অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াবাংলা প্রকাশনামিডিয়া

ধারাবাহিক দাওয়া সিরিজ পর্ব- ০৫ || বিজয়ের অনিবার্য শর্ত -শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ

ধারাবাহিক দাওয়া সিরিজ
পর্ব- ০৫
বিজয়ের অনিবার্য শর্ত
-শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ

ডাউনলোড করুন

ডাবিং ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ১০৮০, ভিডিও সাইজ- ৫৭৭.৯৮ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/4tCGAbK2KcqiDGJ
https://www.file-upload.com/dqbqcazwt8cf
http://www.mediafire.com/file/4fwai5cbnmfkawy/Bijoy_Shorto-5_Dubbin_1080.mp4/file

ডাবিং ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ৭২০, ভিডিও সাইজ- ৭১.৮২ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/bAKcnjLAdcijQ9J
https://www.file-upload.com/0xcrjzohoup2
http://www.mediafire.com/file/c9st6uglxq83y5d/Bijoy_Shorto-5_Dubbin_720-1.m4v/file

ডাবিং ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ৪৮০, ভিডিও সাইজ- ৪৯.১৮ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/M59wgcmLcAJdTGP
https://www.file-upload.com/y5ww046uqklm
http://www.mediafire.com/file/xkkqnprt21f71wf/Bijoy_Shorto-5_Dubbin_480-1.m4v/file

ডাবিং অডিও ডাউনলোড লিংক
[সাইজ- ২২.৯৬ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/GbCdKQSnY9gWRfZ
https://www.file-upload.com/3v3t9kr1trrs
http://www.mediafire.com/file/57b5hg9gf9z0bhw/Bijoy_shorto-5.mp3/file

সাবটাইটেল ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ১০৮০, ভিডিও সাইজ- ৩৩২.৪৪ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/R5wHwoNf8Lf3Et9
https://www.file-upload.com/q9ptdd754zrq
http://www.mediafire.com/file/slcfswokqi4tsix/Bijoyer__shorto-5_Sub_1080.mp4/file

সাবটাইটেল ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ৭২০, ভিডিও সাইজ- ৩৯.৩৫ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/8SKSJaTKFmNCWPH
https://www.file-upload.com/3y80sckw2i6p
http://www.mediafire.com/file/83z2kpxhof84u1r/Bijoy_shorto-5_Sub_720.mp4/file

সাবটাইটেল ভিডিও ডাউনলোড লিংক
[ভিডিও ফরম্যাট- ৪৮০, ভিডিও সাইজ- ২৭.১৪ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/QciXMqj2rrbxMTn
https://www.file-upload.com/mag74ekhubsl
http://www.mediafire.com/file/lk1foo3nk6svafa/Bijoy_shorto-5_Sub_480.mp4/file

ওয়ার্ড ফরম্যাট ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/QpNZttgo8rrxWZB
https://www.file-upload.com/8i899t8ggkxk
https://www.mediafire.com/file/9t7t0utyzpuh747/bijoyer_onibarjo_shorto.docx/file

পিডিএফ ফরম্যাট ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/KMnT6y5e7EWSeQD
https://www.file-upload.com/ayb3sldfaex0
https://www.mediafire.com/file/80g4p8jmu6fqnoo/bijoyer_onibarjo_shorto.pdf/file

প্রচ্ছদ
https://banglafiles.net/index.php/s/JgBacLDPHL4Bn5F
https://www.file-upload.com/10midij627lg
https://www.mediafire.com/view/dlw88flp7jvaanz/Jihad.jpg/file

ব্যানার
https://banglafiles.net/index.php/s/TPyNM8w5NxpZd5B
https://www.file-upload.com/0uaz0f7s75fy

————-

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]

=====================

শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ) এর

ধারাবাহিক দাওয়াহ সিরিজ

[৫ম পর্ব]

বিজয়ের অনিবার্য শর্ত”

 

بسمِ اللهِ والحمدُ للهِ والصلاةُ والسلامُ على رسولِ اللهِ وآلِه وصحبِه ومن والاه.

সর্বত্র অবস্থানরত মুসলিম ভাইয়েরা! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

হামদ ও সালাতের পর-

আজ ‘বিজয়ের অনিবার্য শর্ত’ এর আলোচ্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে একটি উপদেশ নিয়ে আলোচনা করতে চাই। এই আলোচনায় সর্বপ্রথম আমি নিজেকে, তারপর আমার মুসলিম ও মুজাহিদ ভাইদের সম্বোধন করবো। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা উপদেশটি যেভাবে বিবৃত করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴿الأنفال: ٤٥﴾ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ ﴿الأنفال: ٤٦﴾ وَ وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ خَرَجُوا مِن دِيَارِهِم بَطَرًا وَرِئَاءَ النَّاسِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَاللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ ﴿الأنفال: ٤٧﴾

হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও, তখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার। যাতে তোমরা সফল হও। আর আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে। আর তাদের মত হয়ে যেয়ো না, যারা বেরিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখাবার উদ্দেশে। আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্তুতঃ আল্লাহর আয়ত্বে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা করে।” (সূরা আনফাল : ৪৫৪৭)

এসব আয়াতে মু’মিনদের সর্বপ্রথম যে বিষয়টির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল: অবিচলতা।

এই অবিচলতার দু‘আ করেছিলেন হযরত তালূত (আ.)এর সাথীরা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন-

رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ﴿البقرة: ٢٥٠﴾

হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের মনে ধৈর্য্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখআর আমাদের সাহায্য কর সে কাফের জাতির বিরুদ্ধে।” (সূরা বাকারাহ : ২৫০)

عَنْ نُعَيْمِ بْنِ هَمَّارٍ: أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ النَّبِيَّ صلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّ الشُّهَدَاءِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: ” الَّذِينَ إِنْ يُلْقَوْا فِي الصَّفِّ لاَ يَلْفِتُونَ وُجُوهَهُمْ حَتَّى يُقْتَلُوا، أُولَئِكَ يَتَلَبَّطُونَ فِي الْغُرَفِ الْعُلَى مِنَ الْجَنَّةِ، وَيَضْحَكُ إِلَيْهِمْ رَبُّكَ، وَإِذَا ضَحِكَ رَبُّكَ إِلَى عَبْدٍ فِي الدُّنْيَا فَلاَ حِسَابَ عَلَيْهِ . “

নুআইম ইবনে হাম্মার রাযি. থেকে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন শহীদগণ সর্বোত্তম। তিনি বললেন, যাদেরকে যুদ্ধের কাতারে শত্রুর মুখোমুখী করা হলে নিহত হওয়া পর্যন্ত অন্য কোন দিকে দৃষ্টিপাত করে না। তারা জান্নাতের উঁচু উঁচু বালাখানাসমূহে শয়ন করে গড়াগড়ি দিবে। তোমার রব তাদেরকে দেখে হাসবেনআর দুনিয়াতেই যদি তোমার রব কারো প্রতি তাকিয়ে হাসেন, তবে তাঁর কোন হিসাব হয় না।”

সবচেয়ে বড় অবিচলতা হচ্ছে, নীতি আদর্শের উপর অবিচলতা, প্রতিশ্রুতির উপর অবিচলতা, প্রবৃত্তির সামনে আল্লাহর নির্দেশের অবিচলতা এবং সংশয়-সন্দেহের সামনে সত্যের উপর অবিচলতা।

***

এসব আয়াতে কারীমায় মু’মিনদেরকে দ্বিতীয় যে বিষয়টির উপদেশ দিয়েছেন তা হলো: যিকরুল্লাহ তথা আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

وَكَأَيِّن مِّن نَّبِيٍّ قَاتَلَ مَعَهُ رِبِّيُّونَ كَثِيرٌ فَمَا وَهَنُوا لِمَا أَصَابَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَا ضَعُفُوا وَمَا اسْتَكَانُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٦﴾ وَمَا كَانَ قَوْلَهُمْ إِلَّا أَن قَالُوا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٧﴾

আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গীসাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথেতাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। তারা আর কিছুই বলেনিশুধু বলেছে, হে আমাদের পালনকর্তা! মোচন করে দাও আমাদের পাপ এবং যা কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের কাজে। আর আমাদিগকে দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের উপর আমাদিগকে সাহায্য কর।”(সূরা আলেইমরান : ১৪৬১৪৭)

মহান আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ ﴿آل‌عمران: ١٧٣﴾

যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজসরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী।”(সূরা আলেইমরান : ১৮৩)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আহযাব যুদ্ধের দিন মুশরিকদের বিরুদ্ধে বদ-দোয়া করেছিলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন-

اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيعَ الْحِسَابِ اللَّهُمَّ اهْزِمِ الأَحْزَابَ اللَّهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ“.

হে আল্লাহ! কিতাব অবতীর্ণকারী, দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী! হে আল্লাহ! এ সম্মিলিত বাহিনীকে পরাস্ত করুন। তাদেরকে পরাস্ত করুন। তাদেরকে প্রকম্পিত করুন।”(সহীহ বুখারী)

আল্লাহর যিকির মুজাহিদের মাঝে অপরাজেয় শক্তি এনে দেয়। অনুরূপভাবে তাঁকে যুদ্ধের বাস্তবতাও স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি তো সেই যুদ্ধ, যার দ্বারা আল্লাহর কালিমা বিজয়ী হবে। আর তা ক্ষমতা বা গনিমত লাভের জন্য অথবা ব্যক্তিগত বা সাম্প্রদায়িক কর্তৃত্ব লাভের জন্যও হবে না।

***

মু’মিনদের তৃতীয় যে বিষয়টির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِذَا كَانُوا مَعَهُ عَلَىٰ أَمْرٍ جَامِعٍ لَّمْ يَذْهَبُوا حَتَّىٰ يَسْتَأْذِنُوهُ … ﴿النور: ٦٢﴾.

মু’মিন তো তারাই; যারা আল্লাহর ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না।”(সূরা নূর : ৬২)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللَّهُ وَعْدَهُ إِذْ تَحُسُّونَهُم بِإِذْنِهِ حَتَّىٰ إِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِي الْأَمْرِ وَعَصَيْتُم مِّن بَعْدِ مَا أَرَاكُم مَّا تُحِبُّونَ مِنكُم مَّن يُرِيدُ الدُّنْيَا وَمِنكُم مَّن يُرِيدُ الْآخِرَةَ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِيَبْتَلِيَكُمْ وَلَقَدْ عَفَا عَنكُمْ وَاللَّهُ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ ﴿آل‌عمران: ١٥٢﴾

আর আল্লাহ সে ওয়াদাকে সত্যে পরিণত করেছেন, যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশে ওদের খতম করছিলে। এমনকি যখন তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে ও কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। আর যা তোমরা চাইতে তা দেখার পর কৃতঘ্নতা প্রদর্শন করেছ, তাতে তোমাদের কারো কাম্য ছিল দুনিয়া আর কারো বা কাম্য ছিল আখেরাত। অতঃপর তোমাদিগকে সরিয়ে দিলেন ওদের উপর থেকে যাতে তোমাদিগকে পরীক্ষা করেন। বস্তুতঃ তিনি তোমাদিগকে ক্ষমা করেছেন। আর আল্লাহর মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।”(সূরা আলেইমরান : ১৫২)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

وقال النبيُ صلى اللهُ عليه وسلم:”اسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَإِنِ اسْتُعْمِلَ حَبَشِيٌّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ“.

তোমরা শোন ও আনুগত্য কর, যদিও তোমাদের উপর এমন কোন হাবশীকে আমীর নিযুক্ত করা হয়যার মাথা কিসমিসের মতো।”(সহীহ বুখারী)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-

وقال صلى اللهُ عليه وسلم: ”من أطاع أميري فقد أطاعني ومن أطاعني فقد أطاع اللهَ عز وجل.

যে আমার নিয়োগকৃত আমীরের (শাসকের) আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে মহান আল্লাহরই আনুগত্য করল।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-

وقال النبيُ صلى اللهُ عليه وسلم: ”الْغَزْوُ غَزْوَانِ فَأَمَّا مَنِ ابْتَغَى وَجْهَ اللَّهِ وَأَطَاعَ الإِمَامَ وَأَنْفَقَ الْكَرِيمَةَ وَيَاسَرَ الشَّرِيكَ وَاجْتَنَبَ الْفَسَادَ فَإِنَّ نَوْمَهُ وَنَبْهَهُ أَجْرٌ كُلُّهُ، وَأَمَّا مَنْ غَزَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَسُمْعَةً وَعَصَى الإِمَامَ وَأَفْسَدَ فِى الأَرْضِ فَإِنَّهُ لَمْ يَرْجِعْ بِالْكَفَافِ“ .

যুদ্ধ দু’ প্রকার। ১. যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যুদ্ধ করে এবং ইমামের আনুগত থাকে, নিজের উৎকৃষ্ট সম্পদ যুদ্ধে ব্যয় করে, সঙ্গীর সহায়তা করে, ঝগড়া ফাসাদ ও অপকর্ম হতে বেঁচে থাকে তাঁর নিদ্রা ও জাগ্রত অবস্থার সবকিছুই সাওয়াবে পরিণত হয়। ২. যে গর্বভরে লোক দেখানো ও সুনামের জন্য যুদ্ধ করে এবং ইমামের অবাধ্য থাকে পৃথিবীতে অন্যায় কাজ করে, সে সামান্য কিছু পূণ্য নিয়েও বাড়ি ফিরে না।”(আবু দাঊদ)

হযরত বারা ইবনে আযিব রাযি. বলেন-

وقال الْبَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ رضي اللهُ عَنْهُمَا: يُحَدِّثُ قَالَ: جَعَلَ النَّبِيُّ صلى اللهُ عليه وسلمعَلَى الرَّجَّالَةِ يَوْمَ أُحُدٍ وَكَانُوا خَمْسِينَ رَجُلاًعَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ، فَقَالَ: ”إِنْ رَأَيْتُمُونَا تَخْطَفُنَا الطَّيْرُ فَلاَ تَبْرَحُوا مَكَانَكُمْ هَذَا حَتَّى أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ، وَإِنْ رَأَيْتُمُونَا هَزَمْنَا الْقَوْمَ وَأَوْطَأْنَاهُمْ فَلاَ تَبْرَحُوا حَتَّى أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ“.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদ যুদ্ধের দিন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি. কে পঞ্চাশ জন পদাতিক যোদ্ধার উপর আমীর নিযুক্ত করেন এবং বলেন, তোমরা যদি দেখ যে, আমাদেরকে পক্ষীকুল ছোঁ মেরে নিয়ে যাচ্ছে, তথাপি তোমরা আমার পক্ষ হতে সংবাদ প্রেরণ করা ব্যতীত স্বস্থান ত্যাগ করবে না। আর যদি তেমারা দেখ যে, আমরা শক্র দলকে পরাস্ত করেছি এবং আমরা তাদেরকে পদদলিত করেছি, তখনও আমার পক্ষ হতে সংবাদ প্রেরণ করা ব্যতীত স্বস্থান ত্যাগ করবে না। অনন্তর মুসলমানগণ কাফিরদেরকে যুদ্ধে পরাস্ত করে দিল।”

إلى أن قال: فَقَالَ أَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ بْنِ جُبَيْرٍ الْغَنِيمَةَ أَيْ قَوْمِالْغَنِيمَةَ ظَهَرَ أَصْحَابُكُمْ فَمَا تَنْتَظِرُونَ، فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ جُبَيْرٍ: أَنَسِيتُمْ مَا قَالَ لَكُمْ رَسُولُ اللهِ صلى اللهُ عليه وسلم؟ قَالُوا وَاللَّهِ لَنَأْتِيَنَّ النَّاسَ فَلَنُصِيبَنَّ مِنَ الْغَنِيمَةِ، فَلَمَّا أَتَوْهُمْ صُرِفَتْ وُجُوهُهُمْ فَأَقْبَلُوا مُنْهَزِمِينَ“ .

এরপর বারা ইবনে আযিব রাযি. বলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি.-এর সহযোগীগণ বলতে লাগলেন, ‘লোকসকল! এখন তোমরা গনীমতের মাল সংগ্রহ কর। তোমাদের সাথীরা বিজয় লাভ করেছে আর কিসের অপেক্ষা? তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি. বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদেরকে যা বলেছিলেন, তা তোমরা ভুলে গিয়েছো? তাঁরা বললেন,‘ আল্লাহর শপথ, আমরা লোকদের সাথে মিলিত হয়ে গনীমতের মাল সংগ্রহ করব’ তারপর যখন তাঁরা স্বস্থান ত্যাগ করে নিজেদের লোকজনের নিকট পৌঁছল, তখন (কাফিরগণ কর্তৃক) তাঁদের মুখ ফিরিয়ে দেয়া হয়। আর তারা পরাজিত হয়ে পলায়ন করতে থাকেন।”(সহীহ বুখারী)

وقال ابنُ مسعودٍ رضي اللهُ عنه: ”الزموا هذه الطاعةَ والجماعةَ فإنه حبلُ اللهِ، الذي أمر به، وأن ما تكرهون في الجماعةِ خيرٌ مما تحبون في الفرقةِ“ .

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, “তোমরা এই আনুগত্য এবং জামা‘আতকে আঁকড়ে থাকো। কারণ এটাই হলো আল্লাহর রশি, যা আঁকড়ে ধরে থাকতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। আর জামা‘আতের মাঝে তোমরা যে বিষয়টি অপছন্দ করবে, তা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পছন্দনীয় বিষয় থেকে উত্তম।”

সুতরাং আমীরের অবাধ্যতা করা পরাজয় ও লাঞ্ছনার সবচেয়ে বিপদজনক কারণ।

***

এসব আয়াতে কারীমায় মু’মিনদের চতুর্থ যে বিষয়টির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল: মতভেদ ও বিরোধ ত্যাগ করা।

আল্লাহ সুবনাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْأَنفَالِ قُلِ الْأَنفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ بَيْنِكُمْ … ﴿الأنفال: ١﴾

আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে, গনীমতের হুকুম। বলে দিন, গণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও।”(সূরা আনফাল : )

মহান আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللَّهُ وَعْدَهُ إِذْ تَحُسُّونَهُم بِإِذْنِهِ حَتَّىٰ إِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِي الْأَمْرِ وَعَصَيْتُم مِّن بَعْدِ مَا أَرَاكُم مَّا تُحِبُّونَ مِنكُم مَّن يُرِيدُ الدُّنْيَا وَمِنكُم مَّن يُرِيدُ الْآخِرَةَ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِيَبْتَلِيَكُمْ وَلَقَدْ عَفَا عَنكُمْ وَاللَّهُ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ ﴿آل‌عمران: ١٥٢﴾

আর আল্লাহ সে ওয়াদাকে সত্যে পরিণত করেছেন, যখন তোমরা তাঁরই নির্দেশে ওদের খতম করছিলে। এমনকি যখন তোমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে ও কর্তব্য স্থির করার ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছে। আর যা তোমরা চাইতে তা দেখার পর কৃতঘ্নতা প্রদর্শন করেছ, তাতে তোমাদের কারো কাম্য ছিল দুনিয়া আর কারো বা কাম্য ছিল আখেরাত। অতঃপর তোমাদিগকে সরিয়ে দিলেন ওদের উপর থেকে যাতে তোমাদিগকে পরীক্ষা করেন। বস্তুতঃ তিনি তোমাদিগকে ক্ষমা করেছেন। আর আল্লাহর মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।”(সূরা আলেইমরান : ১৫২)

ইমাম বোখারী রহ. তাঁর সহীহ বোখারীতে “যুদ্ধক্ষেত্রে ঝগড়া ও মতবিরোধ করা অপছন্দনীয়। কেউ যদি ইমামের অবাধ্যতা করে তার শাস্তি নামে একটি পরিচ্ছেদ বিন্যস্ত করেছেন।

এরপর তিনি আল্লাহ তা‘আলা এ ইরশাদ উল্লেখ করেছেন-

﴿وَلاَ تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ﴾.

তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে।”

এরপর তিনি দু’টি হাদিস এনেছেন। প্রথম হাদিস: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুয়ায ও আবূ মূসা রাযি.কে ইয়ামানে প্রেরণ করেন ও নির্দেশ দেন যে-

يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا، وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا، وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا“.

লোকদের প্রতি নম্রতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুসংবাদ দিবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরষ্পর মতৈক্য করবে, মতভেদ করবে না।”

দ্বিতীয় হাদিস: উহুদের যুদ্ধে তীরন্দায বাহিনী সম্পর্কে বারা ইবনে আযিব রাযি. এর হাদিস। যা আমি একটু আগে আলোচনা করলাম।

আমাদের মাঝে মতবিরোধ বিদ্যমান থাকাই শত্রুদের মাকসাদ ও টার্গেট। তাদের এমন অনেক বিষয় আমরা নিজ হাতে বাস্তবায়ন করি, যা তারা করতে অক্ষম।

***

এসব আয়াতে কারীমায় মু’মিনদেরকে পঞ্চম যে বিষয়টির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা হল: ধৈর্য্য ধারণ করা।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

ثُمَّ إِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِينَ هَاجَرُوا مِن بَعْدِ مَا فُتِنُوا ثُمَّ جَاهَدُوا وَصَبَرُوا إِنَّ رَبَّكَ مِن بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ ﴿النحل: ١١٠﴾

যারা দুঃখকষ্ট ভোগের পর দেশত্যাগী হয়েছে অতঃপর জেহাদ করেছে, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা এসব বিষয়ের পরে অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”(সূরা নাহল : ১১০)

মহান আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي اللَّهِ مِن بَعْدِ مَا ظُلِمُوا لَنُبَوِّئَنَّهُمْ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَلَأَجْرُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ﴿النحل: ٤١﴾ الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ ﴿النحل: ٤٢﴾

যারা নির্যাতিত হওয়ার পর আল্লাহর জন্যে গৃহত্যাগ করেছে, আমি অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়াতে উত্তম আবাস দেব এবং পরকালের পুরস্কার তো সর্বাধিক; হায়! যদি তারা জানত। যারা দৃঢ়পদ রয়েছে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করেছে।”(সূরা নাহল : ৪২)

কুরআনুল কারীমে দিন রাতের উভয় অংশে যিকিরের আলোচনার সাথে ধৈর্য্যের আলোচনাও বারবার এসেছে। যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ ﴿غافر: ٥٥﴾

অতএব, আপনি সবর করুন নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। আপনি আপনার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করুন এবং সকালসন্ধ্যায় আপনার পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন।”(সূরা গাফির : ৫৫)

মহান আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ ﴿المزمل: ١﴾ قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا ﴿المزمل: ٢﴾ نِّصْفَهُ أَوِ انقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا ﴿المزمل: ٣﴾ أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا ﴿المزمل: ٤﴾ إِنَّا سَنُلْقِي عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيلًا ﴿المزمل: ٥﴾ إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ أَشَدُّ وَطْئًا وَأَقْوَمُ قِيلًا ﴿المزمل: ٦﴾ إِنَّ لَكَ فِي النَّهَارِ سَبْحًا طَوِيلًا ﴿المزمل: ٧﴾ وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًا ﴿المزمل: ٨﴾ رَّبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِيلًا ﴿المزمل: ٩﴾ وَاصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيلًا ﴿المزمل: ١٠﴾

হে বস্ত্রাবৃত! রাত্রিতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে; অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে। আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী। নিশ্চয় এবাদতের জন্যে রাত্রিতে উঠা প্রবৃত্তি দলনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল। নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা। আপনি আপনার পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন এবং একাগ্রচিত্তে তাতে মগ্ন হোন। তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকেই গ্রহণ করুন কর্মবিধায়করূপে। কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।”(সূরা মুজ্জাম্মিল : ১০)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ آثِمًا أَوْ كَفُورًا ﴿الانسان: ٢٤﴾ وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَأَصِيلًا ﴿الانسان: ٢٥﴾ وَمِنَ اللَّيْلِ فَاسْجُدْ لَهُ وَسَبِّحْهُ لَيْلًا طَوِيلًا ﴿الانسان: ٢٦﴾

অতএব, আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের জন্যে ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করুন এবং ওদের মধ্যকার কোন পাপিষ্ঠ কাফেরের আনুগত্য করবেন না। এবং সকালসন্ধ্যায় আপন পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন। রাত্রির কিছু অংশে তাঁর উদ্দেশে সিজদা করুন এবং রাত্রির দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করুন।”(সূরা ইনসান : ২৪২৬)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِّنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَٰلِكَ ذِكْرَىٰ لِلذَّاكِرِينَ ﴿هود: ١١٤﴾ وَاصْبِرْ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ الْمُحْسِنِينَ ﴿هود: ١١٥﴾

আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতের প্রান্তভাগে পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক। আর ধৈর্য্যধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ পূণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না।”(সূরা হুদ : ১১৪১১৫)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُم بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ وَلَا تَعْدُ عَيْنَاكَ عَنْهُمْ تُرِيدُ زِينَةَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَلَا تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَن ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا ﴿الكهف: ٢٨﴾

আপনি নিজেকে তাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখুন যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে আহবান করে এবং আপনি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তাদের থেকে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেবেন না। যার মনকে আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে, নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কার্য কলাপ হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, আপনি তার অনুগত্য করবেন না।”(সূরা কাহাফ : ২৮)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো ইরশাদ করেছেন-

وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ ﴿الطور: ٤٨﴾ وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَارَ النُّجُومِ ﴿الطور: ٤٩﴾

আপনি আপনার পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায় সবর করুন। আপনি আমার দৃষ্টির সামনে আছেন এবং আপনি আপনার পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন যখন আপনি গাত্রোত্থান করেন। এবং রাত্রির কিছু অংশে এবং তারকা অস্তমিত হওয়ার সময় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন।”(সূরা তুর : ৪৮৪৯)

হাদীস শরীফে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

أَيُّهَا النَّاسُ لاَ تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ وَسَلُوا اللَّهَ الْعَافِيَةَ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ ظِلاَلِ السُّيُوفِ ثُمَّ قَالَ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ وَهَازِمَ الأَحْزَابِ اهْزِمْهُمْ وَانْصُرْنَا عَلَيْهِمْ“ .

হে লোকসকল! তোমরা শত্রুর সাথে মোকাবেলায় অবতীর্ণ হওয়ার কামনা করবে না এবং আল্লাহ তা‘আলার নিকট নিরাপত্তার দু‘আ করবে। তারপর যখন তোমরা শক্রর সম্মুখীন হবে, তখন ধৈর্য্যধারণ করবে। জেনে রাখবে, জান্নাত তরবারীর ছায়াতলে অবস্থিত” এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু‘আ করলেন, “হে আল্লাহ, কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী, সৈন্য দলকে পরাজয় দানকারী, আপনি কাফির সম্প্রদায়কে পরাজিত করুন এবং আমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করুন।”(সহীহ বুখারী)

আর জিহাদে ধৈর্য্যধারণ করা হলো: লড়াইয়ে ও প্রবৃত্তির চাহিদার উপর ধৈর্য্যধারণ করা। এক প্রকার প্রবৃত্তি হল সামাজিক মর্যাদা ও ঝামেলামুক্ত জীবন যাপনের প্রবৃত্তি। অনেক মুজাহিদ এই কারণে জিহাদের পথ থেকে পিছিয়ে গেছে। আরেক প্রকার ধৈর্য্যধারণ হল: বন্দিত্বের উপর ধৈর্য্যধারণ করা। অনেক মুজাহিদ এ কারণে জিহাদের পথ থেকে সরে গেছে। বরং বন্দিত্বের ভয়ে এবং স্ত্রী-সন্তান, পরিবার ও জীবনের টানে সাড়া দিয়ে তার ভাইদের বিরুদ্ধে শত্রুর হাতের গুটিতে পরিণত হয়েছে। আরেক প্রকার ধৈর্য্যধারণ হল: ক্ষমতা ও সম্পদের প্রাচুর্য্যের চাহিদার উপর ধৈর্য্যধারণ করা। যার দ্বারা যুদ্ধের বেশী প্রস্তুতি ও বেশী সৈন্য নিয়োগ দেয়া যায়। কত জন যে সৎ উদ্দেশ্য সম্পদ সঞ্চয় শুরু করেছিল। এরপর ক্ষমতা ও সম্পদের লোভে পড়ে রাস্তা থেকে সরে গেছে, তার ভাইদের অবাধ্য হয়েছে এবং তাদের অমর্যাদা করেছে। কেউ তো ঐ ভাইদেরকে তাকফির করেছে, যারা তাকে নিয়ে গর্ব করত। সে তাঁদের রক্ত বৈধ মনে করেছে, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, জিহাদের সারিতে ফাঁটল ধরিয়েছে, নববী খেলাফতের উপর মিথ্যারোপ করেছে। কারণ সে দাবী করেছে, খিলাফত মুসলমানদের ইজ্জত-আবরু, জামা‘আত ও শুরা-নীতির উপর কায়েম হবে না। বরং খিলাফত কায়েম হবে, বলপ্রয়োগ, জবরদখল ও অন্যকে তাকফির করার নীতিতে এবং যারা তাকে বায়আত দিবে না, তাদের সাথে লড়াই করা হবে। আর যারা তার সাথে লড়বে, তারা কাফির। (নাউযুবিল্লাহ)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-

فَوَاللَّهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ وَلَكِنِّي أَخْشَى أَنْ تُبْسَطَ عَلَيْكُمُ الدُّنْيَا كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا وَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَتْهُم“ .

আল্লাহর কসম, আমি তোমাদের জন্য দারিদ্রের আশংকা করি না। বরং আমি আশংকা করি যে, তোমাদের কাছে দুনিয়ার প্রাচুর্য এসে যাবে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের কাছে এসেছিল। তখন তোমরা তা লাভ করতে পরষ্পরে প্রতিযোগিতা করবে, যেমনভাবে তারা করেছিলআর এ ধনসম্পদ তাদেরকে যেমনিভাবে ধ্বংস করেছিল, তোমাদেরকেও তেমনিভাবে ধ্বংস করে দিবে(সহীহ বুখারী)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন-

مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلاَ فِي غَنَمٍ بِأَفْسَدَ لَهَا مِنْ حَرَصِ الْمَرْءِ عَلَى الْمَالِ وَالشَّرَفِ لِدِينِهِ“ .

বকরির পালে ছেড়ে দেওয়া ক্ষুধার্ত দু’টি নেকড়ে বকরির জন্য যতটা ক্ষতিকর, ব্যক্তির সম্পদ ও সম্মানের লোভ দ্বীনের জন্য তার চেয়েও বেশী ক্ষতিকর।”

আরেক প্রকার ধৈর্য্যধারণ হল: পথের দীর্ঘতার উপর ধৈর্য্যধারণ করা। এমন কত ভাই আছেন, যারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন, কুরবানি করেছেন, হিজরত করেছেন আবার কখনো বন্দী হয়েছেন। অতঃপর পথের মাঝে এসে পথ থেকে সরে পড়েছেন এবং পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছেন।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-

وَكَأَيِّن مِّن نَّبِيٍّ قَاتَلَ مَعَهُ رِبِّيُّونَ كَثِيرٌ فَمَا وَهَنُوا لِمَا أَصَابَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَا ضَعُفُوا وَمَا اسْتَكَانُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٦﴾ وَمَا كَانَ قَوْلَهُمْ إِلَّا أَن قَالُوا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٧﴾ فَآتَاهُمُ اللَّهُ ثَوَابَ الدُّنْيَا وَحُسْنَ ثَوَابِ الْآخِرَةِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ ﴿آل‌عمران: ١٤٨﴾

আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গীসাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথেতাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। তারা আর কিছুই বলেনিশুধু বলেছে, হে আমাদের পালনকর্তা! মোচন করে দাও আমাদের পাপ এবং যা কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আমাদের কাজে। আর আমাদিগকে দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের উপর আমাদিগকে সাহায্য কর। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়ার সওয়াব দান করেছেন এবং যথার্থ আখেরাতের সওয়াব। আর যারা সৎকর্মশীল আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন।”(সূরা আলেইমরান : ১৪৬১৪৮)

وعن جابر بن عبد الله رضي اللهُ عنهما: أن الأنصارَ لما هموا بمبايعةِ سيدِنا رسولُ اللهِ صلى اللهُ عليه وسلمفي بيعةِ العقبةِ الثانيةِ، أخذ بيدِه أسعدُ بنُ زرارةَ رضي اللهُ عنهثم قال: ”رُوَيْدًا يَا أَهْلَ يَثْرِبَ، فَإِنَّا لَمْ نَضْرِبْ أَكْبَادَ الإِبِلِ إِلاَّ وَنَحْنُ نَعْلَمُ أَنَّهُ رَسُولُ اللهِ صلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِنَّ إِخْرَاجَهُ الْيَوْمَ مُفَارَقَةُ الْعَرَبِ كَافَّةً، وَقَتْلُ خِيَارِكُمْ، وَأَنَّ تَعَضَّكُمُ السُّيُوفُ، فَإِمَّا أَنْتُمْ قَوْمٌ تَصْبِرُونَ عَلَى ذَلِكَ، وَأَجْرُكُمْ عَلَى اللهِ، وَإِمَّا أَنْتُمْ قَوْمٌ تَخَافُونَ مِنْ أَنْفُسِكُمْ جَبِينَةً، فَبَيِّنُوا ذَلِكَ، فَهُوَ أَعْذَرُ لَكُمْ عِنْدَ اللهِ، قَالُوا: أَمِطْ عَنَّا يَا أَسْعَدُ، فَوَاللَّهِ لاَ نَدَعُ هَذِهِ الْبَيْعَةَ أَبَدًا، وَلاَ نَسْلُبُهَا أَبَدًا، قَالَ: فَقُمْنَا إِلَيْهِ فَبَايَعْنَاهُ، فَأَخَذَ عَلَيْنَا، وَشَرَطَ، وَيُعْطِينَا عَلَى ذَلِكَ الْجَنَّةَ“ .

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, দ্বিতীয় আকাবায় আনসারগণ যখন আমাদের সরদার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বায়আত দেওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন আস‘আদ ইবনে যুরারাহ রাযি. তাঁর হাত ধরে ফেললেন এবং বললেন, “হে মদিনাবাসী, একটু থামুন। আমরা তো এটা জেনেই এত কষ্ট করে এসেছি যে, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আজ তাঁকে বের করে নিয়ে যাওয়া মানে সমগ্র আরব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, তোমাদের সর্বোত্তম লোকদের নিহত হওয়া এবং তোমরা তরবারির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া। সুতরাং হয়তো তোমরা এসবের উপর ধৈর্য্যধারণ করবে এবং বিনিময়ে তোমাদের প্রতিদান আল্লাহর জিম্মায় থাকবে। অথবা তোমরা কাপুরুষতাবশত জানের ভয় করবে। তাহলে তা বলে দাওআল্লাহর কাছে সেটাই তোমাদের জন্য অপারগতা বলে গণ্য হবে। তাঁরা বলল, হে আসআদ, সামনে থেকে সরে যাও। আমরা কখনই এ বায়আত ছেড়ে দেব না এবং কখনই তা লুন্ঠন হতে দেব না। তিনি বলেন, এরপর আমরা তাঁর কাছে বায়আত দিলাম। তখন তিনি আমাদের উপর কিছু বিধিনিষেধ ও শর্ত আরোপ করলেন এবং এর বদলায় আমাদেরকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিলেন।”

***

এসব আয়াতে কারীমায় মু’মিনদের ষষ্ঠ যে বিষয়টির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল: অহংকার ও লৌকিকতা পরিহার করা।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ، فَأُتِىَ بِهِ، فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا. قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ. قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لأَنْ يُقَالَ جَرِىءٌ. فَقَدْ قِيلَ. ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِىَ فِى النَّارِ“

কেয়ামতের দিন সর্ব প্রথম এমন এক ব্যক্তির ব্যাপারে ফায়সালা হবে যে শহীদ হয়েছিল। তাকে আনা হবে এবং তাকে যেসব সুযোগসুবিধা দেয়া হয়েছিল, তাও তার সামনে পেশ করা হবে। সে তা চিনতে পারবে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, আমি যে সমস্ত নিয়ামত তোমাকে দিয়েছিলাম, তার বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছ? সে বলবে, আমি আপনার পথে লড়াই করে শহীদ হয়েছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ। বরং তুমি এজন্য লড়াই করেছ যে, লোকেরা তোমাকে বীরবাহাদুর বলবে! আ তা বলাও হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে আদেশ দেওয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”(সহীহ মুসলিম)

رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ﴿البقرة: ٢٨٦﴾

হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।”(সূরা বাকারাহ :২৮৬)

وآخرُ دعوانا أن الحمدِ للهِ ربِ العالمين، وصلى اللهُ على سيدِنا محمدٍ وآلِه وصحبِه وسلم.

والسلامُ عليكم ورحمةُ اللهِ وبركاتُه.

————————————————

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =

Back to top button