অডিও ও ভিডিওগুরাবা মিডিয়াবাংলা প্রকাশনামিডিয়া

গুরাবা মিডিয়া পরিবেশিত || ইসতেশহাদী (ফেদায়ী) মুজাহিদ আবু আ’সেম আল মুহাজীর (আল্লাহ তাঁর শাহাদাতকে কবুল করুন) এর সাক্ষাৎকার

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

গুরাবা মিডিয়া পরিবেশিত

ইসতেশহাদী (ফেদায়ী) মুজাহিদ আবু আ’সেম আল মুহাজীর (আল্লাহ তাঁর শাহাদাতকে কবুল করুন) এর সাক্ষাৎকার

Fidai Hamla

মিডিয়াম কোয়ালিটি 
91.8 MB
https://archive.org/download/ilmandjihadVDO/AbuAsimAlMuhajirInterview.mp4

লো কোয়ালিটি
29.3 MB
https://archive.org/download/ilmandjihadVDO/AbuAsimAlMuhajirInterview.3gp

 

 

 

জাবহাতুন নুসরাহ পরিবেশিত

ইস্তেশহাদী (ফেদায়ী) মুজাহিদ আবু আসেম আল মুহাজির

(আল্লাহ তাঁর শাহাদাতকে কবুল করুন)

এর সাক্ষাৎকার

পরিবেশনায়

গুরাবা মিডিয়া

 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

প্রিয় ভাই। আপনি কি আমাদের কাছে আপনার এই ইস্তেশহাদী হামলার পথ বেছে নেয়ার কারণ বর্ণনা করবেন?

-পরম করুণাময়, দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তা’আলার। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর।

অতঃপর,

আমার এই ইস্তেশহাদী অপারেশনের পথ পছন্দ করার কারণ হচ্ছে,ইস্তেশহাদী আক্রমণ বর্তমান সময়ের জন্য একটি যুগোপযোগী আক্রমণ। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এই আক্রমণের মাধ্যমে আল্লাহর শত্রুরা চরম বিপর্যয় এবং প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আর সকলেই জানে,অস্ত্র,শক্তি ও সংখ্যার স্বল্পতা সত্ত্বেও মুজাহিদীনরা এসব অপারেশনের মাধ্যমে শত্রু বেষ্টনীর ভেতরে প্রবেশ করে থাকে এবং আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ ও কৃপায় তাদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এটা একটি দিক। অপর একটি দিক হলো, কুরআনের অনেক আয়াত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনেক হাদীস রয়েছে, যা পরিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারী মুজাহিদীনদেরকে, যারা নিজেদের ঘর ছেড়ে বের হয়েছেন তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে; যাতে তারা ইসলামকে রক্ষা করে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মান রক্ষা করে। মুসলিমদের ইজ্জত রক্ষা করে। আরো অনেক আয়াত ও হাদীস রয়েছে,যা মুজাহিদীনদের সাহস যোগায়। আল্লাহ তা’আলা ঐ সমস্ত যোদ্ধাদেরকে দেখে হাসেন, যারা সামনের কাতারে থেকে যুদ্ধ করে। আমি আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। মহান‌ রব আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَ اَعِدُّوۡا لَہُمۡ مَّا اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ قُوَّۃٍ وَّ مِنۡ رِّبَاطِ الۡخَیۡلِ تُرۡہِبُوۡنَ بِہٖ عَدُوَّ اللّٰہِ وَ عَدُوَّکُمۡ

“আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর।”

এই আয়াতের মধ্যেও ইস্তেশহাদী আক্রমণের বিষয়টি পাই। তা হলো, আমাদেরকে আমাদের রব বলছেন, যে তোমাদের যে শক্তি রয়েছে, তোমাদের যে সামর্থ্য রয়েছে,তা ব্যবহার কর।

-আমরা যেমনটা শুনে থাকি, জাবহাতুন নুসরাহ তার সৈনিকদেরকে ইস্তেশহাদী আক্রমণের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বাস্তবেই কি জাবহাহ এ ধরণের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করে, যেদিকে আপনি অগ্রসর হচ্ছেন?

-যে এ ধরনের কথা বলে? সে জঘন্য মিথ্যাবাদী। আল্লাহর শপথ! আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, জাবহাতুন নুসরাহ এ ধরনের কাজ করেনি। তাদের থেকে এ ধরনের কাজ প্রকাশ পায়নি। বরঞ্চ যারা এ সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, তাদেরকে একটি বিষয় জানাতে চাচ্ছি, ইস্তেশহাদী মুজাহিদগণ জাবহাতুন নুসরাহ’র দুয়ারে এ ধরনের অপারেশনে অংশগ্রহণের এর জন্য পরস্পরে বাকবিতন্ডা করে। এ অপারেশনে কে আগে অংশগ্রহণ করবে, তা নিয়ে পরস্পরে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। আর আমি এটা নিজ চোখে দেখেছি। আমি দেখেছি যে, ইস্তেশহাদীরা অত্যন্ত আগ্রহের সাথে,আনন্দের সাথে এ ধরনের অপারেশন পরিচালনার জন্য এসেছে। তারা নিজেরা অপারেশনে অংশগ্রহণ এর জন্য জোড়াজুড়ি করছে। আমি আমার ভাইদেরকে আরো একটি সুসংবাদ দিতে যাচ্ছি,আমি যখন এই অপারেশনের অনুমতি নিচ্ছি, আল্লাহর শপথ!আমার পিছনে ৫১ জন ভাই অনুমতির জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করছেন। বিষয়টি এমনই।

-সেই আকিদা কি? যা আপনি ধারণ করেন? অন্যান্য মুসলিমরা যে আকিদায় বিশ্বাস  করেন,এটা কি তা থেকে ভিন্ন কিছু?

-আমাদের আকিদা হলো, আল্লাহ তা’আলা এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন, তাওহিদের জন্য নবি রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছেন। জাবহাতুন নুসরাহ’র প্রতিটি সদস্যই এই আকিদা ধারণ করে। তারা সকলেই চায়, আল্লাহ তা’আলার বিধান ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ প্রতিষ্ঠা করতে। আল্লাহ তা’আলার আয়াতগুলোকে কোনো রকম হাসি-তামাশা, নেফাক, পরিবর্তন-পরিবর্ধন ছাড়া আল্লাহ তা’আলা যেভাবে চান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে চেয়েছেন, আর এটাই জাবহাতুন নুসরাহ’র আকিদা।

-আপনি আপনার জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো অতিবাহিত করছেন। এই অবস্থায় আপনার অনুভব ও অনুভূতিগুলো কি?

-আল্লাহ তাআলার কাছে আমি প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের পরিসমাপ্তি কে সুন্দর করেন। আমাদেরকে উত্তম হিসেবে নির্বাচিত করেন। জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে আমার অনুভূতি হচ্ছে, যে স্বাভাবিক ভাবেই আমি আল্লাহ তা’আলার ব্যাপারে উত্তম ধারণা রাখছি। আল্লাহর শপথ! আমার আগ্রহ জাগছে, আমার মন চাচ্ছে, আমার যদি একশতটি প্রাণ থাকত, না বরং হাজারো প্রাণ থাকত, আর আমি তা আল্লাহর শত্রুদেরকে ধ্বংস করতে উৎসর্গ করতে পারতাম! আমার আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে। আমি আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমার পর আমার ভাইদেরকে এ পথে দৃঢ় রাখেন, তারা যেন এই পথ থেকে সরে না যায়। জিহাদের পথে বাধাদানকারী মুনাফিকদের কথার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে। আর আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সকলের পরিসমাপ্তি কে সুন্দর করেন।

-আপনি আপনার মুজাহিদ ভাইদেরকে লক্ষ্য করে কিছু বলুন।

-ওহে বীরেরা, তোমরা নিজ অবস্থায় দৃঢ় থাক। জেনে রাখ, সেখানে রয়েছে জান্নাত, যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিন সমতুল্য। আল্লাহর ইচ্ছায় তা তোমাদের মতো সাদিকীনদের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে শর্ত হলো,তোমাদের নিয়ত পরিশুদ্ধ ও খাঁটি হতে হবে। তোমরা এই পথে দৃঢ় থাক। জেনে রাখ, এই পথ হলো বিপদসংকুল পথ, যাতে রয়েছে নানা পরীক্ষা ও নানা ধরনের দুঃখ-কষ্ট। তোমাদের একটিই পথ খোলা আছে। আর তা হলো, আসমান ও জমিনের রবের হুকুমগুলো আঁকড়ে ধরা। তোমরা দৃঢ় থাক। আর তোমরা ফিরে দেখ তোমাদের পূর্ববর্তী সেই মহান ব্যক্তিদের দিকে, যারা এই পথে দৃঢ় থেকে গেছেন। যেমনটি ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেছেন, তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি কাউকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে চাও, তাহলে তাদেরকেই যেন আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে, যারা মৃত্যু বরণ করেছেন। কেননা, জীবিতরা ফিতনা থেকে মুক্ত নয়। তোমরা আল্লাহ তা’আলার পথকে আঁকড়ে ধর এবং সর্বদা তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথকে আঁকড়ে ধর। তাদের জীবনীগুলোতে দৃষ্টি বুলাও, কিভাবে তারা এই পথে দৃঢ় থেকেছেন। ইনশাআল্লাহ, এটি তোমাদের নফসের তাযকিয়াহ হবে।

-আপনি মুসলিম উম্মাহকে লক্ষ্য করে কিছু বলুন।

-আমার প্রিয় উম্মাহ, এখনো যারা পিছনে রয়ে গেছেন, মানুষদের মাঝে পড়ে রয়েছেন, যদিও কথাগুলো একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে, তথাপি আল্লাহর কসম! শুধুমাত্র আপনাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থেকেই এগুলো বলছি। এই উম্মাহই একমাত্র উম্মাহ, যারা সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করে থাকে। এদের কারণেই আল্লাহ তা’আলা এই বিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন। আর আল্লাহ তা’আলা বলেন,

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষদের কল্যাণে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজে আদেশ কর এবং অসৎ কাজ থেকে বাধা দাও।”

আমার প্রিয় উম্মাহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত। আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ তাআলা যেন তাদেরকে উত্তমভাবে হকের দিকে প্রত্যাবর্তন করান। যদিও সময় অনেক দীর্ঘ হয়েছে, অসুস্থতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তথাপি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহে আগামী শতাব্দী হবে ইসলামের শতাব্দী, যদিও মুনাফিক ও দ্বীনের ব্যাপারে বিদ্বেষ পোষণকারীরা অপছন্দ করে। এটা আমাদের রব মহান আল্লাহ তা’আলা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিশ্রুতি। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

“আমার বান্দা রাসূলগণের ব্যাপারে পূর্বেই এই প্রতিশ্রুতি অতিবাহিত হয়েছে, নিশ্চয়ই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবে এবং নিশ্চয়ই আমার সৈনিকরাই বিজয়ী হবে।”

আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন,

“নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরোধিতা করে,তারাই লাঞ্ছনায় পতিত।”

আল্লাহ তা’আলা নির্ধারণ করে রেখেছেন,“আমি এবং আমার রাসূল গণই বিজয় লাভ করবো।” নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা মহা শক্তিধর ও পরাক্রমশালী।

আমি আমার প্রিয় উম্মাহ কে লক্ষ্য করে সামান্য কিছু বলবো। হে প্রিয় উম্মাহ,আপনারা মহান‌ রবের কিতাবের দিকে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর দিকে ফিরে আসুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি।যতদিন এই দুটিকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ততদিন‌ পথভ্রষ্ট হবে না।তা হলো কিতাবুল্লাহ ও আমার সুন্নাহ।”

হে প্রিয় উম্মাহ,আল্লাহর শপথ!যদি আপনারা এ দুটি থেকে দূরে সরে যান, তাহলে আপনারা তিক্ততা ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারবেন না।

-যে সমস্ত আলেমরা ঘরে বসে রয়েছেন, যে সকল বক্তারা মিম্বরেই রয়ে গেছেন, তাদেরকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলুন।

-যে আলেমরা হককে চিনতে পেরেও গোপন করেন, তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআন এ লানত করেছেন। যদি তারা হককে চিনতে পেরেও তা থেকে দূরে সরে থাকে, তাদের পরিণতি হবে খুব কঠিন। আগামীকাল ই তারা জানতে পারবে, কি জঘন্য মিথ্যাবাদী তারা! আর আল্লাহ তাআলা বলেন,

“আর আপনি কেয়ামতের দিন মিথ্যাবাদীদের কালো চেহারা অবস্থায় দেখতে পাবেন।”

কাফেরদের জন্য কি জাহান্নাম ঠিকানা নয়? আমি তাদেরকে আহবান করছি, তাদেরকে বলছি, তারা যেন দুনিয়াকে ছেড়ে দেয়, তাদের পদমর্যাদার লোভ ছেড়ে দেয়। আল্লাহর শপথ! এই দুনিয়া ধ্বংসশীল। যদি অন্যদের জন্য তা স্থায়ী হত, তাহলে তোমাদের পর্যন্ত তা পৌঁছাত না। যদি তোমরা হককে চিনতে পেরেও তা থেকে পাশ কাটিয়ে চল, তাহলে অচিরেই তোমরা দুনিয়া ও আখিরাতে জ্বলতে থাকবে। তোমাদের উপর আমাদের রবের লানত বর্ষিত হবে। তোমরা রহমত থেকে দূরে সরে যাবে। তোমাদের উপর মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ তা’আলার আযাত পতিত হবে। তাই আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা দুনিয়ার এ সমস্ত রাজা – বাদশাহদেরকে ছেড়ে দাও। কেননা, দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

“আর তাদেরকে থামাও, তারা জিজ্ঞাসিত হবে।”

আল্লাহর শপথ! তোমরা অচিরেই বড়-ছোট সব বিষয়েই জিজ্ঞাসিত হবে। কেননা, তোমরা নিজেরাও গোমরাহ হয়েছ এবং তোমাদের পরে যারা রয়েছে,তাদেরকেও গোমরাহ করেছ। তোমরা হককে চিনেছ, অথচ তা থেকে পাশ কাটিয়ে চলেছ। আমি আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ তা’আলা যেন তাদেরকে উত্তমভাবে হকের দিকে প্রত্যাবর্তন করান। তারা যদি এক্ষেত্রে তা’বীলকারী হয়, আল্লাহ তা’আলা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আর তারা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জেনে শুনে এই অবস্থা গ্রহণ করে, হককে চিনার পর পাশ‌ কাটিয়ে চলে, আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন তাদেরকে কঠিনভাবে পাকড়াও করেন।

-আর মিম্বারের খতিবদের সম্পর্কে কি বলবেন?

-আর খতিবরা, আল্লাহর শপথ! তাদের ব্যাপারে আমি বলার ইচ্ছা করছি, তোমাদের থেকে যে ধরনের কথা‌ প্রকাশ পাচ্ছে, তার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কে ভয় করো। তোমরা তোমাদের উচ্চ কন্ঠে জজবাপূর্ণ ভাষণের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বারে অবস্থান করছ। অথচ আমরা তোমাদেরকে কার্যকারীভাবে বাস্তব ভূমিতে দেখতে পাচ্ছি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো যা বলতেন, তার চেয়ে বেশি কাজ করতেন। সকল ভূমির মুজাহিদীনরা তোমাদের কাছে আশা করে, তোমরা তাদেরকে সাহায্য করবে। তাদের কাছে আসবে।

ওহে তালিবুল ইলমরা, ওহে যারা ইলমের দাবিদার, তোমরা জিহাদের ময়দানে চলে আসো। মুজাহিদদের রয়েছে তোমাদের প্রয়োজন। আর যদি তোমরা মিম্বারেই বসে থাক, আর তোমরা যদি এমন কথা বলো, যা তোমরা কর না। মুখের কথা যদি বাস্তব কাজের বিপরীত হয়, তাহলে তা অন্তরের মধ্যে নেফাক সৃষ্টি করে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

“হে ইমানদারগণ, তোমরা এমন কথা‌ কেন বল, যা তোমরা কর না? তোমাদের এমন কথা‌ বলা, যা তোমরা কর না, আল্লাহ তা’আলার নিকট অত্যন্ত অসন্তোষ জনক।”

তোমরা তো শুধু মিম্বারেই আরোহণ করছ, আর লোকদেরকে জড়ো করছ এবং এমন কথা বলছ, যা বাহ্যিকভাবে সুন্দর। কিন্তু শুধু কথার মাঝেই উপদেশ নেই। আমরা তোমাদের কাছে বাস্তব কাজ‌ চাচ্ছি। আমরা চাই তোমরা জিহাদের ময়দানে নেমে আস, তোমরা চলে আস। তোমরা জান-মাল দিয়ে জিহাদ কর। বরং তোমরা তোমাদের কথা দিয়ে জিহাদ কর। কথার জিহাদেরও রয়েছে প্রয়োজন। আমরা চাই তোমরা জিহাদের ময়দানে নেমে আস, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহর অনুগ্রহে উম্মাহ এখন সত্যবাদী ও মিথ্যা বাদীদের কে চিহ্নিত করতে পারছে। ভালো ও মন্দকে পৃথক করতে পারছে। এমন কেউ নেই যে, উম্মাহকে ধোঁকা দিবে। আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহে উম্মাহর মাঝে রয়েছে অনেক সচেতন ও বিচক্ষণ ব্যক্তি। আল্লাহর ইচ্ছায় উম্মাহ জাগতে শুরু করেছে। আজকে মর্যাদাবানরাই মর্যাদা পাচ্ছে। তারা কথা বুঝতে পারছে এবং ভালো মন্দ‌ পার্থক্য করতে পারছে। সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী দের চিনতে পারছে। সুতরাং আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। তোমরা মিম্বারে বসে যেসব কথা বলছ, আল্লাহর শপথ! অচিরেই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে।

শাইখ আল ফাতেহ শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল জাওলানীর প্রতি বার্তা—

হে আমাদের শায়খ, আমাদের প্রাণপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আল জাওলানী। আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ তাআলা যেন আপনাকে হেফাজত করেন। আপনাকে ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য সম্পদ হিসেবে নির্বাচিত করুন।

প্রথমত, আমরা আপনাকে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি। এই ভালোবাসা শুধু আল্লাহ তা’আলার জন্যই।হে ঐ ব্যক্তিত্ব, যিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের দেশগুলোকে রাগিয়ে তুলেছেন, শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোকে যিনি ক্রোধান্বিত করেছেন, যারা নিজেদেরকে পৃথিবীর পরাশক্তির অধিকারী বলে দাবি করে, আপনি তাদের কন্ঠনালীর কাটাস্বরূপ। আর আমরা আপনার সাথেই আছি ইনশাআল্লাহ। আপনি আমাদেরকে উত্তম সৈনিক হিসেবে পাবেন। আমাদেরকে সাহসী হিসেবে দেখবেন, যারা হককে সাহায্য করছে। যতদিন আপনি আপনার রব ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে চান সেভাবে চলবেন, আমরা আপনার সাথেই থাকবো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। আমরা আপনার থেকে পৃথক হবো না। আপনি আমাদেরকে উত্তম সাহায্য কারী এবং বীর পুরুষ হিসেবে দেখতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

সমাপ্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − three =

Back to top button