অ্যামেরিকান অর্থনীতির পতন
অ্যামেরিকান অর্থনীতির পতন
জর্জ বুশের খ্যাপাটে, গোঁয়ারগোবিন্দ ছেলেটা যখন “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”- এর ঘোষণা দিল, তখন অনেক মনে করেছিল এ যুদ্ধের সমীকরণ হবে খুব সোজা। অতিকায় অ্যামেরিকা নিমিষেই পুঁচকে শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলবে। মোকাবেলাটা হবে একপেশে, সরলরৈখিক আর অবশ্যই সংক্ষিপ্ত। প্রাথমিকভাবে তাই মনে হচ্ছিল। ২০০১ এর শেষ মাসগুলোতে অ্যামেরিকা প্রথমবারের মতো বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছিল। তারপর কেটে গেছে ১৬ টি বছর। দেড় যুগ। এই দীর্ঘ সময়ে আরো বেশ কয়েক বার বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছে অ্যামেরিকা। ২০০৩ এর বসন্তে বাগদাদে চালানো অ্যামেরিকান বিমান বাহিনীর তাণ্ডবের পর ছোট বুশ বলেছিল “মিশন অ্যাকমপ্লিশড”। ২০০৭-৯৮ এ আনবারের ঘটনার পর আরেকবার বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছিল অ্যামেরিকা। ২০১১ সালে উসামাকে হত্যার পরও অ্যামেরিকান সত্যিই ভেবেছিল, যুদ্ধ শেষ হয়েছে। বিজয়কে ছুতে পেরেছে। কিন্তু প্রতিবারই হতাশ হতে হয়েছে অ্যামেরিকাকে। বিজয় আসে নি। শুধু তাই না, ক্রমাগত পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। এ যুদ্ধের ধরন নিয়ে বিশ্লেষণ ছিল অনেক। অ্যামেরিকান নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব একে শান্তি স্থাপন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ আখ্যায়িত করেছিল। বামপন্থী বুদ্ধিজীবিরা একে বলেছিল “নতুন অ্যামেরিকান সাম্রাজ্য” প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বজুড়ে অ্যামেরিকারা সামরিক নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক লুটপাট বাড়ানোর যুদ্ধ। ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদরা বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করে দিচ্ছিল, কিভাবে এ পুরো যুদ্ধ সাজানো।
এ হল পৃথিবীতে দাজ্জালী এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। বিশ্লেষণে বৈচিত্র্য ছিল। তবে উপসংহার ছিল এক। যুদ্ধে অ্যামেরিকা বিজয়ী হতে যাচ্ছে। অ্যামেরিকার বৈশ্বিক সাম্রাজ্য আরো বিস্তৃত হতে যাচ্ছে। নতুন এক অ্যামেরিকান শতাব্দীর শুরু হতে যাচ্ছে। সহজ সমীকরণ। কিন্তু সহজ সরল অংকটা ১৬ বছর পর আজ জটিল রূপ ধারণ করেছে। অবিশ্বাস্য ভাবে উল্টোটা হচ্ছে। অ্যামেরিকার সাম্রাজ্য দুর্বল হচ্ছে। অতিকায় প্রাসাদে ফাটল ধরেছে। আর আমরা যাই বলি, খোদ অ্যামেরিকানরা এ সত্যকে স্বীকার করছে। এ অবিশ্বাস্য ফলাফলের বাস্তবতা সবচেয়ে প্রকটভাবে বোঝা যাচ্ছে অ্যামেরিকার অর্থনীতির দুরবস্থা থেকে। আর তাই নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সিরিজের নতুন ভিডিও, অ্যামেরিকান অর্থনীতির পতন।