য নয়। ইংরেজ কানুনের ক্ষমতা মঞ্জুর নয়। মন্দ কর্ম ও নির্লজ্জতার প্রচার প্রসার বরদাশত করা হবে না। মানুষ মানুষের গোলাম নয়। এক আল্লাহর গোলাম থাকবে। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান কায়েম হবে। সেই মুসলমানদের মাঝে এই চেতনা জাগ্রত ছিল যে, জিন্দেগি শুধুমাত্র খেয়ে-পান করে মজা মারার নাম নয়। স্বার্থপর হয়ে নিজের দুনিয়াবি স্বার্থের ফিকির করা জিন্দেগীর মাকসাদ নয়। বরং এই জিন্দেগি হচ্ছে একটি আমানত ও পরীক্ষা। এবং তার মাকসাদ হচ্ছে দেহ মন সম্পূর্ণ বিলিন করে আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য করা। যদি সব কিছু সহজ হয় কিন্তু শরীয়ত বাস্তবায়ন না হয়, ইসলাম বিজয়ী না হয় বরং মানবসদৃশ শয়তানদের পছন্দনীয় শাসন ব্যবস্থা বিজয় হয়, তাহলে এটা হচ্ছে জাহেলিয়াত, জুলুম ও বরবাদি। উপমহাদেশের মুসলমানদের “পাকিস্তানে উদ্দেশ্য কি? লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এই প্রতিষ্ঠিত সত্য বিষয়টিতে ওই হাজারো উলামাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন দৃষ্টিগোচর হয়, যাদেরকে দিল্লির জামে মসজিদের সামনে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছিল। তাদের অন্তর ও জেহেনে ১৮০৬ খৃষ্টাব্দে প্রদত্ত শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলবি রহিমাহুল্লাহর সেই ফাতাওয়াও অঙ্কিত ছিল, যাতে তিনি হিন্দুস্তানকে দারুল হরব ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন “কুফুরের বিজয়কে শেষ করা এবং শরীয়তের বাস্তবায়ন পর্যন্ত হিন্দুস্তানে জিহাদ ফরজে আইন। আর যে জিহাদে সক্ষম নয়, তার জন্য হিজরত করা আবশ্যক।” এই দাবীর প্রেক্ষিতে ওই মুসলমানদের অন্তরে একটি আশা দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল যে, গৃহহীন ইসলামের এবার একটি ঘর হবে। এবং উপমহাদেশে দারুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত দেখতে পাবে। সাইয়েদ আহমাদ শহীদ রহিমাহুল্লাহর স্থলাভিষিক্ত মুজাহিদিন, শামেলির ময়দানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদের ঝাণ্ডা বুলন্দকারি মাওলানা রশিদ আহমাদ গাঙ্গুহি রহিমাহুল্লাহ, মাওলানা কাসেম নানুতবি রহিমাহুল্লাহ, মাওলানা জাফর থানেশ্বরি রহিমাহুল্লাহ এর উত্তরসূরি উলামায়ে কেরাম পর্যন্ত সবাই পাকিস্তান আন্দোলনকে নিজেদের আন্দোলন মনে করেছিলেন। এবং তার সফলতার জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।
পাকিস্তান সৃষ্টি হল, কিন্তু মুসলমানদের সেই পাকিস্তান কামনা ছিল, যার উদ্দেশ্য হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে ইংরেজদের নির্ধারণ করে যাওয়া এই সেনাবাহিনী ও শাসকবর্গ প্রতিবন্ধক হয়ে রইল। মুসলমানরা জমিনের একটি টুকরো অবশ্য পেয়েছে কিন্তু সাথে সাথে ইংরেজরা নিজেদের প্রতিপালিত শ্রেণীকে এতে চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে। শাসকবর্গ ও সেনাবাহিনীধারী এই শ্রেণীটি ইংরেজদের রেখে যাওয়া শাসন ব্যবস্থায় বাস্তবায়ন করেছে। অতঃপর এই শাসন ব্যবস্থাকে তারা পাকিস্তান নামে ডাকতে শুরু করেছে। ইতিহাস ও ঘটনাবলী প্রমাণ করে দিয়েছে যে, ভূখণ্ড তো সাধারণ মুসলমানের পাকিস্তান আছে, কিন্তু এতে চাপিয়ে দেয়া শাসন ব্যবস্থা প্রকৃত পাকিস্তানের জানাযার লাশ সদৃশ। এই শ্রেণীটি শুধু প্রকৃত পাকিস্তানের অর্জনের পথই বন্ধ করে দেয়নি। বরং ওই প্রকৃত পাকিস্তানের চিত্র “পাকিস্তানের চিত্রকে” অন্তর ও জেহেন থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা চালু রেখেছে। এই আত্মসাতকারী শ্রেণী বারবার বাধ্য করছে যে, জুলুম ও জবরদখলে ভরা কুফুরি শাসন ব্যবস্থাকেই পাকিস্তান মেনে নেওয়া হোক। আমেরিকার চারণভূমিকে নিজেদের আসল পাকিস্তান মনে কর! কানুন ও সভ্যতা, তালিম ও শিষ্টাচার, সেনাবাহিনী এবং পুলিশ… পুরো শাসন ব্যবস্থা ইসলামী নয় বরং অনৈসলামিক কিন্তু এটাকেই মূল ইসলাম মনে কর! এবং কুফুরি বলবে না। জুলুমকে ন্যায়পরায়নতা, মিথ্যাকে সত্য ও মরীচিকাকে গন্তব্য মনে কর! অতঃপর সেই মরীচিকার জন্য গান গাও! কালো অন্ধকারকে আলোকিত বলে দাও! … ভিজাকে শুকনো ও শুকনোকে ভিজা বলে দাও!
ইংরেজেদের গঠন করা “রয়েল ইন্ডিয়ান আর্মি” তো “পাকিস্তানী আর্মির” রুপ ধারণ করলো, কিন্তু মাকসাদ ও প্রতিষ্ঠিত সত্য, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাদীক্ষা এবং লক্ষ্য ও কার্যক্রম সেই কুফুরি ইংরেজদের দান করাটাই রয়ে গেল। দেয়ালে দেয়ালে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর আর্ট করা হল, গাড়িতে গাড়িতে তাওহীদের কালিমার পেইন্ট করা হল, বিভিন্ন দুয়া দুরুদে সজ্জিত রঙ বেরঙের ব্যাজ ঝুলানো হল, কিন্তু নতুন বোতলে পুরাতন মদই রয়ে গেল। ৭০ বছর চলে গেল, কিন্তু টানাপড়েন ও দুশ্চিন্তা এখনো রয়ে গেছে। ইসলামের উপর কুফুরের হামলা থামেনি। কিন্তু আহলে ইসলামও হাতিয়ার ফেলে দেয়নি। এই ৭০ বছরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর প্রকৃত পাকিস্তান কামনাকারী মুসলিম জনসাধারণ ও পাকিস্তানকে মৃত্যুর ঘুমে নিমগ্নকারী শাসকবর্গের মাঝে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। উলামায়ে কেরাম, মুসলিম জনসাধারণ ও মুজাহিদিনে কেরাম নিজেদের প্রকৃত পাকিস্তানের হেফাজতের জন্য কুরবানি দিয়ে চলছেন, অথচ আমাদের উপর চেপে থাকা এই শাসকবর্গ ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা ও তাকে অন্তর থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করার কাজে পারিশ্রমিক নিচ্ছে।
এই শ্রেণীটি কখনো গণতন্ত্র, পার্লামেন্ট, চুক্তিসমুহ ও সংবিধানের ইসলামী ধারাসমূহের ধোঁকাবাজি ও চক্রান্তের মাধ্যমে কখনো নির্দেশদাতা হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করে কুফরকে ইসলাম প্রমাণিত করতে থাকে। অগ্নি ও বারুদ বর্ষণ করে “পাকিস্তানের উদ্দেশ্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর স্মরণ উজ্জীবিতকারীদের খামুশ করতে থাকে।… ডলারও বণ্টন করা হয়। জেট বিমান ও ড্রোনও পরীক্ষা করা হয়। আমেরিকান, লিবারেল ও মডারেট ইসলামের প্রচলন ঘটানো চালু আছে। মিডিয়া নামক হাতিয়ারের মাধ্যমে কুফর ও ইলহাদ (ধর্মহীনতা), নির্লজ্জতা ও বদদ্বীনির বোমাও খুব বর্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু এতো কিছু সত্ত্বেও ইসলামের আত্মমর্যাদা দ্বারা উজ্জীবিত উলামায়ে কেরাম ও জনসাধারণ অন্তরে সেই প্রকৃত পাকিস্তানের ভালোবাসা সামলে রাখছেন, যার উদ্দেশ্য ছিল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, এবং নিজেদের সেই পাকিস্তানের আজাদির জন্য ধারাবাহিকভাবে কুরবানির ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে চলছেন।
মুহতারাম ভাই ও বোনেরা!
পাকিস্তানের উদ্দেশ্য কালও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ছিল, আজও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ রয়েছে। এই কারণে যে, প্রকৃত পাকিস্তান হচ্ছে ইসলাম। ইসলামী সামাজিকতা, ইসলামী আচার-ব্যবহারই আমাদের পাকিস্তান। ইসলামী শিক্ষাদীক্ষা, ইসলামী শিষ্টাচারই আমাদের পাকিস্তান। তাগুতকে অস্বীকার করা, কুফর থেকে মুক্ত ঘোষণা করা এবং মজলুমদের সাহায্য করা হচ্ছে আমাদের পাকিস্তান। জাতীয়তাবাদের ভূত ভেঙ্গে ফেলা, “এক উম্মাহ এক দেহ” এর চিত্র হচ্ছে প্রকৃত পাকিস্তান, আমল বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার তথা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বাঁধা প্রদান, ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ হচ্ছে প্রকৃত পাকিস্তান। দ্বি-জাতিতত্ত্বের দৃষ্টিভঙ্গি “আল্লাহর দল হয়ে শয়তানের দলের বিরুদ্ধে কাতারবদ্ধ হওয়া” হচ্ছে আমাদের পাকিস্তান। উলামায়ে কেরাম, দ্বীনের তালেবে ইলমগন, মুজাহিদিনে কেরাম ও ঈমানী আত্মসম্ভ্রমবোধের দ্বারা উজ্জীবিত জনসাধারণ হচ্ছে প্রকৃত পাকিস্তান। এই প্রকৃত পাকিস্তান হচ্ছে একটি মহান নেয়ামত। এই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর পাকিস্তানের সাথে আমাদের ভালোবাসা রয়েছে। এই লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর নেয়ামতটাই ৭০ বছর ধরে ভিতরের ও বাহিরের শত্রুদের আক্রমণের শিকারে রয়েছে। হামলাকারীরা হচ্ছে এখানকার জবরদখলকারী সেনাবাহিনী , শাসকবর্গ ও তাদের বহিরাগত মনিবেরা।
এই পাকিস্তান নামক নেয়ামতের হেফাজত করা, পরিপূর্ণতা দান ও প্রশস্ত করণের জিম্মাদারিটাই আমাদেরকে নিজেদের পাকিস্তানের উপর কবজাকারী আমেরিকার গোলাম জেনারেল এবং তাদের কাফের মনিবদের বিরুদ্ধে জিহাদে দাড় করিয়ে দিচ্ছে। আমাদের জান ও মালের কোন পরোয়া নেই, ক্যারিয়ার ও ব্যবসা বাণিজ্যের কোন পরোয়া নেই। গৃহচ্যুত হওয়া ও হিজরত আমরা কবুল করলাম, আমাদের শরীর, জান গুলি ও বারুদ দ্বারা ঝাঁজরা হওয়াটা আমরা গ্রহণ করলাম, আমাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হোক, সেটাতেও আমরা আনন্দিত। কিন্তু …… পাকিস্তানের উদ্দেশ্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ–ই থাকবে। এখানে আমেরিকার গোলামী চলবে না। সুদি কানুন চলবে না। ইসলামী আইনের নামে ইসলামের সাথে মশকরা চলবে না। চোর ও লুটেরা রাজনীতিবিদদের রাজত্ব চলবে না। জুলুম ও জবর দখলের উপর প্রতিষ্ঠিত এই কুফুরি শাসন ব্যবস্থা বলবে না। ইসলাম বিজয়ী হবে। আল্লাহর জমিনে আল্লাহরই রাজত্ব চলবে। এবং এই পাকিস্তানই প্রকৃত পাকিস্তান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। কাল “পাকিস্তানের উদ্দেশ্য লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর ধ্বনি দিয়ে আমাদের পূর্বসূরিগণ ত্যাগ ও কুরবানিসমূহ পেশ করেছিলেন। সুতরাং আজ পূর্বসূরিদের সেই ত্যাগ ও কুরবানিসমূহ রক্ষা করতে এবং তাদের স্বপ্নসমুহ বাস্তবায়ন করতে মুজাহিদগণ নিজেদের শির লুটিয়ে দিয়েছেন। নওজোয়ানদের এই ক্ষতবিক্ষত লাশ, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিবর্গ, দেশব্যাপী দ্বীনদারদের গ্রেফতারী, একের পর এক অপারেশন, শাহাদাতসমূহ, ফাঁসি ও গৃহহীন হওয়া সেই পাকিস্তান আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতা। অন্তরের চক্ষু দিয়ে দেখুন! উলামা ও মুজাহিদদের পোড়া লাশগুলো, ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদসমুহ ও তাতে জলন্ত কুরআনের পাতাসমূহ এবং নিপীড়নশালায় বন্দী সৎ নওজোয়ানদের আহ আহ চিৎকার পাকিস্তানে আজাদি আন্দোলনের নতুনভাবে শুরু করার আহবান করে যাচ্ছে।
আমাদের মাথার মুকুট উলামায়ে কেরাম ও তালেবে ইলমদের নিকট কিছু জিজ্ঞাসা!
শরীয়তের খাতিরে শির কর্তনকারী এই মুজাহিদিন ও আহলে দ্বীন মাওলানা শিব্বির আহমাদ উসমানী রহিমাহুল্লাহর স্থলাভিষিক্ত নাকি এই মুজাহিদদের হত্যাকারী আমেরিকার এই গোলাম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী?
শহীদ আব্দুর রশিদ গাজী রহিমাহুল্লাহ ও মুফতি নিজামুদ্দিন শামজায়ি রহিমাহুল্লাহ কি মাল্টার বন্দী মাওলানা মাহমুদুল হাসান রহঃ এর উত্তরাধিকারী নাকি উলামা ও আহলে দ্বীনের সাথে খেয়ানতকারি এই শাসকবর্গ ও সেনাবাহিনী?
জি হ্যা! পাকিস্তান আন্দোলনে শামিল উলামাদের স্বপ্নের বাস্তবায়নের উত্তরাধিকারী ধর্মত্যাগী জ্ঞানপাপীরা নয়, নির্লজ্জতা ও উলঙ্গপনার নাপাকির বিস্তারকারি মিডিয়ার এটা মনোক্ষেত্র নয় বরং সেই মুজাহিদিন হচ্ছে তাঁদের উত্তরাধিকারী। যারা উলামায়ে কেরামকে আসল মাকাম ও স্থান স্মরণ করিয়ে দেওয়াকে নিজেদের জিহাদের মাকসাদ মনে করে। নিঃসন্দেহে কুফুরি শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে হামলাকারী আহলে দ্বীনই আল্লামা ইকবালের বাজপাখি। জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রের পূজাকারী এই রাজনীতিবিদরা নয়।
পাকিস্তানী মুসলমান ভাইয়েরা!
জাতীয়তাবাদ ও ভাষার ভূত পায়ের তলে পিশেই তবে পাকিস্তান অস্তিত্বে এসেছে। যে সকল মুসলমান পাকিস্তানে হিজরত করেছেন, তাঁরা দেশের ভালোবাসাকে ইসলামের উপর প্রাধান্য দেন নি। এবং এই নতুন খোদার মধ্যে সবচে’ বড় হচ্ছে জাতীয়তাবাদ” এর ঘোষণা দিয়ে জাতীয়তাবাদের ভূতের উপরে জুতা মেরেছেন। কিন্তু আজ পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত এই চেপে বসা জালেম শ্রেণী কুফুরি শাসন ব্যবস্থাকে বাচানোর জন্য জাতীয়তাবাদ সামনে নিয়ে আসছে। সেই পাকিস্তানকে এই ভূত বানাচ্ছে, যার ভিত্তিই হচ্ছে জাতীয়তাবাদকে অস্বীকার করা ও লিল্লাহিয়তকে স্বীকার করা। আমরা আল্লাহ-র ইবাদতকারী। মুসলমানরা আল্লাহ-র ইবাদতকারী হয়, দেশপুজারি নয়। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী রবের পক্ষ থেকে এটা ফরজ যে, এই দেশ এবং এই জমিনকে আল্লাহ তায়ালার দুশমনদের থেকে আজাদি এনে দেওয়া হবে। তাই আমরা সুউচ্চ কণ্ঠে বলছি যে, এটা আজাদি ও স্বাধীনতার যুদ্ধ। নিজেদের ঘর এই পাকিস্তানকে স্বাধীন করার যুদ্ধ। শুধু পাকিস্তানই নয় কাশ্মির ও হিন্দুস্তান স্বাধীন করার যুদ্ধ।
আর এটা শুধু আমাদের যুদ্ধ নয়, আমাদের পুরো উপমহাদেশের মুসলমানদের যুদ্ধ। কেননা পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আর প্রত্যকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ উচ্চারণকারী পাকিস্তানী। জি হ্যা! পাকিস্তানের উদ্দেশ্য হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর খাতিরে লড়াইকারী প্রত্যেক মুজাহিদ পাকিস্তানী। হুজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের জিহাদ মক্কার বিরুদ্ধে ছিলোনা। মক্কাকে ধ্বংসকারী ও তাকে কুফুর ও জুলুমের মাঝে নিক্ষেপকারীদের বিরুদ্ধে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম লড়াই করেছিলেন। মক্কাকে কুফর ও শিরকের জিন্দেগি থেকে পবিত্র করা ও তাকে তাওহীদের নূর দ্বারা আলোকিত করার জন্যই বদর ও উহুদ সংগঠিত হয়েছিল। এই দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা রয়েছে। এখানের ঘরবাড়ি ও অলিগলির সাথে আমাদের ভালোবাসা রয়েছে। এই ভালোবাসার দাবী হল সময়ের আবু জাহেল ও তাদের কর্মচারীদের থেকে নিজেদের এই পাকিস্তানকে আজাদ করা হবে। এই জন্য পাকিস্তানের উপর কবজাকারী শরীয়তের দুশমনদের চোখে আমরা মুজাহিদরা চোখ রেখে বলছি যে, আমরা পাকিস্তানী এবং পাকিস্তান আমাদের।
আমার পাকিস্তানের প্রিয়তম মুসলমান ভাইয়েরা!
ফ্রান্সের সেনাপতি নেপোলিয়ন মিসরের মুসলমানদের উপর আগ্রাসন চালিয়ে রক্তের নদী প্রবাহিত করেছিল। বিজয়ের পর নেপোলিয়ন মুসলমানদের সমাবেশের সামনে পাগড়ী ও চোগা পড়ে দাঁড়িয়েছিল। এবং বক্তব্য বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম দ্বারা শুরু করে বলে “আমরা আপনাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহায্যকারী। আপনারা আমাদের সত্যায়ন করুন আর না করুন কিন্তু বাস্তবতা এই যে আমরা ইসলামকে ভালোবাসি। আমরা আপনাদের মিত্র। মিত্রতার এই হাত ফিরিয়ে দিবেন না।” নেপোলিয়নের সেই কথার কারণ তার ইসলামের সাথে বন্ধুত্ব ও মুসলমানের সাথে ভালোবাসা ও সহানুভূতি ছিল না। বরং মিসরের মুসলমানদের তার অনুসারী বানানোর জন্য এই ভেল্কি দেখাচ্ছিল।
পাকিস্তানের মুসলমান ভাইয়েরা!
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ইসলামের তারানাও গায়। এবং শাসকশ্রেণী সংবিধানে আল্লাহর আইন প্রণয়নের ক্ষমতাকে স্বীকার করার অবকাশও রেখেছে। এই শ্রেণী কতটা ইসলামী! মুসলমানদের সাথে তাদের কত ভালোবাসা? লাল মসজিদ থেকে উপজাতীয় এলাকা ও সোয়াত অবধি শরীয়ত কামনাকারীদের কবরসমুহ এর সাক্ষ্য দিচ্ছে। সতীসাধ্বী পুত ও পবিত্রা বোন ও সচ্চরিত্র জোয়ানদের দ্বারা ভর্তি নিপীড়নশালাসমূহ এই সেনাবাহিনীর ইসলামী দাবীর একটি জলজ্যান্ত আয়না। এটা কেমন ইসলামী রাষ্ট্র যে, আল্লাহ তায়ালার সুস্পষ্ট বিধিবিধানসমূহ বাস্তবায়নের জন্য আধিক্যের চাওয়া ও ইচ্ছার প্রতি মুখাপেক্ষী। আল্লাহ তায়ালার সাথে যুদ্ধের উপর প্রতিষ্ঠিত সুদি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ও স্থায়ী রয়েছে। … কুফর ও ইসলামের মধ্যকার যুদ্ধে কাফেরদের সম্মিলিত ফ্রন্টের অংশ হওয়ার ক্ষেত্রে যাদের সেনাবাহিনী ও সরকার প্রকাশ্য গর্ব করে ও অর্থ কামাই করে। … আমর বিল মা’রুফ ওয়া নাহি আনিল মুনকার তথা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ এবং জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ যেখানে অত্যন্ত কঠিন অপরাধ, কুফর ও ইলহাদ, নির্লজ্জতা ও মন্দ কর্মকাণ্ডের প্রচলন ঘটানো ও প্রসার করা সেখানে সরকার নিজেদের জিম্মাদারি মনে করে।
এই দেশে ইসলাম বাস্তবায়নের পথে কোন একটি কার্যকর পদক্ষেপও এখানের ধর্মত্যাগী সেক্যুলার ও লিবারেল শ্রেণীর সহ্য হয়না। কিন্তু এখানের আইন এমন আশ্চর্যজনক ইসলামী যে, তা ইসলামী পছন্দকারিদের তুলনায় ইসলামের দুশমনদের অধিক প্রিয়। ইসলামের গোঁড়া কর্তনকারীরাই এই কথিত “ইসলামী” সংবিধানের কাগজকে উন্নতি ও সচ্চলতা বলে যাচ্ছে। পাকিস্তানের উপর জবর দখলকারী এই শ্রেণী চাই লক্ষ বার এই নাপাককে পবিত্র বলুক! জাদুগর মিডিয়া এই কুফরকে লক্ষ বার ইসলাম বলুক! এই নাপাকি ও মূর্খতা কখনোই ইসলাম হতে পারে না। ইসলাম ও এই সুস্পষ্ট জাহালত তথা মূর্খতার মাঝে দিন ও রাতের ব্যবধান রয়েছে।
قُلْ لَا يَسْتَوِي الْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ’’
বলে দিন নাপাক ও পাক কখনো এক হতে পারে না।
وَلَوْ أَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِيثِ’’
যদিও নাপাকির আধিক্য তোমাদের আশ্চর্যান্বিত করে।
فَاتَّقُوا اللَّهَ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ’’
সুতরাং হে জ্ঞানীরা! আল্লাহকে ভয় কর!
‘‘ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ’’
যাতে তোমরা সফলকাম হও! (সুরা মায়েদাঃ ১০০)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
قَدْ تَرَكْتُكُمْ عَلَى الْبَيْضَاءِ
আমি তোমাদেরকে উজ্জ্বল হেদায়াতের উপর রেখে যাচ্ছি।
‘‘ لَيْلُهَا كَنَهَارِهَا
তার রাতও দিনের মত উজ্জ্বল
لَا يَزِيغُ عَنْهَا بَعْدِي إِلَّا هَالِكٌ
আমার পর শুধুমাত্র সেই গোমরা হবে, যার ধ্বংস অবধারিত।
وَمَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا
আর তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে, তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে।
فَعَلَيْكُمْ بِمَا عَرَفْتُمْ مِنْ سُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ
সুতরাং তোমরা আমার ও আমার হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিনের যে সুন্নাত জান, তা আঁকড়ে ধরে থাক!
পাকিস্তানের আমার প্রিয়তম মুসলমান ভাইয়েরা!
ইসলামী রাষ্ট্রের এই সূর পাকিস্তানের মুসলমানদের ইসলাম দেওয়ার জন্য গাওয়া হচ্ছে না। বরং ইসলাম প্রতিষ্ঠার রাস্তাকে প্রতিহত করাই তাদের উদ্দেশ্য। কয়েকটি নিষ্প্রাণ ইসলামী ধারাকে সংবিধানে রেখে এরা মুসলমানদেরকে কুফুরি শাসন ব্যবস্থার সামনে অনুগত করতে চাচ্ছে। এই ইসলাম বাস্তবায়নের চুক্তিসমুহ, ইসলামী ধারাসমুহ, শরই পরিভাষাসমূহ নেপোলিয়নের সেই পাগড়ী ও চোগার মতই, যার আড়ালে ইসলামী তাহজিব ও শিষ্টাচারই তাদের প্রথম টার্গেট। ইসলামের খোসাসদৃশ সেই আড়াল, যার পশ্চাতে স্বার্থের পূজারী জেনারেল এবং এই খেয়ানতকারী শাসকবর্গ নিজেদের ইসলামের প্রতি শত্রুতা গোপন করে রেখেছে। এই মুখোশ এই অপরাধী লুটেরাদের কোন ভালো গুণ নয় যে, আমরা তাদের আজমত, ভক্তি ও ভালবাসা আমাদের অন্তরে জিইয়ে রাখবো। বরং এটা আল্লাহ তায়ালার দ্বীনের সাথে মশকরা করার মহা অপরাধ।
হিন্দুদের মন্দিরে আল্লাহর বিধান দানের ক্ষমতা স্বীকার করার কথা লিখে দিলে সেটা মসজিদ হয়ে যায়না। কেমন যেন তারা মদের বোতলে জমজমের লেবেল লাগিয়ে দিচ্ছে। এবং সুদকে ব্যবসা বলে দিচ্ছে, আমেরিকার স্বার্থ রক্ষায় আত্মহুতি প্রদানকারীকে শহীদ বলছে, অথচ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর জন্য জান উৎসর্গকারীদেরকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি আখ্যায়িত করছে।…
الأشیاء تعرف بالحقائق لا بالأسماء
বস্তুসমুহ তার হাকিকত তথা বাস্তবতা থেকে জানা যায়, শুধু নাম দ্বারা নয়, ইনশা আল্লাহ পাকিস্তানের মুসলমানদেরকে আর বেশি ধোঁকা দিতে পারবে না।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
“سَيَأْتِي عَلَى النَّاسِ سَنَوَاتٌ خَدَّاعَاتُ
লোকদের উপর অতিদ্রুতই ধোঁকা ও প্রতারনার যুগ আসছে।
يُصَدَّقُ فِيهَا الْكَاذِبُ ’
মিথ্যাবাদিদের সত্যবাদী বলা হবে।
، وَيُكَذَّبُ فِيهَا الصَّادِقُ،
এবং সত্যবাদিদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করা হবে।
وَيُؤْتَمَنُ فِيهَا الْخَائِنُ، وَيُخَوَّنُ فِيهَا الْأَمِينُ،
খেয়ানতকারিকে আমানতদার উপাধি দেওয়া হবে আর আমানতদারকে খেয়ানতকারি হিসেবে প্রসিদ্ধ করে দেওয়া হবে।
، وَيَنْطِقُ فِيهَا الرُّوَيْبِضَةُ
সেই জুগে রুয়াইবিদ্বাহ কথা বলবে।
قِيلَ: وَمَا الرُّوَيْبِضَةُ؟
জিজ্ঞাসা করা হল রুয়াইবিদ্বাহ কি?
ইরশাদ করলেন- বেকুফ ব্যক্তি, যে সাধারণদের বিষয়ে কথা বলবে।
আজ বাস্তবেই ধোঁকা ও প্রতারনার যুগ চলছে। অত্যন্ত দাপটের সাথে পাকিস্তানের কল্যাণকামীদেরকে অকল্যাণকামী এবং তাদের দুশমন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এবং তাদের প্রকাশ্য শত্রুদেরকে তাদের দোস্ত ও সহানুভূতিশীল হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের মুসলমান ভাইদের প্রতি আবেদন করছি যে, ঈমানের নূর দ্বারা হককে চিনুন! আপনারা সত্যবাদীদেরকে অবশ্যই চিনতে পারবেন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর হাকিকি বা প্রকৃত পাকিস্তান অন্তর ও জেহেনে তাজা রাখুন! পাকিস্তানের কল্যাণকামী ও অকল্যাণকামীদের চিনা সহজ হয়ে যাবে। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ধারণকারী প্রকৃত পাকিস্তানের শত্রুদের সাথে ঘৃণা ও শত্রুতা পোষণ করা ফরজ। নিজেদের অন্তরকে যাচাই করুন! কথা ও কাজের যাচাই বাছাই করা জরুরী। আজ আসল ও নকল, হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য করার পরীক্ষা চলছে। আবারো বাতিলের বিরুদ্ধে হকের সমর্থন ও সাহায্যে দণ্ডায়মান হওয়াই সফলতা।
۔ اللّٰھمّ أرنا الحقّ حقّا وارزقنا اتباعہ
হে আল্লাহ! আমাদেরকে হককে হক হিসেবে দেখান! এবং হকের অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন!
وأرنا الباطل باطلا وارزقنا اجتنابہ
হে আল্লাহ! আমাদেরকে বাতিলকে বাতিল হিসেবে দেখান! এবং বাতিল থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করেন!
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين
وصلی اللہ تعالی علی خیر خلقہ محمد وآلہ وصحبہ أجمعین
যুলকাদাহ, ১৪৩৭ হিজরি।