অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আল হিকমাহ]আল-হিকমাহ মিডিয়ানির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনামিডিয়া

চিন্তাধারা সিরিজ- ৩৪ || মিল্লাতে ইবরাহীম ও তার অকাট্য বিষয়গুলোর প্রতি শিথিলতা || শাইখ সাঈদ আশ-শিহরী রহিমাহুল্লাহ

 

مؤسسة الحكمة
আল হিকমাহ মিডিয়া
Al-Hikmah Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled

سلسلة مفاهيم -34
ملة إبراهيم و تمييع الثوابت
চিন্তাধারা সিরিজ- ৩৪
মিল্লাতে ইবরাহীম ও তার অকাট্য বিষয়গুলোর প্রতি শিথিলতা
Thought series- 34
Easing of Millat-e-Ibrahim and his incontrovertible things

 

للشيخ سعيد الشهري – رحمه الله
শাইখ সাঈদ আশ-শিহরী রহিমাহুল্লাহ
By Shaykh Sayid Ash-shihri Rohimahullah

 

 

 

 

 

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/cintadhara-34
লিংক-২ :
https://mediagram.me/5f4d802128e472d2
লিংক-৩ :
https://web.archive.org/web/20220725163723/https://justpaste.it/cintadhara-34
লিংক-৪ :
https://web.archive.org/web/20220725163809/https://mediagram.me/5f4d802128e472d2

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (534 MB)
মূল রেজুলেশন [৫৩৪ মেগাবাইট]


লিংক-১ : 
https://archive.org/download/chintadhara_34/chintadhara%2034%20%20.mp4
লিংক-২ :
https://banglafiles.net/index.php/s/mN73wMGRABGiyyQ
লিংক-৩ :
https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=u7k2l9l0y6
লিংক-৪ :
https://workdrive.zohopublic.eu/file/cwg7g35142cfe4c1542d5b30d3fd2e5eaae62
লিংক-৫ :
https://www.mediafire.com/file/deb0c4cqpowmmp4/chintadhara+34++.mp4/file
লিংক-৬ :
https://mega.nz/file/RLlwALLb#72Ye8POkcGieLnuNcH2D6E9kzzR3MKG-EnhRkafA5rw

 

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (111 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [১১১ মেগাবাইট]


লিংক-১ : 
https://archive.org/download/chintadhara_34/chintadhara%2034%20-%201080%20.mp4
লিংক-২ :
https://banglafiles.netk/index.php/s/dztHRxNiWzyAEBs
লিংক-৩ :
https://drive.proton.me/urls/AEYCJTQSGM#KdNr2u4qpSMm
লিংক-৪ :
https://jmp.sh/BULnNsZh
লিংক-৫ :
https://streamable.com/ilho0s
লিংক-৬ :
https://workdrive.zohopublic.eu/file/cwg7g1780db479ea94a78a318c9e8debad4ee
লিংক-৭ :
https://www.mediafire.com/file/2zytwl38tutoqqt/chintadhara+34+-+1080+.mp4/file
লিংক-৮ :
https://mega.nz/file/QCt1xRQD#Wn_O6SNG5YQt2Id5bEgZuHP9dschh18_AAWqGm300No
লিংক-৯ :
https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h5h1q5h1m1

روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (39.8 MB)
৭২০ রেজুলেশন [৩৯.৮ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/chintadhara_34/chintadhara%2034%20-%20720%20.mp4
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/zWcaRQxe9KmcQfT
লিংক-৩ : https://drive.proton.me/urls/9EQ6JHJRGM#tgA5bAOkApoR
লিংক-৪ : https://jmp.sh/rOjiQE7J
লিংক-৫ : https://streamable.com/64vx2u
লিংক-৬ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cwg7g70c980691f9e45be989f3496907cca51

লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/gt2broqprlws4yc/chintadhara+34+-+720+.mp4/file

লিংক-৮ : https://mega.nz/file/saFRkIqK#yP7R0G7qtEbe1H7yTxT-iFo068TWy6kgE_MghsGkj8o

লিংক-৯ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=o5u1n2u2m9

 

روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (12.4 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [১২.৪ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/chintadhara_34/chintadhara%2034%20-%20360%20.mp4
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/krn3qTTzrsTJ78B
লিংক-৩ : https://drive.proton.me/urls/JHJFX9SASM#ChRZaqB0MvLg
লিংক-৪ : https://jmp.sh/x0vA6rB7
লিংক-৫ : https://streamable.com/3urahk
লিংক-৬ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cwg7g74626d03138143b0b9d5fb52808a9cf4

লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/fplk27v5t24d70t/chintadhara+34+-+360+.mp4/file

লিংক-৮ : https://mega.nz/file/ICcnDDoK#Jlj-dNoUWzht9V9Ya-Bjikw9MsTUph2-Vd8SiDtloZY

লিংক-৯ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=f0c9b6w0w1

 

روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (8.8 MB)
3GP রেজুলেশন [৮.৮ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/chintadhara_34/chintadhara%2034%20-.3gp
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/CtSE92Qki5YxoXx
লিংক-৩ : https://drive.proton.me/urls/X0E6FMXYVC#V940qNrASzH6
লিংক-৪ : https://jmp.sh/w0NLVr2A
লিংক-৫ : https://streamable.com/lz6tn7
লিংক-৬ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cwg7g506a65cd1abe4995ac97b1766fd2b0d2

লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/izutnf1l1ghmcee/chintadhara+34+-.3gp/file

লিংক-৮ : https://mega.nz/file/AflX1BaD#4ngUPpLRn6D1KsTEROgEHfzJpztwFx1pdspBz7bj7Fs

লিংক-৯ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=d9c6r0b0h1

روابط بي دي اب
PDF (770 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৭৭০ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/an_nafir_37/An-nafir%2037.pdf
লিংক-২ : https://jmp.sh/VnMtyJMN
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx13305c07948744ba94e3ae945ef953b8
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/e15e5e2b-f55f-4451-b262-2af277b1871a/d12866b8bac513c44e98d134ccf31e01e2d63729ef4a1f91761fcfc9fa868a54
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/upload09/MafahimSeries-34.pdf
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=n6i9a4t6p3
লিংক-৭ : https://upload09.files.wordpress.com/2023/12/mafahimseries-34.pdf

 

روابط ورد
Word (670 KB)
ওয়ার্ড [৬৭০ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/an_nafir_37/An-nafir%2037.docx
লিংক-২ : https://jmp.sh/7btbEK2x
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwxaceb5be92527490eaceea6f1356eecad
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/15a66476-1a02-4464-bf37-73f9def59518/c4b88e355ed068bc2dd6e845243de9eb17ee4d702ae727b994c7ad35222a07b9
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/upload09/MafahimSeries-34.docx
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=x4b7z3c9e8
লিংক-৭ : https://upload09.files.wordpress.com/2023/12/mafahimseries-34.docx

 

روابط الغلاف- ١
book Banner [578 KB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫৭৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/an_nafir_37/An-nafir-37.jpg
লিংক-২ : https://jmp.sh/4wyoI8VY
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx0d0e9387a8004cf29e28dfeff4cdc901
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/958f5c43-3375-4c6d-87be-96e697f51e51/9014a5aa6932de8b743024409b8f882c0acd149d9134efb0343934e9a5f12075
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/upload09/MafahimSeries-Cover-34.jpg
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=w4e4i4x1q8
লিংক-৭ : https://upload09.files.wordpress.com/2023/12/mafahimseries-cover-34.jpg

 

روابط الغلاف
Banner [168 KB]

ব্যানার ডাউনলোড করুন [১৬৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/chintadhara_34/cinta-dhara-34.jpg
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/5nZmHxsPyJDNysg
লিংক-৩ : https://drive.proton.me/urls/JR5SR67S0C#7Pk6CylrsrTa
লিংক-৪ : https://jmp.sh/Ek23y4J6
লিংক-৫ : https://streamable.com/qka6f9
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/qfjqhba11xecuk3/cinta-dhara-34.jpg/file

লিংক-৭ : https://workdrive.zoho.eu/file/cwg7g3a3839c956f5400cb41fb897b76823a6

লিংক-৮ : https://mega.nz/file/MStWwayQ#JbI5VxPOJ8ZYYo9N3ARRYqe6CeX_578kUaFDR4UOSVk

লিংক-৯ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=i6f2p7m5l4

 

*************************

 

 

 চিন্তাধারা সিরিজ- ৩৪

بسم الله الرحمن الرحيم

মিল্লাতে ইবরাহীম ও তার অকাট্য বিষয়গুলোর প্রতি শিথিলতা

শাইখ সাঈদ আশ-শিহরী রহিমাহুল্লাহ

 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা যখন মক্কায় মুহাম্মাদ ﷺ এর নিকট বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করতেন, তখন সর্বপ্রথম নূহ আলাইহিস সালামের ঘটনা বর্ণনা করেন। কারণ তাঁর মাধ্যমেই মক্কার সমাজে দাওয়াতি কার্যক্রমের সূচনা হয়। তারপর তা বিতর্কের দিকে মোড় নেয়। ফলশ্রুতিতে মক্কার রাজনীতিতেও নানাবিধ বিতর্ক শুরু হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় মক্কা নগরীতে মুহাম্মাদ ﷺ কর্তৃক আনীত নতুন দ্বীন নিয়ে তাঁর সাথে মক্কাবাসীদের বিতর্ক শুরু হয়। তিনি ঘোষণা করলেন: ‘আমি মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর আছি’। তখন তারা বলল: ‘না, বরং আমরাই মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর আছি’।

এখানে বিতর্কের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল – কে প্রকৃত অর্থে মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর আছে? কে সেই প্রকৃত তাওহীদের উপর আছে; যে তাওহীদের অনুসরণ স্বয়ং ইবরাহীম আলাইহিস সালাম করতেন।

প্রত্যেকের দাবি ছিল – সে মিল্লাতে ইবরাহীমের উপর আছে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতির দাবি ছিল এই যে, প্রত্যেককে তার দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করতে হবে। সেই প্রেক্ষিতে তারা বলল, ‘হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আপনার দাবির স্বপক্ষে দলীল আমাদের সামনে পেশ করুন’।

ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কে ছিলেন? তাঁর পরিচয় ও অবস্থা বর্ণনা করার জন্য সূরা মারইয়ামে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ঘটনা সম্বলিত আয়াত নাযিল হয়। সেখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেন –

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا

অর্থঃ “আপনি এই কিতাবে ইবরাহীমের কথা বর্ণনা করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী”। (সূরা মারইয়াম 19:৪১)

এই আয়াতের মাঝে উল্লেখিত ঘটনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল – ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিচয় তুলে ধরা। পবিত্র কুরআনে তাঁর পরিচয় এভাবে এসেছে-

إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا

অর্থঃ “নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী”। (সূরা মারইয়াম 19:৪১)

তিনি কে? তাঁর দাওয়াতের পদ্ধতি কেমন ছিল? তিনি কীভাবে দাওয়াত দিয়েছেন? তাঁর দাওয়াত কি সমাজ থেকে দূরে কোথাও ছিল? নাকি তাঁর কওম তথা গোত্রের মাঝেই ছিল? তিনি কি তাঁর নিকটাত্মীয়দেরকেই প্রথমে দাওয়াত দিয়েছিলেন? – এসবের উত্তর কুরআনে এভাবে এসেছে –

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَا أَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِي عَنكَ شَيْئًا

অর্থঃ “যখন তিনি তাঁর পিতাকে বললেনঃ হে আমার পিতা, যে শোনে না, দেখে না এবং আপনার কোন উপকারে আসে না, তার ইবাদত কেন করেন?” (সূরা মারইয়াম 19:৪২)

এখন আমরা কি কতিপয় মুশরিক ও প্রবৃত্তিপূজারীদের দাবির প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কর্তৃক নাযিলকৃত কুরআনের এসকল আয়াত বাদ দিয়ে দিব? অথচ এই আয়াতগুলোতে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ঘটনা সবিস্তারে বিবৃত হয়েছে।

তারা আপনাকে বলবে- ‘হে ভাই, আমরা এমন কিছুর ইবাদত করি না; যা শুনতে পায় না। যদিও আমাদের বিশ্বাস এগুলো দেখতে পায় না, শুনতে পায় না, তবুও আমরা এসবের ইবাদত করে যাচ্ছি’। এরপর আপনি যখন তাদের বলবেন, ‘হে ভাই! যে জিনিস শুনতে পায় না, দেখতে পায় না, সেসবের ইবাদত  কেন কর?’ তখন তারা প্রত্যুত্তরে আপনাকে বলবে- আমরা এই বিষয়টির স্বপক্ষে “আরবী ভাষা থেকে” প্রমাণ পেয়েছি। অথবা তারা বলবে “আমাদের প্রবাদ-প্রবচন এমনটা বলেছে”। অথবা বলবে “তাদের শোনার একটা সম্ভাবনা রয়েছে”। অথবা বলবে “অমুকে বলেছে”। অথবা বলবে “এটি একটি প্রচলিত বিষয়” আর তাই আমরা সেগুলোর অনুসরণ করে যাচ্ছি।

এই ভাবে তারা দ্বীনের সকল মৌলিক বিষয় পরিবর্তন করে, শরীয়তের মাসআলার মাঝে বিভিন্ন মতানৈক্য সৃষ্টি করেছিল। এক সময় পুরো দ্বীনকেই বিতর্কের বস্তু বানিয়ে ফেলেছে। কারণ, দ্বীনের ক্ষেত্রে তাদের নিকট কোন সুদৃঢ় নীতিমালা ছিল না। এমনকি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার একত্ববাদের ক্ষেত্রেও তাদের কাছে কোন সুদৃঢ় মূলনীতি ছিল না।

ফলশ্রুতিতে বর্তমানে তারা কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করার মাধ্যমে এবং তাদেরকে সাহায্য করার মাধ্যমে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তারা বলে- “এটির নাম হচ্ছে সাহায্য-সহায়তা”। আমরা একে অপরকে সাহায্য করছি মাত্র। কারণ “এটি আমাদের মৈত্রীচুক্তির একটি অন্যতম শর্ত” এবং “সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এটি তাদের প্রাপ্য অধিকার”।

এখন আমরা আলোচনা করবো – কেন তাদের মাঝে শরীয়তের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাসগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এর উত্তর এতটাই স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, যার মাঝে আর কোন মুজতাহিদের জন্য ইজতেহাদ করার কোন সুযোগ রাখেননি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেন-

وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَٰذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الْأَصْنَامَ

অর্থঃ “যখন ইবরাহীম বললেনঃ হে পালনকর্তা, এ শহরকে শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তান সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন”। (সূরা ইবরাহীম ১৪:৩৫)

আপনি নীচের আয়াতটি মনোযোগ দিয়ে শুনুন। নিজস্ব কোন যুক্তি পেশ করবেন না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেন-

وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ

অর্থঃ “যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের”। (সূরা মায়েদা ৫:৪৪)

আপনি কীভাবে যুক্তি দিয়ে বলেন যে, ‘না, না, আয়াতের উদ্দেশ্য এখানে এটা না। বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে- “আমাদেরকে এটা বিশ্বাস করতে হবে” আর “ওটা বিশ্বাস করা যাবে না” অথবা “আমাদেরকে এটাই বিশ্বাস করতে হবে” …। অথচ আপনার এই বক্তব্যের ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কোন দলীল নাযিল করেন নি।

বিশেষ করে আকিদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আপনার কোন যুক্তি চলবে না। কেননা, আকিদা-বিশ্বাসকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বান্দাদের জন্য এমনভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যেখানে কারো পক্ষ থেকে অনুমান করে কিছু বলার সুযোগ নেই। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এই আকিদা-বিশ্বাসকে সকলের বোধগম্য করেছেন, যা সহজেই সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে। যদি যুক্তি পেশ করে আকিদাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হতো, তবে আমাদের সবাইকে জাহান্নামে যেতে হতো।

আকিদার মৌলিক নীতিমালা প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর একত্ববাদ প্রমাণিত। আর তাই কুরআনে বর্ণিত শরীয়তের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাসগুলো সকল মানুষ সহজেই বুঝতে পারে। একটি উদাহরণ দেখুন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেন –

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

অর্থঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথপ্রদর্শন করেন না”। (সূরা মায়েদা ৫:৫১)

সাধারণ মানুষও সহজে এই আয়াতের বিষয়বস্তু বুঝতে পারে। কারো পক্ষে এই সুযোগ নেই যে, সে এই আয়াতের ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে বলবে- এই আয়াতের উদ্দেশ্য এটি নয়, যেমনটি বলা হয়ে থাকে। বরং এই আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাদের প্রতি অবশ্যই ভালোবাসা থাকতে হবে!! শুধু তাই নয় বরং ভালবাসার সাথে সাথে তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতাও করতে হবে! আর সাহায্য-সহযোগিতার পাশাপাশি আরও অনেক কিছু করতে হবে…!!!

এটি একটি কঠিন বিষয়ই বটে! এর কারণে মানুষ সমস্যায় পড়ছে। কি ধরণের সমস্যায় পড়ছে?

তাদের এসকল ভ্রান্ত ব্যাখ্যা মোতাবেক দখলদার শত্রুকে আমাদের ভূমিতে অধিকার দিতে হবে! এমনিভাবে তাদেরকে আমাদের সাথে বসবাস করার অধিকার দিতে হবে! আর এসবগুলোই আমাদের জন্য বিরাট সমস্যার কারণ বলে বিবেচিত।

এখন আমরা এসব মৌলিক বিষয় অর্থাৎ মিল্লাতে ইবরাহীম নিয়ে শরয়ী পর্যালোচনা পেশ করবো। ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উক্তি সবেমাত্রই বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি বলেছেন-‘হে ইবরাহীমের অনুসারীরা! এই সময়ে তোমরা যেই ধর্ম অনুসরণ করছো, তাতে শিরক রয়েছে। তাই তোমরা শিরক ছেড়ে দিয়ে এক আল্লাহর ইবাদাত করো’।

মুহাম্মাদ ﷺ এর যুগে এই জটিলতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তারা নতুন করে বিতর্ক শুরু করে বলে, ‘হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আমরা কি মিল্লাতে  ইবরাহীমের উপরে নেই? আমরা কি মিল্লাতে ইবরাহীমের অনুসারী নই? অথচ আমরা ইবরাহীমের এই মক্কাকে এখন পর্যন্ত সযত্নে আগলে রেখেছি। আমরা হজ্জের বন্দোবস্ত করি। আর আমরাই তো বর্তমানে বিজয়ী’।

তখন পুরো জাযিরাতুল আরবে ধর্মীয় রাজনীতির নেতৃত্ব দিত কুরাইশ বংশ। তাই তারা নিজেদের খেয়াল-খুশী মতো দ্বীনের মাঝে এমন কিছু বিষয়ের প্রবর্তন করে, যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা নাযিল করেননি। কুরাইশরা তাদের অর্থনৈতিক ও উপজাতিবাদ চিন্তাধারা থেকে দ্বীনের মাঝে তথা মিল্লাতে ইবরাহীমের মাঝে বিকৃতি সাধন শুরু করে। একটি উদাহরণ দেখুন –

তখনকার মক্কা পুরো জাযিরাতুল আরব শাসন করতো ও নিয়ন্ত্রণ করতো। সে সময়ে পুরো জাযিরাতুল আরব মক্কার অধীন ছিল। প্রতি বছর হাজীরা হজ্জ আদায়ের লক্ষ্যে দূর-দূরান্ত থেকে মক্কায় আসতো। এই হজ্জের সাথে কুরাইশীদের অর্থনৈতিক স্বার্থ পরিপূর্ণরূপে বিদ্যমান ছিলো। মানুষ যখন মক্কায় আসতো তখন কুরাইশীরা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতো। কুরাইশীরা হাজীদের থেকে অর্থ নিতো, আর বনু হাশেম অর্থগুলো নিজেদের মাঝে বণ্টন করতো; বনু আবদে মানাফ ও অন্যান্য গোত্রের মাঝে।

তারা মক্কার নেতৃত্ব নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নেয়। তাদের কারো ভাগে ছিলো হাজীদের বাহনের লাগাম ধরার দায়িত্ব। কারো ভাগে ছিলো তাদের পানাহারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব। এর বিনিময়ে তারা নির্দিষ্ট অংকের অর্থ নিতো। এতে তাদের অর্থনীতি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়।

তখনকার মক্কায় না ছিল কোন কারখানা, আর না ছিলো কোন চাষের ভূমি। অর্থাৎ হজ্জ ছাড়া তাদের আয়ের অন্য কোন উৎস ছিলনা। তাই হজ্জকে তারা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে। সে জন্য তারা হজ্জের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিত।

এই ব্যবসায়িক লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা সর্বপ্রথম যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা হলো- ‘কোন মানুষ বাহির থেকে মক্কায় আসলে, তাদের জন্য বাহির থেকে এহরামের কাপড় কিনে নিয়ে আসা নিষেধ। বরং এহরামের কাপড় মক্কা থেকেই কিনতে হবে’।

আর আমরা বাহির থেকে কাপড় কিনে এনে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করবো। এভাবে তাদের ধর্মীয় কাজগুলো ব্যবসায়ে রূপ নেয় এবং তারা হজ্জকে কেন্দ্র করে নতুন করে ব্যবসা শুরু করে।

তাদের ব্যবসায়িক মুনাফা প্রতি বছর বাড়তে থাকে। তাদের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি হতে থাকে। ঠিক আছে, তবে কিছু মানুষ এমন ছিলো, যাদের কাছে কোন কাপড় ছিলো না। ফলে তারা উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করতো।

অন্যদিকে তারা স্থির করে যে, আমরা যদি বাহির থেকে কাপড় কিনে আনতে না পারি, তাহলে আমরা কাবার দরজা খুলব না। কারণ এতে আমাদের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ার আশংকা রয়েছে।

এই জটিলতা এখন পর্যন্ত রয়ে গেছে। একারণে বর্তমানেও বাইতুল্লাহতে হজ্জ করতে হলে অবশ্যই সৌদি সরকার কর্তৃক অনুমোদনকৃত কোন না কোন হজ্জ কাফেলার সাথে যুক্ত হতে হয়। অমুক কাফেলা, তমুক কাফেলা…। এ লক্ষ্যে সর্বনিম্ন প্রয়োজন পূরণ করতে প্রতিটি রাষ্ট্রকে তিনশ থেকে দুই হাজার পাঁচশত ডলার পর্যন্ত দিতে হয়। তাছাড়া এর সাথে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের প্রচারাভিযানও থাকতে হবে। এমনটা কেন?

কারণ রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে বাহির রাষ্ট্র থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ আমদানি করতে হবে, যাতে রাষ্ট্রের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ মজুদ থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, প্রতি বছর মক্কায় তিন থেকে পাঁচ মিলিয়ন তথা ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ হাজী হজ্জ করতে আসে। প্রত্যেককে গড়ে সর্বনিম্ন দুই হাজার ডলার থেকে শুরু করে উপড়ের দিকে নয় হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়। মোটকথা, প্রতি বছর এই ধরনের একটি বিশাল বাজেট বাইরের রাষ্ট্র থেকে আসে। আর এটি সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য এক বিরাট মুসিবত। তো এই মুসিবত কোথা আসলো? কীভাবে আসলো?

এই মুসিবত এসেছে, সেই আইনের কারণে, যা তারা দারুন নাদওয়াতে তৈরি করেছিল। বনু হাশেম, বনু আব্দুদদার এর সাথে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ফলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং বলেছে – পুরো জাযিরাতুল আরবকে সরাসরি তাদের আনুগত্য করতে হবে। এটা কেন? কারণ তারা এখন নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের অধিকারী। এই রাজনীতির নাম ছিল – ধর্মীয় রাজনীতি।

আর এই ধর্মীয় রাজনীতি কুরাইশ ছাড়া অন্য কোন গোত্রের সাথে মানায় না! কারণ তারা ‘আহলে বাইত’ তথা ‘বাইতুল্লাহর অধিবাসী’। তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

সেসময় সমগ্র আরব সমাজে তাদের বিশেষ রাজনৈতিক অবস্থান ছিলো। তাই কারো পক্ষে তাদের উপর কিংবা তাদের বিভিন্ন কাফেলার উপর সীমালঙ্ঘন করার সাহস ছিলো না।

আরবের প্রতিটি গোত্র বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে দিনকাল অতিক্রম করতো। কিন্তু কুরাইশরা কোন বিপদেরও সম্মুখীন হতো না। কেউ তাদের পিছু নিতো না। এটা কি কারণে?

এর একমাত্র কারণ ছিল ‘মক্কা’। কুরাইশদের কাফেলা ব্যতীত অন্য কোন কাফেলা নিরাপদে তাদের মালামাল নিয়ে ফিরে আসতে পারত না। কারণ ছিল – কুরাইশরা ধর্মীয় রাজনীতি করতো। আর ধর্মীয় রাজনীতি তাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। আর এভাবেই এই অঞ্চলে তাদের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

*****

 

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الحكمة للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায়
আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
Al Hikmah Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + twelve =

Back to top button