সেই মায়ের মত হয়ো না, যে তার সন্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে সন্তুষ্ট! শাইখ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ
সেই মায়ের মত হয়ো না, যে তার সন্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে সন্তুষ্ট!
– শাইখ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ
ডাউনলোড করুন
PDF
https://banglafiles.net/index.php/s/xnkGg3c6wqJEGBy
https://archive.org/download/balakot_media_books/Abu_Muhammad_Al_Maqdisir_Mulloban_Risalah.pdf
http://www.mediafire.com/file/kkvlm8gm8ww4rha/8.Abu_Muhammad_Al_Maqdisir_Mulloban_Risalah.pdf/file
Word
https://banglafiles.net/index.php/s/4NX6qnJTY8R6jFG
https://archive.org/download/sei-mayer-moto-hoyona/.docx
====================================
শাইখ আবু মুহাম্মদ আসিম আল মাকদিসি (আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন)
একটি মূল্যবান রিসালাহ
সেই মায়ের মতো হয়ো না যে তার সন্তানকে দ্বি- খন্ডিত
করতে সন্তুষ্ট!!!
অনুবাদ: উস্তাদ আবু হাফসাহ (দাঃ বাঃ)
পরিবেশনায়: বালাকোট মিডিয়া
১৪৩৫ হিজরি মুতাবেক ২০১৩ ইংরেজি ১৭ই নভেম্ব
দ্বীনের বুঝ রাখে, শরীয়তের জ্ঞান রাখে, জিহাদ ও মুজাহিদীনদের প্রতি আগ্রহী, ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি ভালবাসা রাখে এমন কোন ব্যক্তি পাওয়া যাবে না, যে জিহাদ ও মুজাহিদদের দলে দলে বিভক্ত হওয়াকে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিবে। অথবা তাওহীদের দাওয়াত এবং তাওহীদের পথে কিতালের মাঝে বিবাদ করে, অথবা উপরোক্ত কোন একটিকে জিহাদ থেকে পৃথক করে। অথবা তাওহীদের সাহায্যকারী ও দাওয়াতের অনুসারীদেরকে অমুক- তমুকের অনুসারীতে বিভক্ত করে। বরং তারা হলো সৃষ্টির সবয়ে বড় জাহেল এবং দাওয়াত জিহাদের পথে মারাত্নক ক্ষতিকর। আল্লাহ তাআ’ লা যে সম্পর্ক অটুট রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তারা তা কর্তন করে। দ্বীনের সাহায্যকারীদেরকে তারা দলে – উপদলে বিভক্ত করতে প্রয়াস চালায় তাদের কাছে তাওহীদের সেই বন্ধন যথেষ্ট হয় না যা পরিপূর্ণ ও যথার্থ।
ইবনুল কায়্যিম (রহঃ) বলেন, ” কুরআন – সুন্নাহ যার জন্য যথেষ্ট নয় আল্লাহ তাআ’লা তাকে যমানার নতুন নতুন ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন না।
কুরআন – সুন্নাহ যার আরোগ্য হবে না, আল্লাহ তাআ’লা তার শরীর ও মনে কখনো শেফা দিবেন না।
কুরআন – সুন্নাহ যার জন্য যথেষ্ট হবে না, আল্লাহ (সুবঃ) তাকে স্বল্পতা ও বঞ্চনার মাঝে নিক্ষেপ করবেন।
নিশ্চয়ই আলোচনা হয় বড়দের সাথেই, ঐ নিচুদের সাথে নয় যারা হাইওয়ানের চেয়েও নিকৃষ্ট। “
এরা জিহাদের সাহায্যকারী ও সত্যিকার জিহাদ প্রেমিক হতে পারে না, বরং তারা হচ্ছে সেই মিথ্যার দাবিদার যালেম মহিলার মতো, যে সেই সন্তানের ( যেটিকে সে নিজের বলে দাবী করেছিলো) ব্যাপারে উদাসীন ছিলো। অতঃপর সে ঐ সন্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে সম্মত হলো যার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। অথচ সে দাবী করলো যে, সেটি তার সন্তান। যদি সে তার দাবিতে সত্যবাদীই হতো তাহলে অবশ্যই সেই সন্তানের প্রতি সে সহানুভূতিশীল হতো। এবং সে সেই সন্তানের দেহকে দ্বিখণ্ডিত ও ছিন্ন – বিচ্ছিন্ন করতে অস্বীকার করতো। এবং সে এ কথা মেনে নিতো যে, সন্তানটির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। এবং সে তার মা নয়, এবং ঐ সন্তানের বিষয়টিতে তার কোন মাথাব্যথা নেই, অথবা সে মেনে নিতো যে, ঐ সন্তানের সাথে তার বা তার সাথে ঐ সন্তানের কোন সম্পর্ক নেই। যেমনটি তার দয়াশীল, স্নেহময়ী প্রকৃত মা করেছিলো। কারণ, ঐ মহিলা চায় নি যে, তার সন্তানটি দ্বিখণ্ডিত হোক বা টুকরো টুকরো হোক।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে,পাঠক সেই উপমাটি বুঝতে পেরেছেন সেই ঘটনার দিকে আমি ইঙ্গিত করছি, আর সেটি হলো, ঐ হাদিস যা ইমাম বুখারী (রহঃ) উনার হাদীস গ্রন্থ ” কিতাবুল ফারায়েজে “এনেছেন” যখন একজন মহিলা সন্তানের দাবি করে” নামক অধ্যায়ে। ঐ হাদীসে সুলাইমান আলাইহিসসালাম এবং সন্তান নিয়ে বিবাদে লিপ্ত দুই মহিলার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যাদের একজনের সন্তানকে বাঘে নিয়ে গিয়েছিল।
আমি এমন এক সময়ে এ-ই রিসালাহটি লিখছি, যখন আমার কাছে এ-ই সংবাদ পৌঁছেছে যে, কিছু লোক বারংবার সেই মিথ্যা দাবিদার মায়ের বেশভূষা ধারণ করছে, মিছে ক্রন্দনকারী দরদিনীর সাদৃশ্য অবলম্বন করছে।
আর যদি তারা উম্মতের এ-ই দূরাবস্থা এবং উম্মত ও তার দ্বীনের উপর শত্রুদের আগ্রাসনের কারণে নিজ আর্তনাদের ব্যাপারে সত্যবাদী হতো এবং উম্মতের জিহাদের অবস্থা ও তার উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখতো, তাহলে তারা তাদের নিজেদের জন্য এ-ই ( যে অবস্থান তারা নিয়েছে) অবস্থানকে কখনোই মেনে নিতো না।
বরং তারা তাদের মতো হতো যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
والذین یصلون ماامرالله به ان یوصل ویخشون ربهم ویخافون سوء الحساب
আল্লাহ তাআ’লা যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আদেশ করেছেন যারা তা অক্ষুণ্ণ রাখে ভয় করে তাদের রবকে এবং ভয় করে কঠোর হিসাবকে।[1]
সুতরাং, তারা যেনো আল্লাহকে ভয় করে এবং সঠিক কথা বলে।
সিরিয়ার গুরুত্ববহ তার প্রতি আমাদের নছিহা হচ্ছে,
সিরিয়ার মধ্যে আমাদের যে সকল মুজাহিদ ভাইয়েরা তাওহীদের পতাকাকে বুলন্দ করছেন তাদের সকলকেই আমরা ভালবাসি ও সাহায্য করি।
তাকেও আমরা ভালবাসি ও সাহায্য করি, যে দলে দলে বিভক্ত না করে তাওহীদের পতাকাকে প্রতিষ্ঠা ও সাহায্য করে।
তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে “জাবহাতুন নুসরাহ” এর ভাইয়েরা, এবং ” দাওলাতুল ইরাক ওয়াশ শামের ” ভাইয়েরা।
আমরা মুজাহিদীনদের দলে উপদলে বিভক্ত হওয়ার উপর সন্তুষ্ট নই, বরং এটা আমাদেরকে পীড়া দেয়।
তাই আমরা তাদেরকে আহবান করছি তাওহীদের একই পতাকাতলে একই আমীরের অধীনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য।
আর টাও যদি কঠিন হয় তাহলে অন্ততপক্ষে তারা একটিমাত্র মজলিসে শূরার ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যা তাদেরকে একত্রিত ও মতৈক্য করে দিবে। আমরা তাদের জন্য এ-ই দুই অবস্থা ছাড়া তৃতীয় কোন অবস্থাতে সন্তুষ্ট নই। বরং আমরা আশা রাখি যে, সেই প্রতিটি দল তাদের সাথে মিলিত হবে যারা মূলনীতিতে এক। আর এটা আবশ্যক যে, সিরিয়াবাসী ভাইদেরকে সিরিয়ার জিহাদের ফ্রন্ট লাইনে বা নেতৃত্বে নিয়ে আসা।
প্রতিটি জ্ঞানবান ব্যক্তি জানে যে, আজকে আমরা সিরিয়ার যে কঠিন যুদ্ধে লিপ্ত আছি তার সমাধান দলে দলে বিভক্তির মাধ্যমে বা কোন একটি দলের পক্ষ থেকে সম্ভব নয়।
তাহলে এটা কীভাবে মেনে নেওয়া যায় যে, মুজাহিদরা দলে দলে বিভক্ত থাকুক অথচ কাফেররা বিভিন্ন বর্ণের হওয়া সত্বেও তারা মুজাহিদীনদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করছে?
বিশেষ করে বাতেনিয়া( শিয়া) সলেবিয়া ( ক্রসেডার) ও আরবের বিভিন্ন মুরতাদ সংস্থাগুলো প্রত্যেকেই মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এরা তাওহীদ ও জিহাদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে আগ্রাসন চালাচ্ছে।
মুজাহিদদের এক কাতারবন্দি হওয়া ছাড়া কাফেরদের এ-ই ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসন রুখা সম্ভব নয়।
আর এ-ই ঐক্য মতবিরোধকে মিটিয়ে দিবে, আত্নিক শক্তিকে বৃদ্ধি করবে। এবং শাখাগত বা কম গুরুত্বপূর্ণ মাসলাহার (কল্যাণ) উপর জিহাদের সার্বিক মাসলাহাকে (কল্যাণ) প্রাধান্য দিবে। আর কম গুরুত্বপূর্ণ বা শাখাগত মাসলাহাগুলো বিজয় ও তামকিনের (কর্তৃত্বের) পর শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা যাবে ইনশাআল্লাহ।
কেননা মুসলমানদের ঐক্যের মাধ্যমে কাফেররা ক্রদ্ধ হয়, তাওহীদবাদীদের চক্ষু শীতল হয় এবং মুজাহিদদের কাতার শক্তিশালী ও দৃঢ় হয়।
মহান আল্লাহ বলেন:
ان الله یحب الذین یقاتلون فی سبیله صفا کأنهم بنین مرّصوص
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআ’লা তাদেরকে ভালবাসেন যারা তার পথে এক কাতারবন্দি হয়ে যুদ্ধ করে যেন তারা সীসাঢালা প্রাচীর।[2]
ভাইদের উদ্দেশ্যে কিছু নসীহা:
১/ আমি রাসূল ( সাঃ) এ-র শরয়ী রাজনিতীর দিকে লক্ষ রাখার বিষয়টি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। বিশেষ করে মদীনায় মুসলমানদের ইসলামী রাষ্ট্রের প্রাথমিক পর্যায়ে,
যখন মুসলমানরা শক্তিশালী ছিল না। তিনি(সাঃ) বিদ্যমান সকল সন্ধিচুক্তির প্রতি দৃষ্টি রাখতেন৷ এমনকি ইহুদীদের সাথেও সন্ধি করেছেন।আর এ-ই চুক্তি ইসলামী রাষ্ট্র শক্তিশালী হওয়া বা কাফেররা ভঙ্গ না করার আগ পর্যন্ত রক্ষা করেছেন।
মুনাফিকদের কারো কারো কাছ থেকে কষ্ট পাওয়া সত্বেও রাসূল (সাঃ) তাদের সাথে সংঘর্ষে জড়ান নি। বরং মুসলমানরা শক্তিশালী হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে অব্যহতি ও অবকাশ দিয়েছেন। আর অন্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন যাতে মানুষ এ কথা বলতে না পারে যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সাথীদের হত্যা করেন। মানুষদের নতুন ইসলামে প্রবেশের বিষয়টিও রাসূল (সাঃ) লক্ষ রাখতেন।
২/ আমি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি…… জাগতিক শক্তি ও উপাদানের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) এ-র লক্ষ রাখার বিষয়টি। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওক্কুলকারী, সবরকারী, ও দৃঢ় বিশ্বাসীদের সর্দার হওয়া সত্বেও শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা প্রতি, প্রভাব ও শক্তির কমতির প্রতি লক্ষ্য
রেখে কাজ করেছেন।
৩/ জাহেলিয়াত থেকে লোকদের নতুন ইসলামে আসার কারণে তাদের অনেকের অন্তরে ইসলাম তখনো প্রোথিত হয়নি, এ-ই বিষয়টিও তিনি লক্ষ্য রাখতেন। এসবগুলো বিষয়ই রাসূল ( সাঃ) বিবেচনায় রেখে কাজ করেছেন।
যদিও তিনি মুহাজির ও আনসারদের মাঝে গোত্রীয় চিন্তাধারাকে মিটিয়ে দিয়েছিলেন, তথাপি মানুষের মনে তাদের নেতাদের নের্তৃত্বের বিষয়টি যে গেঁথে ছিল সেটা তিনি খেয়াল রেখেছেন এবং বিভিন্ন ঘটনায় তাদের নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ, ইত্যাদি ব্যাপারে তিনি উদাসীন ছিলেন না, আর সীরাতে এ ব্যাপারে প্রমাণাদি ভরপুর।
যে ব্যক্তি এ সকল স্তরগুলো খেয়াল রাখবে না, উপরোক্ত এসব বিবেচ্য বিষয়াদি মিটিয়ে দিতে তাড়াহুড়ো করবে, এগুলো গুরুত্ব দিবে না, সে যেন কোন জিনিসকে তার যথার্থ সময়ের পূর্বেই নিয়ে আসতে তাড়াহুড়া করলো।
সে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ-র রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রতি দৃষ্টিপাত করেনি। ফলে অচিরেই সে লড়াইয়ের এ-ই প্রাঙ্গণে দলে দলে বিচ্ছিন্ন হতে দেখবে। এবং একই সময়ে অসংখ্য দল বা গ্রুপের আবির্ভাব ঘটবে। আর এটা রাসূল (সাঃ) এ-র রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত নয়।
৪/ তাই আমরা পছন্দ করি সিরিয়ার জিহাদের নের্তৃত্বে এবং সম্মুখভাগে তার নিজ দেশের তাওহীদবাদী ভাইয়েরা চলে আসুক।
আর এতেই আমরা মাসলাহা( কল্যাণ) দেখতে পাচ্ছি। এজন্যে আমি আমার মুজাহিদ ভাইদের প্রতি জিহাদের বিভিন্ন মারেকাগুলো( যুদ্ধক্ষেত্র) উপমা হিসেবে পেশ করছি।
আর যারা এ-ই জিহাদকে সাইকস- পিকট এ-র জাহেলী সীমান্তরেখার বিভাজনের সাথে জড়িত থাকার মিথ্যা দাবি তুলে উপরোক্ত বিষয়টি উপেক্ষা করে, আমরা তাদের কথার দিকে আকৃষ্ট হই না।
কস্মিনকালেও আমরা সিরিয়াকে এ ধরনের কোন কিছুর সাথে সম্পর্কিত করি না। বরং এটাকে আমরা সম্পর্কযুক্ত করি আল্লাহর কিতাবের সাথে। যেমনটি আল্লাহ তাআ’লা তার নবীদের প্রেরণের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রেখেছেন ( অর্থাৎ, প্রত্যেক নবীকেই তার নিজ কওমের লোকদের থেকেই বানিয়েছেন)। সুতরাং, নবীদের ক্ষেত্রেই যদি নিজ কওমের বিষয়টি লক্ষ্য রাখা হয় তাহলে তো অন্যদের ক্ষেত্রে এটি আরো অধিক প্রযোজ্য। অনুরূপভাবে আমরা এ-ই বিষয়টিকে রাসূল (সাঃ) এ-র রাজনৈতিক দূরদর্শিতার সাথে সম্পর্কযুক্ত করছি, যে ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) সচেতন ছিলেন। বিভিন্ন ঘটনায় বা ক্ষেত্রে তিনি এ-ই বিষয়টি উপেক্ষা করেন নি।
৫/ জিহাদের ইমারাহ, তামকিনের আগের ইমারাহ ও পরের ইমারাহ এ-র মধ্যে এবং ” ইমারাতুল মুমিনীন” ও “তামকীনপ্রাপ্ত দাওলাত” এ-র মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট পার্থক্য, যে ব্যাপারে আমাদের আরো সতর্ক হওয়া জরুরি। আর খেলাফত তো অনেক দূরের বিষয়।
সুতরাং, প্রতিটি জিনিসকে তার যথার্থ নাম ও প্রকৃত স্থানে রেখে তার সাথে আচরণ করা উচিত। বাস্তবিক শরয়ী নামে নামকরণ করে প্রতিটি বিষয়কে তার সঠিক স্থানে রাখা উচিত। তাহলে তার উপর এমন কিছু বর্তাবে না যা ওয়াজিব নয়, এমন কিছু প্রয়োগ হবে না যা প্রয়োগ হওয়ার নয়।
আমি আমার মুসলমান ভাইদেরকে সাধারণভাবে এবং দ্বীনের সাহায্যকারীদের বিশেষভাবে আহবান করছি সিরিয়াতে তাওহীদের ঝান্ডাকে সাহায্য করার জন্য। তাগুত শাসক বর্গ ও আগ্রাসী শত্রুদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্কদৃষ্টি রাখার জন্য, যারা জিহাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত। যারা জিহাদ ও মুজাহিদদের বদনাম রটাচ্ছে। এসব কাফের শাসকদের মিথ্যা রটনাকে সত্যায়ন করা এবং তাদের বাতিলকে (ভ্রান্ত মতবাদসমূহ) সাহায্য করা থেকে সতর্ক হোন।
বিশেষভাবে আমি আমার তালেবে ইলম ভাইদেরকে এ-ই বরকতময় পতাকাকে সাহায্য করার জন্য এবং একে রক্ষা করার জন্য আহবান করছি। আহবান করছি বাড়াবাড়ি অথবা কোন একদলের পক্ষপাত না করে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যের ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য। কেননা পক্ষালম্বনকারী ব্যক্তি সত্য- মিথ্যা, ন্যায় – অন্যায় পার্থক্য করতে পারে না।
তারা যেন জেনে রাখেন যে, তাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা চায় যে, তারাও জিহাদে বের হোক এবং তারা তাদের সাহায্য কামনা করে। তারা আমার কাছে বারংবার এ-ই আবেদন করেছে যে, আমি যেন এ বিষয়টি তোমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেই যে, মুজাহিদরা তালেবে ইলমদের সাহায্যের প্রতি তাকিয়ে আছে। তারা যেন তাদের দেহ, বল্লম, জিহবা, খঞ্জর ও কন্ঠ দ্বারা সর্বাত্মক সাহায্য করে।
আল্লাহ তাআ’লা বলেন:
یاأیها الذین أمنوا کونوا انصارالله
হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর ( দ্বীনের) সাহায্যকারী হও।[3]
আমি এ-ই রিসালাহ লিখেছি তাওহীদের ঝান্ডাকে সাহায্য করতে, জিহাদ ও মুজাহিদদের কল্যাণে, আমার নিকট তাদের নসীহা চাওয়ার প্রতি আগ্রহ দেখে।
তারা যদি আমার কাছে নাও চাইতো তথাপি এটা আমার উপর আবশ্যক ছিল এ ব্যাপারে কিছু লেখা। আর তারা যখন চাইলোই তখন তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
তারা আমাকে জানিয়েছে যে, তারা আমাদের নসীহাকে গুরুত্ব দেয়। আমাদের দিক- নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে না। তারা আমাদের লিখনীগুলোকে তাদের সৈনিকদের শিক্ষা দেয়। সুতরাং, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমাদেরকে ও তাদেরকে কবুল করেন। মুজাহিদদের কাতারগুলোকে এক করে দেন। তাওহীদের ঝান্ডাকে শক্তিশালী করেন ও শিরকের পতাকাগুলোকে পদানত করে দেন। আমাদের দুশমনদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করেন। শত্রুদের কাঁধ ও গর্দানগুলোকে আমাদের বশে এনে দেন।
আমীন! ছুম্মা আমীন!
লেখক:
খাদেমুল মুজাহিদীন
আবু মুহাম্মদ আল মাকদিসী
১মহরম, ১৪৩৫হিজরী
[1] সূরা রা’দ: ২১
[2] সূরা সফ: ৪
[3] সূরা সফ: ১৪