ভারতের আসাম রাজ্যের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত (এনআরসি) জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়া থেকে। যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই বাংলাভাষী মুসলমান। মুসলিম জনসংখ্যার দিক থেকে আসামের অবস্থান ভারতে দ্বিতীয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৬ সালে আসামে সরকার গঠন করে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই বাংলাদেশি শরণার্থী উৎখাতের নামে আসামের মুসলিমদের উৎখাত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নামে চরম হিন্দুত্ববাদী আসাম সরকার।
প্রকাশিত এ তালিকায় মুসলিম নাগরিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করে নিবন্ধনের বাইরে রাখা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে কোন কোন মুসলিম পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য বাদ পড়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা আবার ঘোষণা করেছে যে, অনুপ্রবেশকারী হিন্দুদেরকে তাড়ানো হবে না! এ কেমন নীতি তাদের!!
উগ্র বিজেপির হিংস্র নীতির কারণে লক্ষ লক্ষ মুসলিম পরিবার এখন ভিটেহারা হয়ে, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-খাদ্যের মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় রয়েছে এবং নারী ও শিশুরা গভীর বিপদে পড়বে। যেমনটা ইতিপূর্বে আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে হয়েছে।
৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার পরেও যেন কোন ধরণের প্রতিবাদ জানাতে না পারে সেজন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এমনকি, এক চরমপন্থী হিন্দু বিজেপি সদস্য রাজা সিং। সে বলেছে,“ ‘বাংলাদেশী’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ মুসলিমরা ভারতের জন্য বিপদ; তারা যদি স্বেচ্ছায় এই দেশ ত্যাগ না করে তাহলে তাদেরকে গুলি করতে হবে।
বিজেপি সরকার আসাম রাজ্যে এনআরসি চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করার পর, এবার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কার্যকর করার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিজেপির যুব ও নারী মোর্চার কর্মী-সমর্থকেরা। দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল শেষ হয় হাজরা মোড়ে। প্রতিবাদ সভায় দাবি ওঠে, ঐ রাজ্যেও আসামের মতো এনআরসি কার্যকর করা হোক। এই মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় বিজেপির নেতারাও যোগ দেয়। ঐ মিছিলে ছিল বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়সহ অন্যরা। স্পষ্টই বুঝা যায় আসামের পর এবার তাদের টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ।
হায়! আফসোস একি হচ্ছে মুসলিম উম্মাহের সাথে? এ যেন একক্ষত শুকানোর পূর্বেই আরেক আঘাত।এই ধারাবাহিকতা আর কতকাল চলবে?? তবু কি মুসলিম উম্মাহর বিবেক জাগ্রত হবে না??