আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশনইলম ও আত্মশুদ্ধিবাংলাদেশমাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

আত্মশুদ্ধি – ১৮||নিজেদের অবস্থা পরিবর্তনে আমাদের করণীয়||মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ


আত্মশুদ্ধি – ১৮

নিজেদের অবস্থা পরিবর্তনে আমাদের করণীয়

মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

অনলাইনে পড়ুন:
https://justpaste.it/obostha_poribortone_koroniyo

ডাউনলোড করুন
পিডিএফ [১.৩১ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/Fftd9skxiKrLKZK
https://ia601408.us.archive.org/5/items/18.nijederobosthaporibortonekoroniyof/18.%20NijederObosthaPoribortoneKoroniyoF.pdf
https://www.dropbox.com/s/24ahalc6ka4wnfu/18.%20NijederObosthaPoribortoneKoroniyoF.pdf?dl=0
https://www.mediafire.com/file/22v5awh8mudbo6c/18._NijederObosthaPoribortoneKoroniyoF.pdf/file
https://files.fm/u/t8byx4mx

ওয়ার্ড [৭৯০ কিলোবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/5DxwKC4kCr2RcRJ

https://archive.org/details/18.nijederobosthaporibortonekoroniyof_202003
https://www.mediafire.com/file/i0pnwhumv4upif9/18._NijederObosthaPoribortoneKoroniyoF.docx/file
https://www.dropbox.com/s/x1na6u4p2jjb1fs/18.%20NijederObosthaPoribortoneKoroniyoF.docx?dl=0
https://files.fm/u/ygj6n8v2

***********

আত্মশুদ্ধি – ১৮

 

নিজেদের অবস্থা পরিবর্তনে আমাদের করণীয়

 

মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

 

সূচিপত্র

 

মুসলমানদের তিনটি শ্রেণী.. 4

যারা পুরাপুরি দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করে.. 4

যারা নাম কা ওয়াস্তে মুসলমান. 4

যারা কিছু মানে, কিছু মানে না.. 5

দ্বীনের ব্যাপারে উম্মাহর গাফলতির ভয়ংকর পরিণতি.. 6

আল্লাহর বিশেষ রহমত থেকে মাহরুমি.. 6

পরকালীন আযাব. 7

খোদ মুসলমানরাই অমুসলিমদের জন্য দ্বীন গ্রহণের পথে বাধা হয়ে যাচ্ছে… 7

এক হিন্দু প্রফেসরের ঘটনা.. 8

নিজেদের অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের করণীয়. 9

তাওবা করার পর করণীয়. 10

 

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم

আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন, ওয়াস্-সালাতু ওয়াস্-সালামু আলা সাইয়িদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালীন, ওয়া আলা আলিহী, ওয়া আসহাবিহী, ওয়ামান তাবিয়াহুম বি ইহসানিন ইলা ইয়াওমিদ্দীন, মিনাল উলামা ওয়াল মুজাহিদীন, ওয়া আম্মাতিল মুসলিমীন, আমীন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন। আম্মা বা’দ,

মুহতারাম ভাইয়েরা! প্রথমে আমরা সকলেই একবার দুরূদ শরীফ পড়ে নিই।

اللهم صل على محمد وعلى آل محمد، كما صليت على ابراهيم وعلي آل إبراهيم، إنك حميد مجيد، اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد.

বেশ কিছুদিন পর আবারও আমরা আরেকটি তাযকিয়া মজলিসে হাজির হতে পেরেছি, এই জন্য মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ।

মুহতারাম ভাইয়েরা, আজকে যে বিষয়টি আলোচনা করার ইচ্ছা করেছি তা হচ্ছে, নিজেদের অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের করণীয়।

মুসলমানদের তিনটি শ্রেণী

মুহতারাম ভাইয়েরা! দ্বীন মানা, না মানার দিকে দিয়ে এ যুগের মুসলমানদেরকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।

এক. যারা পুরাপুরি দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করে।

দুই. যারা নাম কা ওয়াস্তে মুসলমান।

তিন. যারা কিছু মানে, কিছু মানে না।

এবার প্রতিটি প্রকার একটু খুলে বলছি।

যারা পুরাপুরি দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করে

অল্প কিছু মানুষ এমন আছেন, যাদের যিন্দেগী প্রকৃতপক্ষে মুসলমানের যিন্দেগী। তাঁদের অন্তরে বিশুদ্ধ ঈমান আছে। ঈমানের সাথে আখিরাতের ফিকির আছে। তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ নিষেধ যথাযথভাবে মেনে চলার চেষ্টা করে। কখনো কোনো নাফরমানী হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে তাওবা করে। তাঁদের জীবন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে ওফাদারির জীবন।

কিন্তু এই শ্রেণীর মানুষ বর্তমান সমাজে খুবই কম। আমার ধারণা, এক-দুই শতাংশও হবে না। তারপরও প্রতিটি দেশে প্রতিটি এলাকায় আল্লাহর এমন কিছু ওফাদার ও ফরমাঁবরদার বান্দা আলহামদুল্লিাহ এখনো আছে। এরাই আসলে খাঁটি মুসলমান।

যারা নাম কা ওয়াস্তে মুসলমান

প্রথম প্রকার তো হল খাঁটি মুসলমান। এর বিপরীতে বিপুল সংখ্যক মুসলমান এমন আছেন, যারা কেবল বংশগত ভাবে মুসলমান। ইসলামের সাথে না তাদের জ্ঞানগত সম্পর্ক আছে, না কর্মগত। বর্তমানে সংখ্যার দিক দিয়ে এরাই সবচেয়ে বেশি হবে।

যারা কিছু মানে, কিছু মানে না

তৃতীয় শ্রেণীটি হচ্ছে মাঝামাঝি। প্রথম শ্রেণীর মুসলমানদের মতো এদের মাঝে দ্বীন মোতাবেক চলার ফিকির নেই।

আবার দ্বিতীয় শ্রেণীর মতো দ্বীন সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীনও নয়। দ্বীন সম্বন্ধে তাদের কিছু জানা শোনা আছে, দ্বীনের প্রতি কিছু মহববতও আছে এবং দ্বীনের কিছু আহকামের উপর তাদের আমলও আছে। কিন্তু তারা খাঁটি মুসলমানদের মতো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সব হুকুম আহকাম মানে না। কিছু মানে, কিছু মানে না। যেমন তারা নামায পড়ে, কিন্তু পাবন্দীর সাথে পাঁচ ওয়াক্ত পড়ে না কিংবা নামায পড়ে কিন্তু যাকাত দেয় না। নামায পড়ে কিন্তু ঘুষ নেয়, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, ব্যবসা বাণিজ্যে দুর্নীতি করে ইত্যাদি। মোটকথা মুসলিম হয়েও, ইসলামের প্রতি কিঞ্চিত মহববত ও অনুরাগ থাকা সত্ত্বেও নিজেদেরকে তারা ইসলামের সকল বিধি বিধানের অনুগামী করেনি। এ কারণে তাদের কিছু কাজ যেমন ইসলাম সম্মত তেমনি কিছু কাজ ইসলাম বিরোধী। সংখ্যার দিক দিয়ে মুসলিম সমাজে এদের অবস্থান মাঝামাঝি।

তো দ্বীনদারীর বিচারে মুসলিম সমাজে বর্তমানে তিনটি শ্রেণী রয়েছে। প্রথম শ্রেণীর সংখ্যা নিতান্তই কম, কিন্তু তাঁদের দ্বীনী অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল। কুরআন-হাদীসে এ শ্রেণীর মুসলমানদের জন্য আছে আল্লাহর রহমত ও রেযামন্দি এবং জান্নাতের অসংখ্য সুসংবাদ। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন:

يُبَشِّرُهُمْ رَبُّهُم بِرَحْمَةٍ مِّنْهُ وَرِضْوَانٍ وَجَنَّاتٍ لَّهُمْ فِيهَا نَعِيمٌ مُّقِيمٌ﴿٢١

অর্থ: তাদের সুসংবাদ দিচ্ছেন তাদের পরওয়ারদেগার স্বীয় দয়া ও সন্তোষের এবং জান্নাতের, সেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী শান্তি। (সুরা তাওবা ৯:২১)

আল্লাহ তাআলা স্বীয় রহমতে আমাদেরকে এ শ্রেণীর মাঝে শামিল করুন। আমীন।

আর দ্বিতীয় শ্রেণী, যারা দ্বীন পালন করে না, আবার দ্বীনকে অস্বীকারও করে না। আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুন এবং তিনি আমাদের এই মহা অপরাধ ক্ষমা করুন যে, আমরা দুনিয়াতে চলাফেরা করছি, আমাদের সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে অথচ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের এত বিরাট সংখ্যা দ্বীন থেকে দূরে সড়ে আছে। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই জানেন, ইসলামের সাথে এদের যে নাম কা ওয়াস্তের সম্পর্ক, এটা ভবিষ্যতে কত দিন টিকবে। আমি এই শ্রেণী সম্পর্কে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাই না। কারণ এই মজলিসে এই শ্রেণীর কেউ নেই।

বাকী থাকল মুসলমানদের তৃতীয় শ্রেণীর কথা, যাদের আমি বলেছি, সংখ্যা ও দ্বীনদারী উভয় দিক থেকে মাঝারি। তারা যদিও দ্বিতীয় শ্রেণীর চেয়ে ভালো, কিন্তু কুরআন মাজীদ ও হাদীস শরীফ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, এই অবস্থা আল্লাহ তাআলার কাছে পছন্দনীয় নয়। এ অবস্থায় স্থির থাকার অবকাশ নেই। কারণ আল্লাহ চান পূর্ণরূপে ইসলামে দাখিল হওয়া। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ ادْخُلُواْ فِي السِّلْمِ كَآفَّةً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [সুরা বাকারা ২:২০৮]

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে সামগ্রিক বিচারে মুসলিমদের শতকরা এক থেকে দুই ভাগ মুসলমানের অবস্থা সন্তোষজনক, এছাড়া বাকি সবার অবস্থা খুবই নাজুক। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হেফাযত করুন।

দ্বীনের ব্যাপারে উম্মাহর গাফলতির ভয়ংকর পরিণতি

মুসলিম উম্মাহর এ করুণ হালাতের কারণে উম্মাহ যে সব ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে তার কয়েকটি হল,

এক. উম্মাহ আল্লাহর বিশেষ রহমত ও মদদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দুই. আল্লাহ হেফাজত করুন তাদের পরকালীন আযাবের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ভাবে দেখা দিচ্ছে।

তিন. খোদ মুসলমানরাই অমুসলিমদের জন্য দ্বীন গ্রহণের পথে বাধা হয়ে যাচ্ছে।

এবার এই তিনটি বিষয় নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।

আল্লাহর বিশেষ রহমত থেকে মাহরুমি

মুসলিম উম্মাহর করুণ হালাতের কারণে উম্মাহ যে সব ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন হচ্ছে তার একটি হল, উম্মাহ আল্লাহর বিশেষ রহমত ও মদদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ একটা সময় ছিল যখন মুষ্টিময় মুসলমান পুরো দুনিয়ার মোকাবেলায় যথেষ্ট ছিল। পৃথিবীর যে দিকেই তারা অগ্রসর হত আল্লাহর নুসরত তাদের সাথে থাকত এবং সকল ময়দানেই তাঁরা আল্লাহর নুসরত লাভ করত।

অথচ এখনকার অবস্থা হল, কোনো কোনো দেশে কোটি কোটি মুসলমান থাকা সত্ত্বেও পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের উপর আমল করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দুনিয়ার কোত্থাও তাদের কোনও প্রভাব নেই। সবখানেই তাঁরা কেবল মার খাচ্ছে।

বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার একটি উদাহরণ হল, ইসরায়েলের মোকাবেলায় আরব রাষ্ট্রগুলোর পরাজয়।

যেখানে পৃথিবীর এক বিঘত জমির উপরও ইহুদিদের হুকুমত ছিল না, সেখানে আমেরিকা ও বৃটেন তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে আরব রাষ্ট্রগুলোর হৃদপিন্ডে ইহুদি রাষ্ট্রটি কায়েম করেছে। অথচ আরব রাষ্ট্রগুলো সকলে মিলেও তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে পারেনি, আজ পর্যন্ত তারা নিরুপায়।

এ তো হল একটি মাত্র দৃষ্টান্ত। গোটা মুসলিম জাহানে প্রতিদিন যা কিছু ঘটছে তা পরিষ্কার প্রমাণ করে, এই যুগের মুসলমানরা জাতি হিসেবে আল্লাহর বিশেষ সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়ে গেছে। অথচ একটি সময় এমন ছিল যখন ঝড় তুফান মুসলমানদের স্বার্থের অনুকূল হলে আল্লাহর পক্ষ হতে ঝড় তুফান এসে যেত। তদ্রূপ ঝড় তুফান থেমে যাওয়া তাদের স্বার্থের অনুকূল হলে ঝড় তুফান থেমে যেত। বৃষ্টির প্রয়োজন হলে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হত। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার দরকার হলে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যেত।

মুসলমানদের যিন্দেগি যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের ইতাআত ও আনুগত্যের যিন্দেগি ছিল তখন আল্লাহ তাআলা প্রকৃতির শক্তিকে তাদের সহযোগী করে দিয়েছিলেন। এর ফলাফল কী হত তা আমরা খাইরুল কুরুনের ইতিহাস দেখলেই বুঝতে পারি। পক্ষান্তরে যখন মুসলমানদের মাঝে নানা অন্যায়, অপরাধ ও অপকর্মের বিস্তার ঘটল এবং তাদের সামগ্রিক অবস্থা আল্লাহর রহমত ও নুসরতের উপযুক্ত থাকল না তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর শ্বাশ্বত নিয়ম অনুসারে এ জাতিকে তাঁর মদদ থেকে মাহরূম করে দিলেন। ফলে বর্তমান পৃথিবীর সর্বত্র তাদের অবস্থা আমরা দেখতে পাচ্ছি।

তো মুসলমানদের এই অধঃপতনের একটি শাস্তি হচ্ছে খোদায়ী নুসরত থেকে বঞ্চিত হওয়া।

পরকালীন আযাব

উম্মাহর করুণ হালাতের কারণে উম্মাহ যে সব পরিণতির সম্মুখীন হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে তার আরেকটি হল, পরকালীন আযাব।

আমাদের বদ আমলের কারণে পরকালীন আযাবের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ভাবে দেখা দিচ্ছে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।

অবশ্য দুনিয়ার শাস্তি এবং পরকালীন শাস্তির মাঝে একটু তফাত আছে। দুনিয়ায় আযাব আসে উম্মতের সামগ্রিক অবস্থার বিচারে আর আখেরাতের বিচার হবে প্রত্যেকের নিজ নিজ আমলের হিসেবে।

দুনিয়ার শাস্তি তো আমরা স্বচক্ষে দেখছি, দুনিয়ার সব দেশেই আমরা মার খাচ্ছি। এরপরও আমাদের কয়জন নিজেদেরকে সংশোধন করছে। এখনো যদি আমরা নিজেদেরকে সংশোধন না করি, পাশাপাশি উম্মাহর সংশোধনের জন্য যথাযথ চেষ্টা অব্যাহত না রাখি তাহলে নিশ্চিত ভাবে আমাদেরকে পরকালীন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা যা বলেছেন তা সবই সত্য হয়ে আমাদের সামনে আসবে। সুতরাং  আমাদেরকে এখনই সতর্ক হতে হবে। আল্লাহ সকল মুসলমানদের হালাত সংশোধন করে দেন। আমীন

খোদ মুসলমানরাই অমুসলিমদের জন্য দ্বীন গ্রহণের পথে বাধা হয়ে যাচ্ছে

মুসলিম উম্মাহর করুণ হালাতের কারণে উম্মাহ যে সব ভয়ংকর পরিণতির সম্মুখীন হচ্ছে তার একটি হল, খোদ মুসলমানরাই অমুসলিমদের জন্য দ্বীন গ্রহণের পথে বাধা হয়ে যাচ্ছে।

মুহতারাম ভাইয়েরা, আমরা সকলেই বিশ্বাস করি, আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামত পর্যন্ত সকল জাতি ও সকল মানুষের নবী। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর দায়িত্ব পূর্ণাংগরূপে পালন করেছেন। তাঁর পর তাঁর এই মিশনকে সামনে এগিয়ে নেওয়া উম্মতের কর্তব্য।

কিন্তু আফসোস, দ্বীনের মিশন নিয়ে যারা সামনে অগ্রসর হবে তারাই এখন দ্বীনের প্রচার ও বিস্তারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানুষের স্বভাব প্রকৃতি সম্বন্ধে যাদের ধারণা আছে তারা জানেন, পৃথিবীতে খুব কম লোকই পড়াশুনা ও গবেষণার মাধ্যমে কিংবা কারো দাওয়াত বা ওয়াজ শুনে কোনো ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বরং কোনো ধর্মের অনুসারীদের বাস্তব জীবন যখন এই সাক্ষ্য দেয় যে, তাদের ধর্ম সর্বোত্তম ধর্ম এবং তারাই আল্লাহর সর্বোত্তম বান্দা তখন এক দুজন নয়, গোত্রের পর গোত্র, দেশের পর দেশ তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং তাদের দ্বীন গ্রহণ করে। সাহাবায়ে কেরামের যুগে শুধু রাজ্যজয়ের মাধ্যমে ইসলামের বিস্তার ঘটেনি; বরং সাহাবারা যখন কোনো রাজ্য জয় করেছেন, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেখানকার মানুষ তাদের সততা ও আমানতদারী দেখেছে তখন ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে।

এই ভারতবর্ষের অধিবাসীরা বড় বড় সুফী, পীর-মাশায়েখদের সাধাসিধা ও পবিত্র জিন্দেগী দেখে প্রভাবিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মুসলমানদেরকে দেখে ইসলাম গ্রহণ করার এই ধারা শত শত বছর ধরে বন্ধ। বর্তমানে সামান্য যা-ই হচ্ছে তা পূর্বের তুলনায় কিছুই না বলা যায়। দু’একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া সাধারণ ভাবে মুসলমানদের জীবন এখন আর অমুসলিমদের মনে ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জাগায় না।

অমুসলিমরা মুসলিম প্রতিবেশীদের সাথে থাকছে। একে অপরকে দেখছে, পরস্পর লেনদেন করছে, স্কুল কলেজে একসাথে পড়াশোনা করছে, অফিস আদালতে একসাথে কাজ করছে, বাসে ট্রেনে একসাথে চলাফেরা করছে, কিন্তু পবিত্রতা, ধার্মিকতা, সততা ও আমানতদারী কোনো কিছুতেই তারা মুসলমানদের আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্য দেখছে না। যে সকল দোষ সাধারণ অমুসলিমদের মাঝে আছে তা মুসলিম নামধারীদের মাঝেও আছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশিও আছে।

এ অবস্থায় কীভাবে অমুসলিমরা মুসলমানদের দেখে ইসলামের প্রতি অকৃষ্ট হবে?

বরং কখনো কখনো তো এমন হয় যে, কোনো উপায়ে আল্লাহর কোনো বান্দার মনে যদি ইসলামের প্রতি আগ্রহ জাগে তখন মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা তার সেই আগ্রহ নষ্ট করে দেয়। এ ধরনের অনেক ঘটনা প্রতিনিয়ত আমাদের সামনে ঘটছে। কথা যখন এসেই গেল তো শিক্ষা গ্রহণের জন্য একটি ঘটনা আপনাদের পেশ করছি।

এক হিন্দু প্রফেসরের ঘটনা

ঘটনাটি বলেছেন মাওলানা মানযুর নোমানী রহ.। তিনি বলেন, লক্ষ্ণৌর নামকরা এক ব্যারিস্টার চৌধুরী নাঈমুল্লাহ ছিলেন আমার বন্ধু এবং দ্বীনী কাজের সাথী। তিনি ব্যারিস্টার হয়েও শুধু নামায রোযারই পাবন্দ ছিলেন না, বরং অনেক গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। বিশেষত দাওয়াত ও তাবলীগের বড় জযবা ছিল। লক্ষ্ণৌ ইউনিভার্সিটির আইনের শিক্ষক ছিলেন। সুযোগ হলেই তিনি অমুসলিমদের সামনে ইসলামের শিক্ষা ও সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করতেন।

একবার তিনি একটি ঘটনা শুনান। তার এক হিন্দু বন্ধু ছিল। যিনি সম্ভবত লক্ষ্ণৌ ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ছিলেন। তিনি তাকে বললেন, ভাই নাঈমুল্লাহ! যখন আমি তোমার কাছে ইসলামের কথা শুনি তখন আফসোস হয়, কোনো মুসলিম পরিবারে কেন আমার জন্ম হল না। কখনো কখনো মনে হয়, যা হয় হবে আমি মুসলিম হয়ে যাব। কিন্তু এরপরও কেন আমি ইসলাম গ্রহণ করি না তা শুনবে?

প্রতিদিন আমি গোমতি নদীতে যাই। কিন্তু যখন দেখি, নদীতে স্নান করতে আসা নারীদেরকে যারা আগ্রহ নিয়ে দেখছে, তাদের অধিকাংশই হচ্ছে মুসলিম, তখন আমার ইসলামের দিকে ধাবিত হওয়ার আগ্রহ আর থাকে না।

ঘটনা এখানেই শেষ। এ জাতীয় ঘটনা বর্ণনা করাটাও আমাদের জন্য চরম লাঞ্ছনা ও অপমানের।

আমাদের একটু চিন্তা করা দরকার, আমাদের বদ আমলের কারণে ইসলাম আজ কতটা অপদস্ত হচ্ছে আর আদম সন্তানরা কীভাবে ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

তো সারকথা হল, অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহণের পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হচ্ছে, অধিকাংশ মুসলমানের ইসলাম-বিরোধী জীবন-যাপন।

ইসলামের শত্রুরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কটু কথা বলছে। নানান উপায়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। কোনো নরাধম যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বিষোদগার করে তখন আমাদের পক্ষে স্থির থাকা কঠিন হয়ে যায়, নিঃসন্দেহে এটাই ঈমানের দাবী। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো, কোন বিষয়টি মানুষকে ইসলাম সম্পর্কে বেশি বিরূপ করছে? তাদের এই সকল অপতৎপরতা, না স্বয়ং মুসলমানদের বদ আমল ও অপকর্ম? ইসলাম সম্পর্কে দুশমনদের অপপ্রচার? না মুসলমানদের অনাচার?

নিঃসন্দেহে এর উত্তর হচ্ছে, মুসলমানদের বদ আমল। কেন আমাদের নিজেদের প্রতি ক্রোধ জাগে না? কেন আমরা আমাদের ইসলাম বিরোধী জীবনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি না? ইসলামের শত্রুরা ইসলাম ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে যে অভিশপ্ত লেখালেখি করছে, তাতেও কেন আমাদের ঈমানী চেতনাবোধ ফিরে আসছে না? কেন আজ আমাদের অন্তরে দ্বীন ও দ্বীনের নবীর প্রতি ভালোবাসার আগুন প্রজ্জলিত হচ্ছে না?

সত্যিই যদি ইসলামের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি প্রকৃত মুহাব্বত থাকে,

তাহলে এই অবস্থার পরিবর্তনে আমাদেরকে প্রাণপণ চেষ্টা করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি?

এ বিষয়ে আমি একটি আরজ আপনাদের কাছে পেশ করছি। তার আগে একটি কথা বলি। আমি এখানে যা কিছু বলছি এর দ্বারা প্রথম উদ্দেশ্য হল আমার নিজের ইসলাহ। এর সাথে আপনাদেরও যদি কিছুটা ফায়দা হয় তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ।

নিজেদের অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের করণীয়

এখন কীভাবে আমরা আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারি? এ বিষয়ে ছোট্ট দু’টি কথা আপনাদের কাছে আরজ করছি।

মুহতারাম ভাইয়েরা, আমরা প্রত্যেকে মাত্র দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

এক. আমরা নিজেদের সংশোধনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।

দুই. সামর্থ্য অনুযায়ী অন্য ভাইদের সংশোধনের জন্যও চেষ্টা করব।

নিজের সংশোধন তো কঠিন বিষয় নয়। দ্বীন মানার ক্ষেত্রে এতদিন আমার থেকে যে সব অবহেলা ও ত্রুটি হয়েছে এবং নফস ও শয়তানের ধোকায় পড়ে যে সকল গুনাহ আমাদের থেকে হয়ে গেছে তা থেকে খালেছ দিলে তওবা করা এবং আন্তরিক ভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।

এরপর আবার যদি নফস ও শয়তানের ধোকায় পড়ে কোনো গুনাহ হয়ে যায় তাহলে পুনরায় তাওবার মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র করে নেয়া।

এভাবে চলতে পারলে ধীরে ধীরে আপনার হালাতের উন্নতি হতে থাকবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপিত হবে ইনশাআল্লাহ

আমাদের কোনো কোনো ভাই এক সাথে সব গুনাহ ছেড়ে দেয়ার হিম্মত করতে পারেন না। তাদের জন্য করণীয় হল, প্রথমে ওই সব গুনাহ ছেড়ে দেয়ার হিম্মত করা যেগুলো এখনই ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।

আর যে সব গুনাহের ব্যাপারে তার মনে হচ্ছে এখনই তিনি ছাড়তে পারবেন না ওগুলোর জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে থাকবেন, হে আল্লাহ! আমাকে হিম্মত দিন, আমি যেন এই গুনাহগুলোও ছেড়ে দিতে পারি। পাশাপাশি সাধ্যমত চেষ্টা করতে থাকুন। তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা এক সময় সব ধরনের গুনাহই ছেড়ে দেয়ার হিম্মত ও তাওফীক দান করবেন ইনশাআল্লাহ

তাওবা করার পর করণীয়

গুনাহ থেকে তাওবা করার পাশাপাশি আমাদেরকে এমন কিছু আমলও করতে হবে যা আমাদেরকে তাওবার উপর অবিচল থাকতে সাহায্য করবে। আমলগুলো হল,

এক. কালিমায়ে তায়্যিবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ, যা বান্দার পক্ষ থেকে তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য এবং আল্লাহর ইবাদত ও রাসূলের ইতায়াতের অঙ্গিকারনামা, এই কালিমা ধ্যান খেয়ালের সাথে এবং সাক্ষ্য ও অঙ্গিকার মনে করে বার বার পড়া এবং ঈমানকে তাজা রাখা।

দুই. নামায তো আলহামদুলিল্লাহ আমরা সবাই পড়ি। এখন সকলেই চেষ্টা করি, আমাদের নামায যেন খুশু খুযু ওয়ালা নামায হয়। যার সর্বনিম্ন স্তর হল নামায পড়ার সময় অন্তরে আল্লাহর ভয় ও বড়ত্ব থাকা এবং এই ধ্যান রাখা যে, আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়েছি, একমাত্র আল্লাহর জন্যই তাকবীর বলছি, তাসবীহ পড়ছি, রুকু সিজদা করছি, আল্লাহ আমার নামায পড়া দেখছেন।

তিন. সকাল সন্ধ্যার দোয়াগুলো খুবই গুরুত্ব সহকারে পড়া। এর বাইরেও হাদীসে বর্ণিত কিছু যিকির ও তাসবীহ নিয়মিত পড়তে থাকা।

হাদীসে বর্ণিত যিকিরগুলোর মধ্যে কালিমায়ে তামজীদ- ‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও সারগর্ভ জিকির। এতে আল্লাহ তাআলার ছানা-ছিফতের সবগুলোদিক বিদ্যমান রয়েছে। এটাও আমরা আ’মল করতে পারি।

নিজের ইসলাহ ও সংশোধনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার জিকিরের বিশেষ প্রভাব আছে। তবে শর্ত হল, যিকির হতে হবে মনযোগ সহকারে, আল্লাহ তাআলার আযমত ও বড়ত্বের কথা স্মরণ করে। যবানের সাথে দিল-দেমাগও হাজির থাকতে হবে।

চার. চতুর্থ কাজটি হল, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে দুই চার মিনিট মৃত্যুর মুরাকাবা করা। অন্তরকে সকল চিন্তা থেকে মুক্ত করে একাগ্রচিত্তে এ কথা খেয়াল করা যে, দুনিয়া থেকে আমাকে একদিন বিদায় নিতে হবে, আমার রূহ কবজ করা হবে। তারপর গোসল দেয়া হবে, কাফন পরানো হবে, জানাযা হবে, এরপর কবরে দাফন করে সবাই চলে আসবে। সেই নির্জন কবরে  আমার কী অবস্থা হবে?

এরপর যখন আল্লাহর হুকুমে কিয়ামত কায়েম হবে, আমাকে পূনরুত্থিত করা হবে, আল্লাহর আদালতে হিসাবের জন্য দাঁড় করানো হবে, আমলনামা সামনে রাখা হবে, তখন আমার কী অবস্থা হবে? সেই ভয়াবহ অবস্থাকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করা এবং এমনভাবে চিন্তা করা, যেন ঐ অবস্থা আমার সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে। এরপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখা, একমাত্র আল্লাহর রহমতেই মুক্তি পাওয়া যাবে, এরপর কাকুতি-মিনতির সাথে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া এবং রহমত প্রার্থনা করা।

এই যে চারটি আমলের কথা আপনাদের সামনে পেশ করলাম, এগুলো হচ্ছে এমন কিছু আমল, যার উপর পাবন্দির সাথে আমল করতে থাকলে আল্লাহর সাথে আমাদের তাআল্লুক ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং দ্বীনদারীর ক্ষেত্রে আমরা অগ্রসর হতে থাকবো ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন

মুহতারাম ভাইয়েরা! এতক্ষণ আমরা নিজেদের ইসলাহের জন্য একটি সাধারণ দিক নির্দেশনা পেলাম। কিন্তু উম্মাহর ইসলাহের জন্য প্রয়োজন ব্যাপক ও সম্মিলিত মেহনত। সেই মেহনতকে আমাদের জীবনের অংশ বানাতে হবে। আর এই মেহনতের কর্মপন্থাই হচ্ছে আমাদের ইমারাহ, যার অধীনে আমরা দ্বীন কায়েমের মেহনত করে আসছি।

কাজেই নিজের মাঝে ও উম্মাহর মাঝে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সকল ভাইকে ইমারার পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করতে হবে। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে ইমারার পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করে দ্বীন কায়েমের পথে এগিয়ে যাওয়ার তাওফীক দান করুক। আমীন।
মুহতারাম ভাইয়েরা, আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে নিজের এবং পুরো উম্মাহর ইসলাহের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের সবাইকে ইখলাসের সাথে জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুক।

আমরা সকলে মজলিস থেকে উঠার দোয়াটা পড়ে নিই।

سبحانك اللهم وبحمدك،أشهدأن لاإله إلا أنت،أستغفرك وأتوب إليك

وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله واصحابه اجمعين

وآخردعوانا ان الحمد لله ربالعالمين

****************

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × four =

Back to top button