আমার জিহাদি জীবন- কমান্ডার উসমান আল হামিদি
আমি অন্য সাধারন যুবকদের ন্যায়ই ছিলাম এই সস্তা দুনিয়া নিয়ে ব্যাস্ত। আমি মাধ্যমিক শেষ করে নেভিতে যোগ দিই।আমি নেভিতে ছিলাম ২ বছর কিন্তু আমি সব সময় এই উম্মাহ নিয়ে চিন্তায় থাকতাম দেখতাম তারা কিছুই করতে পারছেনা কিন্তু তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি আমার অবস্থা নিয়ে খুশি ছিলাম না । আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না আমার নিজের মধ্য সব সময় দ্বন্দ লেগেই থাকত যতক্ষন না আল্লাহ সুবহান ওতালা আমাকে পথ দেখালেন। আমি চাকরি ছেড়ে মসজিদে সময় কাটানো শুরু করেছিলাম। আমি সুযোগ খুচ্ছিলাম ওই বছর গুলোতে মুসলিম উম্মার জন্য কিছু করে নিজের গুনার বোঝা হালকা করতে। কিন্তু আমি এমন কিছু খুজে পাচ্ছিলাম না যা মুসলিম উম্মার জন্য যথেষ্ঠ। এই উম্মার ত্রান , বিধবা ও ইয়াতিমদেরকে সাহায্য এর থেকেও বেশি কিছু প্রয়োজন। এই উম্মাহকে প্রথমে এর চারিদিকের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। উম্মার এই ক্ষত গুলিকে আগে সারানো দরকার আর আমি জানতাম এর সমাধান একটাই কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ । আমি তখন থেকেই ইসলামি ইমারাহ আফগান স্থানে আসার সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম, মুজাহিদের ভূমি, তালেবানের অধীনে।সেখান থেকে আমি প্রশিক্ষণ গ্রহন করব যা আমার প্রয়োজন। কিন্তু আমি আসতে পারছিলাম না কারন সৌদি সরকার তার কোন সামরিক বাহিনির লোককে বাইরে যাবার অনুমতি দেয় না শুধু মাত্র বিশেষ অনুমতি ছাড়া সেটিও অনেক জটিল প্রসেস ও সময়ের ব্যাপার।তাই সামরিক সুবিধা নেওয়া ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত অর্থনৈতিক সমস্যা আমার পথে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছিল। তাই আমি দেশ থেকে বের হওয়ার অন্য উপায় খুজতে শুর” করে ছিলাম । আমি জাল পাসপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টা ও করেছিলাম কিন্তু তা সফল হয়নি। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলাম কাজটি আমার জন্য সহজ করে দেয়ার জন্য। কিছুদিনের মধ্যে আমি একজন ভাইকে পেলাম যিনি শুধু আমার পাসপোর্টের ই ব্যবস্থা করলেন না আমাকে কিছু টাকা দিলেন সফরের জন্যঅ যখন বিদায়ের সময় আসলো তখন আমি আমার পরিবারের সাথে দেখা করেছিলাম কিন্তু গন্তব্যের ব্যপাওে কাউকে কিছু বলিনি। করাচি আসার আগে আমি কিছু লোকাল এয়ারপোর্ট ঘুরে আসলাম । আল্লাাহর নুসরাতে মুজাহিদিন গণ অনেক কঠিন বাধা পার করতে সক্ষম হন। তাই আমাদের আল্লাাহর উপর ভরসা রাখা উচিৎ।আল-ø
(চলবে)
করাচি পৌছানোর পর আমি ট্যক্সি করে কাছের এক হোটেল এ গিয়েছিলাম রাত কাটানোর জন্য। পরবর্তি দিন আমি ভাইদেও কাছে আমার আসার খবর পাঠিয়েছিলাম। তার কিছুক্ষনের মধ্যেই হোটেলের রিসিপসন এসে আমাকে জানালো যে আমার সাথে একজন দেখা করতে এসেছে। আমি আমার লাগেজ নিয়ে বের হয়ে আসলাম ভায়ের সাথে দেখা করতে যিনি আমাকে ট্যক্সি করে নিতে এসেছিলেন। ভাই ছিলেন আরব তার সাথে কোডের মাধ্যমে কথা বলে নিশ্চিত হওয়ার পর আমি গাড়িতে উঠেছিলাম। আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম ভাইদেও সব ব্যবস্থাপনা, তাদের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে, তারা আমাকে নতুন পাসপোর্ট দিয়েছিল। তারা যেন দেশের মধ্যেই আর একটি দেশ পয়দা করেছে। আমি আরো অভিভূত হয়েছিলাম তাদেও দায়িত্ব সচেতনতা দেখে যদিও তারা বিনা মূল্যে সব করছিল।
গাড়িতে করে আনসার হাউজে যাওয়ার সময় ভায়েরা আমাকে স্বাগতম জানানোর কোন সুযোগই হাতছাড়া করছিলনা। আনসার হাউজে আমি বিভিন্ন দেশের মানুষকে দেখলাম যারা সবাই আমাকে হাসি মুখে বরন করে নিচ্ছিল। তারা সবাই একত্রিত হয়েছিল শুধু মাত্র এই দ্বীনের জন্য। তাদেরও ছিল বিভিন্ন কাজ ও ঠিকানা। আমি লাগেজ রেখে আনসার হাউজের আমিরের সাথে দেখা করলাম তিনি আমাকে বাড়িতে ফোন দিয়ে নিরাপদে পৌছানোর কথা জানাতে বললেন। আমি সেখানে রাত কাটিয়ে আফগান যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। আমরা একটি প্লেনে করে করাচি হতে কুয়েতা বিমান বন্দরে এসে ছিলাম যা ছিল আপগান সীমান্তবর্তী । সেখান থেকে আমরা ট্যাক্সি নিয়ে ইসলামি ইমারতের রাজধানী কান্দাহার গিয়েছিলাম। আমরা পকিস্থানের সিমান্ত পার করার পর সবাই সিজদায় লুটিয়ে পড়েছিলাম আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য যিনি আমাদেরকে আফগান পৌছে দিলেন। যখন আমরা কান্দাহার পৌছালাম তখন ভায়েরা আমাদের এই বলে স্বাগতম জানিয়ে ছিল ” তোমরা আরব আমরা তোমাদের আল্লার জন্যই ভালোবাসি”। আমারা নতুন আনসার হাউসের দিকে রওনা হয়েছিলাম। সেখানে পৌছাতে আমাদেও সন্ধা হয়ে গিয়েছিল। সেদিন আমি রাত কাটিয়ে ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তিদের সাথে। পরের দিন আমাদের ঘুম ভেংগেছিল সসশ্র প্রহারায় আসা একটি গাড়ির শব্দে। যখনই গাড়ি গুলি থামলো তখনই অস্ত্রধারীরা মাঝখানের গাড়ির চারিদিকে জড়ো হলো এবং গাড়ির দরজা খুলে দিলো। আমরা বিস্ময়ের সাথে দেখলাম শাইখ উসামা এসেছেন আমাদের দেখতে এবং আমাদের স্বাগতম জানিয়েছিলেন। তিনি আমাদের সবার সাথে আলাদা আলাদা ভাবে মুসাহাফা করে আমাদের সম্মন্ধে আলাদা আলাদা ভাবে খোজ খবর নিচ্ছিলেন। তিনি আরব উপদ্বীপ সম্মন্ধে জানতে বেশি আগ্রহি ছিলেন। আল ফারুক ক্যাম্পে যাওয়ার আগে তিনি আমাদের এর ব্যাপারে কিছু নসিহা দিয়ে তিনি চলে যান। পরের দিন আমরা আমাদের লাগেজ গুসিয়ে নিয়েছিলাম আল ফারুক ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষদের সাজানো হয়। সেখানে আমাদের পৌছাতে কয়েক ঘন্টা সময় লেগেছিল। আমরা সেখানে পৌছালে কমান্ডার আমাদের হাসিমুখে স্বাগতম জানিয়ে মুসাফা করলেন। সেখানে যেভাবে আমাদের সম্মান দেখানো হয়েছিল তা দেখে আমার নেভির সময়ের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল । আমরা মনে আছে একজন অফিসার আমাদের এমন কিছু অপবিত্র ও বিদ্রুপাত্মক কথা বলে ছিল ” ছুড়ে ফেলে দাও তোমার সব ভালো আচরন, সম্মান ও মনুষত্ব ওই গেটের বাইরে এবং যখন বাইরে যাবে তখন ও গুলো আবার তুলে নিও এখানে ওগুলির কোন স্থান নাই।”আমাদের কিছু নসিহা করে আগের কমান্ডার চলে গেলেন বেং তার সাথে সবাই তবে একজন বাদে । তিনি তার পরিচয় দিয়েছিলেন আর বলেছিলেন তিনি হচ্ছেন আমাদের নতুন ট্রেইনিং কমান্ডার। তিনি আমাদের ট্রেইনিং এর নিয়ম কানুন শুনিয়ে আমাদের নিয়ে ক্যাম্প ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন তারপর তিনি আমাদেও কোর্স সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন। পরের দিন আমরা ট্রেইনিং এর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে শুরু করলাম। আমাদের ট্রেইনিং শুরু হল ঘন্টা-দিন চলে যাচ্ছিল আর তার সাথে আমরা সামরিক ও দ্বীনী প্রশিক্ষন সম্পুর্ন করছিলাম। শাইখ উসাম মাঝে মাঝে আসতেন আমাদের সাথে দেখা করা জন্য এবং আমাদের উৎসাহ দিতেন এবং জজবাহ বাড়িয়ে দিতেন। তিনি আমাদের বলতেন আমাদের কিছু ভাই আমেরিকাকে তার মাটিতেই অপমানিত করতে যাচ্ছে এবং আমাদের এর জন্য দোয়া করতে বলতেন। প্রায় মাস খানেক পর কমান্ডার আমাদেরকে দুগ্রুপে ভাগ হতে বললেন । আমি ছিলাম কমানডারের সাথে ৫০ জনের একটি গ্রুপে।আমরা বাসে করে ক্যাম্প ত্যাগ করে এক আনসার হাউসে রাত কাটিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে আমাদের কাবুল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিছুদিন পর আমরা খবর পেয়েছিলাম আহমদ শাহ মাসউদেও গুপ্ত হত্যার এবং শুনে খুবই খুশি হয়েছিলাম।তারপর আমরা ”তরগা”র দিকে রওনা হয়েছিলাম যেইটা ছিল জালালাবাদ ছাড়িয়ে আফগানের পূর্ব দিকের একটি শহর।এটিই সেই স্থান যেখানে শাইখ উসামা তার বিখ্যাত শপথ করেছিলেন ” আমেরিকা ততদিন শান্তিতে থাকতে পারবে না যতদিন না আমরা ফিলিস্থিনিতে শান্তিতে থাকছি”। আমাদেও পৌছানোর পরের দিন আমরা রেডিওর খবর খুব মনোযোগ সহকাওে শুনছিলাম তখন থেখে যখন আমাদেও কমান্ডার বলেছিলেন ” রেডিও থেকে কান সরিও না অপারেশন দ্রুত সম্পাদন হবে”। কয়েক ঘন্টা পর পুরো পৃথিবী ”থ” হয়ে গেল ৯/১১ এর আক্রমনের খবরে। আমরা প্রথমে আমাদের কানকে বিশ^াস করতে পারছিলাম না। আমরা আমেরিকা কে অপদস্ত করেছিলাম তার নিজ মাটিতে তাদেরকে আঘাত হেনেছিলাম তাদের বিমানকে ই অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। আমরা তাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছিলাম তাদেরকে দুর্বল করে দিয়েছিলাম। তাদেরকে আমরা সেই পেয়ালা হতে পান করিয়েছিলাম সেই পেয়ালাতে তারা আমাদের উম্মতের মানুষকে পান করাচ্ছিল। এখন আমরা সমান ,আমরা তাদেরকে পরিস্কার মেসেজ পাঠালাম ঃ ”তোমরা আমাদের যেভাবে হত্যা করেছ আমরা ও তোমাদেরকে সেভাবেই হত্যা করব তোমরা আমাদের মনে যেভাবে ভয় ঢুকিয়ে রেখেছিলে এখন থেকে আমরা ও তোমাদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিব। এটি ছিল বিশেষ একটি দিন উম্মার জন্য।
মুজাহিদিনরা খুবই আনন্দিত হয়েছিল তাদের আনন্দ আরো বেড়ে গেল উম্মার আনন্দ দেখে, বিশষত ফিলিস্থিনি ভাইদের আনন্দ দেখে। ফিলিস্থিন ইস্যু ছিল আক্রমনের একটি প্রধান কারন।আমরা প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিনাম আমাদের ফিলিস্থিনি ভাই-বোনদের রক্তের সেই জাতির উপর যাদের কারনে ইসরাইেল টিকে আছে। এটি পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল দুরে ও কাছে সবার কাছেই যে মুজহিদিনরা প্রতিশোধ নিতে সক্ষম যদিও তারা সংখ্যায় কম এবং তাদরে রসদ ও সল্প।
আনন্দ করার পর আমরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছিলাম। শাইখ ও কিছু কমান্ডারের সাথে আমরা একটি নিরাপদ স্থানে গিয়েছিলাম যুদ্ধের জন্য এলাকা তৈরী করতে। আমরা ম্যাপ একে ছিলাম. এলাকা উপর সার্ভে করেছিলাম এবং বাংকার খনন করেছিলাম। কিছুদিন পর আমাদের তোরাবোরা পহাড়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হল আমি ্ওই পহাড়ে যাওয়া প্রথম দলের একজন ছিলাম। মুজাহিদিনরা এক এক করে জড়ো হচ্ছিল যতক্ষন না তারা সংখ্যায় ৩০০ তে পৌছালো (আমেরিকা যেখানে ৩০০০ এর মিথ্যা দাবি করে)।আমরা আমেরিকার সাথে যুদ্ধ করার জন্য এলাকা প্রস্তুত করছিলাম এবং সাথে সাথে আমরা পরিখা খনন করে পাহাড়ের মধ্যে ডিফেন্সিভ পজিশন নিয়েছিলাম। ৭ই অক্টোবর ২০০১ এ, আমেরিকা তাদের বোম্বিং অভিযান শুরু করেছিল । তারা শুরু করেছিল কান্দাহার হয়ে কাবুল জালালাবাদ এবং তোরাবোর তে। বোম্বিং করা হচ্ছিল অত্যান্ত ভয়াবহ ভাবে কিন্তু আল্লাহন ইচ্ছায় আমরা সবাই সেই সময় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলাম। পরের দিন আমি আরও কিছু ভাইদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা ও একই রকম অভিজ্ঞতার কথা বর্ননা করেছিল।
তোরাবোরর উপর বোম্বিং এর মাত্রা বাড়ছিল। এটি ছিল বিরতিহীন। এটি ঘটেছিল কারন সেখানে শাইখ উসামা ও ডাঃ আয়মান এর উপস্থিতির গুজব ছড়িয়েছিল। তারা আমাদেও সাথে ছিল আমরা যা অতিবাহিত করেছিরাম তারাও তা অতিবাহিত করেছিল।
আমরা পাকিস্থানের দিকে যাওয়ার আদেশ পেয়েছিলাম। আমরা তোরাবোরা ছেড়েছিলাম এবং তারসাথে আমাদের সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি। আমরা ৫০ জন শহীদকে আল্লাহর উপর রেখে চলে এসিেছলাম যাদের মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল। আমরা একটানা তিনদিন বরফের উপর দিয়ে হেটেছিলাম যেখানে আমাদের খাবার ও পানীয় হিসাবে বরফ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আমরা একটি পাহাড় হতে অবতরন করছিলাম আবার অন্যটায় উঠার জন্য। একসময় আমরা পাকিস্থানের সিমান্তে উপজাতি এলাকায় পৌছালাম। উপজাতিরা আমাদের স্বাগত জানিয়েছিল এবং আমাদের কে তাদরে বাড়িতে থাকতে দিয়েছিল কিন্তু আমরা জানতাম না যে আমরা ভুল জায়গাতে এসে গেছি। আমরা তাদরে বিশ^াস করেছিলাম এবং আমাদের অস্ত্রগুলি তাদের কাছে দিয়ে দিয়েছিলাম যাতে আমরা পাকিস্থানের মধ্যে সহজে চলাচল করতে পারি। পরের দিন তারা আমাদরে একটি মসজিদে জড়ো করেছিল সেখানে পৌছেই আমরা দেখলাম তিন ভ্যান দাড়িয়ে আছে যেগুলি পাকিস্তানি আর্মি ও পুলিশে ভর্তি। তখন আমরা বুঝতে পেরেছিরাম যে উপজাতিরা আমাদের ফাদে ফেলে আমাদেরকে পাকিস্তানের তাগুত সরকারের কাছে বেচে দিয়েছে। আমরা প্রায় ১০০ জন ভাই সেখানে ছিলাম। আমাদের মধ্যে কিছু ভাই সেই মসজিদ হতে পালানোর চেষ্টা করেছিল। তাদরে মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। প্রথমে আমার সাথে একজন ভাই ছিল পরে আরও একজন ভাই যোগ দেয়। আমরা একজন উপজাতিকে বলেছিলাম আমাদের কে আবর সাগরে পাঠিয়ে দিতে তার বিনিময়ে তাকে আমরা টাকা দিব এতে সে রাজি হয় এবং তার বাড়িতে থাকতে দেয় । চতুর্থ এক ভাই আমাদের সাথে যোগ দেয় তাই আমরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় । আমাদের প্রথম গ্রুপ নিরাপদে পৌছে যায় কিন্তু আমাদের গ্রুপটি একটি চেকপয়েন্টে ধরা পড়ে যায় আমাদেরকে খুবই বাজে ভাবে পেটানো হয় কারন আমরা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কাছের একটি জেলে যেখানে আমাদের একদিন রাখার পর আমাদরে কোহাটের মিলিটারি ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আমরা আমাদের অন্য ভাইদরেকে ও দেখলাম তখন জেল আমাদের জন্য আল্লার ইচ্ছায় সহজ হয়ে যায়। এই সময় আমদের পাকিস্তানি সরকার জিজ্ঞাসাবাদ করছিল এরপর একদিন এফ বি আই এর এক লোক আসে আর আমাদের ছবি ও ফিংগার প্রিন্ট নিয়ে যায়। আমরা সেই জেলে দুই থেকে তিন সপ্তাহ ছিলাম। তার পর আমাদেরকে বড় আমেরিকান কার্গো প্লেনে করে নিয়ে যাওয়া হয় । আমাদের যাত্রার সময় ছিল কয়েক ঘন্টা। আমারা কান্দাহারে অবতরন করেছিলাম যেখানে আমেরিকা তাদের অস্থায়ি ক্যাম্প স্থাপন করেছিল । আমাদের বেস ক্যাম্পে আনা হয় অত্যন্ত নিষ্ঠুর পন্থায়। ওই ক্যাম্পে বিভিন্ন বিভতষ্য পদ্ধতিতে আমাদেওর উপর অত্যাচার করা হত। এই অত্যাচারে আমাদেরে কিছু ভায়ের মৃত্যু হয়। আমেরিকা আরো বিভিন্ন ভাবে আমাদের দ্বীনকে কটুক্তি করতো। আমাদের ওই ক্যাম্পে অবস্থানের সময় সবার আলাদা আলাদা ছিল। কেউ ওখানে ছিল কয়েক সপ্তাহ আবার কেউ ছিল কয়েক মাস। তারা আমাকে উচ্চতর ইনভেস্টিগেশনের জন্য বাছায় করেছিল। কারন আমি তাদের বলেছিলাম আমি আমি আফগানে ছিলাম জিহাদেও জন্য এবং আমি আল ফারুক ক্যাম্পে প্রশিক্ষন নিয়েছিলাম । এই কথাটি আমার গোয়েন্তানামোতে যাবার পথ করে দেয়। আমি ওই ক্যাম্পে ছিলাম দুই সপ্তাহের জন্য।
”গতকাল আমরা আফগান দখল করেছি আজ ইরাক এবং আগামি কাল আমরা মক্কা আক্রমন করব”
আমাকে একটি বড়ো কার্গো প্লেনে কওে নিয়ে যাওয়া হয় লম্বা সফরের জন্য। ওই সফরের কিছু ঘটনা মিডিয়াতে আসে। সেখানে আমাদের কথা বলা বা নড়া চড়া করার কোন সুযোগ ছিলনা । এমন কি আমাদের কিছু দেখা ও শোনা থেকেও বিরত রাখা হয়েছিল। সফর ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ছিল। আমদেরকে গোয়েন্তানামোবেতে বরন করে নেয়া হয়েছিল গালাগাল ও পিটানোর মাধ্যমে তার সাথে আমাদেরকে ছেচড়ে সেলে ঢুকানো হয়েছিল। তখন থেকে নাপাক আমেরিকা তাদের মুল অত্যাচার শুরু হয়েছিল। তারা আমদের দ্বীনকে অপমান করত এবং আমরা ছিলাম শারিরিক ও মানসিক অত্যাচারের বস্তু। ঘুমাতে না দেওয়া এবং বিশেষ কক্ষে খুব ঠান্ডা ও খুবই গরমে উলংগ রাখা ছিল খুবই সাধারন। তারা তাদের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টের জন্য আমাদের গিনিপিগ হিসাবে ব্যবহার করত। যেমন তারা আমাদের ভাইদের উপর এমন এক ওষুধ প্রয়োগ করতো যে তারা কয়েকদিন ঘুমাতে পরতো না আবার অন্য দিকে তার পাশের সেলের ভাই মৃতের মত ঘুমাচ্ছে। আমাদরে একভ্ইা মজা কওে বলত আমেরিকা হয়তো আমাদেও এখানে এনেছে তাদের দয়া দেখানোর জন্য। তারা আমাদেও ক্ষুধার্থ রাখত আবার কখন মেয়েদের দ্বারা আমাদের খারাপ কাজে প্রল্ব্ধু করত। এতা সব অত্যাচার ও প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ আমাদের নিরাপদ রেখে ছিলেন। আমরা কোরআনকে প্রতিষ্ঠা করব এবং আমরা যা চাই তা তাদওে কাছ থেকে বলপ্রয়োগ কওে ছিনিয়ে নেয়া ছাড়া আর কোন পথ নাই। মুসলিমরা তখনই সম্মানীত হবে যখন সে তার পথ হিসাবে জিহাদকে বেছে নিবে।
আমরা মুজাহিদিনদের সংবাদ নিতে সক্ষম ছিলাম যদিও জিহাদের ভুমি আমাদের থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দুরে ছিল। আমরা মাঝেমাঝে বাইরের দুনিয়া সম্মন্ধে জানতে পারতাম কোন ধরনের স্পেসিফিক সংবাদ না শুনেও। যেমন আমরা আমেরিকার পরাজয় জানতে পারতাম জেলের পতাকা অর্ধনির্মিত দেখে। মাঝে মাঝে আমরা আফগানের সংবাদ জানতে পারতাম। ওই সময় গুলিতে আমরা আবু লাইত আল লিব্বি সম্মন্ধে আনেক বেশি শুনতে পারতাম। আমরা আমাদের আরব উপদ্বীপের ভাইদের সম্মন্ধে জানতে পারতাম আমরা তাদের সাথে ছিলাম আমাদের অন্তর ও দোয়ার মাধ্যমে।
একদিন জেলের রক্ষিরা খুবই খুশি ছিল এবং নাচতে নাচতে আমাদের কাছ এলো। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে তোমরা এতো খুশি কেন। তারা উত্তর দিল আমেরিকা ইরাক আক্রমন করেছে। তাদের একজন গর্বের সাথে বলেছিল ”গতকাল আমরা আফগান দখল করেছি আজ ইরাক এবং আগামি কাল আমরা মক্কা আক্রমন করব। এটাই ছিল তাদের পরিকলপনা তাদের একজন আরো বলেছিল ” চার্চে আমাদের এটাই শেখানো হয় । যাইহোক তাদের সপ্ন্ ভেস্তে গেল আবু মুসা আল জারকাভি এর মতো কিছু বীরের দ¦ারা। আমরা তাদরে প্রায়ই হুমকি দিতাম এবং রাগাতাম আবু মুসা আল জারকাভি এর নাম বলে এবং তার সাথে আরো বলতাম তোমাদের ক্ষমা চাইতে হবে তার জন্য যা তোমরা আমাদের সাথে করেছ। আমেরিকার কিছু সৈন্য ইরাকের পাঠানোর আগেই আত্মহত্তা করেছিল আবু মুসা ইল জারকাভি আর মুজাহিদিনদের ভয়ে।
মুজাহিদিনদের আত্মত্যাগ আমাদের গোয়েন্তামামো হতে বের হতে বড় ভ’মিকা পালন করেছিল। প্রকৃতপক্ষে তারাই ছিলেন আল্লার ইচ্ছায় আমর মুক্তির পেছনের প্রধান কারন আমার একজন আইনজীবী বলেছিল যে লিগাল ভাবে মুক্তি পাআমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করত আমদেরকে পুনর্বাসন কর্মসুচির আয়তায় রাখা হয় যেখানে সরকারি চাকররা আমাদের বোঝাতো যে বর্তমানে জিহাদ করা হারাম যদি না সরকার বা শাষক অনুমতি না দেয়। কিভাবে ওই শাষক জিহাদ করওয়া আনেক দুরের কথা এবং লিগাল ভাবে তোমার মুক্তি অসম্ভব ছিল কিন্তু আবু মুসা ইল জারকাভি তরোয়ারই সেটা করছে। পাচ বছর গোয়েন্তানামোতে কাটানোর পর আমাকে বলা হল আমার মুক্তি হবে। কিন্তু আমার মুক্তি একমাস দেরি হয়েছিল কারন আমি তাদের বলেছিলাম যে আমি মুক্তি পাওয়ার পরপরই আবার জিহাদে যোগ দিব। এই এক মাসেই তারা আমার সেকশনের আমাদের তিন জন ভাইকে হত্যা করে । আমার মুক্তির সময় যত এগিয়ে আসছিল ততই এই পাচ বছরের বন্দি দশার বিভিন্ন দুঃখ ও আনন্দের কথা আমার মনে পড়ছিল। বিদায়ের সময়টি খুবই কষ্টকর ছিল। সেই ভাইদের বিদায় জানাতে গিয়ে আমার অন্তর ছিড়ে যাচ্ছিল যাদের সাথে আমি এই পাচ বছর একসাথে কাটিয়েছি। আমাদরে বড় একটি আর্মির বাসে করে এয়ারপোর্টে নিয়ে আসা হলো যেখান একটি সৌদি জেট প্লেন দড়িয়ে ছিল। তার সাথে ছিল ৭০ জন মানুষ ক্রু , গোয়েন্দা ও পুলিশ মিলে। আমাদেরকে বিমানে তোলা হলো যখন আমরা গোয়েন্তামামো বের দিকে শেষ নজর দিচ্ছিলাম, সেই জায়গা যেখানে আল্লাহ রহমন করেছিলেন তার নামাজের নামাজের দিকে আহ্ববান ও তার ইবাদতের মাধ্যমে এই মাটিতে। বিমানটি রিয়াদ পৌছালে মরোক্ক হতে তেল ভরে নেবার পর। রিয়াদের পৌছানোর পর আমাদরে বাসে করে আল হায়ের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এটা সেই কারাগার যেখানে আমাদের বিখ্যাত আলেম, পবিত্র বোন ও মুজাহিদিন ভায়েরা আনেত দিন ধরে বন্দি আছে। পৌছানোর পর তারা আমাদের সবাইকে একই সেলে ভরে দেয় যেখানে আমরা তিন মাস যাবৎ ছিলাম। সরকারি অফিসাররা তে বলবে আমেরিকার বিরুদ্ধে যে নিজেই তাদের চাটুকার ও দালাল ! ওই শাষক আমাদের কে অনুরোধ করেছিল সৌদি আরবের আল মিকরিন ও আল আউফি এরমত মুজাহিদিনদেরকে কাজ কে বাতিল বলার জন্য কিন্তু আমরা তাতে অস্বিকৃতী জানায়। আমাদের একভাই মুহাম্মাদ বিন নায়েফের( নিরাপত্তা বাহিনির সহ অধিনায়ক) সাথে হ্যান্ডসেক করতে ও প্রত্যাখান করে এই বলে যে ”সে তার ওই হাত কে আমাদের মুজাহিদ ভাইদের রক্তে রঞ্জিত করেছে ”। এই লেখাটি লেখা পর্যন্তও ওই ভাই জেলে রয়েছেন আল্লাহ তার মুক্তিকে ত্বরান্তিত করুন।