শাইখ ইবরাহীম আর রুবাইশ রহিমাহুল্লাহ

হে সমুদ্র ইব্রাহিম আর রুবাইশ

প্রিয় মানুষগুলোর খবর জানিয়ে যেও হে সমুদ্র ,
বেঈমানের শেকলে আবদ্ধ না না থাকলে ,
আমিই ঝাঁপিয়ে পড়তাম তোমার বুকে ।
আর পৌঁছে যেতাম আমার প্রিয় মানুষগুলোর কাছে,
কিংবা ক্ষয়ে –যেতাম তোমার মাঝে।
তোমার কোল ঘেঁষে রাজত্ব করে দুঃখ, বেদনা, ব্যথা আর অবিচার।
তোমার নিষ্ঠুরতা খুবলে খায় আমায়।
তোমার নীরবতা মানে মৃত্যু, তোমার উত্তাল ঢেউ অদ্ভুত, অচেনা।
তোমার গভীর থেকে উঠে আসা নিরবতার ভাঁজে ভাঁজে আছে বিশ্বাসঘাতকতা।
তোমার স্তব্ধতা তো নাবিকের মৃত্যকুপ ,
যদি সে বাধ না মেনে এগুতে চায়।
আর নাবিক ডুবে মরবে তোমার ঢেউয়ে।
শান্ত, বধির, স্তব্ধ, তুচ্ছকারী, ক্রোধোন্মত্ত ঝঞ্ঝাবাহী,
তোমাতে ঠাঁই কত কবরের!
বাতাস রাগিয়ে তুললে তোমায়, তোমার অবিচার অবধারিত।
বাতাসেই যদি আবার শান্ত হও, তবে কেবলই জোয়ার ভাঁটা বয়।
হে মহাসমুদ্র, আমাদের শেকল কি তোমাকে পীড়া দেয়?
এ তো আমাদের বাধ্যতামূলক নিত্যদিনের বন্ধন
আমাদের অপরাধের গল্প জানো?
তুমি কি বোঝো আমাদেরকে এই তিমির রাত্রিতে এনে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে?
হে সাগর, আমাদের বন্দিত্ব দেখে তুমি হাসছ !
আমাদের শত্রুর সাথে তোমার আঁতাত আর তাদের হয়ে তুমি পাহারা দাও ।
তোমার পাড়ের পাথরেরা কি জানায় না তাদের বুকের ওপর দিয়ে কি অপরাধগুলো হচ্ছে?
পরাজিত কিউবাও কি তার গল্প পড়ে শোনায় না?
তিনটি বছর আমাদের সাথে থেকেও কিছুই তো জানলে না!
সমুদ্রে ভাসমান কবিতার নৌকো; জ্বলন্ত হৃদয়ের কবরস্থ আগুন।
কবির শব্দমালাই তো আমাদের শক্তির ভাষা;
তার পঙক্তিগুলোই যে আমাদের ব্যথাতুর হৃদয়ের দাস।
.
– শায়খ গুয়ানতানামো বে –নামক অন্ধকূপে বন্দী থাকা অবস্থায় এ কবিতাটি লিখেন। পরবর্তীতে অ্যামেরিকারন একজন কবি ইংরেজীতে অনুবাদ করে কবিতাটি প্রকাশ করেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের “সাহিত্য সমসাময়িক বিষয়” [Lietrature And Contemporary Issues] কোর্সে এ কবিতাটি যুক্ত করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =

Back to top button