আরবইয়েমেনবই ও রিসালাহবালাকোট মিডিয়ামিডিয়াশাইখ আনোয়ার আল আওলাকী রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

যখন আলেমগণ শাসকদের সাথে সাক্ষাত করবেন – শাইখ আনওয়ার আল আওলাকি রহিমাহুল্লাহ

যখন আলেমগণ শাসকদের সাথে সাক্ষাত করবেন

– শাইখ আনওয়ার আল আওলাকি রহিমাহুল্লাহ

যখন আলেমগণ শাসকদের সাথে সাক্ষাত করবেন – শাইখ আনওয়ার আল আওলাকি রহিমাহুল্লাহ

word

https://banglafiles.net/index.php/s/DwEX35Ds6HHbCDa

https://archive.org/download/jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren_202208/27.jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren.docx

http://www.mediafire.com/file/9171e184smxjxat/27.jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren.docx/file

PDF

https://banglafiles.net/index.php/s/BTnYe72wNdmLtSg

https://archive.org/download/jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren_202208/.pdf

http://www.mediafire.com/file/zmlfa6swrrkmi4y/27.jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren.pdf/file https://archive.org/download/balakot_media_books/jokhon_alemgon_shashokder_shathe_shakkhat_koren.pdf

============

যখন আলেমগণ শাসকদের সাথে সাক্ষাত করেন

উৎস: “আনোয়ার আল আওলাকি ডট কম” ওয়েবসাইট

পরিবেশনায়: বালাকোট মিডিয়া

 

مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ

মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল; আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরে সহানুভূতিশীল…(১)

………………………………………………………………………..

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

“যে ব্যক্তি বেদুঈনের জীবন কাটায়, সে কর্কশ হয়ে যায়। যে শিকারে নিয়োজিত হয়, সে হয় উদাসীন। আর যে ব্যক্তি শাসকদের সাথে সাক্ষাত করে, সে ফিতনার মাঝে পতিত হয়।”(২)

মানুষ তার কর্ম ও পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। আর এ কারণেই ইসলাম আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দেয় যে, কোন কোন কাজ করতে হবে এবং কোন কোন কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। ইসলাম আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, কোন পরিবেশে আমাদের থাকা উচিত এবং কি ধরনের মানুষের সংস্পর্শে নিজেদেরকে রাখতে হবে।

একজন ব্যক্তি কোন ধাঁচের কাজ বাছাই করছে, সেটার ওপর নির্ভর করে তার ব্যক্তিত্বের অনেকটাই গঠিত হয়। যেমন: চিকিৎসা বিভাগে কর্মরত একজন লোক যে সকল চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করে, তার সাথে কম্পিউটার বিভাগে কর্মরত একজন ব্যক্তির চারিত্রিক গুণাবলীতে অনেক পার্থক্য থাকে। কিছু পেশা মানুষকে কঠোর করে তোলে, আবার কিছু পেশা করে তোলে নমনীয়। অনেক কাজ আছে যেখানে সাফল্য অর্জনের জন্য বিনয়ী হওয়াটা বাঞ্চনীয়, আবার অনেক পেশার ক্ষেত্রে কঠিন ও কঠোর হওয়াটাই নীতি। এমনকি একই পেশার ক্ষেত্রেও এমন বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, ছাগলের পালের রাখালেরা দয়ালু হয়, তবে উটের রাখাল হয় অহংকারী।

উপরের হাদীসে দেখতে পাই, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনটি কাজের কথা উল্লেখ করে মানুষের ওপর কাজগুলোর প্রভাব বর্ণনা করেছেন। প্রথমটি হলো বেদুঈনের মতো জীবন যাপন করা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, বেদুঈনের জীবন ব্যক্তির চরিত্রকে রূঢ় ও কর্কশ করে তোলে। মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশ আর কঠিন জীবন মানুষকে এমন করেই গড়ে তোলে যেন সে এই প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।

দ্বিতীয় যে কাজটির কথা বলা হয়েছে তা হলো শিকার। শিকার খুঁজে পাওয়া, তাকে ধোঁকা দিয়ে তার থেকে নিজেকে লুকিয়ে রেখে তার পেছন পেছন দৌড়ে তাকে নিজ আয়ত্তাধীন করে নেবার বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চকর। এভাবে শিকার করা একটি নেশায় পরিণত হয়। তা হয়তো সেই ব্যক্তিকে নিজের দায়িত্ব পালন থেকে গাফেল করে রাখে, ফলে দ্বীনের দিকে ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্যই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তারা হয় উদাসী, অমনোযোগী।

তৃতীয় কাজটি হলো শাসকদের সাথে সাক্ষাত করা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন যে, যে ব্যক্তি শাসকদের সাথে সাক্ষাত করে, সে ফিতনায় পতিত হয়। সুনানে আবু দাঊদের ব্যাখ্যাকারী গ্রন্থ আউন আল মাবূদ এ বলা হয়েছে যে, এই হাদীসে ফিতনায় পতিত হবার অর্থ হলো দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়া (বা দ্বীনকে হারিয়ে ফেলা)।

সুনানে তিরমিযী হাদীস গ্রন্থটির ব্যাখ্যাকারী গ্রন্থ তুহফাত আল আহওয়াযী তে রয়েছে, “যে ব্যক্তি শাসকের সাথে সাক্ষাত করে তার তোষামোদ করে, সে ফিতনায় পতিত হয়; কিন্তু যে ব্যক্তি শাসকের সাথে দেখা করে, কিন্তু তাকে তোষামোদ করে না, বরং তাকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় এবং মন্দ কাজ করতে নিষেধ করে, তার সাক্ষাত সর্বোত্কৃষ্ট জিহাদ হিসেবে গণ্য হয়।”

এই হাদীসে শাসকদের সাথে সাক্ষাতের কথা বলতে এমন শাসকদের কথা বুঝানো হয়েছে যারা জুলুম ও অত্যাচার করতো, তবে তারা নিজেরা ছিল মুসলমান। তাহলে চিন্তা করে দেখুন, আজ আমরা সেই সব আলেমদের ব্যাপারে কি বলবো, যারা কিনা এমন শাসকদের সাথে সাক্ষাত করছেন যেসব শাসক দ্বীন ইসলাম থেকে সম্পূর্ণরূপে খারেজ (বহির্ভূত) হয়ে গেছে?(৩) যেখানে হাদীসে বলা হচ্ছে অত্যাচারী শাসকদের সাথে সাক্ষাত করলেই একজন মুসলমান তার দ্বীন হারিয়ে ফেলবে, তাহলে সেই সব আলেম ব্যক্তিবর্গের দ্বীনের কি হবে যারা এমন শাসকদের সাথে সাক্ষাত করেন যে শাসকেরা ধর্মদ্রোহিতার প্রচারক, আর উম্মাতের শত্রুদের নিরাপত্তা প্রদানকারী?!

শাসকদের জগতে প্রবেশ করার মানেই হলো ফিতনা। তাদের জগত জুড়ে রয়েছে শুধু মিথ্যা আর ধোঁকা। আলেমদের আগমন হয় পবিত্র ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এক পৃথিবী থেকে। তাদের পরিবেশ তাদেরকে সৎ ও অকপট হওয়া শিখিয়েছে, এবং তাদেরকে রাজা-বাদশাদের মিথ্যা আর ধোঁকাবাজি শোনার জন্য প্রস্তুত করে নি। ফলে এই শাসকেরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে, প্রতিশ্রুতির দোহাই দিয়ে তাদেরকে ধোঁকা দেয়; ভালো ব্যবহার আর “উপহার” এর বিনিময়ে তাদের বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেন নি, “তোমরা একে অপরকে উপহার দাও, এভাবে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়”?

নিঃসন্দেহে! কিছু আলেমদের মন তো এই ধরনের শাসকদের প্রতি ভালোবাসায় এতটাই বিগলিত, ঠিক যেমন করে বনী ইসরাঈলের মানুষেরা বাছুরের প্রতি ভালোবাসায় বিগলিত হয়ে পড়েছিল।

এই শাসকেরা তাদের জালে বহু আলেমকে ফাঁসিয়েছে। এইসব আলেমদেরকে তারা তাদের নিজেদের সুরক্ষা ও স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের ইহুদী ও খ্রীস্টান প্রভুদের স্বার্থোদ্ধারের কাজে নিয়োজিত করছে। এই আলেমরা আল্লাহর দ্বীন ও মুসলমানদেরকে রক্ষা করার বদলে কাফের শাসকদেরকে প্রতিরক্ষা দান করছে।(৪)

তবে এই উম্মাতের মাঝে সবসময় এমন একটি দল থাকবে যারা হক্‌ (সত্য) এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে এবং আল্লাহর দ্বীনকে সুরক্ষা প্রদান করতে থাকবে। এবং এমন আলেমগণ সর্বদা থাকবেন যারা হক্‌ (সত্য) এর জন্য লড়বেন এবং আত্মত্যাগ করবেন। আজও এমন আলেমগণ রয়েছেন যারা আহমদ বিন হাম্বল (রহিমাহুল্লাহ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, যিনি একাকী সত্যের জন্যে লড়াই করেছেন, আর এই আলেমরাই হচ্ছেন আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ এর ইমাম।

…………………………………………………..

(১) সূরা ফাত্‌হ, আয়াত: ২৯

(২) আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, এবং বায়হাকী থেকে বর্ণিত

(৩) বর্তমান যুগে এই ধরনের শাসকের অভাব নেই। মুসলিম ভূখন্ডসমূহে যে সকল শাসকেরা ইসলামী শরীয়তের বদলে মানবরচিত কোনো বিধানের দ্বারা বিচার-ফায়সালা করছে, তারা প্রত্যেকেই এমন শাসক যে কিনা ইসলাম থেকে খারেজ (বহির্ভূত) হয়ে গেছে। মহামর্যাদাবান আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

…আর যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদানুযায়ী বিচার-ফায়সালা করে না, তারা কাফের। (সূরা মায়িদা, আয়াত: ৪৪)

(৪) এভাবেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরুদ্ধাচরণকারী তাগুত শাসকদের সাথে এই আলেমরা সাক্ষাত করেন; এবং এর ফলশ্রুতিতে তারা আল্লাহর দ্বীনের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত মুজাহিদদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেন এবং অপরদিকে এই তাগুত শাসকগোষ্ঠী ও তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষে কথা বলা শুরু করেন! অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন,

مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ

মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল; আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরে সহানুভূতিশীল… (সূরা ফাত্‌হ, আয়াত: ২৯)

এছাড়াও আল্লাহ বলেন,

الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا

যারা ঈমান আনয়ন করেছে তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে, এবং যারা কাফের হয়েছে তারা যুদ্ধ করে তাগুতের পথে; অতএব তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো; নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল দুর্বল। (সূরা নিসা, আয়াত: ৭৬)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 3 =

Back to top button