আর্কাইভইতিহাস- ঐতিহ্যউসামা মিডিয়াপাকিস্তান আর্কাইভপ্রবন্ধ-নিবন্ধবার্তা ও বিবৃতিমিডিয়া

পাকিস্তান সরকার ও তেহরিকে তালিবানের মধ্যকার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ || বাস্তব ঘটনা, বাস্তব সত্য

পাকিস্তান সরকার ও তেহরিকে তালিবানের মধ্যকার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ || বাস্তব ঘটনা, বাস্তব সত্য

পাকিস্তান সরকার ও তেহরিকে তালিবানের মধ্যকার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ || বাস্তব ঘটনা, বাস্তব সত্য
ডাউনলোড লিংক-

ডকুমেন্ট
https://archive.org/details/PakGovTTP

http://www.mediafire.com/file/cps758…k+Gov+TTP.docx

পিডিএফ
https://archive.org/details/PakGovTTP

http://www.mediafire.com/file/er2qn2…ak+Gov+TTP.pdf

অনলাইন লিংক-
https://justpaste.it/pak_ttpbangla

 

 

PDF
—-
http://www.mediafire.com/file/xsovxnews0p7gc8/90._Pak_Gov_TTP.pdf/file

https://archive.org/download/U_M_A_3/90.%20Pak%20Gov%20TTP.pdf

Word
—–
http://www.mediafire.com/file/xbeuxhmagri5dfp/90._Pak_Gov_TTP.docx/file

https://archive.org/download/U_M_A_3/90.%20Pak%20Gov%20TTP.docx

=====================

পাকিস্তান সরকার ও তেহরিকে তালিবান পাকিস্তানের মধ্যকার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ

বাস্তব ঘটনা, বাস্তব সত্য

শান্তি আলোচনার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যম গুলোতে অনেক নেতিবাচক কথা লেখা ও ছড়ানো হচ্ছে। তাই আমি সত্য উন্মোচন করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

যেহেতু আমি পুরো শান্তি আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলাম, তাই এটা জরুরী যে মুসলিম উম্মাহর সামনে শান্তি আলোচনা চলাকালিন ঘটনাগুলোর সত্যতা তুলে ধরা হোক।

আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকার পাকিস্তানের সরল জনগণকে ভরসা দিয়ে বোকা বানানোর! সবাই জানে যে আমেরিকা অনেক বছর ধরেই আক্রমণের দাবি করে আসছিলো কিন্তু পাকিস্তান সরকার জবাবে বলেছিল যে আমরা যদি হঠাৎ করেই আক্রমণ করি তাহলে জনগন মনে করবে যে আমরা অ্যামেরিকার হুকুমের পালন করছি এবং এর ফলে বিরোধিতা শুরু হবে, তাই আমরা প্রথমে যদি জনগণের সমর্থন নিয়ে ফেলি তাহলে সহজেই কোন বাধা ছাড়া আক্রমণ করে ফেলতে পারবো। আমার কথার প্রমাণ হল যে আক্রমণ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৪ জানুয়ারী ২০১৪ এবং তাঁর পর দিনই আমেরিকান জোটের সাহায্য তহবিল যা অনেক দিন ধরে বন্ধ ছিল চালু হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ৩৫ মিলিয়ন ডলার দেয় পাকিস্তানকে।

এখন কেউ যদি বলে এটা জোটের সাহায্য তহবিল কেন এটার সাথে সামরিক কার্যক্রম মেলান হচ্ছে? তাহলে আমরা সেই ভদ্রলোকদের বলতে চাই দেখুন আমেরিকায় নিযুক্ত পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত কি বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে আমেরিকা এই জোট সাহায্য তহবিল দিয়েছে ওয়াযিরিস্থান আক্রমণের কারণে। তাই যখন দাতা ও গ্রহীতা দুজনই তাদের অবস্থান বর্ণনা করছে সেখানে শ্রোতাদের বলার কিছু থাকে না।

আলোচনার পটভূমি হচ্ছে যে গণমাধ্যম গুলো এই ধারনা দিচ্ছিল যে তালিবান অজথাই যুদ্ধ চায়, তারা যদি যুদ্ধ না চায় তাহলে কেন তারা শান্তি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিরসন করছেনা। তাই তালিবান তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে তারা চায় পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী আমেরিকার গোলামী ছেড়ে দিয়ে, দেশে ইসলামী শরিয়া ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করুক। যদি এই বিতর্ক সমাধান করা সম্ভব হয় এবং সরকার ও সেনাবাহিনী এর সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করতে চায় তাহলে আমরা প্রস্তুত আছি।

যখন শান্তি আলোচনা শুরু হচ্ছিল, তখনই হটাৎ মেহসুদ দলের নেতা মাওলানা ওয়ালিউর রহমান মেহসুদকে ড্রোণ হামলায় হত্যা করলো আমেরিকা কিন্তু তালিবান স্পষ্ট করে তাদের অবস্থান বলে দেয় যে তারা পাকিস্তানের সাথে কোন শত্রুতা চায় না। যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সরকার কাফেরদের গোলামী ছেড়ে দিয়ে শরিয়া আইন দেশে জারি করে তাহলে আমরা সব দুঃখ ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের বন্ধু হয়ে থাকব। সরকার আমাদের বলল যে আমেরিকা আলোচনা চায় না তাই তারা ইচ্ছা করে সমস্যা তৈরি করছে। কিন্তু একই সময় সরকার ও সেনাবাহিনী আমেরিকার খেদমত করতে ব্যস্ত, যদি সরকারের সত্যিই সৎ ইচ্ছা থাকত তাহলে সে আমেরিকাকে সতর্ক করে দিত। আপনারা সরকারের আসল উদ্দেশ্য বুঝতেই পারছেন।

এরপর, তেহরিক এ তালিবান পাকিস্তান নেতা হাকিমুল্লাহ মেহসুদকে ড্রোণ হামলায় শহীদ করা হয় তখনও তালিবান তাদের অবস্থানের পরির্বতন করেনি।

সরকার আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে এবং গণমাধ্যমে বেশ প্রচারনা চালায়, যাতে জনগন মনে করে সরকার আলোচনার ব্যাপারে নিষ্ঠাবান। তাই মাওলানা আব্দুল আযিয যিনি কমিটির সদস্য ছিলেন কমিটি ছেড়ে দেন এবং বলেন যে সরকার আসলে আলোচনার ব্যাপারে আন্তরিক না, সরকার জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে এই বলে যে কমিটির সব ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কিন্তু বাস্তবতা এই যে কমিটির কোন ক্ষমতাই নেই।

কিন্তু অনেক দিন যাবত গণমাধ্যমে এই নাটক চলতে থাকে, কমিটি অনেক সপ্তাহের বিরতির পর বৈঠকে বসে, বৈঠকগুলো অকার্যকর পরিণত হয় এবং আলোচনার দিকে আগানোর কোন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। গণমাধ্যমে প্রচার করা হয় যে সাফল্য পাওয়া গেছে কিন্তু আসলে তা নয়। যদি কমিটির আন্তরিকতা থাকত তাহলে তালিবানের সাথে যথাশিগ্রই যোগাযোগ করা হত কিন্তু নাটক কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে এবং সরকার পুরান কমিটির কিছু সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে।

এখন এ একটি নতুন নাটক শুরু হয়।

যখন আলোচনা শুরু হল, তালিবান এক মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে এখানে তালিবানের নিয়ন্ত্রণে সকল দলকে এক মাসের জন্য যুদ্ধ বন্ধের আদেশ দেওয়া হয় এবং সবাই তাতে রাজি হয়। এর ফলে তালিবান এক মাস কোন কার্যক্রম চালায়নি। এর মধ্যে দেশে কিছু আক্রমণ ঘটে কিন্তু তালিবান বলে যে তালিবান ও তাঁর অধীনে কোন দল এর সাথে জড়িত না। শুধু তালিবানই পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে নয় বরং পাকিস্তান জুড়ে আরও অনেক দল আছে যেমন বেলুচিস্থানে। তেহরিক এ তালিবান পাকিস্তান শুধু তাঁর আধিনস্ত দলগুলোর জন্য দায়বদ্ধ এবং পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সব দলের জন্য দায়বদ্ধ নয়। তেহরিক এ তালিবানের এই কথাটা সরকারের মেনে নেওয়া উচিত ছিল, কারণ তালিবান সরকারের এই অজুহাত মেনে ছিল যে আমেরিকানরা আলোচনা চায় না তাই তারা তেহরিক এ তালিবানের নেতাকে ড্রোণ হামলা করে হত্যা করেছে। অন্য দিকে সরকার যুদ্ধবিরতি সময় কিছু তালিবান কয়েদীকে হত্যা করে যার প্রমাণ সরকারকে দেওয়া হয় এবং সরকার বলে তারা এই ঘটনাগুলোর তদন্ত করবে এবং কথা দেয় যে এরকম ঘটনা আর ঘটবে না।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগে তালিবান কমিটি তাদের “বাড়ির কাজ” শেষ করে আসে, যেমন আলোচনায় কি বিষয়ে কথা বলবে এবং বন্দিদের তালিকা তৈরি করে যাতে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা যায়। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর তালিবান কমিটি সরকারের কমিটির যোগাযোগের অপেক্ষায় থাকে যে কখন আলোচনা শুরু হবে!

এখন সরকারের গুরুত্বের বিষয়টা আঁচ করুন যে এক মাসের সময়ের মধ্যে ৩ সপ্তাহ পার হবার পর সরকার কমিটি তালিবানের সাথে যোগাযোগ করেনি। এতোগুলো উপদেষ্টা বৈঠকের পরও সরকারী কমিটির কার্যক্রম শেষ হয় নি।

এমনকি গণমাধ্যমেও চিৎকার করে বলা হয় যে তালিবান যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে এবং কমিটিকে আমন্ত্রন করেছে তবে কমিটি কি করছে?

তাই ভাই! আলোচনা সরকারের একটা নাটক বৈ কিছুই না। বরং জনগণকে ধোঁকা দেওয়া!

যাইহোক সরকারী কমিটি তিন সপ্তাহ নষ্ট করার পর শেষ সপ্তাহে তালিবান কমিটির সাথে যোগাযোগ করে এবং তালিবান কমিটিকে তাদের পছন্দনীয় জায়গায় আমন্ত্রন করে যা তালিবান উপদেষ্টা বৈঠকের পর রাজি হয়। এবং বিপজ্জনক রাস্তা ও বন্যার পানি পার করে সরকারী কমিটির পছন্দনীয় গন্তব্যে যায় যা সামরিক দিক দিয়েও বিপজ্জনক ছিল, যেখান থেকে সামরিক ঘাঁটি পাঁচ মিনিট দূরে।

এই জায়গাটা সামরিক দিক থেকে বেশ বিপজ্জনক কারণ অতীতে হাজী মুসলিম খান এবং তালেবানের অন্যান্য কমিটি সদস্যকে এখানে আমন্ত্রণ করে গ্রেফতার করেছিল, যাদের পরে হাজতে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়।

যাইহোক তালিবান তাদের সিদ্ধান্তের উপর অটল ছিল এবং সত্যতা ও পর্যাপ্ত সামরিক ব্যবস্থার সাথে সেই প্রতীক্ষিত গন্তব্যে পৌছায়।

সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে সরকারি কমিটি তালিবান কমিটির একদিন পর ওই জায়গায় পৌঁছাবে। পরদিন আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল না, যখন তালিবান কমিটির সদস্যরা সরকারী কমিটির সাথে যোগাযোগ করলো এবং জিজ্ঞাসা করলো কখন আসবে, তখন সরকারী কমিটি বলল আমরা পেশাওয়ারে আছি, যখনই আবহাওয়া পরিষ্কার হবে আমরা হেলিকপ্টারে করে বৈঠক স্থানে পৌঁছে যাব। তালিবান কমিটি জিজ্ঞাসা করলো যদি আবহাওয়া এক সপ্তাহেও পরিষ্কার না হয় তাহলে কি আমরা পুরো এক সপ্তাহ অপেক্ষা করব? তাই হেলিকপ্টার বাদ দিয়ে রাস্তা দিয়ে আসুন তাহলে ইনশাআল্লাহ্‌ যাত্রা লম্বা হলেও এক দিনে পৌঁছে যাবেন। মাওলানা সামিউল হকের মুখপাত্র সরকারী কমিটিকে বার্তাটা জানালে তারা তা প্রত্যাখ্যান করলো এবং হেলিকপ্টারে আসার কথাকেই জোর দিল।

যাইহোক, সরকারী কমিটি রাস্তা দিয়ে আসতে অনিচ্ছা দেখাল তাই সে দিন আর আসল না এবং তালিবান কমিটি এক দিন অপেক্ষা করতে হল, পর দিন আবহাওয়া ভালো হল এবং তারা হেলিকপ্টারে চড়ে আসল।

আলোচনা শুরু হল বন্ধ দরজার ভিতরে। সরকারি কমিটি আলোচনা শুরু করলো তালিবানের উপর অভিযোগ দিয়ে, তারা চাচ্ছিল তালিবান তাদের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের দাবিগুলো মেনে নিবে কিন্তু যখন তালিবান তাদের কথা শুরু করলো তারা কুরআন ও সুন্নাহর দারা প্রমাণ উপস্থাপন করলো এবং তাদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের জবাব কুরআন ও সুন্নাহ থেকে দেওয়া শুরু করল তখন এমনকি মাওলানা সামিউল হকও তালিবানের প্রমানের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারে নি।

তালিবানের মুখপাত্র বললেন এখন এসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আলাপ করার সময় না, আসল বিষয়ে আসি, কিছুক্ষন আলোচনা চলার পর আবার আলোচনা শুরু হল মধ্যাহ্ন ভোজ ও নামাযের পর। তালিবান আসা করছিল যে আসল বিষয়গুলো নিয়ে হয়ত এখন কথা হবে কিন্তু তাদের আশার উল্টোটাই হল। আসলে সরকারি কমিটি একটা দাবিই উপস্থাপন করলো যা হচ্ছে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি করা। তালিবান কমিটি বলল, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চিন্তা করবেন না, আমরা তা বৃদ্ধি করব, আসুন অন্য বিষয়ে কথা বলি যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বন্দীদের মুক্তি, আপনারা যদি আমাদের কিছু বন্দীদের ছেড়ে দেন এবং আমরা যদি আপনাদের কিছু বন্দীদের ছেড়ে দেই তাহলে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে। এটা শান্তি আলোচনার জন্য ইতিবাচক হবে। যদি শুধু যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি পায় তাহলে এই বৈঠকের কোন মানে নেই।

কিন্তু সরকারি কমিটি বলল বন্দী মুক্তির ক্ষমতা তাদের নেই তারা শুধু যুদ্ধ বিরতি বৃদ্ধি করতে এসেছে। দয়া করে এই বিষয়ে কথা বলুন। তালিবান কমিটি জবাব দিলো যদি আপনাদের পূর্ণ ক্ষমতা না থাকে তাহলে কেন গণমাধ্যমে এমনটা প্রচার করছেন। আমাদের দেখুন, আমাদের নেতৃত্ব আমাদের উপর পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছেন আমরা যা সিদ্ধান্ত নিবো তাঁরা তাই মেনে নিবেন।

এখন সরকারি কমিটি চুপ হয়ে গেল, তাঁরা একই কথায় ঘুরেফিরে আসছিলো, তারা যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করলে কি লাভ হবে তা নিয়ে কথা বলছিল, তারা বলছিল যদি তালিবান যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করে তাহলে বিশ্বের সবাই বলবে আমেরিকা (যারা সরকার ও তালিবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা চায়না) তাদের সব চেষ্টা সত্তেও সফলতার সাথে শান্তি আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা ছাড়াও আরও অনেক সুবিধার কথা বলতে থাকল। কিন্তু তালিবান কমিটি বলল আলোচনা যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধির সাথে নয় বন্দী মুক্তির সাথে আগাতে পারে, তাই আলোচনা আগাতে চাইলে এই বিষয়ে কথা বলুন। কিন্তু যেহেতু সরকারি কমিটি একটি পুতুল যার কোন ক্ষমতা নেই, তাই তাঁরা একই জিনিস বার বার বলছিল। তাঁরা বলছিল আপনারা যদি আমাদের যুদ্ধবিরতির দাবি না মানেন তাহলে আমরা ফেরত গিয়ে কিভাবে গণমাধ্যম ও জনগণের সম্মুখীন হবো? তালিবান কমিটি বলল আমরা এখানে যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করতে আসিনি আমরা এসেছি অন্য অনেক বিষয়ে কথা বলতে, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা আমাদের সাথীদের কি বলব? আমাদের কোন তাড়া নেই, আপনারা সরকারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করুন অথবা এই বিষয়ে সরকারের জবাব জেনে আসুন, ততক্ষণ আমরা আপনাদের জন্য এখানেই অপেক্ষা করব। কিন্তু সরকারই কমিটি তা প্রত্যাখ্যান করলো এবং যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধির একই দাবী বার বার বলতে থাকল যাতে তাঁরা সন্ধ্যার আগে পেশাওয়ার যেতে পারে। তাদের ওইখানে থাকা বা সরকারের সাথে যোগাযোগ করার কোন ইচ্ছাই নেই,

তালিবান কমিটি বলল আপনারা যদি রাজি না হন তবে পেশাওয়ার চলে যান এবং সরকারের সাথে কথা বলুন এবং ফোনে আমাদের জানান। আমরা পরবর্তী বৈঠক কোথায় কখন হবে তা ফোনে আপোষে ঠিক করে নিবো। শুরুমাত্র তারপরই আমরা যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করব। তারপর সরকারি কমিটি চলে গেল।

তালিবান কমিটি অনুগ্রহ স্বরূপ ১০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করলো এবং সরকারি কমিটির জবাবের অপেক্ষা করতে থাকল কিন্তু ১০ দিনেও কোন জবাব পাওয়া গেল না, কারণ আসলে তাঁরা আলোচনাকে কোন গুরুত্বই দিচ্ছিল না যেটা সরকারের একটি রাজনৈতিক চাল প্রমানিত হয়েছে।

অবশেষে ১০ দিনের বর্ধিত যুদ্ধবিরতি শেষে তালিবান আর যুদ্ধবিরতি বৃদ্ধি করলো না কারণ সরকার গুরুত্ব দিচ্ছিল না তাই তালিবান কেনই বা বৃদ্ধি করবে যেখানে যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যই পূর্ণ হল না। সরকারের জন্য আলোচনা একটা ঠাট্টা এখন শুধু তরবারির একটা পথই বাকি রয়েছে এখন তরবারিই তালিবান ও সরকারের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিবে।

এরপর আলোচনার নাটকের পর সামরিক কার্যক্রম শুরু হল, তালিবান শহর এলাকা থেকে সরে আসার পরিকল্পনা আগেই করেছিল, যাতে পাহাড়ি এলাকায় লড়াই করা যায়। শহর ও জনগণের থেকে দূরে, কারণ তা তালিবানের জন্য সুবিধাজনক এবং তালিবান সেনাবাহিনীকে দিন-রাত প্রতিনিয়ত সবরকম অস্ত্র যেমন মাইন, ইত্যাদি দিয়ে হামলা করতে পারবে।

এই জন্যই সেনাবাহিনী উল্লাসে লাফাচ্ছিল আর গর্বিতবোধ করছিল যে আমরা ওয়াযিরিস্তানের ৯০% এলাকা খালি করে দিয়েছি, এই এলাকা আসলে তালিবান প্রতিরক্ষা করেনি বরং আক্রমণ শুরুর আগেই তাঁরা পিছু হটেছিল আর বাকি ১০% তালিবান প্রতিরোধ করে আসছে, যা সেনাবাহিনী গত ১ বছরেও খালি করতে পারেনি। তালিবান দিন রাত সেনাবাহিনীর উপর গেরিলা হামলা করে যাচ্ছে যার কারনে সেনাবাহিনী স্থানীয় লোকজনের কাছে আমান লাস্কার (শান্তিবাহিনী) বানানোর জন্য ভিক্ষা চাচ্ছে, কিন্তু স্থানীয় লোকজন দেখেছে শান্তিবাহিনীতে থাকার ফলে কি হয় এবং প্রতিনিয়ত টার্গেট করে হত্যা করা হয়। স্থানীয় লোকজনও বুঝতে পেরেছে যে আমেরিকা তাদেরকে টয়লেট পেপারের মত ব্যাবহার করে আগের শান্তিবাহিনীর মত তাদেরও ফেলে দিবে তাই তাঁরা আমান লাস্কার (শান্তিবাহিনী) বানাতে বা যোগ দিতে অনিচ্ছুক।

সামরিক কার্যক্রমের শুরু থেকে তেহরিক এ তালিবান পাকিস্তান সামরিক কৌশলে পরির্বতন এনেছে। এক সহকর্মীর ভাষ্য অনুযায়ী, একটি “বড় পেকেজ” একসাথে এক বারই দেয়া হয় আর স্বাভাবিক অবস্থায় সরকারী লোকদের তালিবানের বিশেষ বাহিনী টার্গেট করে হামলা চালায় দেশের ভেতরে। অপারেশান শুরুর পর থেকে কিছু সময় হয়েছে, সরকার সব কিছু করেছে কিন্তু কোন সাফল্য আসেনি। এলাকা হারানো কোন বিষয় না। অপারেশনের কারণে তালিবান দেশের সব কোনায় পৌঁছে গেছে, প্রতিদিন কেউ না কেউ লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে, এখন যে ব্যক্তিরা “জারবে আজব” অপারেশনের সাফল্য উদযাপন করছিল তাঁরা আইএসপিআর এর মিথ্যা দাবিগুলোকে সরিয়ে বলছে, যদি তালিবানকে হটিয়ে দেওয়া হয়েই থাকে তাহলে সরকার আর নিরাপত্তা বাহিনীর লোকদেরকে কারা হত্যা করছে? তাঁরা কি এমনি এমনি মারা যাচ্ছে। আইএসপিআর দাবি করে তারা তালিবানের দশ হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে কিন্তু বাস্তবতা হল পাকিস্তানে আইএসপিআর এর দাবির অর্ধেকেরও কম তালিবানকে হত্যা করেছে জারবে আজাব অপারেশনে। আর এলাকা হারানোর কথা বললে তালিবান গেরিলা যুদ্ধ করছে, যা কোন এক জায়গায় সীমাবদ্ধ না। তাই এলাকা কোন বিষয় না।

বুশ ১৫ বছর একই স্লোগান চিৎকার করতো যে তালিবান দু সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, তারপর কি হল তা সবার সামানেই আছে। যারা এই অপারেশনের আনন্দ উৎযাপন করছে, তাদের মনে রাখতে হবে যে তালিবানের কিছুই হারানোর নাই, আপনারা নিজেদের নিয়ে ভাবুন! কারণ আমেরিকা সাহায্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এটা গেরিলা যুদ্ধ, যার ফল কয়েক দিন বা মাসে আসে না, এটা বছরের পর বছর চলে চলে। তোমরা তোমাদের প্রভু আমেরিকার মত খুশি হচ্ছো! কিন্তু এরপর যা হবে তা তোমাদের প্রভুরাও আশা করেনি।

আর বেশি দেরি নেই যখন ইসলামী ব্যবস্থা কায়েম হবে এবং হয় এই সরকার আর সেনাবাহিনী কাফেরদের গোলামী ছেড়ে আল্লাহর বিধান মেনে নিবে, না হয় তাদের তাতে বাধ্য করা হবে।

ওয়াসসালাম

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =

Back to top button