অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াআর্কাইভইলম ও আত্মশুদ্ধিনির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনাপ্রবন্ধ-নিবন্ধমিডিয়া

ধারাবাহিক “আলোর বাতিঘর” সিরিজ-৭ | ইনগিমাসি শহীদি হামলাকারীদের প্রতি সুসংবাদ ও উপদেশ – শাইখ আবু ইয়াহইয়া আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

الترجمة البنغالية
বাংলা ডাবিং
Bengali Translation

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled

بشائر ونصائح للانغماسيين الاستشهاديين
الحلقة ٧ من سلسلة قناديل من نور.

ধারাবাহিক “আলোর বাতিঘর” সিরিজ-৭
ইনগিমাসি শহীদি হামলাকারীদের প্রতি সুসংবাদ ও উপদেশ

Series “Lighthouse” series-7
Good news and advice to the Ingimasi martyrs

للشيخ أبي يحيى الليبي رحمه الله
শাইখ আবু ইয়াহইয়া আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ
By Sheikh Abu yahya Al-Libi (Rahimahullah)

 

 

 

 

 

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/alor_batighor-7
লিংক-২ : https://mediagram.me/fbc0291dc7575ad2
লিংক-৩ : https://noteshare.id/SMkl9PC
লিংক-৪ : http://web.archive.org/web/202201301…lor_batighor-7
লিংক-৫ : http://web.archive.org/web/202201301…c0291dc7575ad2
লিংক-৬ : http://web.archive.org/web/202201301…are.id/SMkl9PC

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (891.2 MB)
মূল রেজুলেশন [৮৯১.২ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/WDFyS5dk24g2tzo
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/Batighor-7.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k9c58bc7c658a4feaa1c4c0b608d6f63a
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=o9z1d5u1w4
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/02afe9c5-0c9b-409d-8ed3-fcb82b615e50/3b6d705cd493cc6bf9c844c19a579b55ce1eb5fe1a886af1e58ea4bee958a03f

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (639.5 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [৬৯৩.৫ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/DZzfbNw7dbWdJC6
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/Batighor-7%20HQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kf161ad941e264dbca081bf6f86f65bd5
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=f4e0t4n7f8
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/81a41e0a-d59b-4d80-9ff4-3153331ea6ec/5c650bb3949889a9a955941422473bafe67bc5defae24776331cc9bc041868e4

روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (222.5 MB)
৭২০ রেজুলেশন [২২২.৫ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/LHQqBfXqkeLr37j
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/Batighor-7%20MQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k181f9ed6dc3f4b3d9315d2bc4a9a3258
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=y7y2z9c9s7
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/f701af2d-c34f-4abd-945d-198ebd101f4c/9c3b9170187cbd6d1c718130d2d8767b8c74ad8f594dbef8dad06973a62af84c

روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (85.4 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [৮৫.৪ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/N3AToQZLGnxtKL9
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/Batighor-7%20LQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kd9fb89e81e9f4a6bb8a5380f78d8e5f1
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=n4m9k5b3q0
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/3a2aa85b-d207-4e0b-ba5a-9ebb30f6c110/27fe35a0d6d09c742eb1a329394af39d3d4c0c1d008fdd0c42e3157ff9f13289

روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (100.9 MB)
3GP রেজুলেশন [১০০.৯ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/qFb4Kax8JBSG8Mk
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/Batighor-7.3gp
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kc1c51fdcbf7b4779b2695f6e63861eec
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e4y4j6h1p9
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/0243ab58-2804-4eca-b6a6-04bee3851773/2fb461cf60017c4270aebb1e7bb1de35578bae3dfee7fc50bf6e2c57f4cc5160

روابط بي دي اب
PDF (784 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৭৮৪ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/5d6JbZ6AJkZJbZC
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/AlorBatighor%20-7.pdf
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kd4bc6f1c680748438f3b41df3013dd7c
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=s3w7s8s8m4
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/78351b6b-57c6-496e-9cd0-95794fb178e0/3688053d20b2de6ded479a0640144cc04718e26dda0470af42becaa66954f4c3

روابط ورد
Word (344 KB)
ওয়ার্ড [৩৪৪ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/wWcyGNXZZL4p6J6
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/AlorBatighor%20-7.docx
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kca8a3518d5704e6ab369953d6012ccc4
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=o8n7x0s3g9
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/754d585b-0019-43ac-8c8e-d8561583b1ca/79547ee1943779fe43c86179ae985d4b82dac408252d0ddde9d6120e22af0a78

روابط الغلاف- ١
book Banner [852 KB] বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৮৫২ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/gTxS45apfHQNX52
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/AlorBatighor%20-7%20Cover.jpg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k09db160f70254fc1816e1ce97bf5e0d8
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=p6i0w9w1k2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/461e5b39-cc46-42ae-ac72-540174786dd6/86c5058499434a9e7fe18635d5a46c8365e9443e904962220a6203d8aa5d6016

روابط الغلاف- ٢
Banner [703 KB] ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭০৩ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/4RN2WQEttNRMfao
লিংক-২ : https://archive.org/download/alorbatighor7/AlorBatighor%20-7%20Banner.jpg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kae7b3c2dc23949ccac3f5474d367aeeb
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=u9t6q8o0b4
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/609f14e3-6356-449d-a85a-14f6cc248456/ecd2d7467ca844a16da783874618a80a21760628e27f4ea909f16a8121681bf8

 

*******

 

 

ধারাবাহিক আলোর বাতিঘরসিরিজ-৭

ইনগিমাসি শহীদি হামলাকারীদের প্রতি সুসংবাদ ও উপদেশ

 

শাইখ আবু ইয়াহইয়া আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ

 

মূল প্রকাশনা সম্পর্কিত কিছু তথ্য

মূল নাম:

بشائر ونصائح للانغماسيين الاستشهاديين (للشيخ أبي يحيى الليبي رحمه الله) الحلقة ٧ من سلسلة قناديل من نور.

 

ভিডিও দৈর্ঘ্য: ৫৫:১৮ মিনিট

প্রকাশের তারিখ: যুলকাদাহ ১৪৪১ হিজরি

প্রকাশক: আস সাহাব মিডিয়া

 

بسم الله الرحمن الرحيم

শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের প্রতি! আপনাদের সন্তানদের রক্ত তো আমাদেরই সন্তানদেরই রক্ত। আর আপনাদের রক্ত তো আমাদেরই রক্ত। রক্তের বিনিময়ে রক্ত ঝরানো হবে, আর ধ্বংসের বিনিময়ে ধ্বংস চালানো হবে। মহান আল্লাহকে সাক্ষী করে বলছি, আমরা আপনাদেরকে ভুলে যাবো না। যতদিন না সাহায্য আসে, অথবা আমরা সেই স্বাদ আস্বাদন করি যা আস্বাদন করেছিলেন হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিব রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু”।

শাইখ আতিয়াতুল্লাহ লীবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“জিহাদের মাধ্যমেই আল্লাহ আপনাকে সংশোধন করবেন। সংশোধন করবেন পুরো উম্মাহকে”।

শাইখ আবু মুসআব আয-যারকাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আল্লাহর সাহায্য নিয়ে বলছি, আমার সর্বস্ব দিয়ে আপনার সামনে সমাজের চিত্র স্পষ্ট করে তুলব”।

শাইখ আবু হামজা জর্দানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আল্লাহর অনুগ্রহে মুজাহিদদের কাছে যে স্বার্থ ও মনোবল থাকে, তা কাফেরদের কাছে থাকে না। আমাদের নিহতরা যায় জান্নাতে আর তাদের নিহতরা জাহান্নামে”।

মোল্লা দাদুল্লাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“সত্যের জন্য অকাতরে জীবন দেব, তবু বাতিলের কাছে নত হব না”।

শাইখ আবুল লাইস আল-লীবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“উম্মাহর অনেক ভারী বোঝা বহন করতে হয় আমাদের”।

শাইখ আবু রুসমা ফিলিস্তিনী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“শাইখ আবু কাতাদা তেমন বড় কিছু করেননি। তিনি শুধু হক কথা বলতেন”।

শাইখ দোস্ত মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আমরা আলেমদের উদ্দেশে বলব, আপনারা ইলম অনুযায়ী আমল করুন। কারণ আলেমরা নবীদের ওয়ারিশ”।

শাইখ আব্দুল্লাহ সাইদ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“জিহাদের মাধ্যমেই উম্মাহ জীবন লাভ করবে। আল্লাহ বলছেন,

‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে ঐ কাজে ডাকে, যা তোমাদেরকে জীবন দান করবে’”।

শাইখ আবু উসমান আশ শিহরী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে এ মহান নেয়ামতের মূল্যায়ন করুন। হে আল্লাহর বান্দা, ‍নিজেকে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ে অভ্যস্ত করে তুলুন”।

শাইখ আবু তালহা জার্মানী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আমরা জিহাদ করি আর বিজয়ের গান গেয়ে উম্মাহর মাঝে প্রাণ সঞ্চার করি”।

শাইখ আবু ইয়াহইয়া আল-লীবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“প্রিয় পিতা, বিচ্ছেদের পরেই তো সাক্ষাৎ পর্ব আসে”।

শাইখ মুস্তফা আবু ইয়াযিদ রহিমাহুল্লাহ বলেন,

‘আপনাদের সাথে মিলিত হতে চাই, যাতে আপনাদের ঈমান থেকে নূর গ্রহণ করতে পারি”।

************

একটি পংক্তি-

“অস্ত্র হাতে নাও আর শহীদদের পথে পা বাড়াও।

গোলাপটিকে তাজা রাখতে পানির বদলে রক্ত ঢেলে দাও

***************

ইনগিমাসি শহীদি হামলাকারীদের প্রতি সুসংবাদ ও উপদেশ

শাইখ আবু ইয়াহইয়া আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ

… ونعوذ بالله من سيئات أعمالنا، من يهده الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له، وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له وأشهد أن محمداً عبده ورسوله وصفيه من خلقه وخليله، أرسله الله بالهدى ودين الحق ليظهره على الدين كله ولو كره الكافرون، صلى الله عليه وعلى آله وأصحابه أجمعين وعلى من اهتدى بهديه وسار على سنته إلى يوم الدين، ثم أما بعد،

প্রথমেই আমরা আল্লাহ তায়ালার শোকর আদায় করছি যিনি আমাদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন। কারণ তিনি হিদায়াত না দিলে আমরা হিদায়াত পেতাম না। যিনি আমাদের বক্ষকে ইসলামের জন্য উন্মোচিত করে দিয়েছেন। যিনি আমাদেরকে উম্মতে মুহাম্মদির অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যিনি আমাদের অন্তরে ঈমানের নূর দান করেছেন। ঈমানের নূর বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় একটি দান। এটা এমন দান যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ করতে পারেনা। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

 فَمَن يُرِدِ اللّهُ أَن يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلإِسْلاَمِ وَمَن يُرِدْ أَن يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاء

“আল্লাহ তায়ালা যাকে হিদায়াত দিতে চান ইসলামের জন্য তার বক্ষকে উন্মোচিত করে দেন। আর যাকে গোমরা করতে চান তার বক্ষকে সংকোচিত ও সংশয়গ্রস্ত করে দেন যেন সে শূন্যে উড্ডয়ন করছে”। [সুরা আন’য়াম – ৬:১২৫]

এটাই হলো আল্লাহ যাকে হিদায়াত দিতে চান তার অবস্থা ও যাকে গোমরা করতে চান তার অবস্থা।

অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَن تُؤْمِنَ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ

কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় যে, সে ঈমান আনবে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত”। [সুরা ইউনুস – ১০:১০০]

আয়াত থেকে বুঝা গেল ঈমান গ্রহণ করা এবং সীরাতে মুসতাকীমের উপর উঠা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাধীন। এটা অনেক বড় নেয়ামত। কেন জানেন? কারণ আপনি যখন ঈমানদার হয়ে গেলেন, সীরাতুল মুসতাকীম পেয়ে গেলেন, তখন আপনি কাফেরদের কাতার থেকে বের হয়ে গেলেন। আর কাফের হলো আল্লাহর দুশমন। আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি ক্রোধান্বিত। তাদেরকে ঘৃণা করেন। আখেরাতে তাদের জন্য স্থায়ী শাস্তি। যে শাস্তি কখনো শেষ হবেনা। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আর আমাকে সেই পথহারাদের দল থেকে, দুশমনদের দল থেকে বের করেছেন। ভেবে দেখুন কত দল, কত জাতি, কোটি কোটি মানুষকে শয়তান গোমরা করে ফেলেছে। আপনার সমবয়সী, আপনার প্রতিবেশী, এমনকি আপনার পরিবারস্থ লোকদের মধ্য থেকেও কতজন গোমরা হয়ে গেছে অথচ আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সবার মধ্য হতে বাছাই করেছেন। আপনাকে মুসলিম বানিয়েছেন। আপনি শাহাদাহ পাঠ করেছেন, আপনি আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালোবাসুন, তার অলিদেরকে বন্ধু বানান। তার দ্বীনকে ভালোবাসুন। তার দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য তার দুশমনদের মোকাবেলায় কিতাল করুন। এটা অনেক মহা নেয়ামত যা আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দিয়েছেন। মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত যত নেয়ামতের উপর শোকর আদায় করবে এর মধ্যে এটাই হলো সবচে’ বড় নেয়ামত। এর বরাবর আর কোন নেয়ামত হতে পারে না।

এই নেয়ামতের শুকরিয়া কিভাবে আদায় করবেন? এর শোকর আদায়ের সবচে’ উত্তম পন্থা হলো, আপনি আপনার নিজেকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করবেন। আপনি বলবেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হিদায়াত দিয়েছেন, আমার বক্ষকে উন্মোচিত করেছেন। আমাকে মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সাইয়েদুল মুরসালিনের উম্মত বানিয়েছেন। আপনি আমার কাছে কি চান? আল্লাহ বলেন, আমি তোমার কাছে তোমার জান চাই। এর জবাবে আপনি বলবেন, ‘হে আল্লাহ আমি আমার জান আপনার কাছে সোপর্দ করলাম’। এটা হলো আল্লাহ এবং আপনার  মাঝে একটি বিক্রয়চুক্তি। যার কথা আল্লাহ তায়ালা কোরআনে উল্লেখ করেছেন-

إن الله اشترى من المؤمنين أنفسهم وأموالهم بأن لهم الجنة يقاتلون في سبيل الله فيقتلون ويقتلون وعداً عليه حقاً في التوراة والإنجيل والقرآن ومن أوفى بعهده من الله فاستبشروا ببيعكم الذي بايعتم به وذلك هو الفوز العظيم

“নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন। জান্নাতের বিনিময়ে। তারা আল্লাহর রাস্তায় কিতাল করবে, হত্যা করবে এবং শহীদ হবে। এটি  একটি সত্য ওয়াদা। যা তাওরাত ইঞ্জিল এবং কোরআনে বর্ণিত। ওয়াদা পূরণে আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী আর কে? সুতরাং তোমরা তোমাদের এই বিক্রয়চুক্তিতে আনন্দিত হও। আর এটা হলো মহা সাফল্য। [সুরা তাওবা – ৯:১১১]

সুতরাং শুধু মুসলমান হবার মাধ্যমে এবং আল্লাহর বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হবার দ্বারাই আল্লাহ তায়ালা আর আমাদের মাঝে এই মহান চুক্তি সাক্ষরিত হয়ে গেছে। এটিই হলো পৃথিবীর সবচে’ মহান চুক্তি। কোন চুক্তিই এর বরাবর নয়। কারণ কি জানেন? তাহলে শুনুন! বিক্রয়ের কিছু নিয়ম আছে। বিক্রয় সম্পাদিত হবার জন্য একজন বিক্রেতা লাগবে। একজন ক্রেতা লাগবে। লাগবে পণ্য এবং পণ্যের বিনিময় বা মূল্য। আর লাগবে কয়েকজন সাক্ষী। তো এই আয়াতে ক্রেতা হলেন আল্লাহ তায়ালা। যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আপনাকে জীবন দিয়েছেন। তিনিই আপনার থেকে তার দেওয়া জীবন ক্রয় করে নিচ্ছেন। অথচ একসময় আপনি কিছুই ছিলেন না। আপনার কোন অস্তিত্বই ছিলনা।

هل أتى على الإنسان حين من الدهر لم يكن شيئا مذكورا

“ মানুষের উপর এমন একটি সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে কোন উল্লেখিত বস্তুই ছিলনা”। [সুরা দা’হর – ৭৬:১]

 আজ থেকে বিশ বছর আগে এই পৃথিবীতে আপনার কোন অস্তিত্বই ছিলনা। তিনিই আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। রিজিক দিয়েছেন। এই জীবন দান করেছেন। সুতরাং ক্রেতা কে? ক্রেতা হলেন, আল্লাহ তায়ালা। পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলের রব্ব। আসমান জমিনের মালিক। আসমান জমিন, নভোমণ্ডল এবং ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে সব যিনি জানেন। বিন্দু পরিমাণ বা তারচে’ ক্ষুদ্র বা বৃহৎ কোন কিছুই যার ইলম ও কুদরতের বাহিরে নয়। সেই মহান সত্ত্বা আপনাকে বলছে, আমি তোমার থেকে তোমার জান ক্রয় করতে চাই। আল্লাহু আকবার। এই হলো ক্রেতার মোটামুটি পরিচয়। এবার আসি বিনিময়ের আলোচনায়। এই জীবনের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা মুমিনকে কি দিবেন? হ্যাঁ তিনি এর বিনিময়ে জান্নাত দান করবেন। এমন জান্নাত যার প্রস্থ হলো আসমান জমিনের চাইতে বড়। হে আল্লাহর বান্দা! কোরআন হাদিসের দিকে নজর দিয়ে দেখুন, কোরআন হাদিসের পৃষ্ঠাগুলো এ জাতিয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভরপুর। আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন জাতির সাথে অনেক ওয়াদা করেছেন। আমরা যখন এই জাতিয় আয়াত হাদিস পড়ি তখন গভীরভাবে ভাবিনা, মনে করি এগুলো ঐতিহাসিক ঘটনাবলী মাত্র। অথচ এগুলো হলো, সত্য সংবাদ। যার মাঝে সন্দেহের লেশ মাত্র নেই।

ومن أصدق من الله قيلاً

“আল্লাহর চাইতে  অধিক সত্য কথন আর কার হতে পারে?” (সুরা নিসা ৪:১২২)

ومن أصدق من الله حديثا

“আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী আর কে আছে?” (সুরা নিসা ৪:৮৭)

না কেউ হতে পারেনা। সুতরাং যখন আল্লাহ তায়ালা বলেন, তুমি তোমার জীবন আমাকে দাও, আমি তোমাকে জান্নাত দেবো। তখন মনে করুন, এটা একটি সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি। অকাট্য ও সুনিশ্চিত বিষয়। সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এই বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েই আল্লাহ তায়ালা আয়াতের শেষে বলেন,

ومن أوفى بعهده من الله

“আর কে আছে যে আল্লাহর চাইতে অধিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন?”। [সুরা তাওবা – ৯:১১১]

না  আল্লাহর চাইতে কেউ অধিক প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী নেই। তাই আল্লাহ যখন বলেন, আমি ক্রয় করলাম জান্নাতের বিনিময়ে। তখন জান্নাত অবধারিত। যেই জান্নাতে একবার যে প্রবেশ করবে চিরদিনের জন্য সে সফল হয়ে যাবে। যেই সফলতা কোন দিন শেষ হবেনা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فمن زحزح عن النار وأدخل الجنة فقد فاز

“যাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা হল এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো, সে তো সফল হয়ে গেল”। (সুরা আল-ইমরা ৩:১৮৫)

ব্যাস। জান্নাতে ঢুকল আর চিরসফল হয়ে গেল। আর কোন দিন কষ্ট তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। যেই জান্নাতে আল্লাহর দিদার লাভ করতে পারবে। যেই জান্নাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকবে।

عطاء غير مجذوذ

“এটা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার”। (সুরা হুদ ১১:১০৮)

আল্লাহ যার উপর একবার রাজি হয়ে যান তার উপর আর কখনো নারাজ হবেন না। আল্লাহর সামান্য সন্তুষ্টিই যথেষ্ট। যেই জান্নাতে নবীদের সংশ্রব লাভ হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

ومن يطع الله والرسول فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين

“যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে তারা থাকবে ঐ সকল লোকের সাথে যাদের উপর আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহ করেছেন, নবী সিদ্দিকীন, শুহাদা ও সালিহীন”। (সুরা নিসা ৪:৬৯)

হে ভাই আপনি জান্নাতে নবীদের সাথে থাকবেন। নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে থাকবেন। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর সাথে থাকবেন। মুসা আলাইহিস সালাম এর সাথে থাকবেন। ঈসা এবং নূহ আলাইহিস সালাম এর সাথে থাকবেন। কোরআনের ভাষায় এভাবে বলা হয়েছে:

فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالحين وحسن أولئك رفيقا

“(যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে) তারা নবী, সিদ্দীক, শহীদ, সৎকর্মপরায়ণ এবং যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন তাদের সঙ্গী হবেন”। (সুরা নিসা ৪:৬৯)

যেই জান্নাতে কোন কষ্ট নেই, ক্লেশ নেই। অশান্তি নেই। দুঃখ যাতনা নেই। দুনিয়ার সব দুঃখ কষ্ট জান্নাতে প্রবেশের সাথে সাথে শেষ। এই বিনিময় তো একটি মহান বিনিময়। এই কথাই প্রিয় নবী বলেছেন,

ألا إن سلعة الله غالية

“শোন আল্লাহর বিনিময় অনেক দামী”। (সহীহ তিরমিযী ১৯৯৩)

জান্নাত অনেক দামী। ঘুম, অলসতা, অক্ষমতা, উদাসীনতা, সংশয়, লোভ ও কৃপণতা দিয়ে অর্জন হয়না। জান্নাত অর্জনের জন্য লাগবে চেষ্টা মেহনত, শ্রম, ত্যাগ, ধৈর্য। আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের প্রস্থের কথা বলেছেন, দৈর্ঘ্যের কথা বলেননি। কারণ দৈর্ঘ্যের কথা কল্পনাও করা যায়না।

প্রিয় ভাইয়েরা! আল্লাহ তায়ালা জান্নাত শুধু শহীদদের জন্যই বানাননি। মুজাহিদদের জন্যও বানিয়েছেন। মুজাহিদদের জন্য রয়েছে একশত স্তর। এক স্তর থেকে আরেক স্তরের দূরত্ব আসমান জমিনের দূরত্বের ন্যয়।

সহীহ বুখারী ও মুসলিমের এক হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা ইরশাদ করেন-

من آمن بالله ورسوله وأقام الصلاة وصام رمضان كان حقاً على الله أن يدخله الجنة

“যে আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনলো, নামাজ কায়েম করলো, যাকাত আদায় করলো, রমজানে রোজা রাখলো, আল্লাহ তায়ালার জন্য তাকে জান্নাত দেওয়া আবশ্যক হয়ে যায়”। (সহিহ বুখারী ৭৪২৩)

চাই সে জিহাদ করুক বা নিজ জন্মভূমিতে নিজ ঘরে বসে থাকুক। (এটা যখন জিহাদ ফরজে কেফায়া।) সাহাবাগণ এটা শুনে খুব খুশি হলেন, বললেন- আমরা কি এই সুসংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছে দেব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা আখেরাতে উঁচু মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতেন, তাই বললেন,

إن في الجنة مائة درجة اعدها الله للمجاهدين في سبيله كل درجتين ما بين هماكما بين السماء والأرض فإذا سألتم الله فاسألوه الفردوس فإنه أعلى الجنة

“জান্নাতে একশতটি মর্যাদার স্তর আছে। প্রতি দুটি স্তরের মাঝে দূরত্ব আসমান জমিনের ন্যায়। আল্লাহ তায়ালা সবগুলো মুজাহিদদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। সুতরাং তোমরা যখন আল্লাহর কাছে জান্নাত চাও, তখন জান্নাতুল ফেরদাউস কামনা করো। কারণ জান্নাতুল ফেরদাউস হলো সর্বোচ্চ জান্নাত”। (সহিহ বুখারী ৭৪২৩)

তার উপরে আল্লাহর আরশ। সেখান থেকে জান্নাতের নহরসমুহ প্রবাহিত হয়। চারটি নহর। মধু পানি, দুধ ও শরাবের নহর।

প্রতিটি মানুষের ত্বলব হবে তার আমল অনুযায়ী। অর্থাৎ আনুগত্য, জিহাদ ও সবর। এর মাধ্যমেই তার মর্যাদা হবে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে। এমনিভাবে আল্লাহর রহমত থেকেও নিরাশ হবেনা। কারণ পেয়ারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলছেন, ‘তুমি যখন আল্লাহর কাছে জান্নাত চাও তখন জান্নাতুল ফিরদাউস চাও। এটা বলো না যে আমি কে? আমার তো কিয়ামুল্লাইল নেই। রোজা নেই। কোরআন তিলাওয়াত নেই’। অনেক আমল না থাকুক। আপনি আল্লাহর কাছে সবচে’ বড়টাই চান। কারণ তার দয়ার সাগর অনেক বিশাল। হতে পারে আপনার চাওয়াটা এমন কোন সময়ের সাথে মিলে যেতে পারে যখন কোন প্রার্থনা ফেরত দেওয়া হয়না। তখন আপনার নামও জান্নাতুল ফেরদাউসবাসীর লিস্টিতে উঠে যাবে।

فإذا سألتم الله فاسألوه الفردوس فإنه أعلى الجنة وأوسط الجنة وفوقه عرش الرحمن ومنه تفجر أنهار الجنة

“তোমরা আল্লাহর নিকট চাইলে ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটাই হলো সবচে’ উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। এর উপরে রয়েছে আরশে রহমান। আর সেখান থেকে জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে”। (সহিহ বুখারী ২৭৯০)

জান্নাত একটি মহান ঠিকানা। জান্নাতে প্রবেশের যত দরজা রয়েছে তার মধ্যে সবচে’ মূল্যবান দরজা হলো, শহীদদের দরজা। এই কারণেই আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যার পূর্বাপর সকল গুনাহ মাফ। যাকে মাকামে মাহমুদ দান করা হয়েছে। তিনি নিজের জন্য শাহাদাতের প্রার্থনা করছেন। একবার নয়। তিন বার।

এক হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

والذي نفسي بيده لوددت أني اقتل في سبيل الله ثم أحيا ثم أقتل ثم أحيا ثم أقتل ثم أحي ثم أقتل

“সেই সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার জান! আমি তামান্না রাখি যে, আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হবো, এরপর আমাকে জীবিত করা হবে, অতঃপর আবার শহীদ হবো, আবার জীবিত করা হবে, আবার শহীদ হবো। আবার জীবিত করা হবে আবার শহীদ হবো”। (সহিহ বুখারী ৭২২৬)

ইহা অনেক মহা মূল্যবান নেয়ামত। এ বিষয়ে অসংখ্য ফযিলত বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে এসেছে-

ما أحد يدخل الجنة يحب أن يرجع إلى الدنيا وله ما على الأرض من شيء  إلا الشهيد

“জান্নাতে প্রবেশের পর আর কেউ দুনিয়াতে ফিরে আসতে চাইবেনা। যদিও দুনিয়ার সকল জিনিষ তাকে দেওয়া হয়। একমাত্র শহীদ ব্যতীত”। (সহিহ বুখারী ২৮১৭)

অর্থাৎ কোন মুমিনকে জান্নাতে প্রবেশের পর যদি বলা হয়, আচ্ছা আপনাকে যদি পুরো পৃথিবীতে যা কিছু আছে, রাষ্ট্র সম্পদ, সৈন্যবাহিনী, সবকিছুর মালিক বানিয়ে  পুনরায় পৃথিবীতে পাঠানো হয়, তাহলে তুমি কি যেতে রাজি আছো। মুমিন এক কথায় প্রত্যাখ্যান করে বলবে, কক্ষনো আমি পৃথিবীতে ফিরে যাবোনা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কেউ রাজি হবে না। তবে শুধু একজন রাজি হবে। আর সে হলো শহীদ। সে পৃথিবীতে ফিরে আসতে চাইবে। কেন? দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসার কারণে? স্ত্রী সন্তানাদি, আত্মীয় স্বজনকে দেখার জন্য?  না না। সে ফিরে আসতে চাইবে, শুধু আবার শাহাদাত লাভের জন্য। আরও দশবার শহীদ হবার জন্য।

لما يرى من الكرامة

“কারণ সে শাহাদাতের মর্যাদা প্রত্যক্ষ করেছে”। (সহিহ বুখারী ২৮১৭)

অর্থাৎ সে যখন শাহাদাত লাভের পর জান্নাতে প্রবেশ করেছে, তখন শহীদদের প্রতি আল্লাহ তায়ালার কি যে মর্যাদা তা স্বচক্ষে দেখেছে। যা সে কল্পনাও করেনি। এবং সে শাহাদাতের স্বাদ আস্বাদন করেছে। যাকে আমরা ভয় পাই। সে শাহাদাতের মাঝে এমন স্বাদ, এমন মজা পেয়েছে যা সে আরও অসংখ্য বার পেতে চায়।

হে প্রিয় ভাইয়েরা! এগুলো এমন সংবাদ যার মাঝে সন্দেহের কোন লেশ নেই। সুনিশ্চিত ও অকাট্য সংবাদ। আবার সব শহীদ সমান মর্যাদার নয়। তাদের মাঝেও বিভিন্ন স্তর রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে- কোন শহীদ উত্তম? লক্ষ করুন হে ভাই! সাহাবাদের প্রশ্নগুলোই ছিল আজীব। আখেরাতের লাইনে অগ্রগামী হওয়া, একের উপর এক প্রতিযোগিতা করা। এগুলোই ছিল তাদের জল্পনা কল্পনা। প্রশ্ন, কোন শহীদ উত্তম? রাসূল জবাব দিলেন-

الذين يلقون في الصف الأول لا يلفتون وجوههم

“যারা প্রথম কাতারে দাড়ায়, আর চেহারা ফিরায় না”। (সহীহ আত্ তারগীব ১৩৭১)

অর্থাৎ সে সকল ইনগিমাসী শহীদি হামলাকারী যারা প্রথম কাতারে দাড়িয়ে কিতাল করে। কখনো পিছনে ফিরার কল্পনাও আসেনা। না তার বাড়ির দিকে, না সম্পদের দিকে, না স্ত্রীর দিকে। ব্যাস সে আল্লাহর সামনে নিজেকে পেশ করে দিয়েছে। চাই তরবারির নিচে থাকুক। গোলা বারুদের নিচে থাকুক। সাজোয়া যানের নিচে থাকুক। তাদের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

أولئك يتلبطون في الغرف العلا من الجنة

“তারা জান্নাতের উঁচু মহলগুলোতে বিচরণ করতে থাকবে”। (সহীহুল জা’মে ১১০৭)

ويضحك إليهم ربك، وإذا ضحك الله لعبدٍ فلا حساب عليه

“আল্লাহ তাদের প্রতি হাসেন। আর আল্লাহ তায়ালা যখন কোন বান্দার প্রতি হাসেন, তার আর কোন হিসাব হবে না”। (সহীহুল জা’মে ১১০৭)

সুতরাং হে ভাই! আপনি পিছনের দিকে তাকাবেন না। আপনি প্রথম কাতারে। আপনি সামনে। ব্যাস। মনে মনে ভাবুন, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দেখছেন। আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছেন। আল্লাহ যখন হাসছেন, তখন আপনার আর কোন হিসাব নেই। ব্যাস, আপনার ব্যাপারে কোন জিজ্ঞাসা নেই। আপনি সব কিছু থেকে মুক্ত। আপনি জান্নাতি। আপনি শহীদ। আপনি সর্বোত্তম শহীদ।

এক হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

القتلى ثلاثة

“শহীদ তিন প্রকার”।

অর্থাৎ যারা আল্লাহর রাস্তায় কিতাল করে ও নিহত হয়। তারা তিন প্রকারের।

رجلٌ مؤمنٌ يقاتل بنفسه وماله في سبيل الله

“প্রথম প্রকার হলো, ঐ ব্যক্তি যে তার জান ও মাল নিয়ে কিতাল করে”। (মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৮৫৯)

আপনাদের সামনে এ কথাটি আলোচনা করতে আমার লজ্জা হচ্ছে, তারপরও বলছি, কল্যাণের কাজে উৎসাহ দেবার জন্য।

القتلى ثلاثة رجلٌ مؤمنٌ يجاهد بنفسه وماله في سبيل الله حتى إذا لقي العدو قاتل حتى يقتل

“শহীদ তিন প্রকার। তো প্রথম প্রকার হলো, যে নিজ জান ও মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে। শত্রুর সাথে যখন সাক্ষাত হয় কিতালে রত থাকে এমনকি শাহাদাত বরণ করে”। (মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৮৫৯)

পেছনে ফিরে তাকায় না।

فذلك الشهيد الممتحن

“এই হলো আল্লাহর মনোনীত শহীদ”। (মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৮৫৯)

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা যার অন্তরকে তাকওয়ার জন্য মনোনীত করেছেন। তাকে নিজ ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তার মাঝে আর নবীদের মাঝে এক স্তরের ব্যবধান। প্রথমে হলো নবীদের স্তর। এর পরেই হলো তার স্তর। এই হলো প্রথম স্তরের শহীদ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- এরপরের স্তরের শহীদ হলো, যে প্রথম জনের ন্যায় আল্লাহর রাস্তায় জান ও মাল নিয়ে জিহাদ করে, তবে তার আমলনামায় নেক আমল ও বদ আমলের মিশ্রণ পাওয়া যায়। সেও জিহাদ করতে করতে শহীদ হয়ে যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

ممصمصة محت ذنوبه وخطاياه

“তার শাহাদাত তার গুনাহসমুহকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়। অর্থাৎ তরবারি তার সকল গুনাহকে ধুয়ে দেয়”। (মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৮৫৯)

সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।

তৃতীয় প্রকারের শহীদ হলো, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে এই প্রকার থেকে হিফাজত করুন আমীন।

رجل منافق يجاهد بنفسه وماله حتى إذا لقي العدو قاتل حتى يقتل فذلك في النار فإن السيف لا يمحو النفاق

“মুনাফিক যে তার জান মাল নিয়ে জিহাদ করে এবং জিহাদ করতে করতে শহীদও হয়ে যায়, কিন্তু তার ঠিকানা হয় জাহান্নাম। কারণ তরবারি সকল গুনাহকে ধুয়ে দিলেও নিফাককে ধুইতে পারেনা”। (মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৮৫৯)

এমন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা নিফাক নিয়ে যুদ্ধ করে। দলের স্বার্থে যুদ্ধ করে। শুধু দেশের জন্য যুদ্ধ করে। কুফুর লুকায়িত রাখে ও ইসলাম প্রকাশ করে। নাউযু বিল্লাহ। সুতরাং আমরা জানতে পারলাম, শাহাদাতের মর্যাদা অনেক উঁচু মর্যাদা। আপনারা জানেন, মৃত্যু যন্ত্রণা অনেক কঠিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إن للموت سكرات

“মৃত্যুর অনেক কষ্ট”। (সহিহ বুখারী ৬৫১০)

আল্লাহ তায়ালাও মৃত্যুকে মুসিবত শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করেছেন।

فأصابتكم مصيبة الموت

“ এরপর যখন তোমাদেরকে স্পর্শ করে মৃত্যুর মুসিবত”(সুরা মা-ইদাহ ৫:১০৬)

এই মৃত্যু যন্ত্রণা সবাইকে স্পর্শ করলেও শহীদ এর থেকে মুক্ত। হাদিসে এসেছে –

ما يجد الشهيد من مس القتل إلا كما يجد أحدكم من مس القرصة

“শহীদ মৃত্যু যন্ত্রণা শুধু ততটুকুই অনুভব করে একজন মানুষ চিমটি কাটার যন্ত্রণা যতটুকু অনুভব করে”। (সুনানে তিরমিজী ১৬৬৮)

অর্থাৎ আপনাকে কেউ যদি তার আঙ্গুলের মাথা দিয়ে চিমটি কাটে তাহলে যতটুকু ব্যথা পাবে শহীদ এর চাইতে বেশি ব্যথা পায়না। শহীদের রক্তের প্রথম ফোটা জমিনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এদিক সেদিক বহুদিক থেকে আপনার দিকে বুলেট ছুটে আসছে। এর মধ্যে যখনি আপনার দেহের প্রথম ফোটা জমিনে পড়ল তখনি আপনার সকল গুনাহ মাফ। আমাদের মাঝে কে আছে যার কোন গুনাহ নেই? কে আছে যার মাগফিরাত লাগবে না? আল্লাহ তায়ালা তো মুমিনদের থেকে তাদের জান মাল কিনে নিয়েছেন। শহীদই হলো সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর ক্রয় করা জান আল্লাহর হাতে সপে দিয়েছে।

এই শহীদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা তার কিতাবে বলেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لما أصيب إخوانكم يوم أحد

“উহুদের দিন তোমাদের ভাইরা যখন শহীদ হলো”। (মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৮৫৩)

আপনারা জানেন যে উহুদে সত্তরজন সাহাবী শহীদ হয়েছেন। তো রাসূল বলেন,

  لما أصيب إخوانكم يوم أحد جعل الله أرواحهم في جوف طيرٍ خضر معلقةٍ في قناديل من ذهب تحت العرش

“উহুদের দিন তোমাদের ভাইরা যখন শহীদ হলো, আল্লাহ তায়ালা তাদের রুহগুলোকে সবুজ পাখির পেটে রেখে আরশের নিচে স্বর্ণের বাতির সাথে তাদেরকে ঝুলিয়ে দিলেন”। (মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৮৫৩)

যখন তারা তাদের খাবার পানিয় এবং বসবাসের নেয়ামত আস্বাদন করলেন, অর্থাৎ উহুদের শুহাদা যেমন হামযা রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু, মুসআব রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু ও অন্যান্যরা যখন জান্নাতের নেয়ামত, যেমন বিভিন্ন ধরনের পানিয়, শরাব, দুধ ও মধু, সুস্বাদু খাবার, দামী দামী বিছানা, লাল গালিচা, নয়নাভিরাম বাগান, উঁচু উঁচু ভবন ইত্যাদি নেয়ামত ভোগ করলেন, তখন তাদের ইচ্ছা হলো, তাদের এই নেয়ামতের খবর তাদের দুনিয়ার ভাইদের কাছেও পৌঁছে যাক। অর্থাৎ আমরা যেমন এখনো দুনিয়ায় আছি, এখনো শহীদ হইনি , তারা চাচ্ছিলেন তাদের খবর দুনিয়ার ভাইদের কাছে পৌঁছে যাক। তখন এই শহীদরা বললেন, কে আছে যে আমাদের ভাইদের কাছে এই খবর পৌঁছে দেবে যে, আমরা জান্নাতে জীবিত। বিভিন্ন ধরনের নেয়ামতের মাঝে ডুবে আছি। যাতে তারা শাহাদাতের পথ থেকে পিছপা না হয়। শহীদ হতে ভয় না পায়। জিহাদে বের হতে অপছন্দ না করে। তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, স্বয়ং আমি আল্লাহ তোমাদের এই খবর তোমাদের ভাইদের কাছে পৌঁছে দেবো। সেই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করলেন-

ولا تحسبن الذين قتلوا في سبيل الله أمواتاً بل أحياء عند ربهم يرزقون

“আর যারা আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়, তাদেরকে তোমরা মৃত ধারণা করো না। বরং তারা তো জীবিত, তারা আছে তাদের প্রতিপালকের কাছে, তাদেরকে রিজিক দেওয়া হয়”। [সুরা ইমরান – ৩:১৬৯]

বিখ্যাত তাবেয়ি হযরত মাসরুক রহিমাহুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু কে এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। জবাবে তিনি বললেন, আমরাও এই আয়াত সম্পর্কে রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উত্তরে রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন- শহীদদের রুহগুলোকে আল্লাহ তায়ালা সবুজ পাখির পেটের ভিতর স্থাপন করে দিয়েছেন। তারা জান্নাতের মধ্যে যেখানে খুশি উড়ে উড়ে বিচরণ করছে। যেখানে যেতে মনে চায় সেখানেই চলে যায়। একবার রাব্বুল আলামিন তাদের প্রতি মনোনিবেশ করে বললেন, হে আমার বান্দারা তোমাদের কোন চাহিদা আছে কি না বলো। জবাবে তারা বলল, হে আমাদের রব্ব! আমরা আর কি চাইবো ? জান্নাতে যেখানে খুশি সেখানেই বিচরণ করতে পারছি।

প্রিয় ভাই একটু ভেবে দেখুন! আল্লাহর সাথে শহীদদের কি মধুর কথোপকথন হচ্ছে। একই প্রশ্ন রাব্বুল আলামিন তাদেরকে তিনবার করলেন। শেষে যখন তারা দেখলেন, আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তখন তারা কি চাইলেন জানেন? না, না, তারা জান্নাতের নেয়ামত বাড়িয়ে দিতে বলেননি। তারা আল্লাহর কাছে বললেন, ইয়া রাব্বাল আলামিন! আপনি আমাদের রুহগুলো আমাদের দেহে ফিরিয়ে দিন। আমরা দুনিয়াতে ফিরে গিয়ে আবার জিহাদ করবো আবার শহীদ হবো। আল্লাহ তায়ালা জবাবে বললেন, এটা তো সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে যে, একবার দুনিয়া থেকে চলে আসে সে আর কখনো ফিরে যাবে না। ব্যাস যে একবার জান্নাতে চলে যায় সে আর কখনো বের হবে না।

এমন বর্ণনা অনেক এসেছে।

হযরত জাবের রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু এর পিতা আব্দুল্লাহ রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু উহুদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। একদা রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার পথে-হাটছিলেন। দেখলেন জাবের বিন আব্দুল্লাহ মনমরা হয়ে বসে আছে। জিজ্ঞাসা করলেন, কি হে জাবের! কিসের চিন্তা করছ? বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বাবা শহীদ হয়েছেন। অনেক ঋণ  ও কয়েকজন কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। প্রিয় নবী তখন তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, হে জাবের! আমি কি তোমাকে একটি সুসংবাদ দিবো না? তিনি বললেন- জি হ্যাঁ ইয়া রাসূলাল্লাহ! হুজুর বললেন, তুমি কি জানো, তোমার বাবার সাথে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি কথা বলেছেন। অর্থাৎ আল্লাহর মাঝে আর তার মাঝে কোন পর্দা ছিলনা। এর আগে আর কারো সাথে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি কথা বলেননি। তোমার বাবাই প্রথম। আল্লাহ তায়ালা তোমার বাবাকে বলেছেন, হে আমার বান্দা তুমি আমার কাছে কিছু চাও। হে আব্দুল্লাহ তুমি কি চাও বলো। তখন আব্দুল্লাহ বলেছিল, ‘হে আল্লাহ আমি চাই আপনি আমাকে দুনিয়াতে পাঠিয়ে দেবেন’। এটা এজন্য বলেননি যে দুনিয়াতে এসে তার সন্তানদেরকে দেখবে। বরং ‘আমি চাই আমাকে দুনিয়াতে পাঠাবেন। আমি আপনার পথে আবার শহীদ হবো’। তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন, ‘যে একবার জান্নাতে প্রবেশ করে তাকে আর এখান থেকে বের করা হয়না’।

হে প্রিয় ভাই ! শহীদ আল্লাহর কাছে এমন মর্যাদা ও নেয়ামত পাবে যার কল্পনাও করতে পারেনি। যেমনটা রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন – এমন নেয়ামত যা কোন চোখ কোন দিন দেখেনি। কোন কান কোন দিন শুনেনি। কোন মানুষের কল্পনায় উদয় হয়নি। জান্নাতের বিবরণ দিয়ে কত আয়াত কত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। জান্নাতের ফলমুল, হুরে ঈন, আল্লাহর সন্তুষ্টি, আল্লাহর দিদার ইত্যাদি। এত বর্ণনা থাকা সত্ত্বেও বলা হচ্ছে কোন কান যেই নেয়ামতের কথা শুনেনি। কোন মানুষের কল্পনায় যেই নেয়ামতের কথা আসেনি। আপনি বহু ধরণের নেয়ামতের কথা কল্পনা করতে পারেন। কল্পনা করতে করতে অনেক দূর যেতে পারেন, কিন্তু জান্নাতের নেয়ামত আপনার সেই কল্পনার থেকেও অনেক অনেক দূরে। এই জান্নাতের বিনিময়েই আল্লাহ তায়ালা মুমিনের সাথে চুক্তি করেছেন। মুমিনের জান কিনে নিয়েছেন। এই জান তো আল্লাহর তৈরি। যেমনটা হাসান বসরী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন। তিনিই বানিয়েছেন। আমাদেরকে দিয়েছেন। আবার তিনিই আমাদের থেকে এটা চড়া মূল্যে ক্রয় করছেন। কী সেই মূল্য? আল্লাহু আকবার! সেই মূল্য হল জান্নাত। আল্লাহ তায়ালা কিনে নিয়েছেন। হ্যাঁ কিনে নিয়েছেন। কিনবেন বা কিনার ইচ্ছা করেছেন; এমনটা নয়। কিনে নিয়েছেন। ক্রয় বিক্রয় সম্পন্ন হয়ে গেছে। ব্যস। কোন মুমিন এখন তার নিজের জানের মালিক নয়। বরং আল্লাহ মালিক হয়ে  গেছেন। এখন মুমিনদের জন্য আবশ্যক হলো, এই বিক্রয় হওয়া পণ্যকে বাজারে পেশ করা। নিজের জান পেশ করার বাজার কি জানেন? বাজার হলো, জিহাদের ময়দান। জিহাদই হলো আল্লাহ ও তার বান্দার মাঝে তিজারাহ সম্পন্ন হবার প্লাটফর্ম।

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يا أيها الذين آمنوا هل أدلكم على تجارةٍ تنجيكم من عذابٍ أليم تؤمنون بالله ورسوله وتجاهدون في سبيل الله بأموالكم وأنفسكم

“হে মুমিনরা আমি কি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবো না এমন এক ব্যবসার কথা, যা আপনাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করবে, আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর এবং জিহাদ করবে আল্লাহর পথে তোমাদের জান ও মাল দ্বারা”। (সুরা সাফ্ফ ৬১:১০-১১)

সুতরাং জিহাদই হলো তিজারাত ও ব্যবসা। জিহাদই হলো বেচাকেনা। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

فليقاتل في سبيل الله الذين يشرون الحياة الدنيا بالآخرة

“সুতরাং  যেন আল্লাহর পথে কিতাল করে ঐ সকল লোক যারা আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়াকে বিক্রি করে দিয়েছে”। (সুরা নিসা ৪:৭৪)

ومن يقاتل في سبيل الله فيقتل أو يغلب فسوف نؤتيه أجرا عظيما

“আর যারা আল্লাহর পথে কিতাল করবে, এরপর চাই বিজয়ী হোক বা শহীদ হোক আমি তাকে মহা প্রতিদান দান করবো”। (সুরা নিসা ৪:৭৪)

হ্যাঁ এটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি। অন্যত্র বলেন-

ومن الناس من يشري نفسه ابتغاء مرضات الله والله رؤوف بالعباد

“মানুষের মাঝে কিছু লোক এমন আছে যারা নিজেকে বিক্রি করে দেয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের প্রতি কোমল”। (সুরা বাকারা ২:২০৭)

তো আমরা দেখলাম, আল্লাহ তায়ালা আমাদের জান মাল কিনে নিয়েছেন। এখন আর আমরা এগুলোর মালিক নই। এর বিনিময়ে আমাদেরকে দিয়ে দিয়েছেন জান্নাত। এখন আমাদের কাছে কি কাম্য? হ্যাঁ আমাদের কাছে কাম্য হলো, আমরা কিতালের ময়দানে আমাদের জান পেশ করবো। আর কিতাল করবো আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে। এবং যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরোধী ও প্রতিপক্ষ, যারা জমিনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে। যারা আল্লাহর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে। যেমন এই যে আমেরিকান পাপিষ্ঠরা। তারা কি এই কথা বলে না যে, আল্লাহ হলেন, তিনজনের একজন। মাসিহ হলেন আল্লাহর পুত্র। নাউযু বিল্লাহ। কত ভয়ঙ্কর কথা। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

تكاد السماوات يتفطرن منه وتنشق الأرض وتخر الجبال هدا أن دعوا للرحمن ولدا

“আসমান ফেটে যাবার উপক্রম, জমিন বিদীর্ণ হবার উপক্রম, আর পর্বতমালা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। এই কারণে যে তারা রহমানের জন্য সন্তান সাব্যস্ত করেছে”। (সুরা মারইয়াম ১৯:৯০-৯১)

তারা আল্লাহর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করেছে এটা কোন সাধারণ কথা নয়। ভয়ঙ্কর কথা। আল্লাহ বলেন-

قل هو الله أحد الله الصمد لم يلد ولم يولد ولم يكن له كفؤا أحد

“হে নবী আপনি বলে দিন তিনি আল্লাহ। একক সত্ত্বা। তিনি অমুখাপেক্ষী। সবাই তার মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি কারো থেকে জন্ম নেননি। কেউ তার সমকক্ষ নেই”। (সুরা ইখলাছ ১১২:১-৪)

এই কাফের ওবামা। আপনারা তার বাহ্যিক বেশভূষার দিকে তাকাবেন না। স্যুট টাই জ্যাকেট পড়ে স্মার্ট হয়ে, ক্যামেরার সামনে হেলে দুলে খুব এ্যক্টিং করে কথা বলে। কথা শুনে মন গলে যাবার উপক্রম। কিন্তু আপনারা তার এই বাহ্যিক বাহারি সাজসজ্জার দিকে তাকাবেন না। তার হাকিকতের দিকে তাকান। সে হলো একটি অবাধ্য কুকুর। যে আল্লাহর জন্য পুত্র সাব্যস্ত করে। এই কুকুর বিশ্বাস রাখে আল্লাহ হলেন, তিনজনের একজন। এই বিশ্বাসের কারণে সে কুকুরের চাইতেও নিকৃষ্ট। হ্যাঁ এটাই তার হাকিকত। প্রতিটা কাফেরের হাকিকত এটাই। তার বাহ্যিক বেশভূষা, পোশাক-আশাক, চলাফেরা যতই উঁচু মাপের হউক। আল্লাহর দৃষ্টিতে সে কুকুরের চাইতে নিকৃষ্ট। এই কারণেই অহংকারীদেরকে কিয়ামতের ময়দানে ছোট পিপীলিকার মত করে উঠানো হবে। মানুষ তাদেরকে পা দিয়ে পিষতে পিষতে যাবে। ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান যুগের এই পাপিষ্ঠ অহংকারী যারা অহংকার-বশত বুঝাতে চায় যেন তারা এই মানবজাতির চাইতেও দামী কোন বস্তু। কিয়ামতের ময়দানে মানুষরা এভাবেই তাদেরকে পিষ্ট করবে। এরা কারা? এরা এই ওবামা, বুশ, বিল ক্লিনটন, কারজাই।

হে আমার ভাইয়েরা! আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে দেবার জন্য আমাদের কাছে ফিদিয়া চাইছেন। ফিদিয়া কি জানেন? ফিদিয়া হলো, তার দুশমনদেরকে জাহান্নামে পাঠানো। একজন কাফেরকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবেন, ব্যাস ফিদিয়ার জন্য যথেষ্ট। সহীহ মুসলিমের এক হাদিসে এসেছে রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لا يجتمع كافرٌ وقاتله في النار أبداً

“কাফের এবং তার হত্যাকারী কখনো জাহান্নামে একত্রিত হবেনা”। (সহীহ মুসলিম ১৮৯১)

সুতরাং আপনি যখন একজন কাফেরকে হত্যা করলেন, খালাস। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ঈমানের পথে অটল রাখবেন। কারণ আপনি তো এই কাফেরের সাথে জাহান্নামে একত্রিত হবেন না। সুতরাং একটু চিন্তা করে দেখেন, যদি দুজন কাফেরকে হত্যা করতে পারেন। যদি দশজনকে, যদি বিশজনকে। ইনশাআল্লাহ আপনার নাজাত সুনিশ্চিত। সুতরাং হে ভাইয়েরা! কিতালকে ভয় পাবার কিছু নেই। কিতাল তো আল্লাহর প্রিয় হবার মাধ্যম। আমরা কাফেরদের হত্যা করবো, এটাই আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাছে চান। আমরা আল্লাহর রাস্তায় কিতাল করবো, আল্লাহর দুশমনদের হত্যা করবো, আর নিজেরা শহীদ হবো ব্যাস, জান্নাতে প্রবেশ করবো। এটাই পেয়ারা রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জন্য কামনা করতেন। তিনি বার বার শাহাদাত কামনা করতেন। আপনারা জানেন, আল্লাহ তায়ালা শহীদদের জন্য সাতটি মর্যাদা রেখেছেন। এগুলো শুধু শহীদদের জন্যই।

১- রক্তের প্রথম ফোটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সকল গুনাহ মাফ।

২- দুনিয়াতে থাকতেই তার জান্নাতের ঠিকানা তাকে দেখানো হবে।

৩- কিয়ামতের দিনের ফাযা’ ভয়াবহ পেরেশানি থেকে সে নিরাপদ থাকবেন।

الذين آمنوا ولم يلبسوا إيمانهم بظلم أولئك لهم الأمن

“যারা ঈমান আনার পর ইমানের সাথে কোন অন্যায়ের মিশ্রণ ঘটায়নি তাদের জন্য নিরাপত্তা”। (সুরা আন’আম ৬:৮২)

এই শ্রেণীর লোকদের মাঝে শহীদ হলো উপরের স্তরের।

প্রিয় ভাইয়েরা! কিয়ামতের দিন হলো একটি ভয়াবহ দিন। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يا أيها الناس اتقوا ربكم إن زلزلة الساعة شيءٌ عظيم يوم ترونها تذهل كل مرضعةٍ عما ارضعت وتضع كل ذات حملٍ حملها وترى الناس سكارى وما هم بسكارى ولكن عذاب الله شديد

“হে লোকসকল, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। নিশ্চয় কিয়ামতের কম্পন ভয়াবহ বিষয়। সেদিন তোমরা দেখতে পাবে তা দুগ্ধদানকারীনি মাকে ভুলিয়ে দেবে তার দুগ্ধপায়ী সন্তানের কথা। গর্ভধারিণী (অকালেই) তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবো নেশাগ্রস্ত। প্রকৃতপক্ষে তারা নেশাগ্রস্ত নয়। কিন্তু আল্লাহর আযাব ভয়াবহ”। (সুরা হাজ্জ ২২: ১-২)

হ্যাঁ এটাই হলো কিয়ামতের চিত্র। এই ভয়াবহ দিনের বিভীষিকা থেকে শহীদ মুক্ত ও নিরাপদ। এমনিভাবে কবরের সুওয়াল জওয়াব থেকেও সে মুক্ত। একবার এক সাহাবী রাসূলকে সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! শহীদকে কবরে সুওয়াল করা হবেনা কেন? জবাবে রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

كفى ببارقة السيوف على رأسه فتنة

“তার মাথার উপরে তরবারি ঝলকানিই আযাব থেকে মুক্তির জন্য যথেষ্ট”। (সুনানে নাসায়ী ২০৫৩)

অর্থাৎ দুনিয়াতে জিহাদরত থাকা অবস্থায় তার উপর ‍দিয়ে কতইনা ভয়ভীতি ও শঙ্কা অতিবাহিত হয়েছে। তাই কবরে আর তাকে কোন কষ্ট দেওয়া হবেনা। সে জীবনে কতবার তার মাথার উপর তরবারির ঝলক দেখেছে। গোলাবৃষ্টি দেখেছে। সাজোয়া মহড়া দেখেছে। পাখির ন্যায় উড়ে যাওয়া বোমারু বিমান দেখেছে। দেখেছে তার সামনে, পিছনে, ডানে ও বামে। এমনকি তার পায়ের নিচে। প্রতি মুহূর্তে সে মৃত্যুকে হাতড়ে বেড়িয়েছে। দুনিয়াতে সে যেই শঙ্কা আর ভীতির মাঝে কাটিয়েছে এটাই তার জন্য যথেষ্ট।

তাকে বিয়ে দেওয়া হবে হুরে ঈনের সাথে। হ্যাঁ শহীদের জন্য রয়েছে সর্বনিম্ন বাহাত্তর জন জান্নাতি হুর। হুরে ঈনের কথা আর কি বলবো। ব্যস হুরে ঈন। সে তার পরিবারের বাহাত্তর জনের ব্যাপারে সুপারিশ করতে পারবে। আমাদের বেশিরভাগেরই পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাহাত্তর জনের অনেক কম। একজন শহীদ নিঃসন্দেহে বাহাত্তর জনের ব্যাপারে সুপারিশ করতে পারবে। এগুলো হলো শহীদের বিশেষ মর্যাদা। যা আল্লাহ তায়ালা তাকে দান করবেন।

সুতরাং হে ভাইয়েরা! আপনারা হলেন, আল্লাহ অভিমুখী মহান যাত্রী। হ্যাঁ আপনারা আল্লাহর পথের পথিক। আপনাদেরকে আমি আর কি নসীহা করবো। এই কারণেই তো আপনাদের সামনে কথা বলতে আমি লজ্জা বোধ করি। তারপরও বলি যাতে এই মহান ফযিলতের কিছু ছিটেফোঁটা আমার ভাগ্যেও জোটে। যেই মানুষটি আল্লাহর দিকে ছুটে চলছে সে তো কখনো দুনিয়ার দিকে ফিরেও দেখবে না। দুনিয়ার সব জালা যন্ত্রণা, দুঃখ বেদনা, কষ্ট ক্লেশ পিছনে ফেলে ছুটে চলবে শুধু শুধুই তার মহান রবের দিকে। মহা সাফল্যের দিকে। চির কল্যাণের দিকে। রবের এমন সন্তুষ্টির দিকে যার পর আর কোন অসন্তুষ্টি নেই। এই  সব কিছু অর্জন হবে শাহাদাতের মাধ্যমে। তো আমরা সর্বদা আমাদের এই মুবারক জিহাদী কাজে আল্লাহর কাছে আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত বস্তুটিই খুঁজে বেড়াই। আল্লাহ যেন সেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য আমাদের জন্য সহজ করে দেন। আল্লাহ তায়ালার রহমত প্রশস্ত।

তো আজকে আপনাদের সামনে সামান্য কিছু নসিহত।

এক নাম্বারে- আপনারা ইখলাসকে ধারণ করুন। হে ভাইয়েরা আমার! ইখলাস শুধু আমল কবুল হবার জন্যই শর্ত নয়। বরং বিজয় ও সাহায্য লাভের জন্যও শর্ত। কোরআনের এই আয়াতটি নিয়ে একটু ভাবুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

لقد رضي الله عن المؤمنين إذ يبايعونك تحت الشجرة فعلم ما في قلوبهم

“আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছেন মুমিনদের প্রতি যখন তারা আপনার হাতে বাইয়াত নিয়েছে গাছের নিচে। আল্লাহ তায়ালা জেনে গেছেন তাদের অন্তরে যা আছে”। (সুরা ফাত্হ ৪৮:১৮)

অর্থাৎ ঈমান, ইখলাস, ইনসাফ সততা। আল্লাহ তায়ালা তাদের অবস্থা পরিপূর্ণ জেনে নিয়েছেন যে তাদের অন্তরে কোন কপটতা নেই। তাই তাদের অন্তরে সাকিনা নাযিল করলেন। এবং তাদেরকে নিকটবর্তী বিজয় দান করলেন। সুতরাং হে আমার ভাইয়েরা! যা কিছু অর্জন হয়েছিল এই ইখলাসের মাধ্যমেই হয়েছে। তাই ইখলাস লাগবে প্রতিটি কদমে কদমে। শুধু জিহাদের ময়দানে নয়। প্রতিটি ইবাদতের মধ্যে। এটা মনে করার সুযোগ নেই যে জীবনের শেষ দিকে ইখলাসওয়ালা আমল করে নেবো। সর্বপ্রথম কথা হলো, ইখলাস। আমাদের অন্তরে ইখলাস যতো বাড়বে আমাদের প্রতি আল্লাহর সাহায্য ততো বাড়বে। বিজয় ততো তরান্বিত হবে।

দ্বিতীয় বিষয়- হলো আল্লাহর প্রতি সুধারণা। আমরা যারাই এই মহান কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরেছি আমাদের রবের প্রতি যেন এই ধারণা আসে যে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাসনা পূর্ণ করবেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে-

إن الله سبحانه وتعالى يقول أنا عند ظن عبدي بي فليظن عبدي بي ما شاء

“আমার বান্দার সাথে আমার আচরণ হয় আমার প্রতি তার ধারণা অনুযায়ী। তাই আমার ব্যাপারে সে  যা ইচ্ছা ধারণা করতে পারে”। (সুনানে দারেমী ২৭৭৩)

সুতরাং আপনি যদি আপনার ব্যাপারে আল্লাহর থেকে ভালো কিছুর ধারণা করেন আল্লাহর থেকে ভালো কিছুই পাবেন। আর যদি মন্দ ধারণা রাখেন তাহলে আপনার ধারণা অনুযায়ীই ঘটবে। সুতরাং আপনি আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা রাখুন! আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রতিটা কদম সহজ করে দেবেন। আপনার প্রতিটা বাধা দূর করে দেবেন। আপনি শত্রুর যেখানে পৌঁছতে চান সেখানে পৌঁছে দিবেন। আপনার অপারেশন সাকসেস করে আপনাকে শাহাদাত দান করবেন। আপনাকে ফিরদাউসের বাসিন্দা বানাবেন। এভাবেই আপনি এই পবিত্র পথে অগ্রসর হতে পারবেন।

তৃতীয় বিষয় হলো- দোয়া। দেখুন আমাদের শত্রু আমেরিকানদের আছে শক্তিশালী গোয়েন্দা ব্যবস্থা। তারা এটা নিয়ে গর্ব করে। তারা রিমোটের জোরে যুদ্ধ করে। তাদের আছে পৃথিবীখ্যাত অত্যাধুনিক অস্ত্র শস্ত্র। যা আমাদের কাছে নেই। কিন্তু প্রিয় ভাইয়েরা! আমাদের কাছে যে অস্ত্র আছে তা কিন্তু তাদের কাছে নেই। হ্যাঁ আমাদের এই অস্ত্রের মোকাবেলা করার ক্ষমতা পৃথিবীর কারো নেই। কিছুই টিকতে পারবেনা এর সামনে। কোন দেয়াল, কোন প্রতিরক্ষা, কোন ইন্টারনেট, কোন বেতার মাধ্যম, কোন শক্তিশালী অত্যাধুনিক অস্ত্র, কিছুই না। আর তা হলো দোয়া। দোয়া এত শক্তিশালী অস্ত্র কেন জানেন? ভেবে দেখুন, আপনি কাকে ডাকছেন! আপনি তো এমন একজনকে ডাকছেন পৃথিবীর সকল শক্তি যার মাখলুক। কেউ তাকে অক্ষম করতে পারেনা। যিনি এই মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করেন। পরিচালনা করেন। তিনি হলেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। পৃথিবীর সকল মানুষের অন্তর তারই হাতে। প্রতিটি মানুষের শ্বাস-নিশ্বাস এবং নড়াচড়া তারই নিয়ন্ত্রণে। আসমান ও জমিনে কোন কিছুই তার আড়ালে নয়। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষের অন্তরে কি কামনা বাসনা জাগ্রত হয় তিনি জানেন। সুতরাং আপনি যখন রাতের শেষ প্রহরে উঠে তার সামনে আপনার দুহাত প্রসারিত করেন, আপনার সিজদায় রোনাজারিতে, ইখলাস নিয়ে, হৃদয় নির্গত আবেদন নিয়ে, সিদক নিয়ে, তখন আপনি অবশ্যই অবশ্যই দেখবেন যে, আপনার চাওয়াগুলো একে একে সব পূরণ হচ্ছে। বাধাগুলো একে একে সব সরে যাচ্ছে। সুতরাং দোয়া, হে আমার ভাই! দোয়া। সংখ্যাধিক্য দিয়ে আমরা কখনো প্রতারিত হইনা। আমরা উনিশ জন। না না! হুনাইন যুদ্ধে একজন সাহাবীর উক্তি মাত্র। “আজকে সংখ্যা স্বল্পতার কারণে আমাদের পরাজয় হবেনা। কারণ আমরা সংখ্যায় অনেক” এই একটি মাত্র বাক্যের কারণে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

ولقد نصركم الله في مواطن كثيرة ويوم حنين إذ أعجبتكم كثرتكم فلم تغني عنكم شيئاً

“আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন, অনেক যায়গায় এবং হুনাইনের প্রান্তরে, যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদেরকে মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি”। (সুরা তাওবাহ ৯:২৫)

না এই সংখ্যার আধিক্য কোন ফল বয়ে আনে না। আমরা আমাদের অস্ত্র নিয়েও গর্ব করতে পারিনা। উপকরণের আধিক্য নিয়েও গর্ব করতে পারিনা। এগুলো তো হলো আসবাব। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এগুলো ব্যবহার করতে বলেছেন তাই করছি। কিন্তু আমাদের নজর তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালার ক্ষমতার উপর।

প্রিয় ভাইয়েরা আপনারা এই আয়াত নিয়ে একটু ভাবুন। বদরের দিন আল্লাহ তায়ালা তার রাসূলের সাথে দুই কাফেলার কোন এক কাফেলার ওয়াদা করেছেন।

وإذ يعدكم الله إحدى الطائفتين أنها لكم

“ আর যখন আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সাথে দুই দলের একটির ওয়াদা করলেন। যে তা আপনাদের হবে”। (সুরা আনফাল ৮:৭)

ব্যাস। কথা সুস্পষ্ট। হয়তো আপনারা আবু সুফিয়ানের ব্যবসায়ী কাফেলা নিবেন। অথবা আবু জাহেলের বাহিনীকে ধ্বংস করবেন। দু টার যে কোন একটা আপনাদের হবেই হবে। এদিকে আবু সুফিয়ানের ব্যবসায়ী কাফেলা পার হয়ে যায়। এখন বাকি থাকে শুধু আবু জাহেলের বাহিনীর মোকাবেলা করা। নিশ্চিত হয়ে যায় যে এই বাহিনীর উপর বিজয় হবেই হবে। তাদের অস্ত্র-শস্ত্রগুলো মুসলমানদের হাতে আসবে। গনিমত হয়ে। এটা তো আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি হিসেবে এসেই গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও রাসূল কি করেছিলেন? তিনি একটি ছোট্ট তাবুতে প্রবেশ করলেন। রোনাজারি শুরু করলেন। দোয়া করতে থাকলেন। কেঁদে কেঁদে বিজয়ের আরজি জানালেন। এভাবে বলতে থাকলেন- “হে আল্লাহ! আমি আপনার সেই সাহায্য চাই যা আপনি আমার সাথে ওয়াদা করেছেন। হে আল্লাহ আপনি আমার সাথে যে ওয়াদা করেছেন তা বাস্তবায়ন করুন। হে আল্লাহ আপনি যদি এই ক্ষুদ্র জামাতটাকে ধ্বংস করে দেন, এই পৃথিবীতে আপনার ইবাদত করার কেউ থাকবেনা”। দোয়ার মধ্যে প্রিয়  রাসূল সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই কথাগুলো বললেন, অথচ তার সাথে ওয়াদা করা হয়েছে যে, নিশ্চিতভাবে দুই দলের যে কোন এক দল তিনি পাবেন। এতে প্রমাণিত যে, দোয়া হলো মুজাহিদের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। দেখুন এ দোয়ার ফলে কি হয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

إذ تستغيثون ربكم فاستجاب لكم أني ممدكم بألف من الملائكة

“যখন তোমরা তোমাদের রবের কাছে সাহায্য চেয়েছিলে, তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। বলেছেন, যে আমি তোমাদেরকে সাহায্য করবো এক হাজার ফিরিস্তা দিয়ে”। (সুরা আনফাল ৮:৯)

তো দেখুন, আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এসেছে এই দোয়া ও কান্নাকাটির পরই।

সুতরাং হে ভাইয়েরা বাকি দিনগুলো ইবাদত, কুনুত ও দোয়ার মাঝে কাটানোর চেষ্টা করুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وإذا سألك عبادي عني فإني قريب أجيب دعوة الداعي إذا دعان فليستجيبوا لي وليؤمنوا بي لعلهم يرشدون

“আর যখন আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, আপনি বলুন, আমি তো অনেক নিকটে। দোয়াকারীর দোয়ায় সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয়, এবং আমার উপর ঈমান আনে, যাতে তারা সঠিক পথ পেয়ে যায়”। (সুরা বাকারা ২:১৮৬)

আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, আল্লাহ যেন অপরাধীদের দৃষ্টিশক্তি আপনাদের থেকে অন্ধ করে দেন। তাদের গোয়েন্দাদের দৃষ্টি আপনাদের থেকে ফিরিয়ে দেন। টার্গেট পর্যন্ত পৌঁছা আপনাদের জন্য সহজ করে দেন। আপনাদের গোলাগুলোকে লক্ষ্যভেদী বানিয়ে দেন। আপনাদের হাতে এই পাপিষ্ঠদেরকে এমন মার দেন তার উপর আর কোন মার নেই। আপনাদেরকে তিনি তার বিশেষ অনুগ্রহ দান করেন।  আপনারা জানেন, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছে চেয়েছিলেন এমন রাজত্ব যা আর কাউকে দেয়া হবেনা। আপনারাও দোয়া করেন, আফগানের ভূমিতে সর্ববৃহৎ কোরবানি রাখার। এমন হামলা আর কোরবানির স্বাক্ষর রাখুন যার আর কোন নজীর খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আর এই সবকিছু একমাত্র দোয়ার মাধ্যমেই সম্ভব।

চতুর্থ বিষয়- হে আমার ভাইয়েরা! বিশেষ করে লক্ষ করুন। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা হলো- আমিরের আনুগত্য করা। হ্যাঁ আমিরের আনুগত্য ময়দানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يا أيها الذين آمنوا أطيعوا الله وأطيعوا الرسول وأولي الأمر منكم

“হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ তায়ালা এবং তার রাসূলের আনুগত্য করো। এবং তোমাদের উলুল আমরদের আনুগত্য করো”। (সুরা নিসা ৪:৫৯)

উলুল আমর বলতে, আমির এবং ওলামায়ে কেরাম। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় রাসূল  ইরশাদ করেন-

من يطع الأمير فقد أطاعني ومن يعصي الأمير فقد عصاني

“যে আমিরকে মানলো সে আমাকে মানলো, আর যে আমিরের অবাধ্য হলো, সে যেন আমারই অবাধ্য হলো”। (সহিহ বুখারী ২৯৫৭)

সুতরাং হে আমার ভাই! আপনি যখন আপনার এই আমিরের অবাধ্য হবেন, তখন আপনি শুধু আবু হুরাইরা আর তালহা এর অবাধ্য হলেন না, বরং আপনি সরাসরি আপনার রাসূলের অবাধ্য হলেন। আল্লাহু আকবার! কত বড় ধমকি। কারণ এই আমিরের আনুগত্য ধারাবাহিকভাবে সেই রাসূলের আনুগত্য থেকেই এসেছে। আর রাসূলের আনুগত্য হলো আল্লাহর আনুগত্যের অংশ।

من يطع الرسول فقد أطاع الله

“ রাসূলকে মানলো সে তো আল্লাহকেই মানলো”। (সুরা নিসা ৪:৫৯)

 সুতরাং ছোট বড় সকল বিষয়ে আমিরকে মেনে চলবেন। নিজের থেকে ইজতেহাদ করতে যাবেন না। আমির যদি আপনাকে বিশেষ কোন মিশন বা কোন কাজে পাঠায়। সেটা আঞ্জাম দেওয়ার পদ্ধতিও বলে দেয়, তাহলে আমিরের বাতলে দেওয়া পদ্ধতিই ফলো করুন। আপনার জেহানকে আপাতত স্টপ রাখুন। হতে পারে এটা এরকম বা ওরকম। এভাবেও সম্ভব, এই জাতিয় কথা বলবেন না। আপনি মনে মনে বলবেন, আমি আমিরের অধীনে। আমার নিজস্ব মতামতের এখানে সুযোগ নেই।

কসম আল্লাহর হে আমার ভাইয়েরা! আমিরের অধীনে থাকার মধ্যেই বরকত। কারণ আমির হলো একটি জামাতের খুঁটি। জামাতের শিরোনাম। আমিরের আনুগত্য ঠিক আছে মানে জামাত ঠিক আছে। বিশুদ্ধ আমির ছাড়া কোন জামাত, জামাত হতে পারেনা। সালাতের জন্য ইমাম লাগে। হজ্জের জন্য ইমাম লাগে। ঠিক তদ্রূপ জিহাদের জন্যও আমির লাগে। আমির থাকলেই সেটা জামাআহ। আর রাসূল বলেন-

الجماعة بركة

“জামাআর মাঝে বারাকাহ আছে”। (ফাযায়েলে রমাযান লি  ইবনি আবিদ দুনয়া হাদিস নং ৬২)

তাই হে ভাইয়েরা! আমিরের আনুগত্যের উপর থাকুন। ইনশা আল্লাহ বারাকাহ দেখতে পাবেন। আলহামদুলিল্লাহ! আমরা এই জিহাদের ময়দানে আমিরের আনুগত্যের অনেক বারাকাহ দেখেছি। বিশেষ করে আমিরের কোন নির্দেশ যদি কোন কারণে আপনার অপছন্দ হয়। হতে পারে আমির আপনাকে এমন কোন কাজের নির্দেশ দিলো যেটা আপনার পছন্দ হলোনা। তখন আরও গুরুত্বের সাথে সেটা পালন করুন। দেখবেন বারাকাহ পাবেন। ব্যাস আপনি কিছুক্ষণ ধৈর্য ধারণ করুন। এর ফল পাবেন। তাছাড়া প্রকৃত আনুগত্যও এটাকেই বলে যে, আমিরের নির্দেশ অপছন্দ হওয়া সত্ত্বেও মেনে নেওয়া। কারণ যদি আমিরের নির্দেশ আপনার মনের সাথে মিলে যায় আর সেটাই পালন করতে থাকেন, তো সেটা শতভাগ আনুগত্য হয়না। কারণ সেটা তো আপনার ইচ্ছার বাস্তবায়ন হয়েছে। তাই সর্বাবস্থায় আমিরকেই মানতে হবে।

পঞ্চম বিষয়- মতবিরোধ এবং তর্ক বিতর্ক থেকে বিরত থাকতে হবে। বাকবিতন্ডে শুধু সমস্যাই তৈরি হয়। আপনারা তো প্রতি মুহূর্তে পথচলার মাঝে আছেন। কি নিয়ে বিতর্ক হবে? যুদ্ধের ময়দানে প্রতি মুহূর্তে আমরা রিস্কের উপর থাকি। আমাদের মন আখেরাতমুখি থাকে। এসময় তো মানুষ নিজের নফসকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। ছোট বড় কোন বিষয় নিয়েই সে তর্কে জড়াতে চায় না। তাই আপনি আপনার ভাইদের সাথে কোমল থাকুন। এই কারণেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মুজাহিদদের জন্য এই সিফাতের কথা উল্লেখ করেছেন-

أذلة على المؤمنين

“তারা মুমিনদের জন্য নমনীয়”। (সুরা মা-ইদাহ ৫৪)

অন্যত্র বলেন-

محمدٌ رسول الله والذين معه أشداء على الكفار رحماء بينهم

“মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। আর তার সাথে যারা আছে তাদের বৈশিষ্ট্য হলো, কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর আর মুমিনদের প্রতি কোমল”। (সুরা ফাতহ ৪৮:২৯)

সুতরাং আপনি আপনার ভাইদের জন্য কোমল হয়ে যান। তাদেরকে ছাড় দিন। ছোট বড় কোন বিষয় শুধু ধরতে যাবেন না। সে চলতেছে তাকে চলতে দিন। ব্যাস!

প্রিয় ভাইয়েরা! এই কয়েকটি বিষয়ে আমি আপনাদেরকে উপদেশ দিলাম।

সর্বশেষ আরেকটি বিষয় হলো, ছাবেত থাকা। অটল থাকা। আর এই ছাবেত থাকা অর্জন হবে দোয়ার মাধ্যমে।

ولما برزوا لجالوت وجنوده قالوا ربنا أفرغ علينا صبرا وثبت أقدامنا وانصرنا على القوم الكافرين * فهزموهم بإذن الله

“আর যখন তারা জালুত ও তার বাহিনীর মুখোমুখি হলো, তারা বললো, হে আমাদের রব্ব! আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন। আমাদের পাগুলোকে অটল রাখুন। আর আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের উপর বিজয় দান করুন। ফলে আল্লাহর ইচ্ছায় তারা তাদেরকে পরাজিত করলো”। (সুরা আল-বাকারাহ ২:২৫০-২৫১)

ব্যাস, এই দোয়া বেশি পরিমাণে করতে থাকুন। যখন শত্রুর মুখোমুখি হবেন, তখন বেশি করে এই দোয়া পড়তে থাকবেন।

ربنا أفرغ علينا صبرا  وثبت أقدامنا وانصرنا على القوم الكافرين

“হে আমাদের রব্ব! আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন। আমাদের পাগুলোকে অটল রাখুন। আর আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের উপর বিজয় দান করুন”। (সুরা আল-বাকারাহ ২:২৫০)

এরপরই আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদের বার্তা নেমে আসবে।

وكأين من نبي قاتل معه ربيون كثير فما وهنوا لما أصابهم في سبيل الله وما ضعفوا وما استكانوا والله يحب الصابرين * وما كان قولهم إلا أن قالوا ربنا اغفر لنا ذنوبنا وإسرافنا في أمرنا وثبت أقدامنا وانصرنا على القوم الكافرين * فآتاهم الله ثواب الدنيا

“কতক নবী এমন ছিলেন যে তাদের সাথে মিলে অনেক নেককার বান্দা যুদ্ধ করেছে। আল্লাহর পথে তারা যা কিছুর সম্মুখীন হয়েছে মনোবল হারায়নি। এবং দুর্বলও হয়নি। বসেও পড়েনি। আর আল্লাহ তায়ালা ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। তাদের কথা ছিল একটাই, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন, আমাদের সীমালঙ্ঘন ক্ষমা করে দিন। আমাদের পা গুলো অটল রাখুন। আর আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের উপর বিজয় দান করুন। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে দিয়েছিলেন পার্থিব দুনিয়ার প্রতিদান”। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৪৬-১৪৮)

অর্থাৎ বিজয়  ও গনিমত

وحسن ثواب الآخرة

“এবং আখেরাতের উত্তম বিনিময়”। (সুরা আল-ইমরান ৩:১৪৮)

সুতরাং হে প্রিয় ভাইয়েরা! বেশি পরিমাণে এই দোয়া পাঠ করুন। আমরা আল্লাহর কাছে আল্লাহর উত্তম নামসমুহের উসিলায়, এবং তার সমুন্নত গুণাবলীর উসিলায় আবেদন করছি, তিনি আমাদের কাজগুলো তার তাওফিক দ্বারা সমৃদ্ধ করে দিন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দিলগুলো জমিয়ে দিন। আমাদের পা গুলো অটল বানিয়ে দিন। আমাদের নিক্ষেপণকে লক্ষ্যভেদী বানান। আমাদের দুশমনদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে শক্তিশালী সাহায্য করুন। সুস্পষ্ট বিজয় দান করুন।

হে আল্লাহ নাসরে মুবিন দান করুন। শক্তিশালী সাহায্য করুন। হে আল্লাহ আপনি ছাড়া আমরা দুর্বল। আপনি আমাদেরকে শক্তিশালী করুন। আপনি ছাড়া আমরা ফকীর। আপনি আমাদেরকে ধনী বানান। হে সারা পৃথিবীর প্রতিপালক। আমাদের এই আমল শুধু আপনার জন্য কবুল করে নিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে বদরের ন্যায় বিজয় দান করুন। আহযাবের ন্যায়, হুনাইনের ন্যায় বিজয় দান করুন।

কাফেরদের উপর লানত বর্ষণ করুন। আপনার পাপিষ্ঠ দুশমনদেরকে লাঞ্ছিত করুন। আপনার দ্বীনের বিরোধী এবং আপনার বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্তদের অপদস্থ করুন। আপনার ঈমানদার বান্দাদেরকে সম্মান ও সাহায্য করুন। সকল চেষ্টা মেহনত কবুল করুন। হে সাত আসমানের মালিক! হে আরশে আজীমের মালিক। আপনি আমাদের রব্ব। আপনি ছাড়া আমাদের আর কোন রব্ব নেই। আপনিই ইলাহ, আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমরা দুর্বল হয়ে আপনার কাছে চাচ্ছি। আমরা মিসকিন হয়ে আপনার কাছে চাচ্ছি। নিঃস্ব ফকীর হয়ে আপনার কাছে চাচ্ছি। হে আসমান জমিনের বাহিনীসমূহের মালিক। আপনার বাহিনী দ্বারা আমাদেরকে সাহায্য করুন। হে আসমান জমিনের বাহিনী সমূহের মালিক। আপনার বাহিনী দ্বারা আমাদেরকে সাহায্য করুন।

হে আসমান জমিনের বাহিনীসমূহের মালিক। আপনার বাহিনী দ্বারা আমাদেরকে সাহায্য করুন।

আপনি ছাড়া আমাদের কোন ক্ষমতা নেই, সামর্থ্য নেই। আপনি আমাদের রব্ব। আপনি আমাদের মাওলা। কতইনা উত্তম মাওলা। কত উত্তম সাহায্যকারী।

وصل اللهم على نبيك محمدٍ وآله وصحبه أجمعين وصل اللهم عليه وعلى آله وأصحابه،

 وجزاكم الله خيرا.

******************

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

৪ Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 19 =

Back to top button