প্রবন্ধ-নিবন্ধ

পিতা-মাতাকে কষ্ট দেয়া কি ইসলাম সমর্থন করে?

প্রশ্নঃ‬ সম্প্রতি টিভি মিডিয়াগুলোতে জঙ্গীদের নিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে। সেখানে দেখানো হচ্ছে মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে ছেলে জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে… বাস্তবতাও তাই।

এভাবে বাবা-মায়ের মনে কষ্ট দেয়া কি ইসলাম সমর্থন করে? যেখানে আমরা জানি মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত…

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)

‪#‎উত্তরঃ‬

শুরুতেই দুটি বিষয় পরিষ্কার করে নিচ্ছি। কেননা, এই পেজের গ্রহণযোগ্যতা নস্যাৎ করতে মিথ্যাবাদী মিডিয়া সারাক্ষণ

‪#‎প্রথমত‬, আই এস নামক বিভ্রান্ত গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য যুবক ভাইদের বাড়িছাড়া হওয়া আমরা সমর্থন করিনা, যেমনটা সমর্থন করিনা অন্য কোনো বিদ’আতি দলে যোগ দেয়ার জন্য গৃহত্যাগ করা।
তাই এই পোস্টের বক্তব্য খারেজিপন্থী IS আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যবহার করে তার দায়ভার আমি নিব না। ওয়াল্লাহু মুস্তা’আন।

এখানে শুধুমাত্র আল্লাহ্‌ তা’আলার রাস্তায় কুফরের ইমামদের বিরুদ্ধে, মুসলিমদের রক্ত-সম্মান রক্ষার্থে আপোষহীন জিহাদে লিপ্ত হতে হিজরতকারী ভাইদের স্বপক্ষে বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে।

‪#‎দ্বিতীয়ত‬, পিতামাতার প্রতি হাক্ক আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শৈথিল্যপরায়ণতার প্রতি কাউকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে না (আল্লাহ্‌ তা’আলার কাছে আশ্রয় চাই তা থেকে)।

মুসলিম হিসেবে আমাদের অবস্থান শুধু মুজাহিদ হওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং আমরা কারো সন্তান, কারো ভাই, কারো স্বামী কিংবা কারো পিতা… আমরা জিহাদ যেমন করি আল্লাহ্‌ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য এবং তা আল্লাহ্‌ তা’আলার হুকুম জেনেই।

তেমনি পিতা-মাতা ও স্ত্রী-সন্তানের প্রতিও আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব আদায়ে সচেষ্ট থাকবো আল্লাহ্‌ তা’আলার হুকুমের কারণেই।

তাই সকলকে আল্লাহ’র রাসুল (সা) এর হাদিস মনে করিয়ে দিচ্ছি –

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ الله عنهما، عَن النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «كُلُّكُم رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ: وَالأمِيرُ رَاعٍ، والرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أهْلِ بَيتِهِ، وَالمَرْأةُ رَاعِيةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجها وَوَلَدهِ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকেই অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে।

একজন পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামী ও সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। অতএব প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’
[বুখারি ৮৯৩, মুসলিম ১৮২৯, তিরমিযি ১৭০৫, আবু দাউদ ২৯২৮]

আল্লাহ্‌ তা’আলা আমাদেরকে আমাদের পিতা-মাতার হাক্ক যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

‪#‎অতঃপর‬,

“পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি ‪#‎তাদের_কথা_মানবে_না‬ এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহাবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে।“ [সুরা লুকমান: ১৫]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহর অবাধ্যতায় মানুষের আনুগত্য করা যাবে না।’’
(মুসনাদে আহমাদ, হাকেম, সহিহ আল-জামে : ৭৫২০)

উপরের আয়াত এবং হাদিস থেকে প্রমাণিত, শরিয়ার স্বতঃসিদ্ধ নীতি হচ্ছে, “স্রস্টার অবাধ্যতায় সৃষ্টির আনুগত্য নেই।“
.
.
অর্থাৎ, পিতা-মাতা যদি এমন আদেশ করে যা আল্লাহ্‌ তা’আলার হুকুমের বিপরীত (যেমন – দাড়ি কাটতে বলা, পর্দা না করতে বলা, মদ খেতে বলা, মানুষকে রব্ব হিসেবে গ্রহণ করতে বলা), তাহলে সে আদেশ মান্য করা বৈধ নয়… এমন আদেশ করা ব্যক্তির ঈমানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ তা’আলার হুকুমের বিপরীত হুকুম করা ইবাদাতের ক্ষেত্রে শিরক বলে গণ্য হবে। (পড়ুন, ঈমান ও আকিদা, আশরাফ আলি থানভি (রহ))
.
এছাড়াও, যখন উম্মতের মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি হচ্ছে, শিশুদের গণহারে হত্যা করা হচ্ছে, আল্লাহ্‌ তা’আলার বিধি-বিধানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে,
.
কুর’আনের পরিভাষা (যেমন- হুর, জান্নাত-জাহান্নাম, তাগুত) নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে,
আল্লাহ’র রাসুল (সা) কে অবমাননা করা হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে জোরপূর্বক খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে,
.
তখন, আখিরাতপ্রত্যাশী ব্যক্তি ঘরে বসে থাকতে পারে না। এটাই ঈমানের দাবী…
.
.
এক্ষেত্রে যদি সহিহ বুঝের অভাবে কোনো বাবা-মা সন্তানকে এই ফরজ পালনে বাধা দেয় তবে সন্তানের জন্য বাবা-মার অবাধ্য হওয়া জরুরী।
.
.
এবং, অনেকে মনে করতে পারেন –
(যেমন, কানাডায় বসে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ রোধে সচেষ্ট এক শাহবাগি কর্তৃক তৈরি একটি ভিডিওতে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে যেন, বর্তমান অবস্থা বিগত ১৪০০ বছরে ইসলামী ইতিহাস কখনোই প্রত্যক্ষ করেনি)-

বাবা-মাকে কষ্ট দিয়ে আল্লাহ’র দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত হওয়া ইসলামের ইতিহাসে বিরল…

‪#‎তাদের_জ্ঞাতার্থে‬,

তাগুত-মুরতাদদের আগ্রাসন ও উলামায়ে কেরামের নিরবতার দরুন, কুফরভিত্তিক সমাজে বসবাস করতে আমাদের অনেক মুসলিম যুবক ভাইদের পিতা-মাতারা বাহ্যিকভাবে মুসলিম হলেও- দুঃখজনকভাবে তাদের আচরণ হচ্ছে সালমান ফারসি (রাদি)’র অগ্নিপূজারী পিতা এবং জান্নাতি সাহাবি সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা)’র মায়ের মত।

সংক্ষেপে আপনাদের জন্য তা তুলে ধরা হচ্ছে,

পিতার_অবাধ্যতাঃ
——————

সালমান ফারসি (রা)’র পিতা ছিলেন পারস্যের অগ্নিউপাসকদের প্রধান পুরোহিত। তাওহিদের প্রতি সালমান ফারসি (রা) এর ভালোবাসা অগ্নিপুজারি পিতার নিকট স্পষ্ট হওয়ার পর-

সালমান ফারসি (রাদি)’র ‪#‎সচেতন‬ পিতা উনাকে ঘরে শেকল দিয়ে আটকে রাখে।

কিন্তু সত্যের প্রতি হজরত সালমান ফারসি (রাদি)’র অদম্য ভালোবাসার দরুন আল্লাহ্‌ তা’আলা হজরত সালমান ফারসি (রাদি) কে সুদূর পারস্য থেকে মদিনায় চলে আসার তাওফিক দান করেন।

পারস্যবাসী যুদ্ধে শত্রুদের প্রতিহত করতে পরিখা খনন করতো। পরবর্তীতে খন্দকের যুদ্ধে সালমান ফারসি (রা)’র মুসলমানদের মিটিয়ে দিতে আসা আগ্রাসী মিত্রবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে পারস্য থেকে শিখে আসা একই কৌশল অবলম্বন করার পরামর্শ দেন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে।

(সুত্রঃ আর-রাহিকুল মাখতুম, মুসনাদে আহমাদ হা/২৩৭৮৮, সিলসিলা আহাদিসিস সহীহাহ হা/৮৯৪)

এছাড়াও, আল্লাহ্‌ তা’আলার দ্বীনের আনুগত্য করতে গিয়ে পিতার অবাধ্য হওয়ার আরেক অনুপম দৃষ্টান্ত আমাদের পিতা ইব্রাহিম (আলাইহিস সালাম)।

উনারাই তো আমাদের আদর্শ !

যদিও কাফির-মুনাফিকরা আমাদের ভাই-বোনদের সামনে পাপাচারী নর্তক-নর্তকীদেরকে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।

মাতার অবাধ্যতাঃ
——————

ইসলামের ইতিহাসে ১৭তম মুসলিম, মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা)’র মাতা শোকে শয্যায় বিছানায় পরে যান… আবু জাহলরা তখন ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করতে সাদ (রা) কে উনার মায়ের দুরবস্থা দেখাতে নিয়ে যান…

সাদ (রা) তখন শয্যাশায়ী মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
“মা! আপনি এ কী করছেন? যদি আপনার একশত প্রাণ হয় আর আমার জন্য একটির পর একটি করে সবগুলো নিঃশেষ করে দিন, তবুও আমি মুহূর্তের জন্য ইসলাম ত্যাগ করব না।
এবার ভেবে দেখুন। ইচ্ছে হলে পানাহার করুন, অন্যথায় বিরত থাকুন।“

(আল্লাহু আকবার!! এটাই তো সেই ঈমান যা আমাদের মাঝে অনুপস্থিত) !!

আল্লাহ্‌ তা’আলার দ্বীনের জন্য জন্মদাত্রী মায়ের সাথে এমন আচরণকে সমর্থন করে আল্লাহ্‌ তা’আলা আয়াত নাজিল করেন,

“আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে ‪#‎তাদের_আনুগত্য_করো_না‬।”
[সুরা আনকাবুত: ৮]

এবং সাদ (রাদি)ই হলেন ইসলামের প্রতিরক্ষায় সর্বপ্রথম তীর নিক্ষেপকারী।

সাদ (রা) নিকটবর্তী হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এই দেখো, আমার মামা; অন্য কেউ এ রকম মামা নিয়ে এসো দেখি।’ (তিরমিজি)।

(ছুয়ারুম মিন হায়াতুস সাহাবা, ৪র্থ খন্ড, দারুন নাফায়েস, লেবানন;
রিজালুন হাওলার রাসুল (সা), ১২৪ পৃষ্ঠা, দারুল জিল, লেবানন)

ইসলামের ইতিহাসে এমন ঘটনা রয়েছে সহস্রাধিক… আগ্রহী ব্যক্তিদের অনর্থক তত্ত্বকথা না ঝেড়ে পড়ালেখা করার আহ্বান রইলো… যা কথার অপচয় রোধ করবে সেই সাথে সময়ও বাঁচবে।
.
.

তবে কিছু জ্ঞানপাপী ‘আলেম’ বর্তমান সময়ে জিহাদের বিধানকে পরোক্ষভাবে রহিত করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলে থাকেন যে পিতা-মাতার অনুমতি ব্যাতিত জিহাদে গমন বৈধ নয়।
এর স্বপক্ষে তারা নিম্নোক্ত দলীল পেশ করে থাকে।

সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে,
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَأْذَنَهُ فِي الجِهَادِ، فَقَالَ: «أَحَيٌّ وَالِدَاكَ؟» ، قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «فَفِيهِمَا فَجَاهِدْ»
“এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে জিহাদে বের হওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তাকে বললেন তোমার পিতামাতা কি বেঁচে আছে? সে বলল, হ্যাঁ। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তবে তাদের নিকট জিহাদ করো।”

অন্য একটি হাদীসে এসেছে

“রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো কোন আমল শ্রেষ্ঠ? তিনি প্রথমে বললেন সময় মতো নামাজ আদায় করা, পরে বললেন পিতা-মাতার সাথে ভাল আচরণ করা তারপর বললেন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।”
(সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)


এই হাদীস দুটির মাধ্যমে অনেকে বিভিন্নরকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে থাকেন এবং সর্বাবস্থায় জিহাদে যাওয়ার জন্য বাবা-মার অনুমতি জরুরী মনে করেন।

সকল মুসলিম আলেম একমত যে, সাধারন অবস্থায় জিহাদ ফরজে কেফায়া কিন্তু বিশেষ কিছু অবস্থায় ফরজে আইন হয়ে যায়।
.
.
জিহাদ যখন ফরজে কিফায়া থাকে এবং যথেষ্ট সংখক মুসলিম জিহাদে অংশগ্রহন করে তবে বাকীদের উপর জিহাদে অংশগ্রহন করা বাধ্যতামুলক থাকেনা তারা ইচ্ছা করলে অংশগ্রহণ করে গনীমত ও সূউচ্চ মর্যাদা হাসীল করতে পারে আবার ইচ্ছা করলে অংশগ্রহণ নাও করতে পারে।
.
.
এই অবস্থায় পিতামাতার অনুমতি ছাড়া জিহাদ করা বৈধ নয়। কিন্তু জিহাদ যখন ফরজে আইন হয়ে যায় বা যথেষ্ট সংখ্যক মুজাহিদ জিহাদে যোগদান না করেন, তখন জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যায়।
.
.
তখন পিতা মাতার অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই যেভাবে নামাজ, রোযার জন্য পিতামাতার অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
.
ইবনে হাযার আসকালানী (রঃ) বলেন,
قَالَ جُمْهُورُ الْعُلَمَاءِ يَحْرُمُ الْجِهَادُ إِذَا مَنَعَ الْأَبَوَانِ أَوْ أَحَدُهُمَا بِشَرْطِ أَنْ يَكُونَا مُسلمين لِأَنَّ بِرَّهُمَا فَرْضُ عَيْنٍ عَلَيْهِ وَالْجِهَادُ فَرْضُ كِفَايَةٍ فَإِذَا تَعَيَّنَ الْجِهَادُ فَلَا إِذْنَ
জমহুর আলেম বলেছেন পিতামাতা যদি মুসলমান হয় তবে তারা নিষেধ করলে জিহাদ করা বৈধ হবে না কেননা পিতামাতার সাথে সৎ ব্যবহার করা ফরজে আইন আর জিহাদ ফরজে কিফায়া।
তবে যখন জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যায় তখন কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই। (ফাতহুল বারী)

পরবর্তী হাদীসে যে জিহাদকে পিতামাতার সাথে সৎ ব্যবহারের পরে উল্লেখ করা হয়েছে এটাও ঐ অবস্থায় যখন জিহাদ ফরজে কিফায়া থাকে কিন্তু যখন জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যায় তখন পিতামাতার খেদমতের চেয়ে জিহাদ করা অধিক ফজীলতের আমল হবে।

এ বিষয়ে বহু হাদীস বর্ণিত আছে।
যেমনঃ
جاء رجل إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال دلني على عمل يعدل الجهاد قال ( لا أجده ) . قال ( هل تستطيع إذا خرج المجاهد أن تدخل مسجدك فتقوم ولا تفتر وتصوم ولا تفطر ) قال ومن يستطيع ذلك
“একজন ব্যক্তি রসুলুল্লাহ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে বলল হে আল্লাহর রসুল আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন যার মাধ্যমে আমি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত মুজাহিদদের সমান পুরুষ্কার পেতে পারি।
তিনি বললেন, তুমি কি (মুজাহিদ ফিরে না আসা পর্যন্ত) অনবরত ক্লানি-হীনভাবে নামাজ আদায় করতে ও কোনোরুপ পানাহার ব্যতিরেখেই রোযা রাখতে সক্ষম?

উক্ত ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রসুল, কে এই কাজ করতে সক্ষম? (সহীহ বুখারী)
.
.
আর যদি আমরা মেনেও নিই যে পিতামাতার সাথে ভাল আচরন করা জিহাদের চেয়ে উত্তম তবে এর অর্থ কি এই যে পিতামাতার সাথে ভাল আচরণ করলেই জিহাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।

একই হাদীসে তো নামাজকে পিতামাতার সাথে ভাল আচরণের পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ কি এ যে যেহেতু নামাজ পিতামাতার সাথে ভাল আচরণের তুলনায় উত্তম আমল তাই একজন মুসল্লির জন্য পিতামাতার খেদমতের প্রয়োজন নেই?
.
.
একটি কাজ অন্য একটি কাজ থেকে উত্তম হলেই অন্য কাজটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া যায় না।
বরং মুক্তি পেতে হলে প্রতিটি ফরজ দায়িত্বই নিষ্ঠার সাথে আদায় করতে হবে।


উপরোক্ত আলোচনা শেষে আরেকটি বিষয় আমাদের কাছে স্পষ্ট হয় যে, বর্তমান গণতান্ত্রিক ইসলামবিদ্বেষী শাসক যার প্রধান শেখ হাসিনা সে বর্তমানের আবু জাহলের জায়গা দখল করে নিয়েছে।

অথচ! অভাগা বাবা-মা বুঝতে পারছে না, র‍্যাব-ডিবির কুকুরগুলো তাদের সন্তানদের কাছে পেলে ছিঁড়েখুঁড়ে খাবে… প্রমোশনের লোভে এই নিকৃষ্ট কুকুরগুলোর জিভে লালা ঝরছে।

এই হতভাগা বাবা-মায়েরা মুরতাদদের কাছে সন্তানদের তথ্য ফাঁস করে দিয়ে সন্তানদের বাঁচাতে চাচ্ছে। হায়! শিয়ালের কাছে মুরগি বন্ধক দিতে চাচ্ছে…
আল্লাহ্‌ তা’আলা তাদের হিদায়াত দান করুন।


সন্তানের প্রতি মায়ের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তৎকালীন কুফর সর্দার আবু জাহলের রূপে আবির্ভূত হয়েছে ক্রুসেডার-ভারতীয় দালাল শেখ হাসিনা ও তার পোষা কুকুরেরা।


তাদের প্রপঞ্চনির্ভর বিজ্ঞাপনগুলো এর জলজ্যন্ত প্রমাণ। এধরণের প্রোপাগান্ডা দ্বারা নিজ আদর্শে দৃঢ় কোনো মুসলমান ধোকা খেতে পারেনা। বাকিদের কথা আলাদা।

নিশ্চয়ই হাল জামানার ফিরাউনের এসকল চক্রান্ত বর্তমানের মুহাম্মাদ বিন মাসলামা,সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস, সালমান ফার্সি (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) দের রুখতে পারবে ব্যর্থ হবে। বি’ইজনিল্লাহ।

যেমনটা পূর্বেও হয়েছে।

এবং, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌ তা’আলার জন্যই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × two =

Back to top button