অডিও ও ভিডিওউম্মাহ নিউজনির্বাচিত

Ummah News পরিবেশিত Exclusive উদয়ের পথে খিলাফাহর রক্তিম সূর্য

Ummah News পরিবেশিত
Exclusive
উদয়ের পথে
খিলাফাহর রক্তিম সূর্য
ডাউনলোড করুন।
ডাউনলোড করুন, ১০৮০ ফরম্যাট ২৫০এমবি
ডাউনলোড করুন,৭২০ ফরম্যাট ১৪৫ এমবি
ডাউনলোড করুন, ৩৬০ ফরম্যাট ৫১.৮ এমবি
ডাউনলোড করুন, অডিও ফরম্যাট ১৬.৮ এমবি

Related Articles

২ Comments

  1. উদয়ের পথে খিলাফাহর রক্তিম সূর্য
    গণতন্ত্রের পতন উদয়ের পথে খিলাফাহর রক্তিম সূর্য

    বিশ্ব জুড়ে আজ ঝড়ের বেগে বয়ে যাচ্ছে পরিবর্তনের এক উত্তাল জোয়ার, মুসলিম উম্মাহর মনোজগতে ক্রমশ দানা বেধে উঠছে দুনিয়া কাঁপানো এক প্রবল বিস্ফোরণ। সম্ভাবিত হয়ে উঠছে এক প্রলয়ংকারী বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ। এই উত্থান উম্মাহ বিজয়ের এক আগাম পয়গাম, জাগরণ ইসলামী খিলাফাহর পূর্বাভাস। সময়ের পথ পরিক্রমায় আমরা দেখতে পাচ্ছি কোরআনুল কারিমের সেই দীপ্ত ঘোষণার নিখুঁত বাস্তবায়ন;
    یُرِیْدُوْنَ لِیُطْفِـُٔوْا نُوْرَ اللّٰهِ بِاَفْوَاهِهِمْ وَ اللّٰهُ مُتِمُّ نُوْرِهٖ وَ لَوْ كَرِهَ الْكٰفِرُوْنَ۝۸
    তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলোকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাঁর আলো পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেন, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।
    هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰی وَ دِیْنِ الْحَقِّ لِیُظْهِرَهٗ عَلَی الدِّیْنِ كُلِّهٖ وَ لَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ۠۝۹
    তিনিই তার রাসূলকে প্রেরণ করেছেন হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ সকল দ্বীনের ওপর তাকে বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। “

    প্রিয় ভাই ও বোনেরা! আজ আমরা আলোচনা করব ইসলামী খেলাফত পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং একবিংশ শতাব্দীতে ইসলামী খেলাফাহর উত্থান নিয়ে।

    ইসলামী খেলাফত পরিচয়
    খেলাফাহ হল, এমন একটি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা, যেখানে একজন মুসলিম শাসক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিনিধি হিসেবে ইসলামী শরীয়াহ্ বাস্তবায়ন করেন এবং দ্বীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রেই মুসলিম উম্মাহর অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। খিলাফাহ ব্যতিত দ্বীনে ইসলাম তার স্বকীয়তা ও পূর্ণাঙ্গ ধরে রাখতে পারে না। কেননা খিলাফাহর অনুপস্থিতিতেই শরিয়া শাসন না থাকার কারণে ইসলামের এক বিরাট অংশের উপর আমল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুফাক্কিরে ইসলাম, সায়্যিদ আবুল হাসান আলী নদভী রহিমাহুল্লাহ বেশ স্পষ্ট ভাষায় বিষয়টি বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো, শরয়ী শাসন ছাড়া পূর্ণ শরীয়াহর উপর আমল করা সম্ভব নয়। ইসলামী জীবন ব্যবস্থার একটি স্বতন্ত্র এমন রয়েছে যার উপর আমল করতে হলে, ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিকল্প নেই। ইসলামী শাসন ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে কোরআনের একটি বড় অংশ আমলের উপযুক্ততা হারায়। খোদ ইসলামের সুরক্ষাও শক্তি ছাড়া অসম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ ইসলামের অর্থব্যবস্থা, ইসলামী আইন ও বিচার ব্যবস্থা এর কোনটাই ইসলামী শাসন ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই কোরআন শক্তি সঞ্চয় ও বিজয় অর্জনের খুব ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। এজন্য ইসলামী খেলাফাহ অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাহাবারা খিলাফাহকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম এর দাফন-কাফনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন। অনেক স্বল্পবুদ্ধির লোক এ বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে না। এই খিলাফাহর হিফাজতের জন্য ইমাম হুসাইন র. কুরবানী পেশ করেছেন, যাতে খেলাফাহর উদ্দেশ্য ব্যর্থ না হয়ে যায়, অযোগ্য লোকের হাতে খিলাফাহ চলে না যায়। ইসলামী খিলাফাহ ছাড়া একটি সুখী ও সমৃদ্ধ উম্মাহর অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না। কারণ খিলাফাহই মুসলিম উম্মাহর অভিভাবক, খিলাফাহই মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জামিন। আজ গোটা পৃথিবীতে মুসলিম উম্মাহর পরাজয় ও লাঞ্চনার কারণ খিলাফাহর অনুপস্থিতি। খিলাফাহ উম্মাহর প্রতিটি মুসলিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে কোন মুসলিম আক্রান্ত হলে খিলাফাহ সঙ্গে সঙ্গে গর্জে ওঠে। কেবল মুসলিম উম্মাহর জন্য নয় গোটা পৃথিবীর শান্তি-শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধির জন্য ইসলামী খেলাফত কোন বিকল্প নেই যখন থেকে আল্লাহর জামিন আল্লাহর আইন থেকে বঞ্চিত হয়েছে, ইসলামী খেলাফাহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে তখন থেকেই এই জমিন, এই মানবজাতি ধ্বংস ও বরবাদীর দিকে যাত্রা করেছে। আজ পুঁজিবাদী অর্থনীতির খপ্পরে পড়ে গুটিকয়েক মানুষের হাতে পুঞ্জিভূত হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্বের এই সম্পদ। দিন দিন সম্পদের এই বৈষম্য বেড়েই চলছে, এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে একসময় গোটা পৃথিবীর সব মানুষ মুষ্টিমেয় কয়েকজন পুঁজিপতির গোলামে পরিণত হবে। জেনা-ব্যবিচার ও বেহায়াপনা আর অশ্লীলতার সয়লাবে ভেসে গেছে গোটা পৃথিবী। অবস্থায় চলতে থাকলে একসময় মানুষ আর পশুতে পার্থক্য করা মুশকিল হয়ে যাবে, পরিণামে মানুষের বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠবে এই পৃথিবী
    । তাই পৃথিবীতে মানব জাতির অস্তিত্ব রক্ষা ও সুষ্ঠু বিকাশের জন্য প্রয়োজন ইসলামী খিলাফাহ, প্রয়োজন আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন। ইসলামী খিলাফাহ গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আমরা অন্যকোন ডকুমেন্টারীতে আলোচনা করব। ইনশাল্লাহ!

    ইসলামী খিলাফাহর ইতিহাস
    ইসলামী খিলাফাহর ইতিহাস ৬২২ সাল থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ১৩০০ বছর পর্যন্ত বিস্তৃত। সংক্ষিপ্ত পরিসরে এত দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরা সম্ভব নয়, আমরা কেবল সংক্ষেপে একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব মাত্র। ৬২২ সালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের হিজরতের মাধ্যমে মদিনাতুল মুনাওয়ারায় গোড়াপত্তন ঘটে ইসলামী রাষ্ট্রের, এরপর ১০ বছর রিসালাতের স্বর্ণযুগ। এই দশ বছরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের মোবারক তত্ত্বাবধানেই জাজিরাতুল আরবে রচিত হয় ইসলামী খেলাফাহর মজবুত ভীত। ৬৩২ সালে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের মধ্য দিয়েই অবসান ঘটে সর্বশ্রেষ্ঠ এই যুগের। তারপর থেকে শুরু হয় খিলাফাহর যুগ। ৬৩২-৬৬১ সাল পর্যন্ত খেলাফতে রাশেদার সোনালী যুগ। এই ৩০ বছরে (ভিডিও ৫:৪২ মিনিট) খলিফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসলামের মহান চারজন খলিফা সাইয়িদুনা আবু বকর সিদ্দিক, ওমর বিন খাত্তাব, ওসমান বিন আফ্ফান ও আলী বিন আবু তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহুম। তাদরে খিলাফত কাল মানবজাতির ইতিহাসে এক বিস্ময়কর অধ্যায়। ইনসাফ, সুশাসন, সম্পদের সুষম বন্টন ইসলামী শরীয়ার নিখুঁত বাস্তবায়ন ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল ছিল তাদের 30 বছরের এই অভূতপূর্ব শাসন। তারপর 661 সাল থেকে 750 সাল পর্যন্ত প্রায় এক শতাব্দী ধরে চলে উমাইয়া খিলাফাহ। উমাইয়া খিলাফাহ খেলাফতে রাশেদার মত শতভাগ ইসলামী শরীয়ার মানদণ্ড অনুসরণ করতে ব্যর্থ হলেও এটি ইসলামী সাম্রাজ্যের সীমানাকে বিস্তৃত করেছে এবং মুসলিম উম্মাহর অভিভাবকের দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছে।

    তারপর ৭৫০ থেকে ১২৫৮ (ভিডিও ৬:৩০ মিনিট) সাল পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ শতাব্দী ধরে চলে আব্বাসী খিলাফাহ। এই সময় ইসলামী সভ্যতা সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটে মুসলিম বিশ্বে। ১২৫৮ সালে মঙ্গলদের হাতে পতন ঘটে আব্বাসি খিলাফাহর। তারপর মিশরের মামলুক শাসকদের দ্বারা পূনরায় স্বল্প পরিসরে আব্বাসি খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৫১৭সালে মিশরের আব্বাসী খলিফা আহমাদ মুতাওয়াক্কিলের হাত থেকে উসমানিয়া সাম্রাজ্যের সুলতান প্রথম সালিমের হাতে (ভিডিও ৭:০০ মিনিট) খিলাফাহ স্থানান্তরিত হয় মুসলিম উম্মাহর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের এক বড় অংশ জুড়ে আছে উসমানী খেলাফাহ। একাধারে ৬৩৬ বছর ধরে এই খিলাফাহ এশিয়া ইউরোপ ও আফ্রিকার বিস্তৃত অঞ্চলের মানুষের কল্যাণের উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। ১৯২৪ সালে সম্রাজ্যবাদী শক্তি ও ইহুদিদের যৌথ চক্রান্তে খেলাফতের সমাপ্তি ঘটে।(ভিডিও ৭:২৮ মিনিট)

    খিলাফতের পতন পরবর্তী বিশ্ব পরিস্থিতি
    যতদিন খিলাফাহ ছিল মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর নিরাপত্তা ছিল, যতদিন খিলাফাহ ছিল, মুসলিম উম্মাহর ইজ্জত-সম্মান ও জানমালের নিরাপত্তা ছিল, যতদিন খিলাফাহ ছিল নারীদের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহসও কেউ করেনি। কিন্তু খিলাফাহর পতনের পর উম্মাহর জীবনে নেমে আসে এক ঘোর কালোরাত। কুফ্ফারগোষ্ঠী মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর এক বড় অংশ নিজেদের মধ্যে ভাগ-বটোয়ারা করে নেই। তারপর জাতীয়তাবাদের ধোঁয়া তুলে বাকি ভূখণ্ডগুলোও অসংখ্য ছোট ছোট রাষ্ট্রে বিভক্ত করে। (ভিডিও ৮:০৫ মিনিট)
    আর সবার হাতে ধরিয়ে দেয় একটা একটি রঙ-বেরঙের পতাকা। সেইসঙ্গে নতুন রাষ্ট্রগুলোর উপর চাপিয়ে দেয় তাদের পোশা মুরতাদ শাসকগোষ্ঠী, এভাবে তারা শতধাবিভক্ত মুসলিম উম্মাহর পরিয়ে দেয় গোলামীর শিকল। ৯৪৫ সালে সম্মিলিত কুফ্ফারজোট জাতিসংঘ নামের এক শয়তানি সংঘ প্রতিষ্ঠা করে। এই শয়তানি সংঘকে কেন্দ্র করে তার একটি একটি দাজ্জালী বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তুলে। (ভিডিও ৮:৩০)
    এরপর থেকে মুসলিম উম্মাহর জীবনের শুরু হয় এক কঠিন দুর্দিন। জাতিসংঘের প্রত্যক্ষ মদদেই মুসলিমদের প্রথম কেবলা বাইতুল মাকদিস দখল করে নেয় অভিশপ্ত ইহুদিরা। কুফ্ফারগোষ্ঠীর সামরিক আগ্রাসনে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে একের পর এক মুসলিম ভূখণ্ড। আরাকান, কাশ্মীর, ফিলিস্থিন, আফগান, ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়া, পূর্ব তুর্কিস্থানসহ পৃথিবীর প্রায় সব মুসলিম জনপদেই বয়ে হয়ে যায় রক্তের বন্যা, সামরিক আগ্রাসনের পাশাপাশি চলে ইহুদি নিয়ন্ত্রিত দাজ্জালী মিডিয়ার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।( ভিডিও ৯:০৪)

    ফলে মুসলিম উম্মাহর ঈমান-আকিদা ও আমলের ভীত নড়বড়ে হয়ে ওঠে, তাদের মন-মগজে বাসা বাঁধে পরাজিত মানসিকতা। এভাবে আশা-নিরাশার দোলাচলে দোল খেতে থাকে মুসলিম উম্মাহর ভাগ্য। ( ভিডিও ৯:১৫)

    ইসলামি খিলাফাহর পুনরুত্থান
    কুফ্ফারগোষ্ঠি মুসলিমদের উপর সাময়িকভাবে বিজয়ী হলেও ইসলামের কাছে তারা চরমভাবে পরাজিত হয়েছে। ইসলাম আজও তার আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল, আজও পৃথিবীর বুকে আলো ছড়াচ্ছে কুরআন-সুন্নাহর বিশুদ্ধ বাণী। আজও ইসলাম টিকে আছে তার সামগ্রিক বিশুদ্ধতা নিয়ে।( ভিডিও ৯:৩৭)
    সহীহ বুখারীতে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
    اَلْاِسْلَامُ يَعْلُ وَ لَا يُعْلٰى
    ইসলাম সবকিছুর উপর বিজয়ী থাকে ইসলামের ওপর কোনকিছুই বিজয়ী হতে পারে না।

    আর মুসলিমদের এই সাময়িক পরাজয়ও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। খেলাফাহর পতনের শতবর্ষও পার হয়নি উম্মাহর জিন্দাদের সিংহরা গর্জে উঠেছে তাগুতি বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মানব রচিত সকল বাতিল মতবাদের বিরুদ্ধে। ( ভিডিও ১০:০৪)
    ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রবল শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল সমাজতন্ত্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুজিঁবাদের সঙ্গে রীতিমতো রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে সমাজতন্ত্র। ১৯৭৯ সালে আফগান আক্রমণ করে তৎকালীন সুপারপাওয়ার সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন, উদ্দেশ্য আফগনে কমিউনিষ্ট শাসন প্রতিষ্ঠা করা।কিন্তু আফগানের মত একটি মুসলিম ভুখণ্ডে রাশিয়ার এই বরবর আগ্রাসনকে কেন্দ্র করেই ফুঁসে ওঠে গোটা মুসলিম উম্মাহ। বিশেষ করে আরব তরুণরা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ পতাকা হাতে দলে দলে পাড়ি জমায় আফগানের পাহাড়গুলোতে।( ভিডিও ১০:৪৫)
    আরব ও আফগান মুজাহিদদের প্রবল গর্জনে সুপারপাওয়ার রাশিয়ার কলিজা পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। “নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব” স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর আকাশ বাতাস। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ আসমানী ঝড়ে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় সমাজতন্ত্রের ধ্বজাধারী কথিত সুপারপাওয়ার। প্রায় এক যুগের কিতাল ফি সাবিলিল্লাহর বরকতেই ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘটে, সেইসঙ্গে কবর রচিত হয় জাহিলি মতবাদ সমাজতন্ত্রেরও। (ভিডিও ১১:১৫)
    খেলাফার পতনের মাত্র ৫০ বছরের মাথায় আরব আফগান মুজাহিদদের এমন প্রবল উত্থানে গোটা মুসলিম উম্মাহ যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। ১৯২৪ সালে খেলাফত পতনের মাত্র ৫৫ বছর পর এটি ছিল তাগুতি বিশ্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহর প্রথম বিজয়। এই খোরাসান বিপ্লবকে বলা যায় খিলাফাহর পুনরুত্থানের সূচনা বিন্দু। এ বিপ্লবের মাধ্যমে উম্মাহ বুঝতে পারে কোন মানব রচিত তন্ত্র মন্ত্র নয় খিলাফাহ পুনরুদ্ধার করার একমাত্র পথ ইদাদ ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। উম্মাহর সুখ-সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ, উম্মাহর হারানো গৌরব ও সম্মান ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ।(ভিডিও ১১:৫৬)

    কথিত সুপারপাওয়ার রাশিয়ার পতনের পর নব্বইয়ের দশকে ইসলামী খিলাফাহর স্বপ্নদ্রষ্টা মুজাহিদ নেতৃবৃন্দ নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইদাদ ও জিহাদের এক নতুন ময়দানে। খিলাফাহ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তারা এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে কিভাবে জাতিসংঘ কেন্দ্রিক তাগুতি বিশ্ব ব্যবস্থাকে গুড়িয়ে চুরমার করে তার ধ্বংসাবশেষের উপর ইসলামী খেলাফত নিশান উড়ানো যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পর নতুন সুপার পাওয়ার’ হিসেবে আবির্ভূত হয় কুফুরী গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই উম্মাহর জিন্দাদিল মুজাহিদরা সাপের মাথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই টার্গেট করে।(ভিডিও ১২:৩২)
    ৯/১১ এর মোবারক হামলার মাধ্যমে তারা জড়িয়ে পড়ে খেলাফাহ প্রতিষ্ঠার এক অসম লড়াইয়ে। আল্লাহর কতিপয় জানবাজ সৈনিকদের এই দুর্বার অভিযান তাগুতি বিশ্ব ব্যবস্থার মর্মমূল পর্যন্ত কাঁপিয়ে তোলে।(ভিডিও ১২:৪৫)
    এই হামলার মাধ্যমে সাপের মাথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিরাপদ অবস্থান থেকে বের করে টেনে আনা হয় আফগানের পাহাড়ে, আফ্রিকার মরুতে এবং মধ্যপ্রাচ্যের চোরাবালিতে, মুজাহিদদের পছন্দ অনুযায়ী ভূমিতে যুদ্ধ করতে তাকে বাধ্য করা হয়।(ভিডিও ১৩:০০)
    নাইন ইলেভেনের মোবারক হামলার জবাবে ২০০১ সালের ৭ই অক্টোবর আমেরিকা তার ন্যাটো মিত্রদের নিয়ে আফগান আক্রমণ করে। দীর্ঘ ১৮ বছরের প্রলয়ংকারী যুদ্ধে লজ্জাজনকভাবে হেরে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো জোটভুক্ত বিশ্বের শক্তিধর ৩৯ টি রাষ্ট্র। মুজাহিদদের পতাকা তলে পিষ্ট হয়ে যায় কুফ্ফারগোষ্ঠীর দম্ভ। (ভিডিও ১৩:২০)
    এদিকে মালি ও সোমালিয়ায় আশ-শাবাবের বীর মুজাহিদরা লড়ছে সম্মিলিত ক্রুসেডার জোটের বিরুদ্ধে। আফ্রিকার বিস্তৃত ভূমিতে তারা ইসলামী শরীয়াহ কায়েম করতে সক্ষম হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ!

    ইরাক ইয়েমেন ও সিরিয়ার উত্তাল ময়দানে জিহাদ, শাহাদাত ও কোরবানির এক জান্নাতী মহড়া চলছে। বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম ভূখন্ডের শুরু হয়েছে দাওয়াহ,ইদাদ ও জিহাদের এক অভূতপূর্ব জাগরণ। কুফ্ফারগোষ্ঠীর হাজারো বাধা পেরিয়ে ইসলামী খিলাফাহ পূনঃপ্রতিষ্ঠার পথে দ্রুতপদে এগিয়ে যাচ্ছে মুসলিম উম্মাহ।(ভিডিও ১৩:৫৭)

    কুফুরী গণতন্ত্রের পতন
    সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে যেমন সমাজতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর ইচ্ছায় পতন ঘটতে যাচ্ছে কুফুরী গণতন্ত্রের। আজ গোটা মার্কিন মুল্লুকে গণতন্ত্রের পতনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। (ভিডিও ১৪:১৫)
    রাশিয়া ও চীনে চলছে কর্তৃত্ববাদী শাসকদের অবাধ রাজত্ব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ খোদ ভারতেই গণতন্ত্র আজ মৃতপ্রায়। সেখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদের উগ্র অভ্যুত্থান হিন্দুত্ববাদের এই উত্থান আপাতদৃষ্টিতে উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য হুমকি মনে হলেও, ইনশাআল্লাহ এই প্রক্রিয়াতেই দানা বেধে উঠবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিশ্রুত গাজওয়াতুল হিন্দ,যেই যুদ্ধে মুসলিমরাই বিজয়ী হবে। ইনশাআল্লাহ! (ভিডিও ১৪:৪৫)

    ল্যারি ডায়মন্ড যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্টার্নফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, গণতন্ত্র নিয়ে তিনি অন্তত ডজনখানেক বই লেখা ও সম্পাদনার কাজ করেছেন, গণতন্ত্র বিষয়ে তাকে একজন অথরিটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।(ভিডিও ১৫:০০)
    গণতন্ত্র নিয়ে তার সম্প্রতি প্রকাশিত আলোচিত বইয়ের শিরোনাম “ইল উইন্ডস সেভিং ডেমোক্রেসি ফ্রম রাশিয়ান রেস চাইনিজ এ্যামবিশন এন্ড আমেরিকান কম্প্লেসেন্সি”। বইটিতে বিশ্বের মন্দ-দশায় উদ্বিগ্ন ডায়মন্ড লিখেছেন, ‘আমরা ক্রান্তিকালে রয়েছি এমন বলা খুব ক্লিশে শোনায় কিন্তু এটিই বাস্তবতা।’ তিনি মনে করেন পরিস্থিতি খুব খারাপ এর দিকে যাচ্ছে, তার আশঙ্কা আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে হারাতে পারি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন গবেষণায় উঠে আসছে গণতন্ত্রের পতনের কথা। (ভিডিও ১৫:৩৫)

    প্রিয় উম্মাহ! কুফুরী গণতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়েই বিইজনিল্লাহ্ পৃথিবীর বুকে উদিত হতে যাচ্ছে, ইসলামী খেলাফাহর রক্তিম সূর্য। তাইতো গোটা বিশ্ব জুড়ে খেলাফাহ প্রতিষ্ঠার নববী মানহাজ, দাওয়াহ, ইদাদ ও জিহাদ এর জাগরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ!

    এই মানহাজ অনুসরণ করে পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখণ্ডে কায়েম হয়েছে ইসলামী শরীয়া। খুব দ্রুত এই প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত হবে। ইনশাল্লাহ! (ভিডিও ১৬:০০)
    যে সব অবুঝ ভাইয়েরা এখনও আব্রাহাম লিংকনের কুফুরী গণতন্ত্রের ঘুনে ধরা সিঁড়ি বেয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তাদের জন্য গণতন্ত্রের পতনে রয়েছে এক বিরাট শিক্ষা। আমরা অনুরোধ করবো আল্লাহর ওয়াস্তে এই বাতিল পথে গিয়ে উম্মাহর সময়, শক্তি ও মেধার নির্মম অপচয় আর করবেন না। (ভিডিও ১৬:১৯)
    ভূল মানহাজ গ্রহণ কতটা ক্ষতিকর মিশরের ইখওয়ান আর বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর অভিজ্ঞতাই আমাদের এই শিক্ষা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। তাই কুফুরী গণতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলুন, ফিরে আসুন দাওয়াহ, ইদাদ ও জিহাদের নববী মানহাজে, ঝাপিয়ে পড়ুন খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে।
    অনেক জাহিল আলিম ও দায়ী উম্মাহকে জাতিসংঘ কেন্দ্রিক বিদ্যমান কুফুরী বিশ্বব্যবস্থা কে মেনে নেয়ার সবক দিচ্ছে। মুসলিম উম্মাহর সমস্যাগুলোর সমাধান জাতিসংঘের কাছ থেকে নেওয়ার মতো মুর্খতাপ্রসূত পরামর্শ দিচ্ছে। এই পরাজিত মানসিকতার আলেমদের অনিষ্ট থেকে আল্লাহতালা উম্মাহকে হেফাজত করুন। তাদের এই আপসকামী মনোভাব এবং ঝুঁকিমুক্ত দিন চর্চার প্রবণতা উম্মাহর উত্থানের পথে অনেক বড় একটি বাঁধা। যারা কুফুরী গণতন্ত্রকে ইসলামাইজেশন করার চেষ্টা করে, সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থনীতির ইসলামী ভার্সন বের করে বিদ্যমান সুধি অর্থব্যবস্থার সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, এরা খিলাফাহর উত্থানের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। আল্লাহর কসম! অবশ্যই ইসলাম তার পূর্ণ শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবে।
    মুসলিমরা গোটা বিশ্বে আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে, জাতিসংঘ কেন্দ্রীক এই দাজ্জালী বিশ্বব্যবস্থাকে সমূলে উপড়ে ফেলে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবে। ইনশাআল্লাহ! (ভিডিও ১৭:৩২)
    এই শতাব্দী মুসলিম উম্মাহর পুনর্জাগরণের শতাব্দী, এই শতাব্দী ইসলামের বিজয়ের শতাব্দী, এই শতাব্দী ‘জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ’র শতাব্দী, এই শতাব্দী মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হওয়ার শতাব্দী।(ভিডিও ১৭:৪৫)
    পরিশেষে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই মোবারক সুসংবাদটি আপনাদেরকে শুনিয়ে দিতে চাই, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
    اِنَّ اللّٰهَ زَوٰى لِـى الْاَرْضَ, فَرَاَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا, وَ اِنَّ اُمَّتِـيْ سَيَبْلُغُ مُلْـكَهَا مَا زُوِىَ لِـىْ مِنْهَا

    “আল্লাহ তাআলা গোটা পৃথিবীকে সংকুচিত করে আমার সামনে রেখে দিলেন। আমি এর পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখেছি। এই পুরো অংশে আমার উম্মতের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।”
    (ভিডিও ১৮:২০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × two =

Back to top button