ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানউসামা মিডিয়াখোরাসান (আফগানিস্তান)তানজীমবই ও রিসালাহবার্তা ও বিবৃতিমিডিয়াহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

সাক্ষাতকারঃ আফগানিস্তানের সক্রিয় দাঈ শায়েখ আবুল ফিদা হানাফীর সাথে কিছুক্ষণ

PDF
—-
http://www.mediafire.com/file/y0t69yvltgmc5la/24._abu_fidah_hanafi.pdf/file

https://archive.org/download/U_M_A/24.%20abu%20fidah%20hanafi.pdf

Word
—–
http://www.mediafire.com/file/my2wb8z7h0rkju7/24._abu_fidah_hanafi.docx/file

https://archive.org/download/U_M_A/24.%20abu%20fidah%20hanafi.docx

সাক্ষাতকার
আফগানিস্তানের সক্রিয় দাঈ
শায়েখ আবুল ফিদা হানাফীর সাথে কিছুক্ষণ

আছ্ ছুমুদঃ শুকরিয়া, আমাদেরকে আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য।
শায়েখ আবূল ফিদাঃ শুকরিয়া, আল্লাহ তায়ালা আপনাদের মোবারক প্রচেষ্টা কবুল করুক। আপনারা ইসলামের সঠিক চিন্তা- চেতনা প্রচার করছেন। আফগানিস্তানের ঘটনা প্রবাহ সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহকে সচেতন করছেন।

আছ্ ছুমুদঃ দখলদারের অনুপ্রবেশের পর আফগান জাতি এক সংকট কাল অতিক্রম করছে। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত জানতে চাই?

শায়েখ আবূল ফিদাঃ আজ থেকে চৌদ্দ বছর পূর্বে আফগান জাতি দুটি ভয়াবহ যুদ্ধের মুখোমুখি হয়। এক দিকে শুরু হয় সামরিক আগ্রাসন, অপর দিকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।
আগ্রাসী বাহিনী উন্নত প্রযুক্তি, ব্যাপক বিধ্বংসী ও অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিপিড়িত আফগান জাতির উপর ঝাপিয়ে পড়ে। অসহায় নারী,পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর, যেভাবে বৃষ্টির মত গুচ্ছ বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে তা ভুলবার মত নয়।
অপরদিকে মুজাহিদদের হাতে প্রযুক্তি বলতে কিছুই ছিল না। অস্ত্রশস্ত্র যা ছিল তা শত্রæর তুলনায় না থাকারই মত। তবে তারা ছিল ইমানের বলে বলীয়ান।

fff

তাদের হিম্মত ছিল আকাশচুম্ভী। মনোভাব ছিল আপোষহীন। এ সকল বৈশিষ্ট যাদের মাঝে বিদ্যমান,¯^ভাবতই তারা যে কোন শক্তির মোকাবেলায় যোগ্য প্রতিদ্ধন্ধী। অদম্য, লড়াকু, আফগান জাতি যুদ্ধে অবতির্ণ হয়। ফলে শুরু হয় এক অসম যুদ্ধের। সাময়িক আগ্রাসনের পাশাপাশি শুরু হয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। নৈতিক,সমাজিক, ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে টার্গেট করে এই আগ্রাসন পরিচালিত হয়।
এ ক্ষেত্রে তারা সব ধরনের ঘৃন্য ও অভিনব কলাকৌশল ব্যবহার গ্রহন করেন।
এটি অ¯ি^কার করার উপায় নেই যে, অতি উৎসাহী, অপরিনামদর্শী কতিপয় যুবক সাংস্কৃতির আগ্রাসনের ভয়াল স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। কিন্তু এটাও সর্বজন ¯^ীকৃত যে, পশ্চিমারা উভয় যুদ্ধেই সুচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে।

এসব কিছু হয়েছে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে, যারা আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যে এগিয়ে আসেন আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করেন। আয়াত বসবে।
যদি তোমরা আল্লহকে সাহায্য কর তাহলে তিনিও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা সুদৃঢ় করে দিবেন। যদি আল্লাহর সাহায্য আমাদের সাথে না থাকত তাহলে যুদ্ধের ফল যে কি হত তা কারোই অজানা নয়। পক্ষান্তরে যারা দখলদারদের সাথে নিজেদের ভাগ্য এক সুত্রে গেঁথে দিয়েছিল. যারা আফগানিস্তনের মাটিতে দখলদারদেরকে সাগত জানিয়েছিল তারাই আজ বিদেশী সেনাদের প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি আস্তা রাখতে পারছেনা। মনে প্রানে তাদের পতন কামনা করছে।
এটি আমাদের জন্য খুশির খবর: উজ্জল ভবিষ্যতের হাতছানি। আল্লাহ চাহেন তো বিজয় অতি সšি^কটে।
অপরদিকে দখলদারদের জন্য আনন্দের কোন বার্তা নেই। তাদের মনোবল ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। আফগানিস্তানে তারা নিজেদের অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যৎ ভালোভাবেই আচঁ করতে পারছে। এখন তারা পাততাড়ি গুটাতেই বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করছে।

আছ্ ছুমূদঃ বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন যে, যেহেতু ক্লায়েন্ট ষ্টেট টিকে আছে সেহেতু বলা চলে যে পশ্চিমারা তাদের লক্ষ্যে পৌছতে পেরেছে। এ বিষয় আপনি কি বলবেন?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ দুঃখিত, এ বক্তব্যের সাথে আমি কোন ভাবেই একমত হতে পারছিনা। আফগান জাতি এ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ পুতুল সরকার তাদের সমর্থন লাভে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তা ছাড়া এ সরকারের স্থিতি নির্ভর করছে দখলদারদের উপস্থিতির উপর। যারা কিনা ইতো মধ্যে বীরদর্পে (!) ভোঁদৌড়ের প্র¯ুÍতি পুরোপুরি সম্পন্ন করে ফেলেছে। যখন পশ্চিমারা এ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাখান করে নেবে এবং সহযোগিতার হাত গুটিয়ে নেবে তখন ও যদি তাদের সরকার টিকে থাকে তাহলেই কেবল সেই কতিপয় বিশ্লেষকের বক্তব্য সত্য হতে পারে। আরো একটি বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। পশ্চিমারা এসেছিল মুজাহিদগনকে নির্মূল করতে: জিহাদী চিন্তা- চেতনার মূলোৎপাটন করতে। কিন্তু হিতে বিপরিত হয়েছে। আল- হামদুলিল্লাহ এক্ষেত্রে তারা শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং জিহাদী চিন্তা- চেতনা আজ সর্বসাধারনের আবেগ অনুভুতিকে দারুন ভাবে আলোড়িত করেছে। জিহাদের যথার্থতা তাদের বদ্ধমূলে পৌছে গেছে। তবুও আপনার বিবেকের কাছে আমার প্রশ্নঃ আপনিও কি মনে করেন যে পশ্চিমারা তাদের লক্ষ্যে পৌছতে পেরেছে?

আছ্ ছুমূদঃ আফগানিস্তানের ধর্মী ও সাংস্কৃতিক কর্ম তৎপরতাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন। পশ্চিমাদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন মোকাবেলায় একে আপনি যথেষ্ঠ মনে করেন কি?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ পূর্বেই যেমনটি বলেছি যে, পশ্চিমাদের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ, সাময়িক যুদ্ধের সাথেই শুরু হয়েছে। আলেম ও দাঈগন এর গুরুতরতা ও নিজেদের দায় দায়িত্ব অনুধাবন করতে মোটেও ভুল করেন নি। অতি দ্রুত নিজেদের করনীয় স্থির করে নেন। ইসলামী তাহযীব তামাদ্দুন ও ইলমের প্রচার প্রসারের জন্য তারা আফগানিস্তানেশত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। এগুলো ইসলামের দুর্ভেদ্য দুর্গের রূপ পরিগ্রহন করেছে।
উঠিত প্রজন্মকে ইসলামি ভাব ধারায় গড়ে তুলতে সহায়তা করছে। দখলদারের সর্ব প্রকার চাপ ও নিধেষজ্ঞা উপেক্ষা করে আফগান দাঈ ও আলেমগন এমন বিশাল কর্ম আঞ্জাম দিবেন তা তারা মোটে ও আশা করেনি। তারা এ ও আশা করেনি যে, এই প্রতিষ্ঠান গুলো আফগান জাতির কাছে এতটা সমাদৃত হবে।অথচ আলেম ও দাঈনের ভুমির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য: তাদের কর্মকান্ডকে বিকৃত অবয়বে উপস্থাপন করার জন্য মিডিয়াগুলোর অপতৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের কর্ণধারদের ব্যক্তিত্বকে খাটো করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে যে গুলোর অসারতা সাব্যস্ত করার জন্য কোন দলিল প্রমানের প্রয়োজন নেই। আফগান জাতির কাছে তাদের মিথ্যাচার খুব সহজেই ধরা পড়ে গেছে। ফলে শত্রæরা ব্যর্থতার গ্লানি ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারেনি। আফগান জাতি বরাবরের মতই প্রমান করেছে যে, তারা আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করার কোন সুযোগকেই তারা হাত ছাড়া করে না এবং কল্যানের কোন ক্ষেত্র থেকেই পিছ পা হয় না।
তাদের এই ¯^ভাবজাত বৈশিষ্টের কারনে পরাজয়ের একটি অ¯^স্তিকর অনুভুতি সর্বদাই শত্রæদের মন মস্তিস্ককে আচ্ছন্ন করে রাখে।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের স্থানীয় এজেন্টদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার পর থেকে তারা পালিয়ে বেড়াতেই বেশি ¯^াচ্ছন্দবোধ করছে। পারে না আবার জনগনের ক্রোধের অনলে দগ্ধ হয়।
অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার ভাইরাস সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে যে, ঘৃন্য ও কৃৎসিত কর্মসুচি পশ্চিমারা গ্রহন করেছে তার গুরুতরতা ও ভয়াবহতা অ¯^ীকার করার কোন উপায় নেই।
এর করাল গ্রাস থেকে মানুষের নীতি নৈতিকতার সুরক্ষায় আমাদের যুগোপযোগি ও কার্যকর কর্মপ্রন্থা গ্রহন করতে হবে আলেম ও দাঈগনকে তৎপর ও উদ্দমী হতে হবে। কারন হক ও বাতিলে এই দন্ধ চিরন্তন। এ অঙ্গনে বিজয় তারই পদচুম্বন করবে যে অধিক তৎপর ও জীবনীশক্তিতে বলিয়ান।
আপনি যে, প্রশ্ন করেছিলেন তার জবাবে আমি বলব: পশ্চিমাদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যে সকল দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপর্যাপ্ত। নব প্রজন্মকে বিশেষ পরিচর্যা ও সেবা প্রধানের জন্য এবং তারা যাতে নৈতিক চারিত্রিক, অবক্ষয়ের শিকার না হয়ে পড়ে। সে জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে আরো শত সহ¯্র প্রতিষ্ঠান।

আছ্ ছুমুদঃ আফগানিস্তানে দ্বীনি কর্মতৎপরতার ক্ষেত্রে মৌলিক কোন বিষয়ের উপর সর্বাধিক গুরুত্বারুপ করতে হবে বলে আপনি মনে করেন?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ আমি আলেম ও দাঈ ভাইদেরকে আহবান করব যেন তারা নবপ্রজন্মের শিশু, কিশোর ও যুবকদেরকে নিবিড় পরিচর্যার আওতায় নিয়ে আসেন। তাদেরকে দ্বীনি ভাব ধারায় গড়ে তুলা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি। বিলম্ব বা এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েদেরকে সুষ্ঠু পরিবেশে গড়ে তুলার ক্ষেত্রটিতে বড় একটি শূন্যতা বিরাজ করছে। অনতি বিলম্বে এর একটি বিহিত করতে হবে।এটি করতে আমরা যদি করতে ব্যর্থ হই তাহলে শত্রæরা এই সুযোগের পূর্ন সদ্ব্যবহার করবে। তখন হায় আফসোস ও মায়া কান্না কোনই কাজে আসবে না। তাই যে সকল ভাই এই অঙ্গনে কাজ করছেন আমি তাদেরকে আবারও বলব,আপনারা উঠতি প্রজন্মের মন ও মননকে দ্বীনি ভাব ধারায় গড়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান।

আছ্ ছুমুদঃ আপনি কোমল মতি শিশু কিশোর ও যুবকদেরকে নিড়ি পরিচর্যার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এর উপযুক্ত স্থান ও এর পাঠ্যসুচি কি হতে পারে?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ আজকের এই শিশু কিশোর ও যুবকদের যথাযথভাবে গড়ে তুলা অতীব গুরুত্বপূন্য ও স্পর্ষকাতর একটি বিষয়। এর বাস্তবায়ন ছাড়া উজ্জল ভবিষ্যতের আশা করা নিতান্তই বাতুলতা ব্যক্তি,সমাজ,জাতি নির্বিশেষে সকলের শিক্ষা- সংস্কৃতি তাহজীব তামাদ্দুম নির্ভর করে এসব বিষয়ে তাদেরকে সার্বিকভাবে গড়ে তুলার উপর। অন্যথায় আমাদের সমাজ অন্তঃ সারশূন্য প্রানহীন দেহে রুপান্তরিত হবে। যাতে থাকবেনা কোন প্রানের স্পন্দন।
আল- হামদুলিল্লাহ, আমাদের এই প্রিয়ভুমিতে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশাতীত ভাবে বেড়ে চলছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বেশ কিছু ঘরনাব কতিপয় লোকের পক্ষে এই প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট হবার সৌভাগ্য হয়ে উঠছে না।
মসজিদ গুলো হতে পারে তালিম তারবিয়াতের শ্রেষ্ঠ মারকাজ, প্রতিটি জনবসতিতেই রয়েছে একাধিক মসজিদ। মসজিদের সাথে রয়েছে আফগান জাতির আত্মার সম্পর্ক। তা ছাড়া এখানে যাতায়াত করা ও অনেক সহজ।মসজিদের ইমামগন সু² পরিকল্পনার মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে দাওর ও তারবিয়াতি হালকার আয়োজহন করতে পারেন। সীরাত, আকাঈদ, ও দরসে কুরআনের মত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অপরিহার্যভাবে অন্তভূক্ত থাকবে।

আছ্ ছুমুদঃ বহিঃবির্শ্বের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ ভিনদেশীদের থেকে উপকৃত হবার চমৎকার একটি সুযোগ হচ্ছে স্কলারশিপ। এতটুকুতে মন্দের কিছু নেই। কিন্তু এখানে মৌলিক যে সমস্যাটি দেখা দেয় তা হচ্ছে, ধর্মীয় ও চিন্তাগত পরিপক্কতা অর্জনের পূর্বেই অনেকে ঊচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। অথচ ভাল মন্দ ও হক বাতিলকে চি‎িহ্নত করার মত আক্ষরিক জ্ঞান তাদের থাকে না। ফলে তারা ভ্রান্ত চিনÍা চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ে।
দ্বিতীয় আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, স্কলারশিপ গুলোর সিংহভাগই আসে কমিউনিষ্ট ও সেক্যুলারিষ্টদের পক্ষ থেকে এর মাধ্যমে তারা সেরা ও মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে হাত করে নেয়। এবং তাদেরকে নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা দেয়। যখন তারা নিজ দেশে ফিরে আসে তখন নাস্তিকতা প্রসুত চিন্তা- চেতনা ও বিশ্বাসের দিকেই মানুষকে আহবান জানায়।

আছ্ ছুমূদঃ এর সমাধান কী হতে পারে?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ আমি মনে করি আলেম দাঈ ও শিক্ষক বৃন্দের হাতে রয়েছে এর সমাধান। তাদের উচিত যুবকদেরকে বিশেষ করে যারা স্কলারশিপ লাভ করছে তাদেরকে ইসলামের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। বেদআত, কুসংস্কার ও অলিক কল্প কাহিনীর অসারতা প্রমান করে ইসলামকে ¯^চ্ছভাবে তাদের সামনে সজ্ঞায়ীত করা। এমনটি করা গেলে আশা করা যায় যে, তারা কোন ধরনের নাস্তিকবাদ প্রশুত ভ্রান্ত চিন্তা- ধারায় প্রভাবিত হবে না। পরিবেশ পরিস্থিতি যতই প্রতিকুল হোক না কেন।

আছ্ ছুমূদঃ যুবকদেরকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে মিডিয়ার ইতিবাচক ও নিতিবাচক ভূমিকা কী?
আফগানিস্তানে মিডিয়ার তৎপরতাকে আপনি কি ভাবে মূল্যায়ন করবেন?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ মনোবিজ্ঞানীদের মতে সব ধরনের মিডিয়া বিষেশ করে দর্শনযোগ্য গুলো সর্ব সাধারনের মাঝে অতি দ্রুত প্রভাব বিস্তার করে এবং তাদের মন মস্তিস্কে গভির রেখাপাত করে। শিশু- কিশোর ও যুবকদের উপর এর ক্রিয়া আরো তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হয়। এটি সর্বজন ¯^ীকৃত একটি বিষয়। মিডিয়ার ইঙ্গিতে যে, সকল ঘটন-অঘটন ঘটেছে এবং ঘটে চলছে তার তালিকা অনেক দীর্ঘ।
শত্রæরা মিডিয়ার অন্তর্নিহিত এই শক্তির কথা ভালো ভাবেই অবগত। পশ্চিমারা এই ধ্বংসাত্মক প্রচার মাধ্যম গুলোকে আফগানিস্তানে ব্যবহার করছে এবং এগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে।
আফগানিস্তানে সিংহ বাঘ মিডিয়া পশ্চিমাদের অর্থায়নে পরিচালিত। প্র”্যরে হাতে গোনা কয়েকটি দেশও কিছু মিডিয়ার অর্থে যোগান দিয়ে থাকে। তাই মিডিয়া গুলোকে দাতা গোষ্টির সার্থোদ্ধারের জন্য সদা তৎপর থাকতে হয়। সম্প্রচার কেন্দ্র গুলো প্রায়শই যুবকদেরকে টার্গেট করে থাকে।
এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। আফগানিস্তানে মিডিয়া একটি স্পর্ষকাতর ও ঝুকিপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। হক পন্থীদের হাতে মিডিয়া শক্তি ততটা না থাকায় এর ভয়াবহতা তীবরতর হচ্ছে। ইসলামী মিডিয়া যৎসামান্য যাও আছে সেগুলোর প্রোগ্রাম এতটাই সাদামাঠা ও আবেদনহীন যে, তা আফগান যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। সুতরাং এ ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশী। এ সম্পর্কে সচেতন ভাবে কর্মপন্থা নির্ধারন করা এমন সময়ের অপরিহার্য দাবী।

আছ্ ছুমূদঃ কোয়ালিশন সরকার সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? এ সরকার কি তার প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে? আফগান জাতি কী তাদেরকে বরন করেনিয়েছে?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ নির্বাচনের পূর্বে দখলদারদের ছত্রছায়ায় মিডিয়াতে যে, তফছিল ঘোষিত হয় তা মানুষের বিবেককে চতুর্দিক থেকে আচ্ছা দিত করে ফেলে ছিল। হবু সরকারকে নিয়ে অনেকেই রঙ্গিন ¯^প্ন দেখতে শুরু করে ছিল। কিন্তু নির্বাচনের লজ্জাজনক ফলাফলঃ মন্ত্রিপরিষদ গঠনে বার বার সময় ক্ষেপন এবং ক্রমবর্ধমান বিশৃংখলা তাদের আশার ঘরে বালি ডেলে দিয়েছে। র্দীঘ বিলম্বের পর এক পর্যায়ে এ সরকার দেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু আজও পযর্ন্ত মৌলিক কোন পরির্বতন আমাদের চোখে পড়েনি বরং দিন যত যাচ্ছে গোলযোগ তত বাড়ছে এবং সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। এখন তো এমনও শুনতে পাচ্ছি যে, যারা এদুটি লোককে ( আশরাফ গান, আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ) ভোট দিয়েছিল তারা এখন খুবই নাখোশ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের গতিধারা পাল্টে দেয়া, ফেৎনা- ফাসাদের মূলোৎপাটন করা নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করা সর্বপোরী মৌলিক কোন পরিবর্তন সাধন করা বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্ভব নয়। এই ব্যবস্থার জন্ম ও বেড়ে উঠা সবই হয়েছে ভ্রান্তির মাঝে। সুতরাং কোয়ানিশন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল হবে এর দুরতম কোন সম্ভাবনা ও নেই।

আছ্ ছুমূদঃ দখলদাররা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে বেড়ায় যে আফগানিস্তানে মূল সমস্যা হচ্ছে ইমারতে ইসলামিয়ার মুজাহিদগনের উপস্থিতি। তাদের এই দাবি কতটা বাস্তব?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনেক সরল প্রান ব্যক্তিত্ব এধরনের নির্জলা মিথ্যাচারের প্রচার করে যাচ্ছে। সকলের বুঝার ¯^ার্থে বিষয়টিকে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষন করা দরকার। যখন বিশ্বের নেতৃত্ব মুসলমানদের হাতে ছিল তখন সর্বত্র স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার পরিবেশ বিরাজমান ছিল। দাঙ্গা- হাঙ্গামা ও নৈরাজ্য বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি উসমানী খেলাফতের সময় সাফাভী ও ইউরোপিয়দের দ্বারা সংগঠিত বিচ্ছিন্ন ঘটনা গুলো বাদ দিলে হত্যা ও গৃহহীন করনের নজীর পাওয়া যায় না। কিন্তু ইউরোপিয়দের ষড়যন্ত্র সাফাভীদের সহায়তায় যখন উসমানী খেলাফতের পতন হল তখন পশ্চিমারা বিশ্ব মোড়লে পরিনত হল। উপনিবেশবাদ ইত্যাদীর শ্লোগান তুলে ইউরোপিয়রা অনেক মুসলিম ভ’খন্ড জবরদখল করে সেখানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ প্রতিষ্ঠা করল। তার পর তারা আসল আমাদের দেশে। হত্যা,লুন্ঠন,অধিকার হরনসহ কোন ধরনের নিপিড়নকেই তারা বাদ দিলনা। তখন উম্মাহর জানবাজ ছেলেরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য জেগে উঠল দখলদারদেরকে বিতারিত করার জন্য হাতে অস্ত্র তুলে নিল। মুসলিম বিশ্বের বর্তমান অস্থিতিশিলতা ও অরাজকতার একমাত্র কারন হচ্ছে পশ্চিমারা। তাই তাদেরকে ঠেকানোর জন্য মুজাহিদগন অস্ত্র ধারন করেছে। এটা কোন অপরাধ হতে পারে না। আমি বলব যদি ইউরোপিয়রা ইসলামী বিশ্বে অনুপ্রবেশ নাকরত তাহলে দাঙ্গা- হাঙ্গামা ও অরাজকতা কিছুই থাকত না। দখলদারদেরকে খেদানো ছাড়া শান্তি ও স্থিতিশিলতা আসতেই পারে না। মিডিয়ার মাধ্যমে তারা আজ যে সকল অপপ্রচার চালাচ্ছে তা অনেক পুরানো যেখানেই তারা দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গেছে সেখানেই তারা এসব প্রচারনা চালিয়েছে। আমরা যেহেতু ইতিপূর্বে এসব শুনিনি তাই আমাদের কাছে নতুন মনে হচ্ছে।

আছ্ ছুমূদঃ ইহুদী খৃষ্টানদের হীন চক্রান্তের ফলে মুসলিম উম্মাহ আজ কঠিন সংকটকাল অতিক্রম করছে। নির্যাতন,নিপিড়ন, হত্যা,লুন্ঠন,উদ্বাস্তু শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন ইত্যাদী নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। শত্রæরা এখন ইসলাম ও মুসলমানদের ভবিষ্যত নিয়ে আমাদেরকে হতাশাগ্রস্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। আপনার ভাষায় এসকল সংকট উত্তরনের উপায় কী?
শায়েখ আবুল ফিদাঃ ইসলামি বিশ্বের বর্তমান অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। এর ঘটনা প্রবাহ বড়ই বেদনাদায়ক। মুসলিম বিশ্বের একরুন অবস্থা ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। জুলুমবাজ খৃষ্টানরা মুসলিম উম্মাহর উপর নির্যাতন ও নিপিড়নের যে, ষ্টীমরোলার চালাচ্ছে অন্তরকে তা ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে। এপরিস্থিতিতে উম্মাহর আত্মমযার্দা বোধসম্পন্ন সন্তানদের পক্ষে চোখ বুঝে থাকা সম্ভব নয়। এই বেদনাদায়ক ও সংকটময় অবস্থা অনেককেই বলতে বাধ্য করেছে। আল্লাহর সাহায্য আর কত দুর আমরা কি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠাত নই? আমরা কি রাসুলে আরাবী (সাঃ) এর উম্মত নই? এমনই আরো অনেক প্রশ্ন আজ মুখেমুখে উচ্চারিত হচ্ছে। আমি নিজেও এই মজলুম উম্মাহর এক সদস্য। মুসলিম বিশ্বের বিপর্যস্ত চেহারা আমরা ধৈর্যের সব বাধ ভেঙ্গে দিয়েছে। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এটিই হচ্ছে উজ্জল ভবিষ্যতের টানিং পয়েন্ট। লক্ষ্য করুন,নিখিল বিশ্বে পরিচালনায় আল্লাহর কিছু অপরিবর্তনীয় রীতি রয়েছে। বিভিন্ন দল উপদল ও জনগোষ্ঠির মাঝে তিনি তা প্রয়োগ করে থাকেন। যদি বান্দারা নিজেদের দ্বীনি দায় দায়িত্ব যথাযর্থ ভাবে পালন করে তাহলে আল্লাহ তাদেরকে সম্মানিত করেন। বিজয় দান করেন এবং মানুষের দৃষ্টিতে সম্মানের পাত্র বানিয়ে দেন। আর যখন তারা নিজেদের দায়- দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নেয় এবং বস্তুবাদের দিকে ধাবিত হয় তখন আল্লাহ তাদের উপর শত্রæদেরকে চাপিয়ে দেন। তারা তাদের জীবনকে দৃর্বিষহ করে তুলে। যেন তারা তন্দ্রচ্ছন্নতা কাটিয়ে প্রকৃতস্থ হয়: লাঞ্চানা ও অপদস্ততার অনুভুতি তাদের মাঝে জাগ্রত হয় এবং নিস্কৃতির উপায় অšে^ষনে ব্রতী হয়। হীনতা- দীনতার অনুভুতি এবং তা থেকে নিস্কৃতি লাভের চিন্তা- চেতনা তখনই জাগ্রত হয় যখন বিপদ- আপদের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে দুনিয়াটা সংকীর্ণ হয়ে আসে। চেনা পৃথিবী অচেনা মনে হয়। এই হচ্ছে আল্লাহর নীতি ইর্তি পূর্বে ইহুদী নাসারাদের উপর বাস্তবায়ন ঘটেছে। আল্লাহর নীতির কোন পরিবর্তন নেই। বিভীষিকাময় এই যুগসন্ধিক্ষনের পরেই আল্লাহ সাহায্য আসবে। মুসলিম উম্মাহ্ যে, মিশন নিয়ে দুনিয়ায় এসেছিল তা তারা ভুলতে বসেছিল। তাই শাস্তি সরুপ তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় লাঞ্ছনা- বঞ্ছনা। এখন মান মযার্দা নিয়ে বেঁচে থাকার সব পথই তাদের সামনে রুদ্ধ হয়ে গেছে। ফলে এই মুসলিম উম্মাহ এই সংকট উত্তরনের পথ খুঁজতে শুরু করেছে।
নিজেদের দায়িত্ব পালনে যে অবহেলা তারা করেছে তা থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করছে। তাই আমি মুসলিম উম্মাহকে আনন্দের সাথে জানাতে চাই যে, আপনারা যাকে এই দ্বীন ও এই উম্মাহর বিনাস ও সমাপ্তি মনে করছেন তা মূলত তাদের বিজয়ের সূচনা এবং পশ্চিমাদের পরাজয়ের শুরু। এখন আমাদের কর্তব্য হল আল্লাহ কাছে তাওবা করা এবং অলসতার চাদর ছুড়ে ফেলে এই বিজয় নিশ্চিত করার জন্য দিবানিশি চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া বিজয় তো সুনিশ্চিত। কিন্তু এই বিজয়ে আমি কতটা ভূমিকা রাখতে পারলাম সেটাই দেখার বিষয়।

আছ্ ছুমূদঃ কিভাবে আমরা এই বিজয়ের রুপকার হতে পারি?

শায়খ আবুল ফিদাঃ এই বিজয় সূচিত হবে জিহাদ, দাওয়াত ও তালিম- তারবিয়াতের মাধ্যমে। গভীর ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এ তিনটি বিষয়ই সকল দ্বীনি কর্মতৎপরতার সারবত্তা। তাই যারা এই বিজয়ের রুপকার হতে চায় তারা যেন জিহাদ, দাওয়াত ও তালিম তারবিয়াতের কাজে তৎপর হয়।

আছ্ ছুমূদঃ যারা ময়দানে লড়াই করছে তাদের উদ্দেশ্যে বিষেশ করে উপদেশবানী বলার থাকলে অনুগ্রহ করে বলুন?

শায়েখ আবুল ফিদাঃ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর হয়ে যে সকল ভাই ময়দানে লড়ছেন তাদেরকে উপদেশ দেয়ার মত অবস্থান আমার নেই বলেই আমি মনে করি। তবে আমি তাদেরকে একথা বলতে পারি যে, আফগানিস্তানে তালিম তারবিয়াতের যে কাজ চলছে তা আপনাদের মোবারক প্রচেষ্টার ফলেই সম্ভব হয়েছে। যদি আপনাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ইহুদী খৃষ্টানদের চেলা- চামুন্ডারা আমাদেরকে একটি মাত্র গ্লাসে, অতি অনায়াসে গলাধসরণ করে ফেলবে।
উমর (রাঃ) এর পদাংক অনুসরন করে আমিও বলছি। আমাদের বিজয় সংখ্যাধিক্য ও অস্ত্র বলের উপর ভিত্তি করে সূচিত হয় না। আমাদের বিজয় সূচিত হয় আমলের উপর ভিত্তি করে। জিহাদী আদর্শ যতটা ধারন করতে পারব এবং শরীয়তের অনুসর যতটা করতে পারব সে অনুপাতে আমাদের বিজয় অর্জিত হবে। আমার বক্তব্য এতটুকুই। আল্লাহ আমাকে, আপনাকে এবং সকল মুসলমানকে ক্ষমা করে
দিন।

আছ্ ছুমূদঃ ছুমূদ পরিবারকে আপনি অতি মূল্যাবান সময় দিয়েছেন। আপনার জন্য
রইল অনেক অনেক শুকরিয়া।

শায়েখ আবুল ফিদাঃ আমিও আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা অত্যন্ত মোবারক
প্রচেষ্টায় ব্যাপৃত আছেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে সঠিক আদর্শের উপর
অবিচল থাকার তাওফিখ দান করুন। আমিন


অনলাইনে পড়ার লিংক-
https://justpaste.it/shaikh_abul_fida

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 1 =

Back to top button