ইতিহাস- ঐতিহ্যকাশ্মীর আর্কাইভপিডিএফ ও ওয়ার্ডবই ও রিসালাহবিষয়

জিঞ্জির ছেড়া কারাগার – মাওলানা মাসউদ আযহার (পিডিএফ/ওয়ার্ড)

জিঞ্জির ছেড়া কারাগার – মাওলানা মাসউদ আযহার

 

Download

https://top4top.io/downloadf-2091xp3jj1-pdf.html

new link

PDF:

https://banglafiles.net/index.php/s/74mMWBQ99bQiCF7

https://archive.org/download/how-to-download_202202/%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0%20%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9B%E0%A6%89%E0%A6%A6%20%E0%A6%86%E0%A6%9C%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0.pdf

https://mega.nz/file/gpUWQT7R#lCMRMQo-MQw63uqiQlHErbhLckItXALbwRXOhixihSY

WORD:

https://banglafiles.net/index.php/s/xDSMWwmeYa8EFkY

https://archive.org/download/how-to-download/%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0%20%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9B%E0%A6%89%E0%A6%A6%20%E0%A6%86%E0%A6%9C%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0.docx

https://mega.nz/file/xsNwFRKS#onPWetGG3nAOczEn8zbNGSNtYEISOFpd99hX3wH1dhM

 

_________________________________________________________________________

 

জিঞ্জির ছেঁড়া

কারাগার

 

মাছউদ আজহার

 

অনুবাদক

মাওঃ মোঃ মোস্তাকুন্নবী বাংলাদেশী

___________________________________________________________

আমীরুল মুজাহিদীন মাওলানা মাছউদ আজহার

ছয় বছর চব্বিশ দিনের নিকৃষ্টতম বন্দী জীবন থেকে পরিত্রাণ পেয়ে, ভারতের সামরিক জান্তার নির্যাতনের স্টীম রোলার থেকে মুক্ত হয়ে করাচি পৌঁছে ২৮ শে রমাজান ১৪২০ হিঃ মোতাবেক ৫ ই জানুয়ারী ২০০০ ইং দারুল ইসলাম ওয়াল এরশাদ নাজেমাবাদ করাচিতে এ ভাষণ দেন।

نحمده و نصلي على رسوله الكريم

আমার সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা! তখন উনিশশ বিরানব্বই সন, ডিসেম্বর মাসের ছয় তারিখ। কাফেররা আমাদের ঈমানের পরীক্ষা নিচ্ছিল। লাখ লাখ মুশরিক নিজেদের ভূতের নাম নিয়ে, ইসলামের বিরূদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে, মুসলমানদের আত্মাভিমান কে পদদলিত করে অযোধ্যার বাবরী মসজিদের দিকে এগুচ্ছিল ইসলামী দুনিয়া তো ছিল নিশ্চুপ। কারোর তো খবরই ছিল না যে, কি হচ্ছে। আর কেউ বা বসে হেঁচকি মেরে মেরে কাঁদছিল। শেষ পর্যন্ত আকাশ ঐ দৃশ্য দেখল। জমীন ও সে দৃশ্য দেখল। একশ বাইশ কোটি মুসলমান জীবিত থাকতে মুশরিকরা সাড়ে পাঁচশ বছর আগের মসজিদ কে শহীদ করে দিল। মসজিদের শাহাদাতের মাধ্যমে তারা মুসলমানদের পরীক্ষা নিচ্ছিল যে, মুসলমান কি করে, মুসলমান শাসকরা কি করে, তৌহীদি জনতা কি করে। ঐ ইন্ডিয়া, যা প্রথম থেকেই কাশ্মীরের মধ্যে রক্তের বন্যা বহাচ্ছিল। ঐ ইন্ডিয়া যা পাকিস্তান কে দু’ টুকারো করতে তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল! ঐ ইন্ডিয়া যার এজেন্ডার মধ্যে লিখা আছে আমরা অখণ্ড ভারত বানাবো, এবং পাকিস্তানের উপরও ভারতের ঝান্ডা উড়াব। ইন্ডিয়া তার শেষ আক্রমণ করছে, এ আক্রমণ ছিল ভবিষ্যতের অসংখ্য আক্রমণের ভূমিকা স্বরূপ।

বাবরী মসজিদেকে ধবংস করে তারা দেখল কোন বাহিনী আমাদের দিকে ধেয়ে আসেনি। তারা দেখল কোন বাহিনী আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়নি। তারা দেখল যে, মুসলমান তো কাঁদছে কিন্তু কিছু করতে পারছে না। তাই লাল কৃষ্ণ আদভানী দম্ভ ভরে ঘোষণা করে দিল এর পর আরো তিন হাজার মসজিদ ধ্বংস করব”। তারা চিন্তা করছিল, প্রথমে আমরা ইন্ডিয়াতে নির্মিত মসজিদ ধ্বংস করব। তারপর পাকিস্তানের দিকে আমরা আমাদের অত্যাচারের হাত বাড়াবো।

আমার প্রিয় সাথী বন্ধুরা! এ মর্মান্তিক অবস্থায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে একজন দুর্বল মুসলমান কখনও করাচির কোন মসজিদে চিৎকার করত। কখনও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তাদের অনুগ্রহ ও দোয়া কামনা করত। কখনও আফগান মুজাহিদীনদের কাছে গিয়ে ইসলামের দোহাই দিত। এ দুর্বল মানুষটাই তার প্রতিপালকের উপর ভরসা রেখে প্রচন্ড শক্তিশালী লাল কৃষ্ণ আদভানীকে এই কারাচির পবিত্র মাটিতে বসেই চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল যে, আদভানী! তুমি আর আমাদের মসজিদ কে ধ্বংস করতে পারবে না। আদভানী! তিন হাজার নয়, তিন মসজিদ ও পারবে না। আদভানী! তুমি তিন হাজার মসজিদের কথা বলছ, জেনে রাখ: আমরা বাবরী মসজিদকে ও তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব। কাশ্মীরকেও ছিনিয়ে নেব। এক দুর্বল মানুষ এক অসহায় মানুষ, মুসলমানদের দ্বারে দ্বারে ঠোকর খাচ্ছিল। তাদের কাছে গিয়ে ধর্না দিচ্ছিল আর এক এক জনের সামনে দু হাত পেতে বলছিল বাঁচাও বাবরী মসজিদকে। হায়! বাবরী মসজিদ, হায়! বাবরী মসজিদ যারা আমার সে আওয়াজ শুনেছিল ঐ সমস্ত মায়েদের ও স্মরন আছে ঐসব বোনদের মনে আছে, ঐ সমস্ত বেটীদের ও মনে আছে, তখন আমাদের দিলের কি অবস্থা ছিল। এ আওয়াজ দিতে দিতে শেষ পর্যন্ত আমি বাবরী মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। আমার সে দিনের কথা মনে আছে আমি বাবরী মসজিদের ধ্বংস স্তুপের উপর দাঁড়ানো ছিলাম, আর আমি আমার পায়ের উপর ভর করে ইন্ডিয়ার মাটি হাতে নিয়ে উড়াচ্ছিলাম আর বলছিলাম। হে বাররী মসজিদ! আমরা আজও জীবিত আছি। তুমি আমাদের ইজ্জতের পতাকাবাহী ছিলে। আমরা তোমার প্রতিশোধ নিয়েই শ্বাস নেবো। এ অসহায় মুসলমান কাশ্মীর পৌঁছে গেল। লালকৃষ্ণ আদভানীর বাহিনী আমাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পুরালো। আর আলেমদের বলছিল, কোথায় তোমাদের হায় বাবরী মসজিদ, হায় বাবরী চিৎকারকারী? কোথায় তোমাদের হায় বাবরী মসজিদ, হায় বাবরী মসজিদ করে চিৎকারকারী?। তার জওয়াবে আলেমগন বললেন, আমরা তাকেও মুক্ত করব এবং বাবরী মসজিদকে ও মুক্ত করে ছাড়ব। শেষ পর্যন্ত ছয় বছর চব্বিশ দিন পর ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ষশোবন্ত সিং এ অসহায় মানুষটিকে তালেবানের ইসলামী সরকারের কাছে পৌঁছে দিল।

আমার প্রিয় সাথীবৃন্দ! আমি আপনাদের মাঝে আবার ও উপস্থিত হয়েছি। আপনাদের কে সাক্ষী বানিয়ে লাল কৃষ্ণ আদভানীকে আবারও বলছি আদভানী ! আমি দ্বিতীয় বার এসে গেছি। দুনিয়ার বুকে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তোমরা তো দুনিয়ার বুক থেকে ইসলাম কে মিটাতে চাচ্ছিলে।এখন তা সুউচ্চে পৌঁছে গেছে। ইসলামী হুকুমত কে মিটাতে চাচ্ছিলে আজ তা সুদৃঢ় হয়েছে।আমি ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে নগন্য একজন মানুষ। তোমরা তো আমাদের প্রকৃত সংখ্যা আঁচ করতে পারনি। আদভানী! যেমনি ভাবে প্রানপ্রিয় যুবক ভাইয়েরা, আমার মুজাহিদ সাথীরা, আমার সম্মানিত মুফতিয়ে আজম, আমার আলেম সমাজ, আমার মুরুব্বিরা আমাকে জেল থেকে মুক্ত করেছেন ৷ ইনশাআল্লাহ্‌, আমি তোমার থেকে বাবরী মস্জিদ ও কাশ্মীর কে ছিনিয়ে শ্বাস নেব।

হে ইন্ডিয়া! আমি তোমাকে অনেক কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। মনে রেখ আমি তোমার গর্দানের শাহরগ ও মেপে নিয়েছি। মুসলমানের রক্ত প্রবাহ তুমি বন্ধ করে দাও। দুনিয়ার বুকে এক শান্তিপূর্ন রাষ্ট্র হয়ে বেঁচে থাক। যে হাইজ্যাকিং এর অপবাদ তুমি পাকিস্তান কে দিচ্ছ, সে হাইজ্যাকিং এর কথা পাকিস্তানের কারও জানা ও ছিল না।

হে ইন্ডিয়া! তুমি তো শুধু পাকিস্থানকে অপবাদ দিয়ে একটা কিছু হয়ে যাও। কিন্তু মনে রেখ তোমার ধবংসের সার্টিফিকেট অন্য কোথাও তৈরি হচ্ছে। তোমার মৃত্যুর এ’লান অন্য কোথায় ও করাহচ্ছে। তুমি শুধু পাকিস্তান ও তালেবানই দেখেছ। আমার মাওলা, আমার নবী মুসলমানদের মধ্যে যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন তা তোমরা বুঝতে পারনি। এ সম্পর্কের মূল্য তোমরা দিতে জান না। আমি মুসলমানদের এক নিকৃষ্টতম গোলাম ছিলাম। যখন আমি জেলে ছিলাম কত মুসলমানদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল৷ আমার মুরুব্বিরা আরাম হারাম করে নিয়েছিল মুসলমানরা কসম খেয়েছিল। আদভানী! তোমার মনে থাকবে কোন্‌ এ্যাকশান এরা নেয়নি। আমার সাথীরা আমাকে বলল! মাসউদ আজহার তোমার মুক্তির জন্য আমরা কাফেরদের মৃত্যুর পরওয়ানা গলায় ঝুলাব কিন্তু দুনিয়া কে এ কথা বুঝাব যে, আমরা আমাদের ভাইদেরকে, আমাদের দোস্তদেরকে কাফিরদের জেলে দেখতে চাই না। আমরা তারাই যারা হযরত ওসমান (রাঃ) কে কৃয়েদ হতে দেখেছি তো চৌদ্দশ হাত নবীর হাতে ঢেলে দিয়েছিলাম। আমরা সম্মানী জাতি। আমরা সম্মানের সাথে বাঁচতে জানি। সম্মানের সাথে মরতে জানি। কাফেরদের সম্মান ছিনিয়ে নিতে জানি! আমরা ইজ্জতের সাথে দুনিয়ায় জীবিত থাকতে জানি।

হে অপদস্ত মুশরিকরা! জিজ্ঞেস কর আঠারজন নও জোয়ানকে যারা নিজেদের রক্ত দিয়ে তোমাদের এ কথা বুঝিয়েছিল যে, তোমাদের জেল সুদৃঢ় নয়। এটা একদিন ভেঙ্গে যাবে। তোমাদের জেল ধ্বংস হয়ে যাবে। আক্বায়ে আরবী যে সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা বাস্তবায়িত হয়েই থাকবে।

হে ইন্ডিয়া! মুসলমানদের শক্তির তোমার ধারনা নেই। তোমরা শুধু ভীরু কাপুরুষদের লাঠি হাঁকাতে জান।

আমার আওয়াজ তো ইন্ডিয়া পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। আমি বলছি ভীরু কাপুরুষদের মত কর্মকান্ড তুমি ছেড়ে দাও। কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর জুলুম করা ছেড়ে দাও! অন্যথায় তোমাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা ও তোমাদের স্মরন রাখবে, যখন আমরা তোমাদের সহীহ্‌ ছবক্ব শিখাবো ইনশাল্লাহ্‌।

“পাকিস্তানই করছে এ হাইজ্যাক” যশবন্ত শিং এটাই বলছে, লাল কৃষ্ণ আদভানী ও এমনটি বলছে। আমি তোমাদের সত্য কথা বলব। এ হাইজ্যাকের ব্যাপারে পাকিস্তানের কারো জ্ঞানই ছিল না। তোমাদের বিশাল বাহিনীর পরওয়ানা তো অন্য কোথাও ছাপা হচ্ছে তোমরা বলছ পাকিস্তান হাইজ্যাককারীদের আমাদের সমর্পন করুক। আমি তোমাদের বলবঃ তোমাদের তের লক্ষ সৈনা কোথায় গেল? তোমাদের এজেন্সীগুলো কোথায় গেল?

ভূতের সামনে গরুর পেশাব পানকারীরা র” এর এজেন্টরা! বলে দাও, তোমরা ঐ পাঁচ ব্যক্তিকে ও ধরতে পারনি৷ ইনশাআল্লাহ তোমরা তাদের ধরতে পারবেও না এজন্য ধরতে পারবে না যে, তারা হতে পারে তোমাদের কলিজায় ছুরি চালাবার জন্য তোমাদের বুকে বসে আছে। হতে পারে তারা তোমাদের দেশেরই বাসিন্দা। তোমরা হিন্দুস্তানের মুসলমানদের পরাজিত করে এ কথা মনে করছ যে, তারা মিটে গেছে। সেখানে ধ্বংস স্তুপের ছাইয়ের নীচে এমন স্ফুলিঙ্গ লুকায়িত আছে যখন তা ফাটবে তো তোমাদের সবক শিখিয়ে ছাড়বে।

আমার প্রিয় সাথীরা, আমার মুসলমান ভাইয়েরা! এখনও আমাদের কাজ শেষ হয়নি। আমরা কোন্‌ জিনিসের উপর আনন্দ উৎসব করছি? আমরা কিসের খুশী করব? আমাকে কেউ কেউ বললঃ আজ উৎসব হওয়া উচিৎ। হাঁ যদি তোমাদের কাছে জুতার হার থাকে তাহলে আমার গলায় ঢেলে দাও। আমার গলায় ফুলের মালা দিবে না! যতদিন পর্যন্ত বাবরী মসজিদ মুক্ত না হয়। যদি তোমাদের কাছে গাধায় চড়িয়ে আমার মুখ কালো করার ব্যবস্থা থাকে তবে করে দাও। আমার জন্য জিন্দাবাদের শ্লোগান লাগাবে না। ঐ জিন্দেগীর কোন মজা নেই, যে জেন্দেগী থাকতেও কাশ্মীরের অসহায় মুসলমানরা আজ বন্দুকের নীচে সময় কাটাচ্ছে। আমার জন্য জিন্দাবাদের পরিবর্তে মুর্দাবাদ শ্লোগান লাগাও। আমি সে দিন জিন্দাবাদের উপযুক্ত হবো যেদিন ইসলাম জিন্দা হবে, ঈমান জিন্দা হবে, দীন জিন্দা হবে। যখন ইন্ডিয়া বরবাদ আর ধ্বংস হবে। যখন কাশ্মীর আজাদ হবে, যখন বাবরী মসজিদ দ্বিতীয় বার চমকাবে আর তার মিম্বব থেকে আল্লাহ আকবার” আল্লাহ আকবার ” এর ধ্বনী প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে। যখন কুফর পরাজিত হবে আর ইসলাম বিজয়ী হবে। যখন মুসলামান ব্যবসায়ী এ কথা বুঝবে যে, সিন্দুক ভরা উদ্দেশ্য নয়, প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো এ পয়সার দ্বারা কুফরকে পরাজিত করা, আর ইসলাম কে বিজয়ী করা।

তোমরা আমার জন্য জিন্দাবাদ শ্লোগান তখন তুলবে যখন আমার প্রত্যেক মা তার বাচ্চাকে দুধ পান করাবার আগে নিয়্যত করবে, বেটা? আমার এ দুধ তোমার শরীরে যেন ঈমানের কারেন্ট বনে যায়। তুমি তোমার মায়েদের মুক্ত করবে, তোমার বোনদের মুক্ত করবে। আরে তোমরা কিসের উপর জিন্দাবাদ দিচ্ছ! চেচনিয়ার মধ্যে ছয় লাখ শিশু খোলা আকাশের নীচে বসে অপেক্ষায় আছে! রূশ তাদের উপর বোম্বিং করেই যাচ্ছে। সাহায্য পাঠাবার মত কেউ নেই।

কোন্‌ জিনিষের উপর জিন্দাবাদ লাগাচ্ছ। কসভোর মধ্যে আমাদের মায়েদের গলা কাটা হচ্ছে। আমাদের বাচ্চা গুলোকে অপমানিত করা হচ্ছে।

কোন কথার উপর জিন্দাবাদ লাগাচ্ছ? যদি ক্লিনটন কোন মহিলার সাথে অপকর্ম করে। আর দুনিয়া বাসীরা তাকে ধিক্কার দেয় তাহলে সে দুনিয়াবাসীর দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাবার জন্য আফগানিস্তানে রকেট নিক্ষেপ করে। যদি প্যারিস ও লন্ডনের উপর কোন কথা আসে তখন সে চেচনিয়ার মধ্যে মৃত্যুর বিভীষিকা চালিয়ে দেয়। নিজেদের মধ্যকার পারস্পরিক ঝগড়ায় সে আমাদের রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়। আমাদের ইজ্জত লুটে নেয়। সেখানে জিন্দাবাদ শ্লোগানে কি ফায়দা?

আমাকে ধোঁকা দিও না আমরা আরামের জন্য দুনিয়াতে আসিনি। বিয়ে করা এবং বাচ্চা জন্ম দেয়ার জন্য আমরা দুনিয়াতে আসিনি। বিয়ে কর তো জিহাদের জন্য কর! বাচ্চা জন্মাও তো জিহাদের জন্য জন্মাও। মাল কামাও তো জিহাদের জন্য কামাও। ছেলে সন্তান পালন কর তো জিহাদের জন্য পালন কর।

যতদিন পর্যন্ত দুনিয়া থেকে আমেরিকার সন্ত্রাস বন্ধ না হবে, ইন্ডিয়ার বদমাশী খতম না হবে ততোদিন পর্যন্ত নিজের উপর আরাম হারাম করে দাও।

যদি আমি মুক্ত হয়ে আমার মায়ের কাছে গিয়ে বসতাম আমার বোনের কাছে যেতাম তাহলে হে কাফেররা, তোমরা খুশী হতে। আমি এখনো তাদের কাছে যেতে পারিনি। আমি এ জন্যই ব্যাকুল যে আমার চেচনিয়ার মা আর বোনদের কি হবে?

আমার সে সমস্ত সাথীদের কথা মনে পড়ে যারা আমাকে জেল খানা থেকে বিদায় দেয়ার সময় চিৎকার করে বুক ভাসিয়ে কাঁদছিল, আর বলছিলঃ জেল খানায় তো বুখারী পড়াবার মতো অনেকেই আছে, কুরআন পড়াবার মতো অনেকেই আছে। ডান্ডা লাগতো আর আমরা তাকিয়ে থাকতাম, দুশমন গালী দিতো তো আমরা শুনে থাকতাম। প্রতিবাদ করার মত তুমি ছাড়া অন্য কেউ ছিল না।

আমি তাদের অসহায় আকুতি, তাদের বুক ভাসানো চোখের পানি তোমাদের হাওলা করলাম তারা তোমাদেরই সন্তান, তোমাদেরই ভাই। যদি এ পাঁচজন ইন্ডিয়ার মুসলমান ইন্ডিয়ার বিমান ছিনিয়ে এনে তাদেরই একজন মুসলমান ভাইকে মুক্ত করে নিয়ে এসে পুনঃ ইন্ডিয়ায় চলে যেতে পারে মুসলমানেরা! তোমরা তো’তাদের মুক্ত করে ছাড়তে পার। আমি তাদের চোখের পানি তোমাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছি, আমি তাদের আওয়াজ তোমাদের কানে দিয়ে যাচ্ছি।

মুসলমানরা! সঠিক ভাবে একটু চিন্তা করে দেখ, কি রকম গজব অবর্তীন হচ্ছে। মুসলমানের আজ দুনিয়াতে মাথা গৌঁজার এতটুকু ঠাঁই নেই।

আমাকে কিছু লোক বললঃ তুমি পাকিস্তান যেওনা, সেখানে তোমার বড় বিপদের আশংকা আছে। আমি জিজ্ঞেস করব? ইন্ডিয়ার জেল থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে ফিরে আসা এটাও কি পাকিস্তানের কানুনে অপরাধ বলে বিবেচ্য? পাকিস্তান তো আমাদেরই পবিত্র মুল্ক। এই মুল্‌কের এক এক ধুলিকনার হেফাজত আমরা আমাদের জীবন দিয়ে করব।

আমাদের উপর যারা দুনিয়ার জমীনকে সংকীর্ণ করে দিতে চাচ্ছ, মনে রেখ বেশী দিন টিকে থাকতে পারবে না।

ঐ আমেরিকা, যে ওসামা বিন লাদেনের উপর দুনিয়াকে সংকীর্ণ করে দিয়েছে, হারামাঈন শরীফাইন পর্যন্ত তার বাহিনী পৌঁছে দিয়েছে, অতি সত্ত্বর নিজের নির্মম পরিনতি জানতে পারবে।

ইন্ডিয়া বলছিল মাওলানা সাহেব কে যেতে দাও আমরা একটু পরেই তার প্রতিশোধ নিয়ে ছাড়ব। এবার আমরা দেখব আল্লাহওয়ালা মুজাহিদ প্রথমে প্রতিশোধ নেয় না ভূতের পূজারীরা প্রথমে আসে।

এ প্রশ্নটা আপনাদের কাছে রেখে আমি আমার কথা শেষ করলাম। ইনশাল্লাহ বিস্তারিত কথা হবে। ময়দানে বের হবো। অতিসত্ত্বর কাশ্মীরের আজাদীর আনন্দ উৎসব করব। ময়দানে এক সাথে বের হওয়ার চিন্তা করতে থাকুন আমি একা এসেছি, আমার সাথীর প্রয়োজন। যারা আমার সাথে এক হয়ে কাশ্মীরের আজাদী পাগল মুজাহিদীনদেরকে মুক্ত করবে। আমার এমন একদল মুজাহিদীনের প্রয়োজন যারা কাশ্মীরের আজাদীর জন্য লড়তে পারবে। এবং ইন্ডিয়াকে সবক শিখাবে মুছাফাহার পরিবর্তে দু’শ রাকাত নামাজ পড় আর বল, আয় আল্লাহ আপনি আমাদের কাছে এমন কিছু দেখবেন যা দেখে আপনি খুশি হবেন।

*****

মাওঃ মাছউদ আজহার সাহেবের মুক্তির পর দ্বিতীয় ভাষণ

نحمده ونصلى على رسوله الكريم .فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم.

بسم الله الرحمٰن الرحيم؛ قال الله تعالى ياايها الذين امنوا كتب

عليكم القتال و هو كره لكم و عسى أن تكرهوا شيأ و هو خير لكم

و عسى أن تحبوا شياً و هو شر لكم و الله يعلم و أنتم لاتعلمون٠‏

‏وقال النيى صلى الله عليه وسلم الجهاد ماض منذ يوم بعثني الله اليان

اخر امتى تقاتل مسيح الدجال

ভাওয়ালপুরের আত্মাভিমানী মুসলমানেরা! পেছনে ফিরে দেখুন। মক্কার মুশরিকরা হাতে উন্মুক্ত তলোয়ার নিয়ে একটি ঘরকে আবরোধ করে দাঁড়িয়ে আছে। সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, আজ এ পৃথিবীতে এমন এক গুনাহ করা হবে, এমন এক জুলুম করা হবে, যে জুলুমের পরে দুনিয়ার বুকে জুলুমের জায়গীর দারী হবে। কলিজায় হাত রেখে শুনুন, মক্কার মুশরিকরা হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে শহীদ করে দেওয়ার জন্য আজ তার ঘরের চতুর্পার্শ্বে একত্রিত হয়েছে। সকলে নিজেদের হাতে তলোয়ার নিয়ে নিয়েছে। হুজুর (সঃ) ঘরে আছেন, মুশরিকরা অপেক্ষায় আছে। ভূতের পূজারিরা প্রতিক্ষায় আছে যে, তৌহিদের বাণী প্রচার করনে ওয়ালা বাহির হবে তো তাকে টুকরো টুকরো করা হবে। কিন্তু আমাদের পালনে ওয়ালার কুদরত দেখুন! হুজুর (সঃ) সে সময়ই নিজের হাতে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে তাদের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ফজরের পরে মুশরিকরা দেখতে পেল ঘর খালি, আক্বায়ে মদনী মদীনার দিকে রওনা হয়ে গেছেন। মুশরিকরা দ্বিতীয় বার সওর গুহা অবরোধ করে। কিন্তু এখানে ও আল্লাহ তায়ালাই তাকে রক্ষা করলেন। দুশমন মারতে চাচ্ছে আর রব বাঁচাতে চাচ্ছেন।

يمكرون و يمكر الله তারা দুনিয়ার ষড়যন্ত্র নিয়ে আসছে কিন্তু আমার রবের তদবিরের সামনে তাদের ষড়যন্ত্রের কি মূল্য আছে? মক্কার মুশরিকরা কাঁদতে লাগলো, তারা হাহুতাশ শুরু করে দিল। মুহাম্মদে আরবী চলে গেলেন, পরিপূর্ণ নিরাপত্তার সাথে চলে গেলেন, না তারা তাঁকে ধরতে পেরেছে, না তারা তাঁকে বাঁধা দিতে পেরেছে. না তারা তাঁকে শহীদ করতে পেরেছে না তারা তাঁর গায়ে কিছুমাত্র আঁচড় লাগাতে পেরেছে। আজ চৌদ্দশ বছর পর আমরা আবার সেই দৃশ্য দেখতে পেলাম আদভানী কছম খেয়ে বলল যে, মাছউদ আজহারকে আমি ছাড়ব না, আজ ইন্ডিয়া কসম খেয়ে বলছে আমরা এই ব্যক্তি কে ছাড়ব না। যে ব্যাক্তি বাবরী মসজিদ নিয়ে আমাদের সাথে টক্কর দিচ্ছে, যে ব্যক্তি জেহাদের আওয়াজ দুনিয়া বাসীকে জানাচ্ছে, যে ব্যক্তি ঝুলি নিয়ে নিয়ে দুনিয়ার আনাচে কানাচে পাগলেরমত ঘুরে বেড়ায়। মুসলমানদের حَيَّ عَلٰى الْجِهَادِ حَيَّ عَلٰى الْجِهَادِ

(জিহাদের দিকে এসো) বলে বলে দাওয়াত দিয়ে বেড়ায়, আজ সে আমাদের অধীনে এসে গেছে, তাকে ছাড়ব না সমস্ত মুশরিকরা এই এলানই করছিল যে, তোমরা তাকে মুক্তির বৃথা চেষ্টা করতেই থাক, তার জানাযা এই জেলখানা থেকেই বের হবে। এই ব্যক্তিকে ইন্ডিয়ার মাটিতেই দাফন করতে হবে, কেননা আমাদের কাছে চৌদ্দলাখ সশস্ত্র বাহিনী আছে। আমাদের কাছে বি.এস.এফ এর মত মজবুত বাহিনী আছে, আমাদের কাছে র’ এর মত গোয়েন্দা বিভাগ আছে, আমরা তাকে কখনও ছাড়ব না। আমরা এটমি পাওয়ার রাখি। আমরা ওকে ছাড়ব না। আমাদের কাছে এটমবোম আছে, আমরা তাকে ছাড়ব না। কিন্তু পাকিস্তান, সৌদিয়া, ইংল্যান্ডের মধ্যে বসে বসে অসহায় মুসলমান বলছিল আমাদের রব (পালনে ওয়ালা) তাকে মুক্ত করেই ছাড়বেন। ইন্ডিয়া বলছিল আমরা তাকে ছাড়ব না, আমি অনেক বড় শক্তির মালিক। কিন্তু ৩১ শে ডিসেম্বর, জুমার দিন, হজ্জের মত পবিত্র দিনে সমগ্র ইন্ডিয়ার মধ্যে হৈ চৈ পড়ে গেল, হাহুতাশ পড়ে গেল। আজ কেন কাঁদছ? তোমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশোবন্ত সিং তার নব্বই জন কমান্ডার সাথে নিয়ে তার এটমি পাওয়ারের উপর থুথু মেরে এই অসহায় মানুষটিকে নিয়ে বিমানে করে নিয়ে আসে আর বলে, আমরা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা তাকে ইন্ডিয়াতে বন্ধী করে রাখতে পারিনি। হে আমার আল্লাহ! তুমি চৌদ্দশ বছর আগে তোমার হাবিব কে মুক্তি দিয়েছিলে, আজ তার এক আদনা গোলামকে নাজাত দিয়েছ। আজ মুশরিকরা বলাবলি করছে, মুশরিক হেরে গেল আর মুসলিম বিজয়ী হল, তারা বলছিল, আমরা তাকে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বন্ধী করেছি, তাকে ছাড়বো না, বলছিল সবাইকে ছেড়ে দিব তাকে ছাড়ব না। সে কি অপরাধ করেছে যে, তোমরা তাকে ছাড়বে না? প্রতি উত্তরে বলা হল, সে দুনিয়ার সবচে’ বড় অন্যায় করেছে, এ যুগে সে জেহাদের কথা বলে। আমি বললাম, এ অন্যায় তো আমি জেলের মধ্যেও করব, এ অন্যায় আমি তোমাদের শিকল পরেও করব। এই অন্যায় আমি তোমাদের বন্দুকের নিচে বসেও করব। দুশমনদের এ কথা তখনই বুঝে আসল যখন আমি জেলে ৯০০ কয়েদীর সামনে জেহাদের কথা বলছিলাম যেমনি ভাবে পাকিস্তানে বলে থাকি।

জেহাদের দাওয়াতে বাধাদান কারীরা! এ দাওয়াত এ জন্যই তোমরা রুখতে পারবেনা যেহেতু এই দাওয়াতের পেছনে শহীদের রক্ত রয়েছে, সূর্যের কিরণকে যদি তোমরা রুখতে পার তো রুখ? কিন্তু জেহাদের দাওয়াতকে তোমরা রুখতে পারবে না। তোমরা ৬ বছর ধরে আমার গ্রেপ্তারির উপর উল্লাশ করেছ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তোমারা বলতে বাধ্য হয়েছ যে, মুশরিক হেরে গিয়েছে আর মুসলমান বিজয়ী হয়েছে।

ভাগলপুরের মুসলমানেরা! আমাদের প্রতিবেশী জালেম ইন্ডিয়া এমন কোন জুলুম নেই যা সে করে না, এমন কোন নির্যাতন নেই যা সেমুসলমানদের উপর করেনা। এই গরুর পূজারিরা, এই গরুর পেশাব পানকারি হিন্দুরা যাদেরকে মুপ্তই বাদশাহী মিলেছে। তারা তাদের অন্ধকার কুঠরিতে যে সমস্ত বন্দিদেরকে বন্দি করে রেখেছে, হে মুসলমানেরা! আল্লাহ তাদের অবস্থা তোমাদের কাছে শুনাবার জন্য আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। নিজেদের নরম নরম বিছানায় যারা আরাম করছ, তোমাদের ঐ সমস্ত মুসলমান ভাই যখন হিন্দু বেনিয়াদের মার খেয়ে পানি পানি করে চিৎকার করে তখন তাদের মুখে পেশাব করে দেওয়া হয়।

হে আমার মুসলমান ভাইয়েরা! এক জমানা এমন ছিল রোম বাদশাহর দরবারে এক রুমি সেনা অফিসার একজন মুসলমান কয়েদীর চেহারায় থাপ্পড় মেরেছিল। মুসলমান কয়েদি থাপ্পড় খেয়ে আমিরুল মুমেনীন মূয়াবিয়া (রহ.) কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল, মূয়াবিয়া আপনি আমাদের আমীর আর আমার চেহারায় থাপ্পড় মারা হচ্ছে, আপনি কাল কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর কাছে জওয়াব ঠিক করে রাখুন। তখন সেখানে মূয়া’বিয়া (রহ.) এর পক্ষ থেকে গোয়েন্দা বসা ছিল। সাথে সাথে এই খবর মূয়া’বিয়া (রহ.) এর দরবার পর্যন্ত পৌঁছে গেল। আমিরুল মু’মেনিন নিজের ঘুম নিজের আরাম সব কিছুকে নিজের উপর হারাম করে দিলেন। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলেন, বলতে লাগলেন আমি মুসলমানদের আমীর, আর মুসলমানের চেহারায় থাপ্পড় মারা হচ্ছে, এ বিশাল শক্তির কি ফায়দা? যদ্দারা মুসলমানের ইজ্জত রক্ষিত হয় না। ঐ শক্তির কি যোক্তিকতা, যদ্দারা মুসলমানের চেহারা রক্ষিত হয় না। হযরত মূয়া’বিয়া (রহ.) নিজের সেনাপতিকে ডাকলেন। বললেন, এই আমার খাজানা, এই তার চাবি, যাও যত খরচ করার প্রয়োজন হয় কর। কিন্তু যে কোন মূল্যে তাকে বন্দী করে নিয়ে এস, মুসলমান কয়েদীর চেহারায় যে থাপ্পড় মেরেছে। সেনাপতি নৌকা তৈরি করলেন, তোপ-হাতিয়ার নিলেন, সামুদ্রিক পথে রোম পৌঁছে গেলেন। শেষ পর্যন্ত এ রোম সেনাপতিকে পায়ে বেড়ি দিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এলেন।

আমিরুল মু’মিনীনের খেদমতে উপস্থিত করলেন। আমিরুল মু’মিনীন উক্ত মুসলমান কয়েদিকে মুক্ত করলেন। শেষে আমিরুল মু’মিনিন ঐ কয়েদিকে বললেন, তোমার অপরাধী তোমার সামনে উপস্থিত, তুমিও তার চেহারায় থাপ্পড় মেরে তোমার প্রতিশোধ নিয়ে নাও। মুসলমান কয়েদি তার অপরাধী কে থাপ্পড় মেরে প্রতিশোধ নিয়ে নিলেন। আমিরুল মু’মিনীন উক্ত রোমী কয়েদিকে বললেন, যাও, তুমি মুক্ত। কিন্ত রোমের সম্রাট কে গিয়ে একথা বলবে, আমরা মুসলমান, আমরা এক কালেমা ওয়ালা, আমরা আল্লাহর নাম নিয়ে থাকি, আমরা মোহাম্মদে আরবী (সঃ) এর কালেমা পড়ে থাকি, আমরা এক শরীরের মত, আমরা এক প্রাণের মত, আমাদের রক্ত এক, আমাদের চিন্তা চেতনা এক, যদি এক জনের চেহারায় থাপ্পড় পড়ে তাহলে গোটা মুসলমান জাতি তোমাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েই খান্ত হবে।

রোমী কয়েদির চেহারায় থাপ্পড় লাগল, রোম সম্রাট ও নিজের দরবারে বসে কেঁপে উঠল।

ভাইয়েরা আমার! আজ আপনাদের যে সাথী গ্রেপ্তার হয়, তার চেহারায় একটা নয়, হাজারো থাপ্পড় মারা হয়। আমাদেরকেজিহাদের দাওয়াতে বাঁধা দান কারীরা! তোমাদের কাজ ছিল যে, তোমরা তাদের হেফাজত করবে। এটা তোমাদের দায়িত্ব ছিল যে, তোমরা এক এক জন মুসলমানের ইজ্জত আবরুর হেফাজতের জন্য আক্বায়ে মদনীর দীনের হেফাজতের জন্য নিজেদের জান-মালের ক্বোরবানী দেওয়া।

ও দুনিয়ার কাপুরুষ মানুষেরা! দুনিয়ায় কতদিন তোমরাজীবিত থাকবে? কবরস্থান তো প্রতিনিয়তই আবাদ হচ্ছে। নিজেদের ঘরে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে জিন্দেগী অতিবাহিত কারীরা! আর কতদিন শান্তিতে বসে থাকবে? শান্তির জীবন তো এক দিন শেষ হয়ে যাবে। দুনিয়ার মুছিবতে ভীত হয়ে জিহাদের দা’ওয়াত থেকে বাধা দানকারীরা! আমার মত অসহায়কে দেখ। ছয় বছর পর্যন্ত দুশমনের জিন্দানখানায় থাকার পর আজ আবার সুস্থ শরীরে তোমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। এমন কোন অত্যাচার নেই যা আমার উপর করা হয়নি। এমন কোন কঠোরতা নেই যা আমার উপর করা হয়নি। কিন্তু রব যখন বাঁচাতে চাইবেন, তখন কোন শক্তি মারতে পারে না। যখন রব মারবেন, তখন কেউ বাঁচাতে পারবে না। তার পরেও জিহাদ কেন ছাড়ব? নিজের ঈমান কেন ছাড়ব? নিজের চিন্তা চেতনা কেন ছাড়ব?

জালেম ইন্ডিয়া! তুমি কতদিন পর্যন্ত এই জুলুম করতে থাকবে? জুলুমের রাত শেষ পর্যন্ত শেষ হয়েই যাবে। এবং জুলুম অত্যাচার অত্যাচারীর দিকে শেষ পর্যন্ত ফিরবেই। আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে স্বদেশে পৌঁছে দিয়েছেন। নিজের মরুব্বী ও ভাইদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। করাচি থেকে খায়বর পর্যন্ত মুক্তির উল্লাস করা হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ্‌, এটা আমার মুক্তি নয় বরং ইসলামের বিজয়ের উল্লাস হচ্ছে। আমিতো কিছুই না। তাই আমার মুক্তির নয় বরং মুশরিকদের পরাজয়ে উল্লাস করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়া তুমি শুনে নাও! যেমনি ভাবে তোমাকে এখন পরাজয়ের গ্লানি বরণ করতে হয়েছে, ইনশাআল্লাহ কাশ্মীরের ব্যাপারেও তোমাকে পরাজয় বরণ করতে হবে। কাশ্মীরের জিহাদ পরিপূর্ণ ভাবে শরয়ী’ জিহাদ, সম্পূর্ণ ইসলামী জিহাদ। আজ কাশ্মীরের মধ্যে যে প্রচেষ্টা চলছে, তার ব্যাপারে আমাদের ধারণা ও চিন্তা চেতনা সুস্পষ্ট কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ। কাশ্মীরের মুসলমানেরা পাকিস্তানের সাথে একিভূত হওয়ার জন্য অস্থির হয়ে আছে। কিন্তু ইন্ডিয়া প্রতি দিন সেনাবাহিনীকে সেখানে পাঠায়।

হে পাকিস্তানের মুসলমানেরা! কাশ্মীরীরা তোমাদের ভাই৷ অত্যাচারের যে স্টীমরোলার তাদের উপর চালানো হয়, প্রকৃত অর্থে আকাশও যখন এই অত্যাচার দেখে তখন সে কেঁদে উঠে। কিছুদিন আগে যখন আমি জম্মু কাশ্মীরের জেলে ছিলাম ইন্ডিয়া আর্মী রাজুয়ীর এক এলাকায় এক মুসলমান বসতিতে শুধু এজন্য হামলা করেছে যে, যদি কোন মুজাহিদ তাদের এলাকায় আসতো তো তাদেরকে তারা খানা খাওয়াত। ইন্ডিয়া আর্মীদের জালিম পশুরা সেখানে ফায়ারিং করছিল। তাদের সবাইকে শহীদ করে দেওয়া হল, এক গর্ভবতী মহিলা ছিল, তার পেট ফাঁড়া হল তার পেটের বাচ্চা বের করে জবাই করে দিল।

হে মুসলমানেরা! আজ ইসলাম এমন দুর্বল হয়েছে, আজ ইসলাম এত অপমানিত হয়েছে যে, উম্মতে মোহাম্মাদিয়া দুনীয়াতে আসার আগেই তাকে মৃত্যুর পরওয়ানা দিয়ে দেয়া হয়। কাল পর্যন্ত আমাদের জীবন রক্ষিত ছিল। আমাদের ইজ্জত আবরু সংরক্ষিত ছিল। আমরাতো কাফেরদের ইজ্জতের সংরক্ষণ করতাম। আর আজ গর্ভবতী মায়েদের পেট ফাঁড়া হয় শুধু আমাদের অলসতার কারণে। আমাদের কাপুরুষতার কারণে।

দুনিয়ার নেশায় উম্মত্তরা! কতদিন পর্যন্ত নোট গুনে গুনে পাগল হতে থাকবে? বলে দাও, এই কাফেররা তোমাদেরকে কি দিয়েছে? মুসলমানদেরকে কি দিয়েছে? শান্তি শান্তি করে চিৎকারকারীরা! আমাদের উপর তো সব সময় যম চাপানো হচ্ছে। আমাদের পবিত্র জন্মভূমিকে দু’টুকরো করা হয়েছে। আজও তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আজ ও ‘র’ এর কর্মসুচিতে লিখা হয়েছে পাকিস্তানকেও আমরা আত্বসাৎ করব, পাকিস্তানকেও আমরা ধ্বংস করে ছাড়ব। মুসলমানেরা তওবা কর কাপুরুষতা থেকে, তওবা কর মালের মুহাব্বত থেকে, তওবা কর মুনাফেকী থেকে, যদি তোমরা তওবা না করে থাক তা হলে তো তোমরা নিক্ষিপ্ত হবে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।

বন্ধুরা আমার! আমি আপনাদেরকে স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই, এদেশের হেফাজত আমাদের উপর ওয়াজিব। কাশ্মীরকে স্বাধীন করা আমাদের উপর ফরজ। যে ভূমিতে আজান হয়ে থাকে ভাইয়েরা আমার সেই ভূমিতে কাফেরদের বাদশাহীর ক্ষমতা দেয়া যায় না আমাদের এক বুজুর্গ স্বপ্নে দেখেন, যখন পাকিস্তান দু’টুকরো করা হল, তখন হুজুর (সঃ) খুব কাঁদছেন, এ জন্য যে, একটা রাষ্ট্র যা ইসলামের নামে পৃথক হয়েছিল, সেটাকে আবারও টুকরো করা হল পাকিস্তানে থাকাকালীন পাকিস্তানের মর্তবা তোমাদের বুঝে আসে না যদি ইন্ডিয়ার কোন জেলে যাও তাহলে পাকিস্তানকে এক পবিত্র জান্নাতের মত মনে হবে। যেখানে ঈমানের ফল্গুধারা, যেখানে ইসলাম আছে, যেখানে দীন আছে, যেখানে জিহাদ আছে, যেখানে প্রেরণা আছে। গুটি কয়েক মানুষ অসৎ হওয়ার ফলে পুরো মুলক্ অসৎ হয়ে যায় না। মদীনাতে ও আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই-এর মত মোনাফেক থাকতো।

ও হিন্দুরা! তোমরা জেনে রাখ, পাকিস্তান আমাদের কাছে এক পবিত্র মসজিদের মত। আমরা এই মসজিদের সংরক্ষনের জন্য আমাদের প্রাণ বিসর্জন দিতেও কুষ্ঠাবোধ করব না। আমাদের এই ভূমির দিকে বাঁকা চোখে যারা তাকায় তাদের কে আমি বলব, তোমাদের চোখ উপড়ে ফেলা হবে। এই পবিত্র ভূমিকে পূর্নাঙ্গ করা হবে। কাশ্মীরকে তার অন্তর্ভূক্ত করা হবে ইনশাআল্লাহ। আজ খায়বর থেকে করাচি পর্যন্ত, সৌদিয়া থেকে নিয়ে আমেরিকা পর্যন্ত আনন্দ উল্লাশ করা হচ্ছে, এক মুসলমান মুক্তি পেয়েছে বলে। যখন কাশ্মীরের এক কোটি মুসলমান স্বাধীন হবে, তখন কেমন আনন্দ করা হবে। এই আনন্দ অতি সত্বর করা হবে ইনশাআল্লাহ।

ইন্ডিয়া তুমি আমাদের প্রতিবেশী, আমরা চাই তুমি নিরাপদে থাক, কিন্তু তোমাকে তোমার অত্যাচার বন্ধ করতেই হবে। যে সরকার বাহিনীর অত্যাচারের স্টীম রোলার কাশ্মীরের পবিত্র মাটিতে চালানো হচ্ছে, তুমি যদি তা বন্ধ না কর, তাহলে আমাদের সামনে মায়া কান্না দেখিওনা। আমরা ইটের আঘাতের জওয়াব পাথর দিয়ে দেওয়ার মত এক জাতী। আমার কাছে সেখানকার প্রশাসক এসে বলছিল। সে বলল, কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান কি? আমরা সেখানে সড়ক বানিয়ে দেব, ইস্কুল বানাবো, কলেজ বানাবো, ইউনিভীর্সিটি বানিয়ে দেব, আমরা এখানে ঝর্ণা প্রবাহিত করে দেব। আমি জওয়াবে বললাম, আমরা মুসলমান, আমরা ভিখারি নই। এই পার্থিব সামগ্রী দিয়ে তো দুনিয়ার পা চাটা গোলামদের সন্তুষ্ট করা যায়। এইগুলো দিয়ে বেশ্যা মেয়েদেরকে সন্তুষ্ট করা যেতে পারে। আমরা তো ঐ জাতি যারা প্রতিশোধ নেওয়া ছাড়া স্বস্থির নিশ্বাস নেয় না। আমরা তো ঐ জাতি যারা নিজেদের ইজ্জতের সওদা করি না। আমাদের যে রক্তের ফোঁটা বহানো হয় আমরা তার প্রতিশোধ নিয়েই থাকি। আমাদের যে সম্মান আমাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় আমরা পুরো দুনিয়ার বাদশাহী ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকে বে ইজ্জত করতে জানি। আমাদের ইজ্জতের সাথে থাকতে দাও, আমরা তোমাদের ইজ্জতের সাথে থাকতে দেব। আমাদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে থাকতে দাও আমরা তোমাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেব। কিন্তু যদি আমাদের দিকে ভুল পদক্ষেপ নাও আর এ ধারণা করতে থাক যে, সড়ক বানিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখালে কাজ হয়ে যাবে তাহলে তোমরা আহমকদের স্বর্গে বাস করছ।

আমার মুসলমান ভাইয়েরা! আমি শেষ কথা বলে দিচ্ছি। যারা আমার কথাকে উপরে পৌঁছায়, তোমাদেরকেও বলছি, তোমরাও মুসলমান। এ কোরআন শুধু আমার জন্যই নয়, তোমাদের জন্যও শুধু আমাকেই কবরে যেতে হবে না, তোমাদরও যেতে হবে। আমি যদি ৬ বছর পর্যন্ত নিজের বৃদ্ধ বাবা মাকে ছেড়ে যেতে পারি, তা হলে যে জিম্মাদারী আমার, সে জিম্মাদারী তোমাদেরও। এ জন্য তোমরা লিখ, ভাল কথা, কিন্তু আমি যা বলছি তোমাদেরও বলছি, উপস্থিতদের ও বলছি, জিহাদ ফরজ। আজ ইন্ডিয়া কাশ্মীরের মধ্যে অনুপ্রবেশ করার পর যেহেতু কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ সেহেতু পাকিস্তানের মুমলমানদের উপর জিহাদ ফরজ। যে ব্যক্তি জিহাদ ফরজ হওয়ার পরে ও জিহাদ করবে না অথবা মুজাহিদদের কে সাহায্য সহানুভূতি করবেনা আল্লাহ তাকে মৃত্যুর আগে কোন ভয়ানক বিপদে আক্রান্ত করবেন। এ হল হুজুর (সঃ) এর ভবিষ্যদ্বানী৷ যে ব্যক্তি জিহাদ ফরজ হওয়ার পরে জিহাদ করবে না সে মুনাফেকির এক শাখার উপর মারা যাবে। (মুসলিম শরীফ)

মুসলমান ভাইয়েরা! কবরতো খোদাই হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুর সময়তো নির্ধারিত হয়েই আছে। আজ এই বিশাল জনগোষ্ঠি এখানে বসা, কাল হতে পারে সবাই কবরের অন্ধকার কুঠরীর বাসিন্দা। এখানে অন্য এক শ্রেণী বসা থাকবে। আমি তোমাদের বলব, আল্লাহ কে সন্তুষ্ট করে নাও। মজলুম মুসলমানদের সাহায্য কর। নিজেদের পকেট উজাড় করে দাও। জিহাদের জন্য নিজেদের ঈমান ও দিলকে উন্মোচিত কর। জিহাদের জন্য সশস্ত্র হয়ে যাও। ইন্ডিয়া কে বলে দাও যদি তুমি অত্যাচারের স্ট্রীমরোলার বন্ধ না কর, তাহলে তোমাদের অহংকারকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হবে। যখনই সাথীরা আমাকে জেল থেকে মুক্ত করার চিন্তা করেছিল তখনই মানুষ বলাবলি করছিল যে, এতে তো জীবনের হুমকি আছে। আমি বললাম আমাদের জীবনের কোন হুমকি নেই। কোন আশংকা নেই। এ জন্যই যে, যিনি জীবন দিয়েছেন, এই জীবনকে তার কাছে যেতেই হবে। মনে রেখ, তোমরা যে মৃত্যুকে সবচে’ বড় শাস্তি মনে করছ সে মৃত্যুতে আমাদের কাছে সবচে” সৌভাগ্যের। আমাকে বলা হল বিমান ছিনতাই হয়েছে। এতে হয়তো আপনার জীবনের উপর হামলা আসতে পারে। আমি বললাম বিমান চিন্তাই হওয়ার কারনে যদি আমাকে হত্যা করা হয় তাহলে আমি বিমান ছিন্তাই কারীদের হাজার শুকরিয়া আদায় করব যে, তোমরা তো আমাকে আমার প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছার রাস্তা সহজ করে দিয়েছ। তোমরা আমাকে মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছ। আমিতো দিনের মধ্যে অসংখ্য সিজ্দা করে আল্লাহর কাছে পৌঁছে থাকি। যে রবকে আমরা সিজ্দা করি সে রবের কাছে যেতে আমরা ভয়পাব? তোমরা যাকে এক বার নমস্কার দাও তার কাছে যেতে ভয় পাওনা, আমরা সর্বক্ষন, কখনও রুকুর মধ্যে তার সামনে, আবার কখনও সিজ্দার মধ্যে তার সামনে, আমরা তো দিনরাতই তার কাছে এই দোয়াই করে থাকি যে, হে আমার ‘পরওয়ারদিগার’ আমার জীবন তোমার রাস্তায় কবুল করে নাও। আমাকে যারা মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছ আমাদের যখন মৃত্যু আসে তো উহা মৃত্যু নয়, উহাতো প্রকৃত জিন্দেগী৷ যখন শহীদ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় আসমানের মধ্যে খুশির বন্যা বয়ে যায়৷ আসমানে বিয়ের সাজ সাজ রব পড়ে যায়। হুরেরা প্রথম আকাশে নেমে আসে। শহীদকে দেখতে থাকে, বলতে থাকে যে, তুমি কখন উপরে আসবে? বেহেস্ত থেকে কাপড় আনা হয়। সুগন্ধি আনা হয়। যদি আমাদের এমন মউত এসে যায় তাহলে এর চেয় সৌভাগ্য আর কি হতে পারে।

আমার নওজোয়ান ভাইয়েরা! শাহাদাতের মৃত্যুর চেয়ে সৌভাগ্যের আর কি হতে পারে? কিছুই হতে পারে না। এ জন্য মুসলমানদের আল্লাহকে সাক্ষী রেখে জিহাদের দাওয়াত দিচ্ছি। সম্মান ও আত্মগৌরবের রাস্তার দাওয়াত দিচ্ছি, এমন এক রাস্তার দাওয়াত দিচ্ছি, যে রাস্তার দাওয়াত আল্লাহ তায়ালা সাড়ে চারশ আয়াতের মাধ্যমে আসমান থেকেই দিয়েছেন। এমন এক রাস্তার দাওয়াত দিচ্ছি যে রাস্তায় হুজুর (সঃ) স্বয়ং সাতাশ বার বেরিয়েছেন। এমন এক রাস্তার দাওয়াত দিচ্ছি যাতে জান্নাত অর্জিত হয়। যার মধ্যে সুখ শান্তি অর্জিত হয়। যদ্দারা মানুষ গোলামীর জিঞ্জর ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলে। মুসলমান ভাইয়েরা জিহাদ করবে কি? করবে না? ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে লড়বে কি? লড়বে না? জিহাদ করতে যাবে না তো এখানে এসে রকেট পড়বে। আর জিহাদ করতে যাবে তো কারো রকেটের মুখ এ দিকে আসতে পারবে না। জিহাদ করতে যাবে না তো ইন্ডিয়া পাকিস্তানকে গ্রাস করার প্ল্যান করে বসে আছে। তোমরা যদি প্রস্তুত হও তাহলে ইন্ডিয়া তার ইন্ডিয়া ছাড়তে প্রস্তুত হবে ইনশাআল্লাহ। এ জন্য যে, হিন্দু বেনিয়াদের জীবন প্রিয়, আর মুসলমানদের ঈমান প্রিয় হয়ে থাকে। তোমরা প্রস্তুত কিনা? কাশ্মীর যাওয়ার জন্য। আল্লাহকে ধোঁকা তো দিচ্ছ না? মউতকে তো ভয় পাবে না? গুলিকে তো ভয় করবে না? জিঞ্জির এবং হাত কড়াকে ভয় তো করবে না? কাপুরুষতা তো দেখাবে না? হিন্দু বেনিয়াদেরকে পিঠ তো দেখাবে না? রক্ত দিতে ভয় তো পাবে না? যখন তোমরা রক্ত দিতে ঘাবড়াবে না তখন আল্লাহ তোমাদের রক্ত থেকে মিশকে আন্বরের মত সুগন্ধি ছড়াবেন। আর এ সুগন্ধি যেখানে যাবে সেখানেই গোলামীর জিঞ্জির ছিন্ন ভিন্ন হবে। আর কোরআনের আহকাম বাস্তবায়িত হতে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

*****

মাওঃ মাছঊদ আজহার সাহেবের মুক্তির পর পবিত্র ঈদুল ফিতরের (১৪২০ হিঃ) দিনে ঈদের নামাযের আগে ঈদগাহে এই ভাষণ দেন

نحمده و نصلي على رسوله الكريم

আমার সম্মানিত মুসলিম ভাইয়েরা! আজ পবিত্র ঈদের দিন। সমগ্র মুসলিম বিশ্বে মুসলমান ঈদের আনন্দ উৎযাপন করছে ইসলামও আমাদেরকে এ মর্মে অনুমতি দিয়েছে যে, আমরা এ দিনে খুশী করব। কিন্তু আজ খুশীর দুয়ার বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

আজ ঈদের দিন, কিন্তু চেচনিয়ার মুসলমানদের উপর কী নির্মম অত্যাচার হচ্ছে। এ দিনেও জালিমরা তাদের উপর বোম্বিং করা বন্ধ করেনি, আজ আমাদের ছেলে মেয়ে গুলো নতুন কাপড় পরে রেখেছে, কিন্তু চেচনিয়ার মুসলমান আজও নতুন কাপড় পরা থেকে বঞ্চিত। আমাদের মেয়ে গুলোতো যার যার ঘরে আনন্দ করছে, কিন্তু চেচনিয়ার মুসলমান মেয়েরা আজ ও এ ব্যাপারে আশংকায় আছে যে, জানা নেই কোন্‌ বোম, আর কোন রকেট এসে আমাদের উপর পড়ে।

মুসলমান ভাইয়েরা! আজ ঈদের খুশী সে সময়ই পরিপূর্ণ হবে যখন কাশ্মীর ইন্ডিয়ার জবর দখল থেকে মুক্ত হবে। আজ তো আমরা নিরাপত্তার সাথে ঈদ করে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের কাশ্মীরের মুসলমানরা আজ ও বন্দুক ও বুটের নীচে ঈদ যাপনে বাধ্য। আর তাদের উপর যে অত্যাচার ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে, যাতে মানবতার মাথা লজ্জায় হেট হয়ে যায়। আমাদের জন্য ঈদের আনন্দ করা এ জন্যও মুশকিল যে, আমাদের মসজিদে আক্বসা ইয়াহুদীর দখলে।

আমাদের জন্য ঈদের আনন্দ করা এ জন্যও মুশকিল যে, মুসলমান ঐ রাস্তায় চলা ছেড়ে দিয়েছে, যে রাস্তায় চললে তাদের ইজ্জত মিলতো. তাদের সম্মান মিলতো, তাদের দুনিয়ার বুকে শান্তি আর নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার সুযোগ মিলতো, তাদের দুনিয়ার মধ্যে আল্লাহর দীন বিজয়ী করার সুযোগ মিলতো।

আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) ঈদের দিনে ইয়াতীম শিশুদের খেয়াল রাখতেন। কিন্তু আজ আমাদের কাছে ইয়াতীমদের সংখ্যা এত বেশী যে, উম্মত পুরো হয়রান ও পেরেশান। দুনিয়ার যে কোন প্রান্তে নির্মিত রকেট এবং বোমা আমাদের ইয়াতীমদের এ সংখ্যাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের বিধবাদের সংখ্যাকে আরো দ্বিগুন করে দিচ্ছে। মসজিদে আক্বসা আমাদের কাছে চিৎকার দিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করছে যে, তোমরা তো ঈদ উৎযাপন করছ, কিন্তু আমার ঈদ কোন দিন হবে? মুসলমান শিশুরা আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করছে যে, আমরা কি এ উম্মতের অর্তভূক্ত নই? আমরা কি এ উম্মতের মা, আর বোন নই?

ঈদের আনন্দে মত্তরা! আজ এ সমস্ত মুসলমানদের সামান্য স্মরণ কর, তোমাদের ঐ সমস্ত ভাইদের স্মরণ কর, যারা অত্যাচারে অত্যাচারে জর্জরিত! যারা দুশমনের জিন্দান খানার অন্ধকার কুঠরীতে বন্দী, আর তাদের উপর অত্যাচারের ষ্ট্রীমরোলার চালানো হচ্ছে, আর জেলের অন্ধকার কুঠরীতে তাদের সাথে এমন ব্যবহার করা হচ্ছে, যা কোন মানুষের সাথে করা যায় না। এমনকি কোন সুস্থ মস্তিষ্ক মানুষ এমন আচরন পশুদের সাথে করার চিন্তাও করে না ।

আজ, আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) কে গালি দেয়া দুনিয়ার সবচে’ প্রিয় স্বভাবে পরিনত হয়েছে। যে চায় নতুন নতুন বই রচনা করে ফেলে। কেউ কেউ কোরাআনের উপর প্রশ্ন করে বসে। কেউ কেউ হুজুর (সঃ) এর উপর প্রশ্নের বান নিপেক্ষ করে। দুনিয়া এমন লোকদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

অর্থৎ আজ দুনিয়ার বুকে কেউ যদি সম্মান পেতে চায়, তাহলে তাকে আমাদের নবীকে গালি দিলেই হয় তাকে সম্মানের সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়া হয়। রাসুলে আকরাম (সঃ) এর পবিত্র বিবিদের কে অপবাদ দিলেই সম্মানি হওয়া যায়। আমাদের দীন, আমাদের ইসলামকে কটাক্ষ করলে সম্মানি হওয়া যায়। মুসলমানদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করলেই সম্মানি হওয়া যায়।

আজ এ পরিস্থিতিতে যখন মুসলমান ভুলে গিয়েছে, ইসলাম কি জিনিস, ঈমান কি জিনিস, ইসলামি জাতীয়তা কি জিনিস, ইসলামী ভ্রাতত্ববোধ কি জিনিস, তখন আমরা ঈদ উৎসব করছি। আমাদের ঈদ তো তখন ঈদ হবে, যখন মুসলমান প্রকৃত মুসলমান হয়ে যাবে। কাফের আমাদের উপর জুলুম করার আগে শত শত বার চিন্তা করবে যে, এরা তো এমন এক জাতি যারা নিজেদের এক এক ফোঁটা রক্তের মূল্য হিসেব করে রেখে দিয়েছে।

মুসলমান ভাইয়েরা! আজ আমি এখানে কোন প্রচলিত বয়ান করার জন্য আসিনি। কাফেররা আমাদের কে কেন্দ্র বিন্দু বানিয়েছে। আমার মাথার মূল্য ঘোষনা করা হয়েছে। আমি জানি না, আমি আপনাদের মাঝে কতদিন থাকব। কিন্তু মুসলমানেরা স্মরণ রাখ, আজ দুনিয়াতে কুত্তার অধিকার নিয়ে যে কথা বলবে সে জীবিত থাকতে পারবে। কিন্তু মুসলমানের অধিকার নিয়ে কথা বলনেওয়ালা জীবিত থাকতে পারবে না। আজ দুনিয়ার মধ্যে হিংস্র পশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলা যায়। কিন্তু ইসলামের অধিকার নিয়ে কথা বলা, মুসলানদের অধিকার নিয়ে কথা বলা এত বড় অপরাধ যে, এ অপরাধের পর দুনিয়াতে জীবিত থাকার অনুমোদন দেয়া যায় না আমরা এ পবিত্র মাটিকে শান্তি ও নিরাপত্তায় ভরে তুলছিলাম আজ এ জমিন কে আমাদের উপর সংকীর্ণ করে তোলা হচ্ছে।

আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) মুসলমানদের জন্য এক সুস্পষ্ট নীতিমালা রেখে গিয়েছেন। ঐ নীতিমালা কি ছিল? অতীতের দিকে তাকিয়ে দেখুন। ঐ নীতিমালা এ ছিল যে, যখন এক মুসলমানের রক্তের মাছআলা এলো, হুজুরে আকরাম (সঃ) এক গাছের নীচে বসলেন, হুজুর (সঃ) এর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, মক্কার মুশরিকরা হজরত ওসমান গনী (রাঃ) কে শহীদ করে দিয়েছে বা হজরত ওসমান গনী (রাঃ) কে গ্রেপ্তার করেছে. হুজুর (সঃ) তার আসহাবদের বললেন, এরকম জীবনের কি মূল্য? যখন আমাদের মুসলমানদের জান সংরক্ষিত না হয়। এক গাছের নীচে বসলেন, চেহারা মুবারক ঈমানী জয্বায় রক্তিম হয়ে উঠছিল, আজ দুনিয়াবাসি বলে, তোমরা খুনখারাবীর কথা বলছ। মৌলভী এবং আলেম হয়ে লড়াই এবং ঝগড়ার কথা বলছ। খোদার কছম! আমরা শান্তি প্রিয় মানুষ, কিন্ত কেউ যখন আমাদের রক্ত নিয়ে খেলা করে, আমাদের ইজ্জত নিয়ে খেলা করে তখন আমরা রক্ত পিপাসু তলোয়ার হয়ে যাই, তখন আমরা এমন বোম্‌ হয়ে যাই, যা ডানে বামে সবদিকে নিজের শক্তিকে প্রমান করে দেয়। আমাদের নবী (সঃ) বসে গেলেন, বাইয়াত শুরু হয়ে গেল। কিসের উপর এ বাইয়াত? এ বাইয়াত মওতের উপর লওয়া হয়েছিল। যে, আমরা মরে যাব, কিন্তু মুসলমানের রক্তের বিনিময় নিয়েই ছাড়ব। মুসলমানদের জান মূল্যবান, মুসলমানদের ইজ্জত মূল্যবান। চৌদ্দশ সাহাবা তাদের প্রিয় নবীর সাথে এই জমিনের সবচে’ সন্মানী ব্যক্তির সাথে, আল্লাহর পর সবচে’ বড় ব্যক্তিত্ব সাথে মওতের উপর বাইয়াত নিচ্ছেন। আজ কোথায় বাইয়াত গ্রহনকারিরা? চেচনিয়ার মুসলমানদের জবাই করা হচ্ছে, আর তোমাদের বাইয়াত কিসের উপর হচ্ছে।

মুসলমানেরা! আজ এ বিশাল ভূখন্ডের যেখানেই খোড়া হয়, মুসলমানের লাশই বের হয়ে আসে কেন অন্য কোন জাতির লাশ বের হয় না? আজ দুনিয়াতে যদি বিধর্মী কোন দেশের লোক অন্যত্র কোথায়ও গ্রেপ্তার হয় তা হলে তার বাহিনী বর্ডারে চলে আসে আমাদের তো অসংখ্য গ্রেপ্তার হচ্ছে, যবাই করা হচ্ছে , মৃত্যুদন্ড দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তাদের ব্যাপারে কথা বলার মত কেউ নেই। আমরা তো আজ এলাকায় এলাকায় বিভক্ত হতে চলছি। গোত্রে গোত্রে বিভক্ত হতে চলছি। বিভিন্ন মতে বিভক্ত হতে চলছি। জিহাদের কথা শুনে আমাদের কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়, আমরা যখন মৃত্যুকে ভয় পেতে শুরু করছি তো সব দিক থেকেই আমাদের উপর মৃত্যুর যম চাপানো হচ্ছে।

হে আমার মুসলমান ভাইয়েরা! হে ঈমান দারেরা! আল্লাহ তায়ালার ভয় নিজেদের মধ্যে তৈরী কর। আজ আমরা সুন্দর সুন্দর কাপড় পরিধান করে এখানে বসে আছি, আমাদের সবাইকে মরতে হবে। আল্লাহর কাছে গিয়ে কি জবাব দেব? কিয়ামতের দিন কাশ্মীরের বোন দাঁড়াবে এবং বলবে, হে আল্লাহ! হিন্দুরা আমার ইজ্জত লুটে নিয়েছিল আর পাকিস্তানীরা কিছুই বলেনি। কাশ্মীরের নিস্পাপ বাচ্চারা দাঁড়াবে আর বলবে, হে আল্লাহ! আমাদের সাথে দুনিয়ার নিকৃষ্টতম জুলম করা হয়েছিল৷ কিন্তু পাকিস্তানিরা ভয় পাচ্ছিল যে, ইন্ডিয়া আবার আমাদের উপর হামলা না করে বসে। ঐ বাচ্চা যাকে জন্ম গ্রহন করার আগেই মায়ের পেট থেকে বের করে জবাই করা হল, কিয়ামতের দিন দাঁড়াবে আর বলবে হে আল্লাহ! যখন নবী জীবিত ছিলেন তখন কেউ কোন মুসলমান কে থাপ্পড় পর্যন্ত মারতে পারেনি। আর আজ আমাদের কে দুনিয়াতে আসার আগেই মৃত্যুর পরওয়ানা দিয়ে দেয়া হয়।

এ পাকিস্তানিরা যারা কাশ্মীর কে শাহরগ বলে থাকে, যারা কাশ্মীর কে নিজেদের অংশ মনে করে, তারা দূরে বসে আছে। তারা তাদের ক্লাবগুলোতে আড্ডা মারছে। নিজেদের বাচ্চাগুলোকে পালছে। কুফর কে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিচ্ছে। আজ বলো তোঃ এই কাফিররা আমাদের কি দিয়েছে? আমাদের ঘর থেকে তারা ঈমানের দৌলতকে বের করে দিয়েছে। তারা আমাদের ঘর থেকে কোরআন বের করে বাইরে ছুড়ে মারছে। তারা আমাদের জবাই করছে। আমাদের মাথা দিয়ে তারা ফুটবল খেলছে। আমাদের মসজিদ গুলো ছিনিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তাদের সাথে কথাবলার মত কাউকে দেখা যায় না।

আজ দুনিয়ার কত রাষ্ট্র এমন আছে, যেখানকার সকলেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। কিন্ত আমাদের তো ট্রেনিং নিতেও ভয় লাগে, যে কোন দিক থেকে আমাদের উপর আপদ এসে না যায়। এক সাধারণ জানোয়ারের ও তার জীবনের চিন্তা আর দরদ আছে। কিন্তু মুসলমানের না তার দীনের জন্য কোন চিত্তা আর দরদ, না তার ঈমানের জন্য কোন ফিকির আছে। জিহাদে গিয়ে মৃত্যু আসে না। যদি জিহাদে গিয়ে মৃত্যু আসতো তাহলে আমি আপনাদের সামনে আসতে পারতাম না। না আফগানিস্তানে রুশদের গুলি আমাকে সময়ের আগে মারতে পেরেছে, না কম্যুনিষ্টদের বোম্বিং আমাকে ধ্বংস করতে পেরেছে, না ইন্ডিয়ার জেলে ছয় বছর ধরে তার সমস্ত বাহিনী একত্রিত হয়ে আমাকে শেষ করতে পেরেছে। যখন মৃত্যুর সময় আসে তখন তা অটল হয়ে থাকে, আর যখন মৃত্যু আসেনা কেউ তখন এ মৃত্যুকে টেনে আনতে পারে না। যে সময় আল্লাহর কাছে থাকার কথা তাতে দুনিয়াতে কেউ থাকতে পারবে না। মুসলমানেরা! আমরা কেন ভয় পাব?কেন পেছনে হটবো? আফসোস হয়, যখন কারগীলে যুদ্ধ চলছিল তখন পুরো ইন্ডিয়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল। হিন্দু বেনিয়াদের তো যুদ্ধ পদ্ধতি জানা নাই কিন্তু তারা অস্ত্রের ভান্ডার উজাড় করে দিচ্ছিল। যখন পাকিস্তানের মুসলমান জিহাদের নাম নিতেও ভয় পায়, যে আবার আমাকে কেউ সন্ত্রাসী বলে না ফেলে।

এ জিহাদ উহাই যার জন্য আল্লাহ অসংখ্য আয়াত এবং সূরা অবতীর্ণ করেছেন। এ জিহাদ উহাই যা ইজ্জতের চিহ্ন কিন্তু জিহাদ ছেড়ে দেওয়ায় আমরা দুনিয়াতে লাঞ্চিত, অবহেলিত, অপমানিত। আজ আমি এ ঈদগাহে মুসলমানদেরকেও এক দাওয়াত দিচ্ছি আর কাফেরদেরও একটি কথা বলছি। আল্লাহ তায়ালা স্বীয় অনুগ্রহে ছয় বছর চব্বিশ দিনের অভিশপ্ত বন্দী জীবনের পর আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। লাল কৃষ্ণ আদভানী এবং তার বড় বড় চামুন্ডারা বলছিল, আমরা এ ব্যক্তিকে ছাড়ব না, আরও বলছিল ইন্ডিয়াতে তার দাফন হবে। আমার আল্লাহ তাদের কসমকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছেন, আমার আল্লাহ তাদের সকল শক্তিকে ধ্বংস করেছেন। এবং আমাকে এ কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। ইন্ডিয়ার মাটিতে আমার দাফনের ব্যবস্থা ছিল না। আমি এখানে এসে গেছি। আমিতো ওখানেই দাফন হব যেখানে আমার রব চাইবেন। কিন্তু যদি ইন্ডিয়া কাশ্মীরে তার এমন শ্মষান ঘাট বানিয়ে ছাডবো, যেখানে ইন্ডিয়ার সমস্ত লাশ ও চিতাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভষ্ম করে দেবে। আমরা অনেক অত্যাচার সহ্য করছি।

আমার মুসলমান ভাইয়েরা! আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, যে আল্লাহর হাতে এ সূর্য, যিনি এ সূর্যকে যখন চান বের করে আনেন, যার হাতে এ আসমান, যার হাতে এ জমীন, সে আল্লাহ আমাদের। সে আল্লাহ এ কাফেরদের নয়

بإن الله مولى الذين أمنوا و إن الكافرين لا مولى لهم

আল্লাহ ঈমানদারদের মাওলা বা অভিভাবকআর কাফেরদের কোন মাওলা বা অভিভাবক নেই

তোমরা এটম বোম বানিয়েছ, কিন্তু আমার নবীর এক এক উম্মত তোমাদের এটম বোম থেকে বেশী শক্তিশালি। তোমরা হাইড্রোজেন বোম বানিয়েছ, কিন্তু আমার নবীর এক এক জন উম্মত তোমাদের হাইড্রোজন বোম থেকেও বেশী শক্তিশালি। এ জন্য যে, তোমরা মৃত্যু কে ভয় পাও আর আমরা মৃত্যুর সাথে লড়াই করি তোমরা মৃত্যু থেকে পালাও আর আমরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করি। তোমরা মৃত্যুতে ঘাবড়ে যাও আর মৃত্যই আমাদের কাম্য। তোমাদের কাছে মৃত্যু তিক্ত মনে হয়, আল্লাহর কসম! মৃত্যু আমাদের কাছে মধুরচে’ মিষ্টি মনে হয়।

ও ইন্ডিয়া ওয়ালারা! আমি তোমাদের বলতে চাই, রোজ, রোজ পাকিস্তান কে যমের ভয় দেখানো বন্ধ করে দাও। আল্লাহ তায়ালা আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন! যদি তোমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমির দিকে বাঁকা চোখে তাকাও তাহলে আমি সর্ব প্রথম আমার সাথে পাঁচ লাখ মুজাহিদ নিয়ে ইন্ডিয়াতে ঢুকে পড়ব। পাঁচ লাখ তো প্রাথমিক সংখ্যা, আমার কাছে পাঁচ লাখের বেশি মুজাহিদ আলহামদুলিল্লাহ মওজুদ আছে।

আমার মায়েরা আমাকে তাদের বাচ্চা দিচ্ছে আর বলছে, তাকে মুহাম্মদ বিন কাশেম বানাবেন, তাকে কোন ইংরেজের পূজারী বানাবেন না। আমার বোনেরা তাদের ভাইকে আমার সোর্পদ করে বলছে, তাকে ইসলামের ময়দানের গাজী বানাবেন, তাকে ভীরু কাপুরুষ বানাবেন না। আমার বুড়ো বুজর্গরা আমাকে বলছে, আমাদের দাড়ি সাদা হয়েছে। আমরা আজও হাতে বন্দুক নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত। এজন্য যে, হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি জিহাদের জন্য তলোয়ার হাতে নিবে সে যেন আল্লাহর হাতে বাইয়াত নিল। আমরা আল্লাহর জন্য নিজেদের হাত দিতে প্রস্তুত।

যদি আদভানী বা অন্য কেউ এ কাপুরুষতা দেখায়, এবং পাকিস্তানের দিকে বাঁকা চোখে তাকায়, তো কাবার রবের কসম খেয়ে বলছি, আমি আমাদের মুজাহিদদেরকে সাথে নিয়ে ইন্ডিয়ার শহরে ঢুকে এমন কিছু করে ছাড়ব যা তোমাদের ধারনার ও বাইরে। আমরা শান্তি প্রিয়, আমরা আজ পর্যন্ত কোন বেকসুর মানুষের উপর হাত তুলিনি। এমন কোন জুলম যা তোমরা করনি। তোমরা যদি এ সন্ত্রাস বন্ধ না কর আমরা ইনশাআল্লাহ এ সন্ত্রাস বন্ধ করেই ছাড়ব। আপনারা আমার সংগ দিবেন কিনা? কে কে তৈয়্যার যে, হে আল্লাহ! আমরা তোমার রাস্তায় জীবন দিতে প্রস্তুত৷

আজ মুসলমানের মধ্যে বহু মানুষ জিহাদের নাম শুনে ঘাবড়ে যায়। আমরা এ সমস্ত ভাইদেরও জিহাদ বুঝাবো। এ কথা বুঝাবো যে, জিহাদের রাস্তা কত সম্মানি। আজ দুনিয়ার মধ্যে উন্নতির ডঙ্কা বাজানো হচ্ছে, কোন উন্নতি হচ্ছে না। এই মোবাইল টেলিফোন, গাড়ী কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কে উন্নতি মনে কর না। যতক্ষণ পর্যন্ত দীনে ইসলামের উন্নতি হবে না ততক্ষন পর্যন্ত দুনিয়ার সব উন্নতিকে আমরা পদদলিত করি।

মানবতার সওদাগরেরা! তোমরা একবিংশ শতাব্দিতে ইসলাম এবং মুসলমানদের কে ধ্বংস করার সংকল্প করছ। কিন্তু আমরা যে সূর্য্যের উদয় হতে দেখছি তাতে ইসলাম এবং মুসলমান ছাড়া অন্য কারো জন্য সম্মান দৃষ্টি গোচর হচ্ছে না। পুরো ইন্ডিয়া যখন নতুন শতাব্দীর আগমনে উল্লাসে মত্ত। তাদের এজেন্সি গুলো বলছিল একবিংশ শতাব্দীর মধ্যে আমরা পাকিস্তান কেও আত্মসাৎ করব। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর শেষ দিন একত্রশে ডিসেম্বর ইন্ডিয়ার নির্মম পরাজয় ঘটেছে। তাদের এত বিশাল বাহিনী থাকা সত্বেও আমাকে বাধ্য হয়ে মুক্তি দিতে হয়েছে। একটি বিমানে করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী লাল কৃষ্ণ আদভানী কান্দাহার বিমান বন্দরে এসে আমাকে ছেড়ে যেতে হয়েছে।

একত্রিশ তারিখের এ পয়গাম ইন্ডিয়া তুমি স্মরণ রেখ। ইনশাআল্লাহ সে দিন দূরে নয় যে দিন তুমি হাত জোড় করে বলবে, তোমাদের কাশ্মীর তোমাদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যাও।

হে কাশ্মীরের মুসলমানেররা! আমি এ সমস্ত মুসলমানদের পক্ষ থেকে তোমাদের ঈদ মোবারক দিচ্ছি। হে আমার কাশ্মীরের মায়েরা! আমার লজ্জা হচ্ছে ঐ সমস্ত মায়েদের প্রতি যাদের ছেলেরা জেলে বন্দী, ঐ সমস্ত বোনদের প্রতি আমার লজ্জা হচ্ছে, যাদের ভাইদের কে জবাই করা হচ্ছে।

কাশ্মীরের মুসলমানেরা! তোমরা ঘাবড়ে যেওনা, তোমাদের আওয়াজ প্রতিটি মুসলমানের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ অতি সত্বর একদিন আসবে যে দিন আমরা এবং তোমরা এক সাথে ঈদের নামাজ পড়বো। আর আমাদের দুশমন অপমানিত ও লাঞ্ছিত হবে।

إن شاء الله ثم إن شاء الله

و آخر دعوانا عن الحمد لله

رب العالميــــــــــــــــــــــــن

 

**********

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =

Back to top button