আরবইলম ও আত্মশুদ্ধিউসামা মিডিয়াবই ও রিসালাহমিডিয়াশাইখ সামি আল উরাইদী হাফিযাহুল্লাহশামহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

‘শামের অধিবাসীদের অবস্থা যখন বিপন্ন হবে, তখন তোমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ থাকবে না।’- এর ব্যাখ্যা -শাইখ সামী আল উরাইদী হাফিজাহুল্লাহ

বিসমিহী তাআলা

‘শামের অধিবাসীদের অবস্থা যখন বিপন্ন হবে,

তখন তোমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ থাকবে না।’- এর ব্যাখ্যা

 

মূল

শাইখ সামী আল উরাইদী হাফিজাহুল্লাহ

অনুবাদ

আব্দুল্লাহ হিন্দুস্তানি হাফিজাহুল্লাহ  

 পিডিএফ

৭০৪.২৮ কেবি

http://up.top4top.net/downloadf-2358z3w2-pdf.html

http://www.mediafire.com/download/tyr8s2pfl5olpaj/sham1.pdf

ওয়ার্ড

৪৮৫.৫৮ কেবি 

http://up.top4top.net/downloadf-235xe3u1-docx.html

http://www.mediafire.com/download/0y84uikn6y0wr1h/sham.docx

অনলাইনে ছড়িয়ে দিন

https://justpaste.it/xm8f

 

 

PDF
—-
http://www.mediafire.com/file/3n6qwh8gnx27lut/108._sham1.pdf/file
https://archive.org/download/U_M_A_04/108.%20sham1.pdf

Word
—–
http://www.mediafire.com/file/r1d9bi77lgmbbt5/108._sham1.docx/file
https://archive.org/download/U_M_A_04/108.%20sham1.docx

======================

বিসমিহী তাআলা

শামের অধিবাসীদের অবস্থা যখন বিপন্ন হবে তখন তোমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ থাকবে না।’- এর ব্যাখ্যা

 

মূল

শাইখ সামী আল উরাইদী হাফিজাহুল্লাহ

অনুবাদ

আব্দুল্লাহ হিন্দুস্তানি হাফিজাহুল্লাহ  

 

শামের ভুমিকে আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীর জন্য বরকতময় করেছেন।

ইরশাদ হচ্ছে:

{سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ}

পবিত্র ঐ সত্তা যিনি রাত্রি বেলা নিজ বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে ঐ মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ কিরিয়েছেন যার আশেপাশে আমি বরকত নাযিল করেছি।

আরো ইরশাদ হচ্ছে:

{وَنَجَّيْنَاهُ وَلُوطًا إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا لِلْعَالَمِينَ}

আমি তাকে (ইবরাহীমকে) এবং লুতকে উদ্ধার করে ঐ ভুমিতে নিয়ে গেলাম যেখানে আমি বিশ্ববাসীর জন্য বরকত নাযিল করেছি। (এখানে শামের ভুমিই উদ্দেশ্য।) উলামায়ে কেরাম বলেছেন, মক্কা ও মদীনার পর তৃতীয় নাম্বারে মর্যাদাপূর্ণ হল শামের ভুমি। শামের ফযীলত সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

কয়েকটি হাদীস নিম্নরূপ:

১. ইবনে হাওয়ালা রাযি. বর্ণনা করেন, নবীজী সা. বলেছেন, তোমরা অচিরেই তিন বাহিনীতে বাহিনীবদ্ধ হবে। একটি বাহিনী হবে শামে, একটি ইয়ামানে আরেকটি ইরাকে। ইবনে হাওয়ালা রাযি. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা. আমি যদি উক্ত সময় পেয়ে যাই, তাহলে আমি কোন বাহিনীর সাথী হবো আমাকে বাতলে দিন। নবীজী সা. বললেন, তুমি শামের বাহিনীর সাথে থাকবে, কেননা শামের ভুমি আল্লাহর কাছে আল্লহর যমীনের পছন্দনীয় ভুমি। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে উত্তম বান্দাদেরকে এ ভুমিতে টেনে আনেন। …. আল্লাহ তাআলা শাম এবং শামের অধিবাসীদের ব্যাপারে নিজে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।’ (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং-২৪৮৩)

২. যায়েদ বিন সাবেত রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, নবীজী সা. ইরশাদ করেছেন, ‘শামের অধিবাসীদের জন্য সুসংবাদ’ জিজ্ঞেস করা হল কেন হে আল্লাহর রাসূল? নবীজী সা. বললেন, ‘ কেননা রহমানের ফেরেশতাগণ শাম ভুমির উপর নিজেদের ডানা প্রসারিত করে রেখেছে।’ (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং-৩৯৫৪)

৩. নবীজী সা. শামের জন্য বরকতের দুআ করেছেন। সহীহ হাদীসে এসেছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি. বর্ণনা করেছেন, নবীজী সা. একদা এভাবে দুআ করেছেন, ‘ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মদীনা, শাম এবং ইয়ামানে আমাদের জন্য বারাকাহ দান করুন।’ (মু‘জামুল আওসাত তবরানী হাদীস নং-২৪৬)

অতীতের অনেক উলামায়ে কেরাম শামের ফযীলত সংক্রান্ত আয়াত-হাদীস সংকলন করে স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন। মূলত আল্লাহ তাআলা শামের পবিত্র ভুমিকে পৃথিবীর অন্যান্য ভুমির উপর বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা শামের অধিবাসীদের উন্নতি-অবনতি, তাদের সুখ-শান্তি ও দু:খ-দুর্দশাকে গোটা মুসলিম উম্মাহর উন্নতি-অবনতি, সুখ-শান্তি ও দু:খ-দুর্দশার মাপকাঠি নির্ধারণ করেছেন। মুআবিয়া বিন র্কুরা রাযি. থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীসে এসেছে, নবীজী সা. বলেছেন, ‘ শামের অধিবাসীদের অবস্থা যখন বিপন্ন হবে, তখন তোমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ থাকবে না…’ (সুনানে তিরমিযী হাদীস নং-২১৯২)

অতএব এই উম্মাহর উন্নতি-অবনতি শামের অধিবাসীদের উন্নতি-অবনতির সাথে ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে যারা সামান্যতম জ্ঞানও রাখে তাদের কাছে এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।

হযরত হাসান বিন আলী রাযি. যখন মুআবিয়া রাযি. এর সাথে সন্ধি চুক্তি করত খেলাফতের দাবী ত্যাগ করলেন, তখন থেকে নিয়ে প্রায় একশত বছর শামের পবিত্র ভুমি ইসলামী সামরাজ্যের রাজধানী ছিল। ঐ সময় ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং বিজয় এত পরিমাণ হয়ে যা অন্য কোনো সময়ে হয়নি। তখনই শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং ব্যবসায়িক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে ইসলাম বিশ্ব সভায় সর্বোচ্চ আসন দখল করে নিয়েছিল। শাম-ই মুসলিম উম্মাহর এসব বিজয় ও সফলতার কেন্দ্রভুমি ছিল।

বন্ধুগণ! নুসাইরী শিয়াগোষ্ঠি শামের হুকুমত ছিনিয়ে নিয়ে শামের পবিত্র ভুমিগুলো ইয়াহুদীদের কাছে হস্তান্তর করার পর, শাম পুনরায় তার গায়ে লেপটে থাকা বে-ইজ্জতী ও অপমানের ধুলা ঝেড়ে ফেলে তার গৌরবময় অতীতের দিকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। শামের ভুমিতে হক ও বাতিলের মধ্যে এক চুড়ান্ত ফায়সালামূলক যুদ্ধের অবতারণা হয়েছে। এ যুদ্ধের অগ্রনায়ক ছিলেন শহীদ কমাণ্ডার শায়েখ মারওয়ান হাদীদ রহ.। তিনি যখন নুসাইরী হুকুমাতের কুফুরীর ব্যাপারে নিশ্চিত হলেন, তখন তিনি ফতওয়া দিলেন, নুসাইরী শিয়া কাফের গোষ্ঠী মুসলিমদের শাসক হতে পারবে না এবং শাসক হিসাবে বহালও থাকতে পারবে না। তিনি এই কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য শামের মুসলিম বিশেষ করে নিজের অনুসারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলেন। একপর্যায়ে তিনি জিহাদের ফরয দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার জন্য একটি জিহাদী কাফেলা তৈরি করলেন। অবশেষে তাকে এই অপরাধে (?) জালেম নুসাইরী শিয়াদের হাতে শাহাদাত বরণ করতে হল।

এই নুসাইরী শিয়াগোষ্ঠি যাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং অতীতে মুসলিমগণ জিহাদ করেছে এবং করছে, তাদের হুকুম ও অবস্থা উলামায়ে কেরাম স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছেন। ইমাম গাযালী রহ. বলেছেন, ‘ এদের সাথে মুরতাদদের মত আচরণ করা হবে এবং ভুমিকে তাদের থেকে পবিত্র করা ওয়াজিব।’

ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেছেন, ‘ ঐসব গোষ্ঠী যারা নিজেদেরকে নুসাইরী নামে অবহিত করে এবং অন্যসব বাতেনী গ্রুপ ইহুদী নাসারাদের চেয়েও ভয়ংকরতম কুফুরীতে লিপ্ত। বরং তারা অনেক কাফের-মুশরিকের তুলনায় বড় কাফের। এরা ইসলাম এবং মুসলিমদের জন্য যুদ্ধরত কাফেরদের তুলনায়ও বেশি ক্ষতিকর। মুসলিমদের প্রত্যেক শত্রুর সাথেই এরা বন্ধুত্ব করে। খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের কোনো এলাকা পদানত করলে ঐ দিনটা তাদের কাছে সব চেয়ে বড় খুশির দিন  হয়।’

আল্লাহর রহমতে শামের পবিত্র ভূমি আজ যে মুবারাক জিহাদ এবং পবিত্র আন্দোলন প্রত্যক্ষ্য করছে, মনে হচ্ছে এসবের মাধ্যমে পৃথিবী তার  বর্তমান সভ্যতা-সংস্কৃতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আরেক নতুন ইসলামী সভ্যতার দিকে যাত্রার প্রথম ধাপ অতিক্রম করছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন ‘ জয়-পরাজয়ের দিনগুলো আমি মানুষের মধ্যে পরিবর্তন করতে থাকি’।

এক সভ্যতা থেকে আরেক সভ্যতা-সাংস্কৃতির দিকে যাত্রা এবং হক-বাতিলের মাঝে চুড়ান্ত ফায়সালা সহজ সাবলীলভাবে সংগঠিত হয় না। বরং এ সময় প্রচন্ড রকমের ফেতনা, ফাসাদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ চতুর দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব দ্বারা হক ও হকের ঝান্ডাবাহীদের সারি পৃথক হয়ে যায়। বাতিল পন্থীরা স্পষ্টরূপে চিহ্নিত হয়ে যায়। ঈমানদারদের ঈমানের পরীক্ষা হয়ে যায়।

কথার শেষ পর্যায়ে এসে আমি খবীস নুসাইরী গোষ্ঠীর সাথে জিহাদের ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করতে চাই। উলামায়ে কেরাম আম্বিয়া আ. এর ওয়ারিস। উম্মাহকে পরিচালনা করা, হককে স্পষ্টরূপে বর্ণনা করা এবং তদানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করাকে আল্লাহ তাআলা উলামাদের উপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন। ইতিহাস সাক্ষী যখনই উলামায়ে কেরাম তাদের এই ওয়াজিদ দায়িত্ব পালনের জন্য দাঁড়িয়েছে, তখনই উম্মাহ তাদের পাশে এবং তাদের সন্তান মুজাহিদদের পাশে জড়ো হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য খুব দ্রুত অবতীর্ণ হয়েছে।

তাতারদের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহর জিহাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়েগেছে। ‘শাকহাব’ যুদ্ধে উলামায়ে কেরাম নিজেদের ওয়াজিব ভুমিকায় যখন অবতীর্ণ হলেন (তখন উলামাদের প্রতিনিধিত্ব করতে ছিলেন শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.) তখন উম্মাহ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াল। তারা নিজেদের সন্তান মুজাহিদদেরকে আপন করে নিল। ফলশ্রুতিতে দ্রুত আল্লাহর সাহায্য নেমে আসল। বর্তমান যুদ্ধের চিত্র একই রকম হবে। যখনই উলামায়ে কেরাম নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে, তখন উম্মাহ তাদের সাথে আসবে এবং মুজাহিদদের পাশে দাঁড়াবে, ফলে আল্লাহর ইচ্ছায় বিজয় এবং নুসরত ত্বরান্বিত হবে ।

হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে তোমার দীনের জন্য জীবিত রাখ এবং তোমার পথে মৃত্যু দান কর। আমীন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =

Back to top button