আরবইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহবালাকোট মিডিয়ামিডিয়াশাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসী হাফিযাহুল্লাহশামহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

তাগুতকে প্রত্যাখ্যান এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন – শাইখ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ

তাগুতকে প্রত্যাখ্যান এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন

– শাইখ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ

অনলাইনে পড়ুন-

https://justpaste.it/tagutke_prottakhan_and_iman

word

https://banglafiles.net/index.php/s/YStYWbHX4ArXmRe

https://archive.org/download/taghutke_prottakkhan/24.taghutke_prottakkhan_ebong_allahr_proti_iman_anoyon.docx

http://www.mediafire.com/file/amlq7y727pgt99f/24.taghutke_prottakkhan_ebong_allahr_proti_iman_anoyon.docx/file

PDF

https://banglafiles.net/index.php/s/C2fB7SqnaoWG5pn

https://archive.org/download/balakot_media_books/taghutke_prottakkhan_ebong_allahr_proti_iman_anoyon.pdf

http://www.mediafire.com/file/02qctyi2awgay1y/24.taghutke_prottakkhan_ebong_allahr_proti_iman_anoyon.pdf/file

==================

তাগুতকে প্রত্যাখ্যান এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন 

শাইখ আবু মুহাম্মদ আসিম আলমাকদিসী

لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ قَدْ تَبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ ۚ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ

اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٰ لَا انْفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

‘‘দ্বীনের মধ্যে কোনো জবরদস্তি নাই। নিশ্চয়ই সঠিক পথ ভুল পথ থেকে পৃথক হয়ে গেছে। সুতরাং, যে তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে, তা হলে সে যেন এমন মজবুত হাতলকে আঁকড়ে ধরলো যা কখনোই ভাঙবে না। এবং আল্লাহ তাআলা হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।(সূরা বাকারাঃ২৫৬)

……………………………………………………………………………………………………………………

প্রত্যেকের জানা উচিত যে, আল্লাহ তাআলাই প্রতিটি বস্তু ও প্রতিটি জীবের সৃষ্টিকারী ও পালনকারী পরম সত্তা। নামাজ, যাকাত বা অন্য যেকোনো ইবাদতের পূর্বে দৃঢ়তম যে বিষয়টির জ্ঞানার্জন ও প্রয়োগের জন্য আল্লাহ তাআলা আদম সন্তানদেরকে আদেশ করেছেন তা হচ্ছে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে ঈমান আনয়ন করা এবং অন্য সকল ইলাহকে (অর্থাৎ তাগুতকে) প্রত্যাখান ও অবিশ্বাস করা। আর এজন্য আল্লাহ তাআলা জীব সৃষ্টি করেছেন, তাদের মধ্যে নবীরাসূল(আলাহিমিস সালাম) পাঠিয়েছেন, কিতাব ও সহীফা নাযিল করেছেন এবং জিহাদ ও শাহাদাতের আদেশ দিয়েছেন। এজন্য রয়েছে পরম করুণাময়ের অনুসারীগণ ও শয়তানের অনুসারীদের মধ্যে চিরশত্রুতা, আর এজন্যই প্রতিষ্ঠিত করা হবে মুসলিম জাতি ও সঠিক খিলাফত ব্যবস্থা।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ

এবং আমি মানুষ ও জ্বিন জাতিকে শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি(সূরা যারিয়াতঃ৫৬)

যার মানে হচ্ছে, একমাত্র আল্লাহ তাআলারই ইবাদত করতে হবে। তিনি আরো বলেন,

وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ

এবং নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তারা যেন শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুতকে বর্জন করে…” (সূরা নাহলঃ৩৬)

আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই (অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা ছাড়া ইবাদতের যোগ্য আর কোন উপাস্য নেই)- এই বিশ্বাসই হচ্ছে ইসলামের মূল বিশ্বাস। এর অনুপস্থিতিতে কোন দোয়া, কোন নামাজ, কোন রোজা, কোন যাকাত, কোন হজ্জ গৃহীত হবে না। এই বিশ্বাস না থাকলে কেউই জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাবে না, কারণ এটাই একমাত্র হাতল যার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা নিশ্চয়তা দিচ্ছেন যা কখনো ভাঙবার নয়। এই হাতলকে ছাড়া দ্বীনের অন্যান্য হাতল জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাবার জন্য যথেষ্ট হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,

لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَدْ تَبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

দ্বীনের মধ্যে কোনো জবরদস্তি নাই। নিশ্চয়ই সঠিক পথ ভুল পথ থেকে পৃথক হয়ে গেছে। সুতরাং, যে তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে, তাহলে সে যেন এমন মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরলো যা কখনোই ভাঙবে না। এবং আল্লাহ তাআলাই হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’’

(সূরা বাকারাঃ২৫৬)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,

وَالَّذِينَ اجْتَنَبُوا الطَّاغُوتَ أَنْ يَعْبُدُوهَا وَأَنَابُوا إِلَى اللَّهِ لَهُمُ الْبُشْرَى فَبَشِّرْ عِبَادِ

যারা ইবাদত না করার মাধ্যমে তাগুতকে প্রত্যাখান করে এবং অনুশোচনার সাথে আল্লাহ তাআলার অভিমুখী হয়, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদের ঘোষণা দাও।’’(সূরা যুমারঃ১৭)

লক্ষ্য করে দেখুন যে, আল্লাহ তাআলা কিভাবে তাঁর নিজের প্রতি বিশ্বসের ব্যাপারে কথা বলার পূর্বে তাগুতের প্রতি অবিশ্বাসের কথা বলেছেন । লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু(নেই কোন ইলাহ, আল্লাহ ছাড়া) এই বাক্যের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর তাওহীদের (একত্ববাদ) নির্দেশ দিচ্ছেন, শক্ত হাতলের সেই মহান মুলনীতির প্রতি নির্দেশ করছেন। অতএব, অন্যান্য তাগুতের প্রতি চরম প্রত্যাখ্যান ছাড়া আল্লাহ তাআলার প্রতি বিশ্বাসে আন্তরিকতা (অর্থাৎ, নির্ভেজাল ঈমান) আসতে পারে না।

তাগুত হিচ্ছে সেই সকল মিথ্যা মাবুদ যার প্রতি প্রত্যেককেই অবিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং ইবাদতের ক্ষেত্রে একে প্রত্যাখ্যান করতে হবে, যেন আল্লাহর প্রদত্ত নিরাপত্তা সেই দৃঢ় ও শক্ত হাতলকে আঁকড়ে ধরে থাকা যায়। তাগুত শুধুমাত্র পাথর, মূর্তি বা গাছ নয় যেগুলোর প্রতি সিজদাবনত হয়ে বা আবাহন জানিয়ে আথবা যেগুলোর নামে শপথ করে ইবাদত করা হয়, বরং এগুলোর অর্থ আরো ব্যাপক। আল্লাহর পরিবর্তে ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদত গ্রহণ করেএমন সকল কিছুই তাগুতের অন্তর্ভুক্ত, তা ইবাদত বা অনুগত্য প্রদর্শনের যে কোন কাজের মাধ্যমে করা হোক না কেন।

তাগুতের উদ্ভাব হয় জুলুম থেকে, যা সংঘটিত হয় সৃষ্ট কর্তৃক সীমালঙ্ঘনের মাধ্যমে। ইবাদতের কাজসমূহের মধ্যে রয়েছে ভক্তি প্রদর্শন, সিজদাবনত হওয়া, আবাহন করা, শপথ করা, জবাই করা ইত্যাদি। কারোও আইনের প্রতি অনুগত্য থাকাও একটি ইবাদত। আল্লাহ তাআলা খ্রিষ্টানদের সম্পর্কে বলেন,

اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ

তারা তাদের পণ্ডিত ও ধর্মযাজকদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে রব হিসেবে গ্রহণ করেছিল…” (সূরা তওবাঃ৩১)

যদিও তারা তাদের পণ্ডিত ও ধর্মযাজকদেরকে সিজদা করতো না, তাদের প্রতি অবনত হতো না, কিন্তু যখন তারা (তাদের পণ্ডিত ও ধর্মযাজকেরা) হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করলো তখন তারা তাদের আনুগত্য ও অনুসরণ করেছিল। এটাকেই আল্লাহ তাআলা তাদের ইবাদত হিসেবে উল্লেখ করেছেন, কারন আইনের অনুগত্য ইবাদতেরই অন্তর্ভুক্ত এবং আইন দেবার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তালারই। কাজই, যে কেউ তা করবে সে মুশরিক হয়ে যাবে।

এর একটা প্রমাণ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ( সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ের একটি ঘটনা যা একটি মৃত ছাগলকে কেন্দ্র করে পরম করুণাময় আল্লাহর অনুসারীগণ ও শয়তানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘটিত হয়।

মুশরিকরা মুসলমানদের বিশ্বাস করাতে চাচ্ছিল যে, যে ছাগল মুসলমানেরা জবাই করে এবং যে ছাগল নিজে নিজেই মারা যায় তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তারা দাবি করেছিল যে, যে ছাগল নিজে নিজেই মারা যায় সেটিকে আল্লাহ তাআলা বধ করেছেন। ফলে আল্লাহ তাআলা বিধান নাযিল করেন এবং বলেন,

  وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْ إِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ

“…এবং যদি তোমরা তাদের অনুগত্য করো (মৃত প্রানী খাওয়া বৈধ করে নেয়ার মাধ্যমে), তাহলে তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’’ (সূরা আনআমঃ১২১)

সুতরাং, যে কেউ নিজেকে আইনপ্রণেতা বা আইনসভার প্রতিনিধি বানায় অথবা অপরকে এই কাজের জন্য নির্বাচন করে, তারা সবাই তাগুতএর অন্তর্ভূক্তহোক সে শাসক বা শাসিত। কারণ সে আল্লাহর দেয়া সীমা অতিক্রম করেছে। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহ তাআলার বন্দেগী করার জন্য এবং আল্লাহ মানুষকে তাঁর প্রণীত আইন সমূহ মেনে চলতে আদেশ করেছেন, কিন্তু অনেক মানুষই আল্লাহর আইনকে প্রত্যাখ্যান করে এবং তার সীমা ছাড়িয়ে যায়।

মানুষ নিজেকে আল্লাহর সমান করতে চায়, এবং যে আইন প্রণয়ন হলো একমাত্র আল্লাহর অধিকার সেই অধিকারে সে অংশ নিতে চায়যা কখনোই অনুমোদিত নয়। যদি কেউ এই সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে তা করে ফেলে তবে সে নজেকে আইনপ্রণয়নকারী রবএ পরিণত করে এবং সে তাগুতদের অন্যতম নেতায় পরিণত হবে। তার ইসলাম ও তাওহীদে (একত্ববাদ) বিশ্বাস গ্রহণযোগ্য হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না, সে এই পর্যন্ত যা করেছে তা অবিশ্বাস ও প্রত্যাখ্যান করে এবং এর (তার পূর্বের বিশ্বাসের) অনুসারী ও সাহায্যকারীদের থেকে মুক্ত হবার জন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

يُرِيدُونَ أَن يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَن يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا

“… এবং তারা (বিরোধের ক্ষেত্রে) ফায়সালার জন্য তগুতের কাছেই যাতে চায় যদিও তারা তাগুতকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে। কিন্তু শয়তান তাদের সুদূর বিপথে নিয়ে যেতে চায়।’’ (সূরা নিসাঃ৬০)

মুজাহিদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, “তাগুত হচ্ছে মানুষের ছদ্মবেশী শয়তান যার কাছে মানুষ বিচারফায়সালার জন্য যায় এবং তার অনুগত্য করে।’’ [তাফসীর ইবনে কাসীর]

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, “…এজন্য যে কেউ পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের বিধান ছাড়া ফায়সালা করে সে হচ্ছে তাগুত।[মাজমূ আল ফাতাওয়া, খণ্ডঃ২৮, পৃষ্টাঃ২০১]

ইবনুল কাইয়্যুম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, “এমন প্রত্যেকেই তাগুত যারা সীমা অতিক্রম করে যা হতে পারে ইবাদত, অনুসরণ কিংবা ইবাদতের ক্ষেত্রে। সুতরাং, যেকোনো মানবগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে তাগুত হচ্ছে সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিবর্তে বিচারক হিসাবে মানা হয়, অথবা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত করা হয়, অথবা আল্লাহর বিধানের পরিবর্তে যাকে অনুসরণ করা হয়, অথবা অজ্ঞতাবশত যার অনুগত্য করা হয় এমন বিষয়ে যেখানে অনুগত্য শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত।’’ তিনি আরো বলেন, “আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিচারফায়সালা করার জন্য যে বিধবিধান নিয়ে এসেছেন তা অনুযায়ী যে ব্যক্তি বিচারফায়সালা করে না অথবা তার অনুসরণ করে না, সে নিশ্চিতভাবেই একটি তাগুতের অনুসরণ করছে।’’ [ইলাম আল মুওয়াকিঈন, খণ্ডঃ১,পৃষ্টাঃ৫০]

বর্তমান সময়ে ইবাদতকৃত এমন একটি তাগুত, যার প্রতি ও যার অনুসারীদের প্রতি প্রত্যেক তাওহীদপন্থী মানুষের অবিশ্বাস পোষণ করতে হবে যেন সে আল্লাহ প্রদত্ত সেই দৃঢ়তম মজবুত হাতলটি ধরার মাধ্যমে নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারে, তা হচ্ছে এই ক্ষণস্থায়ী মানব সৃষ্ট দেবদেবী যা হলো তথাকথিত আইনপ্রণেতা।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ شَرَعُوا لَهُمْ مِنَ الدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَنْ بِهِ اللَّهُ وَلَوْلَا كَلِمَةُ الْفَصْلِ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

অথবা তাদের কী আল্লাহর সাথে অংশীদার আছে যারা তাদের জন্য একটি দ্বীন নিয়ে এসেছে আল্লাহ যার অনুমতি দেন নি? ফায়সালার ঘোষণা না থাকলে তাদের বিষয়ে তো সিদ্ধান্ত হয়েই যেতো। এবং নিশ্চয়ই জালেমদের জন্য রয়েছে যান্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’’ (সূরা শূরাঃ ২১)

অনেক মানুষই এসব বিধানদাতাদের গ্রহণ করেছে এবং আইন প্রনয়নের বিষয়টিকে তাদের জন্য, তাদের সংসদের জন্য, এবং তাদের আঞ্চলিক, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শাসন কর্তৃত্বের জন্য একটি অধিকার ও বৈশিষ্ট্য হিসেবে মেনে নিয়েছে। তারা এটা প্রমাণ করেছে তাদের আইনকানুন এবং সংবিধানের মধ্যমে, যার বাস্তবতা তাদের জানা রয়েছে।

কুয়েতী সংবিধানের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছেঃ সংবিধান মোতাবেক, আইন প্রণয়নকারী কর্তৃক পরিচালিত হবে রাজপুত্র ও সংসদীয় পরিষদের মাধ্যমে।’’

জর্দানের সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছেঃ বাদশাহ ও সংসদীয় পরিষদই আইন প্রনয়নের ক্ষমতার অধিকারী।’’

মিশরীয় সংবিধানের ৮৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছেঃ সংসদই হচ্ছে আইন প্রণয়নকারী কর্তৃত্ব।’’

অতএব, তারা এমন প্রত্যক ব্যক্তির রব হয়ে বসে আছে যারা তাদের অনুগত্য ও অনুসরণ করে, অথবা এই কুফরী ও শিরকের ব্যপারে তাদের সাথে এক মত পোষণ করে, ঠিক যেমনটি আল্লাহ তাআলা খৃষ্টানদের ব্যাপারে বলেছেন যখন তারা তাদের পণ্ডিত ও ধর্মযাজকদের অনুসর করেছিল। আজকের এই গণতন্ত্রের অনুসারীরা() প্রয়োগকারীরা() আরোও বেশী নিকৃষ্ট ও অপবিত্র, কারণ সেই ধর্মযাজকেরা এমনটি করেছিল ( অনুচ্ছেদের আলোচ্য কর্ম), কিন্তু তারা তাদের কর্মকে আইন বা বৈধ পদ্ধতি বলে দাবি করতো না, অথবা এসব নিয়ে তারা কোনো সংবিধান বা পুস্তক তৈরি করতো না। এছাড়া সে সময়ে কোনো ব্যক্তি তাদের সেসব সিদ্ধান্ত অমান্য বা আগ্রাহ্য করলে তাকে তারা কোনো শাস্তি প্রদান করতো না। তারা তাদের এমন কর্মের সাথে আল্লাহর কিতবের সামঞ্জস্য তৈরি করার কোন হীন চেষ্টাও করতো না যেমনটা এই তাগুতগুলো করে থাকে। যদি আপনি এটা বুঝতে পারেন, তাহলে আপনার জানা উচিৎ যে, ঈমানে সেই সর্বাপেক্ষা মজবুত হাতলকে আঁকড়ে ধরতে মহত্তম পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং মানবসৃষ্ট দেবদেবীদের অবিশ্বাস পোষণ করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করাই হচ্ছে ইসলামের সর্বোচ্চ চুড়া।

………………………………………….. ………………………………………….. …..

() যারা গণতন্ত্রনামক মতবাদে বিশ্বাস করে এবং এর অনুসরণ করে।

() যারা গণতত্রমতবাদ বাস্তবায়নে সরাসরি অংশগ্রহন করে। যেসকল দেশে ইসলামি শরীয়তের বদলে গণতন্ত্রের দ্বারা পরিচালনা করা হয়, সেসকল দেশের শাসকবর্গ এবং বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও প্রতিরক্ষা বিভাগে নিয়োজিত গোষ্ঠীগুলো এই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, যারা গণতন্ত্রের প্রচারণা চালায় তারাও এর অন্তর্ভুক্ত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + five =

Back to top button