অডিও ও ভিডিওআস-সাহাব উপমহাদেশইলম ও আত্মশুদ্ধিউর্দু প্রকাশনাউস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহকাশ্মীর আর্কাইভতথ্য প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশলনির্বাচিতপাকিস্তানবই ও রিসালাহমিডিয়াহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য || উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন, প্রকৃত বাস্তবতা! দ্বিতীয় পর্ব || উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন,

প্রকৃত বাস্তবতা!

দ্বিতীয় পর্বঃ কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য

কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহবান

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮৮২.৯ কিলোবাইট]

  ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [২৬৪.৩ কিলোবাইট]

অনলাইনে পড়ুন

আরও ডাউনলোড করুন

mp4

https://banglafiles.net/index.php/s/ibmEKREz9EGD97L

https://isdarat.cloud/index.php/s/JpVCROPl0MTsMtu
https://archive.org/download/usamahiwar2/USAMAhiwar2.mp4

BENGALI PDF
https://isdarat.cloud/index.php/s/d3cHJHgkRj7oKly
https://archive.org/download/hiwar2BEN_201905/hiwar2BEN.pdf
http://www.mediafire.com/file/kqijskj2ghg80xz/hiwar2BEN.pdf/file

BENGALI DOCX

https://archive.org/download/hiwar2BEN_201905/hiwar2BEN.docx
http://www.mediafire.com/file/3tfb6t71qddibg3/hiwar2BEN.docx/file
https://isdarat.cloud/index.php/s/Q891cal95TLUqYq

—————————–

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন,

প্রকৃত বাস্তবতা!

দ্বিতীয় পর্বঃ কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য

কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহবান

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সম্মানিত উস্তাদ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আজ ইনশাআল্লাহ আপনার সাথে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব হবে। এই পর্বে ইনশাআল্লাহ কাশ্মীর, কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং কাশ্মীর জিহাদের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ের উপর আলোচনা হবে। কাশ্মীরে বিগত দিনগুলোতে অনেক দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এই সময়ে যেখানে ভারতীয় সামরিক বাহিনী কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর পর্বতসম নির্যাতন করেছে সেখানে কাশ্মীরের মুসলমানেরাও নায়কোচিত সাহসিকতা এবং ঈমানি চেতনার মহৎ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। কাশ্মীরের বিষয় যদিও এই অবস্থার আগেও উপমহাদেশে অনেক গুরুত্বের দাবি রাখত, কিন্তু বর্তমান অবস্থার পরে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। আশা করি আপনার সাথে আজ এই আলোচনায় কাশ্মীরের ব্যাপারে আলকায়েদার অবস্থান জানার সৌভাগ্য হবে।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সবার আগে আমি আমার কাশ্মীরের ভাই, বয়োজ্যেষ্ঠ, মা এবং বোনদের প্রতি এখানে খোরাসানের সমস্ত মুজাহিদদের এবং আমাদের জামা’আতের পক্ষ থেকে সালাম জানাচ্ছি, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আল্লাহ তা’আলা এই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতিকে দৃঢ়তা এবং অবিচলতা দান করুন, তাঁদের ভাল কাজগুলোকে নিজের দরবারে কবুল করুন, তাঁদেরকে এবং তাঁদের অবিরাম কুরবানিকে দৃষ্টান্ত বানিয়ে দিন। আল্লাহ শয়তান এবং তার বাহিনী থেকে এই জাতিকে এবং এর জিহাদকে হেফাজত করুন। আমি তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি –

আল্লাহর কসম! আপনারা সত্যিকার অর্থেই এক মহান জাতি, আপনারা পুরো উপমহাদেশের জন্য ঈর্ষা করার মত কার্যকর দৃষ্টান্ত, এই দ্বীনের জন্য আপনারা লাখো শহীদ, অসংখ্য কুরবানি পেশ করেছেন; হিন্দু ও মুশরিকের বিরুদ্ধে আপনাদের দৃঢ়তা ও অবিচলতা গাযওয়ায়ে হিন্দের এমন এক সোনালি অধ্যায় যা পড়ে সবসময় ইসলামের প্রতি ভালবাসা এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা অন্তরে জন্ম নিবে। এই সুযোগে কাশ্মীরের সমস্ত মুজাহিদ ভাইদেরকেও আমরা সালাম জানাচ্ছি, মূর্তি এবং গরুর পূজারি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার যে সৌভাগ্য আল্লাহ আপনাদের দিয়েছেন, এজন্য আপনাদেরকে মোবারকবাদ। আপনারা সৌভাগ্যবান কারণ, আল্লাহ আপনাদেরকে জিহাদের মত বড় ইবাদত, কাশ্মীরের মত এই মহান ময়দান প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহ আপনাদেরকে এর উপর দৃঢ় থাকার তৌফিক দিন, প্রত্যেক পদক্ষেপে আপনাদের সাহায্য করুন এবং আপনাদের জিহাদ, পুরো উপমহাদেশে ইসলামের বিজয় এবং কুফরের পরাজয়ের মূল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করুন। কাশ্মীরে আমাদের যেসব প্রিয় মুজাহিদ ভাইয়েরা ‘হয় শরীয়ত না হয় শাহাদাত’ এর মহান শ্লোগান বুলন্দ করেছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যেও আমি বলছি, আল্লাহর কসম! আপনারা আমাদের অন্তরের অন্তস্থলে আর দু’আতেও আমরা আপনাদের মনে রাখি, আল্লাহ আপনাদের নির্দেশনা দিন, প্রত্যেক পদক্ষেপে আপনাদের সাহায্য করুন এবং আল্লাহ আপনাদেরকে কাশ্মীরের সকল মুজাহিদদের … এবং এই নির্যাতিত  জাতির জন্য রহমত ও বরকতের কারণ বানিয়ে দিন। আমিন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমিন। বলা হয়ে থাকে কাশ্মীরের সমস্যা ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে বিরাজমান এক পারস্পরিক সমস্যা। এবং এটাও বলা হয় যে এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা এবং দুই পক্ষের অথবা তিন পক্ষের মাঝে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান বের করা উচিত। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কি?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরের সমস্যাকে রাজনৈতিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে যদি দ্বীন ও শরীয়তের দৃষ্টিতে ফরয থেকে পালানোর রাস্তা খোঁজা হয় তাহলে এই অর্থে এটা মোটেই রাজনৈতিক হবেনা। এটা একটি দ্বীনি এবং শরীয়তী মামলা; এটা সুস্পষ্ট যে হিন্দু ও মুসলমানদের আলাদা করা দেশ, ভাষা, বংশ অথবা জাতীয়তা এর কারণ নয়; এর কারণ আক্বিদাহ এবং দ্বীন, যা হিন্দু এবং মুসলমানদেরকে আলাদা করে। এরপর এরকম কথা যে এটা দুইটি রাষ্ট্রের মাঝে সমস্যা এবং এরাই অধিকার রাখে যেভাবে ইচ্ছা এই সমস্যা সমাধান করার, তো এমন কথা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এই সমস্যা দুইটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়, এটা দুইটি উম্মত, দুইটি জাতি, মুসলিম জাতি এবং কাফের জাতির মাঝে সমস্যা। কাশ্মীরী জাতি মুসলিম উম্মতের একটি প্রধান ব্রিগেড এবং তাঁরা বাকি উম্মতের চেয়ে হিন্দুদের মোকাবেলায় অগ্রগামী, তাঁরা হিন্দুদের মোকাবেলায় দৃঢ় আছে; বাস্তবতা হল উপমহাদেশের বরং সমস্ত মুসলমান উম্মত এই ব্যাপারে শরীয়তের উপর ভিত্তি করে তাঁদের অংশীদার। এটা প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির সমস্যা যে তাওহিদের কালেমা পড়েছে এবং যে নিজেকে এই উম্মতের একজন মনে করে, এখন কোন মুসলমানের এই অনুভূতি হোক অথবা না হোক কিন্তু কুরআনের আয়াত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কাশ্মীরের মুসলমানদের সাহায্যের জন্য প্রত্যেক মুসলমানকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন … কাশ্মীরের জখম উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য একটা অগ্নি পরীক্ষা। কাশ্মীরী জাতি তো সৌভাগ্যবান যে আল্লাহ তাঁদেরকে হিন্দুদের সামনে এই বরকতময় জিহাদের জন্য নির্বাচিত করেছেন, কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে এই মহান জাতির মাধ্যমে উপমহাদেশের সব মুসলমানদের আজ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের জখম ও রক্তাক্ত এবং একাকী অসহায় অবস্থা দেখে আমাদের সব মুসলমানদের উপর আজ দলিল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

আবার এটাও আল্লাহর নিশানা যে শরীয়ত এবং প্রাকৃতিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকে আজ সুস্পষ্ট যে এই পরীক্ষায় শুধু তখনই আমরা সফল হতে পারব যখন এর সাথে আমাদের আচরণ শরীয়ত মোতাবেক হবে। আল্লাহ ফলাফলকে বিশেষ কারণের সাথে যুক্ত করেছেন, স্বাধীনতা এবং সফলতা যদি আমারা চাই, জুলম বন্ধ করা যদি আমাদের উদ্দেশ্য হয় তো আল্লাহ একে এই শরীয়তের অনুসরণের সাথে শর্তযুক্ত রেখেছেন।

و لا تھنو ولا تحزنو ا وأنتم الأ علون اِن کنتم مؤمنین

অর্থাৎ আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না; যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।

একইভাবে আল্লাহর বাণীঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ان تنصرو اللہ ینصر کم

অর্থাৎ হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।

ঈমান এবং আমল ঠিক হবে, শরীয়তের উদ্দেশ্যের সাথে শরীয়ত মোতাবেক সফর হবে তাহলে লক্ষ্যে পৌঁছান যাবে, এটা আল্লাহর সুন্নাত এবং এই সুন্নাত কখনও পরিবর্তন হয়না। শরীয়ত বলে কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ আর জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ওটাই যা আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করা, আল্লাহর দ্বীনের বিজয় এবং মাজলুমদের সাহায্যের জন্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু যদি আমরা সব সময় বাহ্যিক লাভ দেখি এবং প্রবৃত্তির অনুসরণের মাধ্যমে কাজ করি এবং এই মামলার দ্বীনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করি, এর বদলে অন্য নাম রাজনৈতিক, স্বদেশী, জাতীয় অথবা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে এই মামলার দ্বীনের সাথে সম্পর্ক অস্বীকার করি, এরপর শরীয়ত বহির্ভূত শ্লোগানের সাথে সাথে শরীয়ত বহির্ভূত পথে চলতে শুরু করি তাহলে এসবের মাধ্যমে কি আল্লাহর মাপকাঠি পরিবর্তন হয়ে যাবে? বাস্তবতা কি পরিবর্তন হয়ে যাবে? অত্যাচারের রাস্তা কি বন্ধ হয়ে যাবে এবং কাশ্মীর স্বাধীন হয়ে যাবে? কখনও না, আল্লাহর সুন্নাত এটা নয়, কুফর পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং আমরা মনের মত শরীয়ত বহির্ভূত পথে চলে এই আশা করর যে আমরা সফল হয়ে যাব তো এর অর্থ এটাই যে আমরা বাস্তবতা থেকে চোখ বন্ধ করে আছি, কুরআনের আয়াত, পূর্ববর্তী উম্মতদের ইতিহাস এবং বর্তমান সময়ের নিদর্শন থেকে, এগুলো সব থেকে কি আমরা কোন শিক্ষা নিতে চাইনা?

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ তাহলে কাশ্মীরে জিহাদের জন্য কি পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর প্রতি চেয়ে থাকা উচিত? পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী কি কাশ্মীরের সমস্যা সমাধান করতে পারবে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী সমাধান নয়, বরং এই সমস্যার কারণ। এ নিজেই শরীয়তের শত্রু এবং বৈশ্বিক কুফরি শক্তির গোলাম সামরিক বাহিনী, এর অতীত এবং বর্তমান দেখার পরও এর দিকে চেয়ে থাকা নিজেকে ধোঁকা দেওয়া এবং বাস্তবতার সামনে চোখ বন্ধ করে রাখার শামিল। এটা সুস্পষ্ট যে, যেই সামরিক বাহিনী নিজেদের স্বার্থ দেখে অগ্রসর হয় এবং নিজেদের ক্ষুদ্রতর লোকসান অথবা বিশ্ব গুণ্ডাদের শুধু ইশারা দেখেই জয় করা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আসে, এই যাদের অবস্থা তারা মাজলুমদের সাহায্যের জন্য কাফেরদের সামনে কি প্রতিরোধ করবে? এটা অসম্ভব … এটা আমাদের সামনে যে, কিভাবে ২০০৩-২০০৪ সালে ভারতের চাপের মুখে এই সামরিকবাহিনী কাশ্মীরী মুজাহিদদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল, কাশ্মীরী মুজাহিদদের মানসেহরা এবং মুজাফফরাবাদের ক্যাম্পে নজরবন্দি করে রাখে এবং কাশ্মীরী মুসলমানদের যুদ্ধের ময়দানের ভেতরে হিন্দুদের দয়া ও করুণার জন্য ছেড়ে দিয়ে আসে এবং এভাবে কাশ্মীর জিহাদের পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয়। আবার এটা কোন প্রথম ঘটনাও নয়; ৬৫, ৭১ এবং কারগিলেও এই সামরিক বাহিনীর এই কৌশলই ছিল। বাস্তবতা এটাই যে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী বেতনভাতা, ফ্ল্যাট এবং ক্যারিয়ারের উন্নতির জন্য লড়াই করে। স্বার্থপরতা এবং বাহ্যিক ফায়দার নাম হল সামরিক বাহিনীর চাকুরী। এই সামরিক বাহিনীই অ্যামেরিকান ডলারের বিনিময়ে উম্মতের মুজাহিদদের এবং নিজ মুসলিম জনসাধারণের রক্ত ঝরিয়ে যাচ্ছে, যে কাবায়েল (গোত্রগুলো) হিন্দুদের থেকে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের হাতে সোপর্দ করেছিল, সেই কাবায়েলের (গোত্রগুলোর) উপর আমেরিকার দাসত্ব করতে গিয়ে আগুন ও বারুদের বৃষ্টি বর্ষণ করে। আজ এর নীতিতে ভারত, আমেরিকা, ইসরায়েল অথবা কোন কাফের রাষ্ট্র এই বাহিনীর শত্রু নয়, বরং জিহাদের ফরয আদায়কারী দ্বীনের অনুসারীদেরকে এই বাহিনী শত্রু মনে করে। সুতরাং যে সামরিক বাহিনীর কাছে না মসজিদ মাদ্রাসা হেফাজত থাকে আর না মুসলমানদের বসতবাড়ি হেফাজত থাকে এমন সামরিক বাহিনী কিভাবে হিন্দুদের মোকাবেলা করতে পারবে?

আমাদের অবস্থান হল জিহাদি আন্দোলনকে এই তাগুতদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা ছাড়া জিহাদ কখনও সফল হতে পারবেনা। যদি আজ ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইয়েমেন ও সোমালিয়া এবং মালি ও আলজেরিয়া পর্যন্ত জিহাদি আন্দোলনের সফল হচ্ছে, যেখানেই সব প্রতিবন্ধকতার পরও আল্লাহ মুজাহিদদের বিজয় দিচ্ছেন এবং জিহাদি আন্দোলন গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তো এর একটা বড় কারণ হল তাগুতী সামরিক বাহিনীর প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করা।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমাদের পরিসরের কেউ কেউ আজও কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে আশা রাখে, আপনার দৃষ্টিতে জাতিসংঘ কি কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ দেখুন, জাতিসংঘ জালেম, বলপ্রয়োগকারী এবং কাফেরদের বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার নাম, এর ইতিহাস ইসলাম এবং আহলে ইসলামদের বিরুদ্ধে অপরাধে পরিপূর্ণ। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের দখলদারিত্বের ব্যাপারে সম্মতি আছে, ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধে আমেরিকার প্রতি সাহায্য আছে, কাশ্মীর থেকে ফিলিস্তিন এবং সিরিয়া পর্যন্ত মুসলমানদের রক্ত ঝরানোর জন্য জালেমদের প্রতি সাহায্য আছে, এর ইতিহাসে কোথাও এমন একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবেনা যেখানে কাফের ও জালেমদের মোকাবেলায় মুসলমানদের ইসলামী অধিকার দেওয়া হয়েছে। এটা অপরাধী এবং জালেমদের এমন একটি জোট যেখানে শক্তি এবং জুলমের ভিত্তিতে প্রত্যেককে ক্ষমতা দেওয়া হয়। ভেটো দেওয়ার অধিকারসম্পন্ন পাঁচ শক্তি, পাঁচ স্বৈরাচারের এখানে শাসন, এদের প্রত্যেকের নিজ দখলে নিজের কাশ্মীর আছে, এবং প্রত্যেকের হাত মুসলমানদের রক্তে রঙিন, রাশিয়া চেচনিয়ার উপর চেপে আছে, এর চেচেন মুসলমানদের উপর অত্যাচারের এক লম্বা ইতিহাস আছে। চীন ইসলামী তুর্কিস্তানের উপর চেপে আছে, এখানকার মুসলমানরা চীন থেকে স্বাধীনতা চায়, ইসলামী তুর্কিস্তানের মুসলমানদের উপর চীন পর্বতসম অত্যাচার করে যাচ্ছে, এই বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী তুর্কিস্তানী মুসলমান ইসলামী নাম রাখতে পারবেনা, নেকাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, দাঁড়ি রাখা নিষিদ্ধ, রমজান মাসে রোযা রাখা পর্যন্তও নিষিদ্ধ। একইভাবে ফ্রান্সের অত্যাচারের কারণে পশ্চিমা ইসলামী বিশ্বে ও আফ্রিকায় মুসলমানদের রক্ত ঝরছে। আজ এই কারণেই সব অপরাধীরা মিলে আফগানিস্তান থেকে সিরিয়া ও ইয়েমেন পর্যন্ত মুসলমানদের রক্ত প্রবাহিত করছে, সুতরাং যদি জাতিসংঘকে নাক গলানোর সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে এ থেকে এটাই আশা করা যেতে পারে যে কাশ্মীরের মাটি হিন্দুদের সাথে সাথে এই বৈশ্বিক অপরাধীদেরও পাশবিকতার বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হবে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি বলেছেন কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘের দিকে চেয়ে থাকা যাবেনা। আবার পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর কাছ থেকেও ভাল কোন আশা নেই। তাহলে আপনার মতে কাশ্মীরের সমস্যার কার্যকর সমাধান কি?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সমাধান বলতে যদি এমন কোন ফরমুলা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, যাতে কোন কুরবানি, কষ্ট ও ক্লেশ ছাড়াই দুই তিন বছরের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে, তো আমরা মনে করি এমন কোন সমাধান সম্ভব নয়, বরং সত্য এটাই পুরো উম্মত আমাদের এইসব সমস্যার কারণ। আজ পর্যন্ত কারণ এটাই আছে যে আমরা এমন কোন সমাধান খুঁজেছি যাতে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার কিছু নেই, হিজরত ও জিহাদের কষ্ট কাঠিন্য সহ্য করার কিছু নেই, দৈনন্দিন জীবনে কোন বাঁধা-বিঘ্ন আসবেনা, এবং শান্তিপূর্ণ সাময়িক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে যাব। আসলে আজ এমন সমাধানের সন্ধানই মুসলিম উম্মতের অবনতির কারণ।

বাস্তবতা এটাই যে, সমাধান আল্লাহর ইচ্ছাধীন, নুসরত ও বিজয় আল্লাহর হাতে, আর আমরা, আমরা তো আল্লাহ প্রদত্ত রাস্তা অর্থাৎ শরীয়তের অনুসরণে বাধ্য এবং এ ব্যাপারেই আমরা জিজ্ঞাসিত হব। এ পথ অনুসরণ করে যদি বিজয় পাওয়া যায়, তাহলে আল্লাহর শুকরিয়া, আল্লাহর নেয়ামত। আর যদি বিজয় পেতে বিলম্ব হয়, তাহলে এতেও আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রজ্ঞা এবং আমাদের জন্য কল্যাণই হবে। এমন অবস্থায় আবার ব্যক্তি, জামা’আত এবং জাতি হিসেবে আমরা সফল হব, কারণ আল্লাহর আনুগত্যের ফলে আল্লাহর কাছে সম্মান এবং সফলতা পাওয়া যাবে, যা আমাদের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা। এটা আলাদা কথা যে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, যখন আমরা উম্মত হিসেবে সরল পথের অনুসরণ করব, তো ইনশাআল্লাহ ভাল ফলাফলই দেখা যাবে।

এজন্য প্রথমত এটাই যে, আমরা শরীয়তের অনুসারী হয়ে যাই, শরীয়ত বলে কুফরের আধিপত্য থেকে পরিত্রাণের রাস্তা হল জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। এজন্য আমাদের ব্যক্তিগত এবং সামগ্রিক পর্যায়ে জিহাদকে দাঁত দিয়ে যেন আঁকড়ে ধরতে পারি, হিন্দু সামরিক বাহিনী এবং শাসকদের সাথে আমরা তলোয়ারের ভাষায় কথা যেন কথা বলি। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতা অথবা ‘কিছু নিন কিছু দিন’ সহ সব এমন পথ ও পন্থাকে নিজেদের জন্য হারাম মনে করি যা শরীয়ত বহির্ভূত এবং যাতে কুফরি শাসনব্যবস্থা প্রাধান্য পায় অথবা একে সহযোগিতা করার জন্য অংশ নেওয়া হয়।

দ্বিতীয়তঃ এই জিহাদের লক্ষ্য যেন আমাদের সবার সামনে থাকে, শরীয়তের শাসন এবং মাজলুমদের সাহায্য এই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর বুনিয়াদী উদ্দেশ্য হওয়া জরুরী। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো সামনে রেখে আমরা অগ্রসর হই অর্থাৎ শরীয়তের শাসন আমাদের গন্তব্য হোক এবং শরীয়তের অনুসরণ আমাদের রাস্তা হোক।

তৃতীয়তঃ পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীসহ সমস্ত তাগুতি সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর প্রভাব থেকে নিজেদের আন্দোলনকে মুক্ত রাখা।

চতুর্থতঃ কাশ্মীরের জনগণ একেলা এই যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হতে পারবেনা। কারণ, এটা সব মুসলমানদের সমস্যা, সবার উপর এই জিহাদ ফরযে আইন। তাই পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারতসহ পুরো উপমহাদেশের মুসলমানদের এই যুদ্ধে নিজের ফরয আদায় করা জরুরী। ভারতের বিরুদ্ধে পুরো উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করা অত্যাবশ্যকীয়। কাশ্মীরী জাতির সাহায্য কেবল তখনই সম্ভব, যখন এই জিহাদি আন্দোলন উপমহাদেশের পর্যায়ে শক্তিশালী হবে এবং পুরো উপমহাদেশের মুসলিম জনসাধারণ কাশ্মীরের জনগণের পিছনে দাঁড়িয়ে যাবে। উপমহাদেশের পর্যায়ে এই জিহাদি আন্দোলনের তিনটি দায়িত্ব – কাশ্মীরী জনগণকে সাহায্য করা প্রথম দায়িত্ব, পাকিস্তানী সামরিকবাহিনীসহ সব তাগুতী ষড়যন্ত্র এবং আগ্রাসনের মোকাবেলায় জিহাদি আন্দোলনের প্রতিরক্ষা করা দ্বিতীয় দায়িত্ব, আর তৃতীয় দায়িত্ব ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং হিন্দু প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিধি পুরো উপমহাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া … কাশ্মীরের ছোট এলাকাতেও ভারত ছয় লক্ষ সৈন্য মোতায়েন করে নিজেকে সুরক্ষিত করে রেখেছে। ভারতকে কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লীসহ পুরো উপমহাদেশে টার্গেট বানালে তখন এর উচিত শিক্ষা হবে। আমেরিকার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে, যেভাবে আমেরিকার জন্য দুনিয়া জুড়ে নিজেকে নিরাপদ রাখা মুশকিল হয়ে গেছে, একইভাবে ভারতীয় বাহিনী এবং হিন্দু শাসকদের জন্যও নিরাপদ দুনিয়াকে যুদ্ধের ময়দান বানানো জরুরী।

পঞ্চমতঃ যা গুরুত্বের দিক থেকে প্রথম, তা হল উপরে উল্লেখিত চারটি বিষয়ের দিকে উপমহাদেশের সমস্ত মুসলমানদের নিয়ে আসা, অর্থাৎ দাওয়াত ও জিহাদের নবুওয়্যাতি মানহাজের উপর দাঁড় করানো এবং এর পূর্বে আখিরাতের চিন্তা, তাকওয়া এবং আল্লাহর জন্য সব – এরকম প্রকৃত পথের সম্বল দিয়ে তাদের অলংকৃত করা … এসব ঐ পথ যা আমাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর অনুমতিক্রমে কাশ্মীরসহ এই পুরো উপমহাদেশে জুলম ও কুফরের প্রতিপত্তিকে শেষ করার কারণ হতে পারে। আর আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কার্যক্ষেত্রে কাশ্মীরের জিহাদে আলকায়েদা কিভাবে নিজের ভূমিকা পালন করছে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ এ ব্যাপারে কিছু কথা কাশ্মীরী ভাইদের সামনে শুরুতে রাখতে চাই; এখানে খোরাসানে আমাদের এই কাফেলায় অধিকৃত কাশ্মীর থেকে আসা বেশকিছু মুজাহিদ ও মুহাজির ভাই ছিলেন এবং এখনও আলহামদুলিল্লাহ আছেন। এরা ঐসব ভাই যারা জিহাদের জন্য পাকিস্তানে হিজরত করেছিলেন, কিন্তু যখন পাকিস্তানী বাহিনী নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করে, তখন এই বাহিনী এবং এর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁদেরকে জিহাদ ছেড়ে দেওয়া এবং পাকিস্তানে চাকুরী করার জন্য বাধ্য করে। আল্লাহর এই সিংহরা, আলহামদুলিল্লাহ, এই হীনতা মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং এখানে খোরাসানে এসে আলকায়েদায় যোগ দেয়। এরপর এখানে এই কাশ্মীরী ভাইয়েরা আমেরিকা ও এর মিত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেন এবং এখন পর্যন্তও অংশ নিচ্ছেন … সাথে সাথে কাশ্মীর উপত্যকা থেকেও তাঁদের দৃষ্টি কখনও সরে যায়নি! তাঁরা ভারতের বিরুদ্ধেও প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এঁদের মাঝে কিছু এমনও কাশ্মীরী ভাই আছেন, যারা আমেরিকার হামলায় এখানে শহীদ হয়ে গেছেন, আল্লাহ তাঁদের শাহাদাত কবুল করুন এবং তাঁদের উপর রহম করুন …

তো এমন ভাইদের এই তালিকা লম্বা, মুজাহিদ ভাইয়েরা এবং নেতারাও এই তালিকার মাঝে অন্তর্ভুক্ত। এদের মাঝে এমনও আছেন যারা অধিকৃত কাশ্মীর থেকে এসেছেন, আবার এমনও আছেন যারা পাকিস্তানী কাশ্মীর থেকে এসেছেন। শায়খ এহসান আযিয (র) আমাদের মুরব্বী এবং উস্তাদ ছিলেন, আমি নিজে এর স্বাক্ষী যে কাশ্মীরের ভেতর এখানে খোরাসান থেকে জিহাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলেন এবং অনেক কাশ্মীরী মুহাজির ভাইকে উনি এখানে প্রস্তুত করেছিলেন। একইভাবে শায়খ ইলিয়াস কাশ্মীরী (র)! … তিনি কাশ্মীর জিহাদের বিখ্যাত নেতা ছিলেন। তিনি কাশ্মীরে লড়াই করেছিলেন, কিন্তু কৌশল পরিবর্তনের পরে পাকিস্তানী বাহিনী শায়খ ইলিয়াস (র) কেও থামাতে চেয়েছিলেন, তিনি কথা মানেননি ফলে তাঁকে টর্চার সেলে পাঠানো হয়, তাঁর উপর কঠোর নির্যাতন করা হয়। মুক্ত হওয়ার পরে তিনি সোজা খোরাসানে চলে আসেন, এখানে এসে আলকায়েদায় যোগ দেন এবং এরপর আলকায়েদার অধীনে তিনি দুই সমরক্ষেত্রেই মনোযোগ দেন, আমেরিকা ও মিত্রদের সাথেও লড়াই করেন। আল্লাহ তাঁর কাছে থেকে অনেক কাজ নেন। শায়খ উসামা (র) এর অ্যাবোটাবাদে পাওয়া চিঠিতেও তাঁর কথা উল্লেখিত ছিল। সাথে সাথে অন্য সমরক্ষেত্র কাশ্মীরের জন্যও তিনি এখানে প্রস্তুতি অব্যাহত রাখেন … এবং এখানে খোরাসান থেকে ভারতে তিনি কয়েকটি সফল অপারেশন পরিচালনা করেন আলহামদুলিল্লাহ।

তো উদ্দেশ্য হল আমরা এখানে খোরাসানে, জিহাদের ময়দানে থেকেও কাশ্মীর জিহাদে অংশ নেওয়া ফরয মনে করি … আমাদের কাফেলার প্রত্যেক মুজাহিদ – হোক সে কাশ্মীরী, পাকিস্তানী, বাংলাদেশী অথবা ভারতীয় – প্রত্যেকের মন কাশ্মীরের ভাইদের সাহায্য করার জন্য ছটফট করে। কাশ্মীরের ভেতরেও আল্লাহ যেন আমাদের জন্য রাস্তা খুলে দেন, আল্লাহ যেন আমাদের তৌফিক দেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের কাশ্মীরী ভাইদের সাথে আমরাও যুদ্ধক্ষেত্রে থাকব। এরপর কাশ্মীরের বাইরে পুরো দুনিয়াতে … ভারতীয় সরকারের স্বার্থ এবং এর হিন্দু শাসকদের টার্গেট বানানো আমাদের প্রচেষ্টা। এরদিকে আমরা দাওয়াত দেই, আমাদের প্রচেষ্টায় আল্লাহ বরকত দিন, সাহায্য করুন।

جَاهِدُوا الْمُشْرِكِينَ بِأَلْسِنَتِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ

অর্থাৎ তোমরা মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ কর তোমাদের কথার মাধ্যমে এবং জীবনের মাধ্যমে।

উপরের হাদিসটিকে সামনে রেখে কথার মাধ্যমে যতটা সম্ভব, আর আমরা একে লজ্জার কিছু মনে করিনা, বরং নিজেদের ভাইদের কল্যাণের জন্য এখানে এই জিহাদের ময়দান থেকে ঐ ময়দানের দিকে ডাকি, অন্তর থেকে অন্তরে বাহবা দেব এবং নিজের ভাইয়ের নুসরতের জন্য হিন্দু ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে যতটুকু আমরা করতে পারি, এই জিহাদে নিজেরা অংশগ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ!

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কাশ্মীরে আলকায়েদার হস্তক্ষেপের ফলে কি কাশ্মীর জিহাদের ভিত্তির কোন ক্ষতি হবেনা? কেউ কেউ বলেন এতে আমেরিকা অভিযান চালানোর বৈধ্যতা পাবে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ প্রথম কথা হল কাশ্মীরের মুসলমানদের রক্ত ঝরানো থেকে আমেরিকার ভূমিকা কবে পবিত্র ছিল যে আজ এর অভিযান চালানোর কথা বলে ভয় দেখানো হচ্ছে? অত্যাচার এবং বলপ্রয়োগের সাথে আমেরিকার ভূমিকা এখানে সব সময় ছিল। প্রশ্ন হল একদিকে যখন দক্ষিণ সুদান এবং পূর্ব তিমুরে খৃষ্টানরা মুসলমানদের থেকে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে তখন আমেরিকা সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে যায় এবং তাদের স্বাধীন করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে, কিন্তু অন্যদিকে বিগত সত্তর সাল থেকে এখানে কাশ্মীরী মুসলমান আগুনে জ্বলছে, আমেরিকার টনক নড়েনি, বরং মুসলমানদের হত্যাকারী ভারতকে শক্তিশালী করছে। বাস্তবতা এটাই যে, কাশ্মীরী মুসলমানদের উপর চালানো প্রত্যেকটি জুলমের পিছনে আমেরিকার সাহায্য এবং পৃষ্ঠপোষকতা আছে।

আমেরিকার পক্ষ থেকে ভারতকে এই সাহায্য কোন আজ অথবা কালকের কথা নয় যে এ থেকে এটা বলা যাবে কাশ্মীরে কোন জামা’আতের জিহাদের কারণে এসব হচ্ছে … আমেরিকা ভারত পারমাণবিক চুক্তি, একে অপরের সামরিক ঘাটি ব্যবহারের চুক্তি, মহাশূন্যভিত্তিক কার্যক্রমে ব্যাপক সহযোগিতা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং এমন অন্যান্য যুদ্ধক্ষেত্রে সাহায্য, এসব কিছু আলকায়েদার কথা আসার আগেই হচ্ছিল … এরপর ইসরায়েলের সাথে ভারতের ঘনিষ্ঠতা, সামরিক সহযোগিতা, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা এবং অস্ত্র কারখানা ভারতে স্থানান্তরিত করা … এসব সহযোগিতা বিশেষ কোন সংগঠন বা জামা’আতের বিরুদ্ধে অথবা এরকম কোন কারণে নয়, এটা মুসলিম উম্মতের বিরুদ্ধে! একইভাবে, পাকিস্তানী সামরিকবাহিনী ২০০৩-২০০৪ সালে আমেরিকার নির্দেশে যেসব কাশ্মীরী জামা’আতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তো ঐ সংগঠনগুলোর মাঝে আলকায়েদা ছিলনা! … অতীতে আলমায়েদা নামে এক সাংবাদিক পাকিস্তানী শাসক এবং জেনারেলদের মাঝে হওয়া এক মিটিং ফাঁস করেন, যাতে উল্লেখ আছে আমেরিকাকে খুশি করার জন্য পাকিস্তানে থাকা কাশ্মীরী নেতাদের হত্যা করার ব্যাপারে মাসোয়ারা হয়েছিল, তো এই কাশ্মীরী নেতারাও তো আলকায়েদার কেউ ছিলেননা! এসব বলার উদ্দেশ্য হল আমেরিকা এবং ভারত আগেও একসাথে ছিল এবং ভবিষ্যতেও ইসলামের বিরুদ্ধে একসাথে থাকবে। الکفر ملۃ واحدۃ অর্থাৎ সব কাফেররা আসলে একই ধর্মের অনুসারী; ইসলাম এবং মুসলমানদের মোকাবেলায় যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিকা যাই হোক না কেন এদের সবার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ইসলামের প্রতি শত্রুতা হয়ে থাকে।

এটাও উল্লেখ করতে চাই, দুনিয়ার সব জালেম এবং কাফের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তাহলে কেন কাশ্মীরী মুসলমানদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে মুসলিম উম্মত নিরব দর্শক হয়ে থাকবে এবং এর মুজাহিদ সন্তানেরা নিজেদের ভাইদের ডাকে সামনে আগাবেনা? বাস্তবতা হল দুনিয়াজুড়ে মুসলমান এক উম্মত আর কাফেরদের এবং তাদের এজেন্টদের প্রচেষ্টা হল মুসলমানদেরকে তাদের টেনে দেওয়া লাইনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ করে রাখে, আল্লাহর ইবাদতের জায়গায় দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতিমার সামনে ঝুঁকিয়ে রাখা যাতে জুলম এবং কুফরের এই বিজয় টিকে থাকে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, এটা আল্লাহর নিয়ামত এবং জিহাদি আন্দোলনের বরকত যে মুসলমান আজ উম্মত হয়ে দেশ ও রাষ্ট্রের এই প্রতিমাকে পদদলিত করে কুফরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আজ কাশ্মীর জিহাদ যে দিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে আপনার কি মনে হয় এটা আমেরিকা এবং এর মিত্রদের জন্য কষ্টের কারণ হতে পারে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমেরিকা এবং এর মিত্রদের তো নিশ্চিতভাবে কষ্ট হচ্ছে এবং হওয়াও উচিত; এই কষ্টের কারণ কাশ্মীরী জনসাধারণের এমন জিহাদের দিকে অগ্রসর হওয়া যা পাকিস্তানী গোয়েন্দাসংস্থাগুলো থেকে প্রভাবমুক্ত এবং যার উদ্দেশ্য শরীয়ত ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা। এমন জিহাদ না আমেরিকার পছন্দ, আর না পাকিস্তানের আর না ভারতের। অর্থাৎ ভারতও যখন জিহাদ শেষ করতে পারবেনা – এটা বুঝতে পারে তখন এর জন্য শেষ উপায় হল নিয়ন্ত্রিত জিহাদ যাতে যখন চায় আমেরিকা পাকিস্তানের মাধ্যমে একে দুর্বল করে দিতে পারে।

সত্য এটাই যে মাজলুমদের নুসরত এবং শরীয়তের শাসনের জন্য জিহাদ আলকায়েদার নামে হোক অথবা অন্য কোন নামে, এমন জিহাদ যেহেতু মুসলমানদের স্বাধীনতা, সম্মান এবং প্রতিরক্ষা দেয়; এজন্য সব শয়তানেরা মিলে এর রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা দিবে … কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ কাশ্মীরী মুসলমান আজ বন্ধু এবং শত্রুকে চিনে, তাঁরা স্বাধীনতার পথ আজ জেনে গেছে এবং এখন তাঁরা শরীয়ত অথবা শাহাদাত থেকে সরে অন্য কোন ঠিকানায় ইনশাআল্লাহ যাবেনা।

এখানে আমি যারা আমেরিকার ভয় দেখায় তাদের জিজ্ঞাসা করতে চায়, আমেরিকা কোন তীর নিক্ষেপ করেছে, কোন দুনিয়াতে জিহাদ শেষ করেছে যে এখন কাশ্মীরী মুসলমানদেরকেও চুপ করিয়ে দেবে? আমেরিকা যেখানে এসেছে, উম্মতের মুজাহিদরা পূর্ব ও পশ্চিম থেকে তার পিছনে ধাওয়া করেছে এবং এরপর আলহামদুলিল্লাহ মুজাহিদরা তো ময়দানে আছে কিন্তু আমেরিকা পালাচ্ছে। আল্লাহর অনুগ্রহে আজ উম্মত এবং এর মুজাহিদেরা বিজয়ী, অন্যদিকে আমেরিকা এবং তার পূজারীরা হতাশা ও উদ্বেগের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এখানে কাশ্মীরী মুজাহিদদের জন্য আপনি কোন বার্তা দিতে চান?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরের আমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা, আল্লাহর কসম, আপনাদের প্রত্যেক মুজাহিদ ভাই আমাদের প্রিয় ভাই এবং ভালবাসার পাত্র, জামা’আত এবং সংগঠনের রাস্তা থেকে ঈমান এবং ইসলামের রাস্তা বেশি শক্তিশালী এবং বেশি গুরুত্বপূর্ণ! এই শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কারণে আজ আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি!!

আমাদের এই অনুরোধ কাশ্মীরের প্রত্যেক নেতা এবং কর্মী, সব মুজাহিদ এবং সব বয়োজ্যেষ্ঠদের উদ্দেশ্যে, আপনারা একে খোরাসান থেকে আপনাদের ভাইদের ডাক মনে করুন! এটাকে কাশ্মীরী শহীদদের পক্ষ থেকে আমানতও মনে করুন যারা কাশ্মীরের স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে এখানে খোরাসানে শায়িত আছেন।

প্রথম অনুরোধ এটাই … মুশরিক হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই জিহাদ একটি অত্যন্ত বড় ইবাদত! এই বড় ইবাদত এবং বড় সৌভাগ্যের জন্য আপনাদেরকে মোবারকবাদ! আবেদন হল আমরা এই মোবারক জিহাদে যেন শরীয়তকে দাঁত দিয়ে আঁকড়িয়ে সামনে অগ্রসর হই। আমাদের উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, সফর এবং ঠিকানা, শুরু থেকে শেষ, সব শরীয়ত মোতাবেক যেন হয়! শরীয়ত আল্লাহর রাস্তা, আল্লাহর এই রাস্তার উপর যেন আমরা চলি এবং আল্লাহর এই শরীয়তকে শাসক বানানোর জন্য যেন আমরা পা ফেলি! … এটাই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ! রাসূল () এর বাণী –

مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ

যে ব্যক্তি আল্লাহ কালিমাকে সুউচ্চ করার জন্য যুদ্ধ করে সেই যুদ্ধই ফি সাবিলিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায়।

এর মাধ্যমেই প্রত্যেক জুলম ধ্বংস হবে, জুলম জুলমের মাধ্যমে ধ্বংস হয়না, বরং জুলমের ধ্বংস হয় ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে; আর ন্যায়পরায়ণতা হল শরীয়ত, শরীয়তের বিপরীতে প্রত্যেক ন্যায়পরায়ণতা আসলে জুলম!! কাজেই শরীয়তের শাসনের জন্য লড়াই করুন! এই অত্যাচারী শাসনব্যবস্থার বিপরীতে খেলাফত প্রতিষ্ঠার বরকতময় উদ্দেশ্য নিজেদের সামনে রাখুন! এর মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য আসবে! আলহামদুলিল্লাহ, এটাই আমাদের বুরহান ওয়ানী (র) এর রাস্তা ছিল এবং এটাই এই বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের দাওয়াত ও মানহায।

দ্বিতীয়ত আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর নিয়ামত যে কাশ্মীরের স্বাধীনতার আন্দোলন আজ নিজ পায়ের উপর দাঁড়া হচ্ছে। আজ এই জিহাদি আন্দোলন প্রতিবেশী কোন গোয়েন্দাসংস্থা অথবা সামরিক বাহিনীর হাতে নেই ইনশাআল্লাহ! গোয়েন্দাসংস্থা এবং সামরিক বাহিনীর প্রতারণায় আপনারা দংশিত এবং আমাদের আপনাদের ঈমানী গভীরতার উপর দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও আপনারা আপনাদের এই বরকতময় জিহাদকে এই প্রতারকদের উপর নির্ভরশীল এবং অনুসারী বানাবেননা। রাসূল () এর বাণী –

( لاَ يُلْدَغُ الْمُؤْمِنُ مِنْ جُحْرٍ وَاحِدٍ مَرَّتَيْنِ.)

অর্থাৎ মুমিন একই গর্ত থেকে একাধিকবার দংশিত হয়না।

এই সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দাসংস্থাগুলো কাশ্মীরে আমাদের এই বরকতময় জিহাদকে নিজেদের গোলাম হিসেবে দেখতে চায়, কিন্তু আপনারা আপনাদের এই কাফেলাকে আল্লাহ এবং শুধু আল্লাহর গোলাম বানান! আপনাদের জিহাদ, আপনাদের ইখলাসের উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই মহান আন্দোলন, এবং আপনাদের কুরবানির এই লম্বা ইতিহাস এদের কাছে খেলা, এটা এদের কাছে রাজনীতি এবং নোংরা ব্যবসা! এসব এদের নিজেদের স্বার্থের কয়েদি, এটা লোভ, স্বার্থের দাস। আল্লাহর কসম! এরা আপনাদের কুরবানিকে নিজেদের ফায়দা ও স্বার্থের বলি বানাতে পারে, এরা বদমায়েশদের হাতে আপনাদের কুরবানি তো বেঁচে দিতে পারে, কিন্তু জালেমদের মোকাবেলায় এরা আপনাদের প্রতিরক্ষা করবে? এটা অসম্ভব।

এজন্য, আমাদের আবেদন হল আল্লাহর পরে শুধু আল্লাহর মুমিন বান্দাদেরকে আপনারা আপনাদের আনসার মনে করুন! এদের প্রতি আস্থা রাখুন! ঐসব মুমিন বান্দা যারা বেতন-ভাতা, প্লট, ক্যারিয়ারের উন্নতি এবং কোন দুনিয়ার স্বার্থের জন্য লড়াই করেনা! বরং তারা আল্লাহর জন্য ভালবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, তারা আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব করে, আল্লাহর জন্য শত্রুতা করে এবং তারা আল্লাহর সামনেই জবাবদিহিতার ভয়ে নিজেদের কাশ্মীরী মাজলুম মা, বোন এবং ভাইদের সাহায্য করা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। আল্লাহর বাণী –

وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ

অর্থাৎ মুমিন ও মুমিনাহ একে অপরের বন্ধু ও রক্ষক হয়ে থাকে

আর এর উল্টা দেখুন –

وَإِنَّ الظَّالِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ

অর্থাৎ জালেমরা একে অন্যের আউলিয়া আর আল্লাহ মুত্তাকীদের আউলিয়া।

মুমিন কাশ্মীরের ভেতরে থাকুক, পাকিস্তান, ভারত অথবা আফগানিস্তানের ভেতর থাকুক, সে আপনাদের বন্ধু, সে আপনাদের ব্যথা অনুভব করে!! আর জালেম পাকিস্তানের ভেতর হোক, অথবা ভারত অথবা আফগানিস্তানের ভেতর, সে জালেম, সে আপনাদের ব্যথা কী তাই বুঝবে না … সে স্বার্থপর, সে যে কোন সময় আর্তনাদপূর্ণ কঠিন অবস্থায় আপনাদেরকে ছেড়ে পেছনে চলে যেতে পারে, সে আপনাদের পিঠে ছুরি বসিয়ে দিতে পারে, এবং কাল কোন না কোন সুযোগে আপনাদের সমস্ত গোপনীয়তা নিজেদের দুনিয়াবি স্বার্থের জন্য আপনাদের শত্রুদের হাতে দিয়ে দিতে পারে … বরং যে কোন সময় সে আপনাদের প্রকাশ্য শত্রুতেও পরিণত হতে পারে!

দেখুন আল্লাহর মুমিন বান্দারা খোরাসান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারত এই পুরো ভূখণ্ডে আলহামদুলিল্লাহ অসংখ্য, এরাই আপনাদের আনসার হবেন, এরাই ইনশাআল্লাহ জালেম ভারতের হাত কাটবে! আর এদের সাথে আপনাদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া এবং তাদেরকে আপনাদের সাহায্যের জন্য দাঁড় করানো এবং দাঁড় করিয়ে রাখা … আমরা … আলকায়েদা উপমহাদেশের আপনাদের ভাইয়েরা … নিজেদের দায়িত্ব মনে করি … আল্লাহ আমাদের এই কাজের তৌফিক দিন এবং আল্লাহ আমাদেরকে সত্যের জন্য একে অপরের বন্ধু এবং সাহায্যকারী বানিয়ে দিন!!!

আবার দেখুন আমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা! জিহাদি আন্দোলন এভাবে প্রতিষ্ঠা করা অবশ্যই কঠিন, কিন্তু অবশ্যই অসম্ভব নয়, আর এটাও বাস্তবতা যে জিহাদি আন্দোলনের জন্য আমরা যদি এই পন্থা অবলম্বন না করি, এই জালেম এবং দ্বীনের শত্রু পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী থেকে রক্ষা না করি, তাহলে এই অন্ধকার রাত শেষ হবেনা, আমরা গোলক ধাঁধাঁর মাঝেই ঘুরতে থাকব। স্রোতেই ভাসতে থাকব, রক্ত প্রবাহিত করতে থাকব কিন্তু গন্তব্য এবং সফলতা … কখনও পাওয়া যাবেনা, এজন্য আল্লাহর উপর ভরসা করা জরুরী। আল্লাহ বলেনঃ

وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا …

অর্থাৎ আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কার্যনির্বাহীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।

ومن يتوكل على الله فهو حسبه

অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট

وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا

অর্থাৎ আপনার জন্যে আপনার পালনকর্তা পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট

স্ট্র্যাটেজি বলার জন্য এবং পথ দেখানোর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। এজন্য আমরা যেন আল্লাহর উপর ভরসা করি, জিহাদি আন্দোলনের স্বাধীনতা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং শরীয়তসম্মত রাস্তার উপর প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য সামনে এগিয়ে যায়, নিঃসন্দেহে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সাহায্য করবেন …

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনে জনতার ভূমিকা আজ সবার সামনে, এই ব্যাপারে আপনি কি কিছু বলতে চান?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরী জনতার ভূমিকা পুরো উম্মতের জন্য অনুসরণীয়, আজ তাদের এই বরকতময় জিহাদে পুরোপুরি অবদান আছে, আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আপনাদের মুজাহিদদের রক্ষার জন্য বিক্ষোভ মিছিল করা, লাঠি, পাথর এবং গুলি পর্যন্ত খাওয়া, আপনাদের দেহকে ঢাল বানিয়ে মুজাহিদদের রক্ষা করা, সৈন্যদের উপর বৃষ্টির মত পাথর মারা, একইভাবে মুজাহিদদের খাবার খাওয়ানো, আশ্রয় দেওয়া এবং দু’আ দেওয়া এসব জিহাদের নুসরত, মহান ইবাদত। এই রাস্তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকুন; আজ আপনারা যে কষ্ট করছেন, যে কুরবানিও দিচ্ছেন, তার প্রতিদান আপনাদের রবের কাছে পাবেন। এখানে আমি মুজাহিদদের কাছেও আবেদন করব যে এই মহান জনতার হেফাজত এবং কল্যাণকামিতা আমাদের উপর ফরয। এজন্য, তাঁদের হেফাজতকে নিশ্চিত করুন, তাঁদের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য সব রকম জায়েজ পন্থা অবলম্বন করুন এবং এমন সব পদক্ষেপ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকুন যার কারণে জনতার ক্ষতি হয়। মুসলিম জনতার এই সহযোগিতা অত্যন্ত বড় নেয়ামত; এটা ছাড়া কোন জিহাদি আন্দোলন চলতে পারেনা, এই সহযোগিতার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার শুকরিয়া আদায় করুন এবং জনতার প্রতিও সবসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, আল্লাহ আপনাদের এবং আপনাদের এই মুজাহিদ জনতার মাঝে ভালবাসা এবং আস্থার সম্পর্ক সবসময় প্রতিষ্ঠিত রাখুন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কাশ্মীরে যেসব মুজাহিদ ভাইয়েরা “শরীয়ত অথবা শাহাদাত” এর শ্লোগান দিয়েছেন, সেই ভাইদের জন্য আপনি কি কোন বিশেষ বার্তা দিতে চান?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীর জিহাদের মহান নেতা শহীদ আফজাল গুরু (র) এবং তরুণ নেতা শহীদ বুরহান ওয়ানী (র) এর হে উত্তরাধিকারীরা, আল্লাহর কসম, আপনারা আমাদের প্রাণের স্পন্দন এবং আশার কেন্দ্রস্থল। আল্লাহ, আপনি এঁদের সাহায্য করুন, এঁদের অন্তরকে আপনার নূর দিয়ে আলোকিত করুন এবং এঁদের ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা দান করুন, আমিন।

আমি আমার এই ভাইদের কাছে আবেদন করছি, অবশ্যই আমি নিজেকে আপনাদের মত মহাদ ভাইদেরকে নসিহত করার মোটেও যোগ্য মনে করিনা, কিন্তু যেহেতু একে অপরের মঙ্গলকামণা ওয়াজিব, এজন্য আপনাদের সামনে নসিহতের জায়গায় কিছু জানা জিনিস মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছি!

প্রিয় ভাইয়েরা, উপমহাদেশ বরং পুরো উম্মতের মুজাহিদদের এবং মাজলুম মুসলমানদের দৃষ্টি আপনাদের উপর, আপনাদের জিহাদের উপর এবং আপনাদের এই বরকতপূর্ণ শ্লোগান ‘শরীয়ত অথবা শাহাদাত’ এর উপর। এই শ্লোগানকে বুলন্দ করা যেমন অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার, তেমনি এটা অনেক ভারি দায়িত্বও বটে। কারণ, এই রাস্তা শরীয়তের অনুসরণ দিয়ে শুরু হয় এবং শরীয়তের অনুসরণের সাথে সাথে চলতে থাকে এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠা অথবা শহীদী মৃত্যুর মাধ্যমে শেষ হয়। আল্লাহ তা’আলা আমাদের এই শ্লোগানের হক্ব আদায় করার তৌফিক দান করুন। সুতরাং, প্রিয় ভাইয়েরা, কাশ্মীরের ভেতরে আমরা মুমিনদের এই গুণের বাস্তবরূপ হয়ে যায় “اشداء علی الکفار” (তাঁরা কাফেরদের জন্য অত্যন্ত কঠোর) “رحماء بینھم” (পরস্পরের প্রতি অত্যন্ত নম্র)। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর প্রতি চরম পর্যায়ের কঠোরতা এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ফরয। অন্যদিকে মুসলমানদের সাথে নম্রতা এবং স্নেহশীল হওয়া আবশ্যক … আজ আপনাদের সামনে দুইটি ক্ষেত্র আছে, একটি মুশরিক হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং কিতালের ক্ষেত্র অন্যটি কাশ্মীরে থাকা অন্য মুজাহিদদের এবং সব কাশ্মীরী মুসলমানদেরকে ‘শরীয়ত অথবা শাহাদাত’ এর এই মহান মানহাযের দিকে ডাকা এবং তাদেরকে এর উপর প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্র। নিজেদের পারস্পরিক সহযোগিতার এই ক্ষেত্র দাওয়াতি ক্ষেত্র। আর এতে অনেক বেশি নম্রতা, ভালবাসা, কল্যাণকামিতা এবং ধৈর্য্যের প্রয়োজন। আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা – আপনারা কিতাল ও দাওয়াতের এই দুইটি ভিন্ন কর্মক্ষেত্রে, যে দুইটির প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ ভিন্ন, এর দিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা কাশ্মীরে থাকা প্রত্যেক মুজাহিদ, প্রত্যেক আলেম এবং প্রত্যেক এমন নেতাকে সম্মান করবেন যাদের কাশ্মীরের স্বাধীনতার এই মহান আন্দোলনে অবদান আছে। কাশ্মীরের মুসলমানরা সবাই আমাদের ভাই, হোক সে আপনাদের জামা’আতের সদস্য অথবা অন্য কোন দ্বীনি জামা’আতের, চিন্তাভাবনা ও মতামতে আপনাদের সাথে মিলুক বা না মিলুক, প্রত্যেক অবস্থায় এরা আমাদের ভাই। সুতরাং, তাদেরকে আমরা যেন তাড়াহুড়া অথবা কোন ভুলের মাধ্যমে নিজেদের থেকে দূর না করি। আজ কাছের এবং দূরের সব শত্রুদের পরিপূর্ণ ষড়যন্ত্র হল তারা যাতে আপনাদেরকে মুসলিম জনসাধারণ এবং অন্যান্য মুজাহিদ ভাইদের থেকে দূর করে দিতে পারে যাতে আপনাদের বরকতপূর্ণ আওয়াজ, বরকতপূর্ণ মানহায শুরুতেই মুখ থুবরে পড়ে। তাই, আপনাদের কাছে প্রত্যাশা হল আপনারা প্রত্যেক এমন ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিবেন। আপনারা জানেন যে, আমরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই জিহাদ এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামে শুধু তখনই সফল হতে পারব, যখন সংগঠন এবং দল থেকে বেরিয়ে সব কাশ্মীরী মুজাহিদদের এবং সব মুসলমানদের সাথে ভ্রাতৃত্ব এবং ভালবাসার সম্পর্ক রাখতে পারব। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের বাণীঃ

وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

অর্থাৎ আর আল্লাহ তা’আলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে।

সুতরাং, এই সব বিষয়গুলো যদি আমরা আঁকড়ে ধরতে পারি তো আল্লাহ খুশি হবেন, আল্লাহর সাহায্য আসবে এবং নিজ মাজলুম জাতির দুঃখ এবং দুশ্চিন্তারও আরোগ্য হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাদের পথ দেখান এবং সাহায্য করুন। কবুল করুন হে রাব্বুল আলামিন;

، أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكُم، وَأَمَانَتَكُم، وَخَوَاتِيمَ أَعْمَالِكُم…

আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান দিন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমিন। দর্শকবৃন্দ এখানে এই পর্বের সমাপ্তি করছি। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী পর্বে পাকিস্তানের ভেতরে জিহাদের বিষয়ে কথা হবে। ঐ পর্বে চেষ্টা হবে পাকিস্তান জিহাদের প্রকৃত বাস্তবতার উপর কথা বলার এবং এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সামনে নিয়ে আসার। সেই সময় পর্যন্ত অনুমতি চাইছি।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 − 1 =

Back to top button