আরবফাতাওয়া-ফারায়েজবই ও রিসালাহশাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসী হাফিযাহুল্লাহশামহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

মুরতাদ শাসকের জন্য দুয়া করে, এমন ব্যক্তির পিছনে সালাত -শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসি!

প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহ্ মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ

শ্রদ্ধেয় শায়খ,

মুরতাদ (ইসলামচ্যুত) শাসকের জন্য দুয়া করে এমন ইমামের পিছনে, সালাত উল জুমুয়াহ (জুমার সালাত) এবং অন্যান্য সালাত আদায়ের ব্যাপারে হুকুম (বিধান) কি হবে? আমি এই ব্যাপারে অনেক মতবাদ শুনেছি ।
এবং আমি কোথায় সালাত আদায় করব যদি বেশিরভাগ ইমাম এবং খতিবদের অবস্থাই এমন হয় ?

জাজাকুমুল্লাহু খাইরান

উত্তরঃ

বিসমিল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া সালাতু ওয়া সালামু আলা রাসূলিল্লাহ

প্রিয় ভাই,

আসসালামু আলাইকুম

সালাত আল জামাহ (জামাতে সালাত) ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই যদি না তার ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত হন যে সে কুফরিতে লিপ্ত যা একজন ব্যক্তিকে মিল্লাত (ইসলাম) থেকে বের করে দেয় । আর যার ব্যাপার এমন নয়, সে যদি গুনাহ অথবা বিদআতে অথবা ভণ্ডামিতে লিপ্ত ব্যক্তিদের মত হয়, সেক্ষেত্রে একে অজুহাত দেখিয়ে সালাত আল জামাহ (জামাতে সালাত) পরিত্যাগ করার অনুমতি নেই ।

আর যদি খতিব, মুরতাদ শাসকের হেদায়াতের জন্য অথবা কুরআন এবং সুন্নাহ অথবা যা আল্লাহ্* ভালবাসেন তা দ্বারা শাসনের তাওফিকের জন্য দুয়া করে, এবং সেই খতিব যদি তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে অথবা যা দেশ, জনগণ এবং এরকম বিষয়ের জন্য ভালো তা নিয়ে , এমন সব দুয়া যা তাগুত অথবা মানব রচিত কুফর আইনকে সহায়তার মধ্যে পড়ে না অথবা মুজাহিদীনদের বিপক্ষে সহায়তার মধ্যে পড়ে না, এরকম সব কিছুই বিদআত যা আগের শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের মধ্যে (সালাফদের সময়) উপস্থিত ছিল না । এবং উলামারা মিম্বারে দাড়িয়ে মুসলিম শাসক যিনি আল্লাহ্*র শরীয়া দ্বারা বিচার করেন তাঁর জন্য দুয়া করাকে নব আবিষ্কৃত বিদআতগুলোর একটি বলে গণ্য করেন । তাহলে তাঁরা বাদে কাফির মুরতাদ শাসকদের ব্যাপারে দুয়া কি হতে পারে ?

যাহোক, এতে সেসমস্ত ইমামের পিছনে জামাতে সালাত নিষিদ্ধ হয় না যারা এরকম দুয়া করে। এটি তাগুত এবং তাগুতের শিরককে সহায়তার পর্যায়ে পড়ে না, যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

জামাতে সালাত ছেড়ে দেওয়ার জন্য এমন বিদআত কারণ হিসাবে ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই যা কুফরের পর্যায়ে পৌঁছে না।

আপনার কাছে স্পষ্ট দলীল না আসা পর্যন্ত (এই ব্যাপারে যে, ইমাম অথবা খতিব তাগুতের আওলিয়া(মিত্র) অথবা তাদের সাহায্যকারী) নিয়ম এটাই থাকবে। তবে আপনার কাছে স্পষ্ট দলীল চলে আসার পর এমন ব্যাক্তির পিছনে সালাত আদায় করা বৈধ নয় কারণ তখন সে আর মুসলিমদের মধ্যে গণ্য হয় না (হোক ভালো মুসলিম অথবা খারাপ)। যদি তারা আহলুস সুন্নাহ এর কথা বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেও যে, সালাত ভালো অথবা খারাপ যেকোনো মুসলমানের পিছনে পড়া যায়, তবুও এমন ব্যাক্তির পিছনে সালাত আদায় বৈধ নয়।

আর যেমনি হোক, আমি অন্যান্য জায়গায়ও এই রকমেরই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি যেমন, জেলে থাকাকালীন কিছু প্রশ্নের উত্তর এবং “মসজিদ আল দিরার” এবং তাগুত এবং তাদের প্রতিনিধিদের(সহকারীদের) আওলিয়াদের পিছনে সালাতের আদায়ের প্রসঙ্গে বিধান” নামক একটি রিসালাহ লিখেছি।

আর আল্লাহ্* এর প্রচার সহজ করে দিয়েছেন।

ওয়া সালাম ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − four =

Back to top button