আন-নাসর মিডিয়াফিলিস্তিন এক্সক্লুসিভবই ও রিসালাহবই ও রিসালাহ [আন নাসর]শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তাঃ ফিলিস্তিনঃ প্রতারকদের হাতে ছেড়ে দেয়া যায় না || -শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা

ফিলিস্তিন: প্রতারকদের হাতে ছেড়ে দেয়া যায় না

শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্ললাহ

ডাউনলোড করুন

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৬২২ কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/ac9XC39MEWAeH9q
https://www.file-upload.org/dr42fqsvtcu2
https://archive.org/details/BijoyiUmmahrProtiBartaFilisteen
http://www.mediafire.com/file/BijoyiUmmahrProtiBartaFilisteen.pdf/file
https://jmp.sh/uBjwYB5H

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৬৪৫ কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/a4SJMyyGmJo7kWc
https://www.file-upload.org/wqcr2qmisvbj
https://archive.org/details/BijoyiUmmahrProtiBartaFilisteen
http://www.mediafire.com/file/BijoyiUmmahrProtiBartaFilisteen.docx/file
https://jmp.sh/l2WB7k7G

====================================
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]

—————-

বিসমিল্লাহহির রাহমানির রাহীম

সমগ্র বিশ্বের মুসলিম ভাইয়েরা-

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

হামদ ও সালাতের পর:

সম্প্রতি হামাস নেতৃত্ব “সাধারণ মূলনীতি” নামে একটি নতুন নথি প্রকাশ করেছে। এখানে আমি তার বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে এ ধরণের দিক-নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ‍ফিলিস্তিনে আসন্ন বিপদ সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করার ইচ্ছা করেছি।

হামাস নেতৃত্ব তাদের দলিল-দস্তাবেজ, অন্যান্য প্রকাশনা ও বিবৃতিতে দাবি করে আসছে যে, হামাস হচ্ছে একটি ইসলামী আন্দোলন এবং তার লক্ষ্য ইসলাম। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে: তাদের অবস্থান ও কর্মকান্ডের সাথে দাবির কোন মিল নেই। বরং সম্পূর্ণ বৈপরীত্য বিদ্যমান। সুতরাং এটা কিভাবে হতে পারে যে, কোথাও ইসলামী আন্দোলনের অস্তিত্ব থাকবে অথবা তার লক্ষ্য দাবী করা হবে ইসলাম আর শাসনব্যাবস্থা হবে ইসলামের বিপরীত কিছু দিয়ে? নাকি শরীয়ত বিহীন ইসলামের অস্তিত্ব রয়েছে? অথবা ইসলামী শরীয়তকে বাদ দিতে অন্য কোন শরীয়ত নাযিল হয়েছে?!

মহান আল্লাহ তা‘আলা কি পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেননি যে,

فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىَ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُواْ فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسْلِيمًا

অর্থাৎ “কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু‘মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়।” (সূরা নিসা,৬৫)

এমন সংগঠনের অস্তিত্ব কিভাবে সম্ভব যারা নিজেদের সম্পর্কে ‘ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী ও লক্ষ্যস্থল ইসলাম দাবি করে অথচ তার রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান এ কথা ঘোষণা করতে পারে যে,  চেচনিয়া রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ইস্যু? হামাস নেতৃত্ব কি কারো এই ঘোষণা মেনে করে নেবে যে, ফিলিস্তিন ইসরায়েল এর অভ্যন্তরীণ বিষয়?

এমন দলের অস্তিত্ব কি করে হতে পারে যারা নিজেদেরকে ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং লক্ষ্যস্থল ইসলাম বলে দাবী করে আবার এটা মেনে নেয় যে, ধর্মনিরপেক্ষ ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এর সনদ ফিলিস্তিনিদের জাতীয় কাঠামো হবে? আমাদের ফিলিস্তিনি মুসলিম ভাইয়েরা কি স্বীকার করে নিবেন যে, ধর্মনিরপেক্ষতা তাদের জন্য জাতীয় কাঠামো হবে? হামাস নেতৃত্ব দাবি করে থাকে যে, তারা সাগর থেকে নদী পর্যন্ত ফিলিস্তিনের কোন অংশ ছেড়ে দেবে না। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়: তাদের অবস্থান ও কর্মকান্ডের সাথে দাবির কোন মিল নেই।

সেখানে কি এমন কোন সংগঠন হতে পারে যারা অখন্ড ফিলিস্তিনের অস্তিত্বে বিশ্বাসী আবার অধিকাংশ ফিলিস্তিনের বিক্রেতা গাদ্দারদেরকে গ্রহণ করে নিবেন যেন তারা এর নেতা হতে পারে এবং এ কথার ঘোষণা করতে পারে যে, তারা তার সহযোদ্ধা ভাই? মক্কায় বসে ফিলিস্তিন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে আর আলোচক হিসাবে ফিলিস্তিনের বিক্রেতা, গাদ্দার, মাহমুদ আব্বাসকে নির্ধারণ করে তার আদেশ-নিষেধ কোন অখন্ড ফিলিস্তিনের প্রবক্তা সংগঠন কি মেনে নিতে পারে? অখন্ড ফিলিস্তিনের দাবীদার সংগঠন সান্ধ্য আইনের প্রতি একাত্মতা পোষণ করতে পারে কিভাবে? অখন্ড ফিলিস্তিনের দাবীদার এমন সংগঠনের অস্তিত্ব কিভাবে সম্ভব যার ব্যুরো প্রধান জাতিসংঘে মাহমুদ আব্বাসের ‘ইসরাইলের পাশাপাশি শান্তিতে সহাবস্থানকারী একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার আহবানকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করে?

ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিনের দাবীদার এমন সংগঠনের অস্তিত্ব কিভাবে থাকতে পারে যারা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধ্যাশীল হবে এবং তা অনুসরণ করে যাবে। আবার সে আইন অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের সীমারেখার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন কামনা করবে? আন্তর্জাতিক আইন যে ইসরাইলকে জাতিসংঘের বৈধ সদস্যরাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং এর সীমানা রক্ষা করা বাধ্যতামুলক মনে করে সেটা কি আমরা ভুলে গেছি?

হামাস নেতৃত্বের নথি আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যে রাষ্ট্র চিত্রায়িত করেছে সেটা একদিকে যেমন ইসরাইলের সাথে সম্পর্ককে অস্বীকার করে, অপরদিকে ফিলিস্তিনের বিক্রেতা গাদ্দারের সাথে মিলে জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার কামনা করে। অধিকাংশ ফিলিস্তিনিকে হারানো ব্যতিত এমন রাষ্ট্র কল্পনাতীত।

ওসলো চুক্তির শর্ত, নিয়মাবলী ও বাধ্যবাধকতা মেনে পরিচালিত সংগঠন কিভাবে নিজেদেরকে অখন্ড ফিলিস্তিনের দাবীদার হিসাবে প্রকাশ করতে পারে? হামাস নেতৃত্ব এক্ষেত্রে অত্যন্ত দ্বন্দ্বপূর্ণ একটি নীতি অবলম্বন করেছে। তারা তাদের জনগণের সামনে, আরববাসী, মুসলিম এবং বিশ্ববাসীর সামনে ঘোষণা করেছে যে, তারা ওসলো চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু তারা স্বেচ্ছায় ও আগ্রহভরে সেই নর্দমাতেই ডুব দিয়েছে। ফলে তারা এর উপর ভিত্তি করেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এমনিভাবে তার আইন পরিষদ, সরকার, মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সকল অঙ্গনে অংশগ্রহণ করেছে। বরং তারা এটাকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী একটি বৈধ প্রশাসন হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে দিল। পাশাপাশি তারা তার প্রেসিডেন্টকে ফিলিস্তিনিদের বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে দিল। আরো একধাপ এগিয়ে তারা তাকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ হয়ে আলোচনা করার অধিকারও দিয়ে দিল। এমনিভাবে যখন সে প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বৈধতার স্বীকৃতি দিয়েছিল, তখন তারা তাকে সমর্থন জানিয়েছে।

সুতরাং এটি একটি খুব পরস্পরবিরোধী অবস্থান যে, বাতিলকে প্রত্যাখ্যান করা হবে এবং একই সময়ে কাল্পনিক রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য আবার তাকেই গ্রহণ করে নেয়া হবে। ওসলো চুক্তির নর্দমায় হামাস নেতৃত্বের এই সক্রিয় অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষভাবে আমেরিকা এখনও এটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে! তার আরেকটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো; সম্প্রতি ট্রাম্প দখলকৃত ফিলিস্তিন পরিদর্শন শেষে স্পষ্ট করেই বলেছে: হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।

এতকিছুর পরেও হামাস নেতৃত্ব দাবি করে থাকে যে, এ ধরণের ক্ষমতার নর্দমায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং ‘সমগ্র ফিলিস্তিন’ চেতনা ধারণ করার মাঝে কোন দ্বন্দ্ব নেই। সুবহানাল্লাহ! কিভাবে ফিলিস্তিনের বিত্রেুতা গাদ্দার প্রশাসন কর্তৃপক্ষের বৈধতার স্বীকৃতি দান করা ও ‘সমগ্র ফিলিস্তীন’ চেতনা লালন করা দুটি বিষয় একত্রিত হওয়া সম্ভব হতে পারে?! কিভাবে বেশিরভাগ ফিলিস্তিনের দাবী পরিত্যাগের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ও ইসরায়েল রাষ্ট্রের বৈধতা দানের স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত সত্ত্বায় অংশগ্রহণ ও ‘সমগ্র ফিলিস্তীন’ চেতনা ধারণ এ দুই এর মাঝে একত্রিত হওয়া সম্ভব হতে পারে?!

হামাস নেতৃত্ব মূলত: এই বিষয়ে দুটি বিপরীতমুখী নীতিতে কাজ করে থাকে। প্রথমতঃ মুসলিম উম্মাহর সামনে, মুজাহিদীনের সামনে, দ্বীনদারদের ও ফিলিস্তিনের আত্মমর্যাদাবোধের সামনে এবং সমগ্র ইসলামী দেশগুলির সামনে নিজেদের নীতির ক্ষেত্রে তারা বলে থাকে যে, আমরা ওসলো চুক্তির বিরোধী। দ্বিতীয়তঃ ফিলিস্তিনের বিত্রেুতাদের সামনে, গাদ্দারদের ও পশ্চিমাদের সামনে নিজেদের নীতির ক্ষেত্রে তারা বলে থাকে যে, আমরা ওসলো চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী।

তাই সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত হামাস নেতৃত্বের নথিটি এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বৈপরীত্য বিদ্যমান থাকাটা বিস্মিত হওয়ার মত কিছু নয়। এই নথির একুশতম অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয় যে, ওসলো চুক্তি এবং তা থেকে উদ্ভুত সকল কিছু প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিন্তু একত্রিশতম অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয় যে, ফিলিস্তিনি প্রশাসনের জন্য আবশ্যক হলো: ফিলিস্তিনি জনগণের সেবা করা এবং তার নিরাপত্তা, অধিকার এবং জাতীয় প্রকল্প রক্ষা করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা।

হামাস নেতৃত্ব দাবি করে যে, তারা ওসলো কর্তৃত্বে অংশগ্রহণের দ্বারা কিছুই ছাড় দেয়নি। কিন্তু আসল বাস্তবতা হচ্ছে: তারা অনেক কিছুই ছাড় দিয়েছে। উদাহারণস্বরূপ তারা ওসলো চুক্তির অপরাধকে বৈধতা দান করেছে। তারা প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের অপরাধের ক্ষেত্রে অংশীদার এজেন্টে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া বিশ্বাসঘাতকতা যেন একটি নিছক ইজতিহাদের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এমনিভাবে ফিলিস্তিনের বিত্রুয় যেন কেবলমাত্র একটি মতভেদের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনুরূপভাবে তাদেরকে পরিত্যাগ করা ও তাদের প্রতারণাগুলো প্রকাশ করে দেয়ার পরিবর্তে তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক অংশগ্রহণ যেন তাদের মৌলিক ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তা এ দলিলের ভিত্তিতে করছে যে, তাদের জন্য বাস্তবতার সাথে মিল রেখে পারষ্পারিক আচরণ করা আবশ্যক। তারা ফিলিস্তিনি জনগণ ও মুজাহিদীনের মাঝে আত্মসমর্পণের চিন্তাধারা অনুপ্রবেশের পথকে সুগম করেছে।

শহীদ আহমাদ ইয়াসিন ও রানতিসি রহ. এর সময়ে যে বিষয়টিকে নিষিদ্ধ  বিষয় বলে বিবেচনা করা হত, সেটাই আজ বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও প্রশংসিত হিসাবে পরিণত হয়েছে।

আমি সমগ্র বিশ্বের মুসলিম ভাইদের ও বিশেষকরে ফিলিস্তিনের জনগণের সামনে শহীদ (আমরা এমনই ধারণা রাখি) আব্দুল আজীজ আর-রানতিসি রহ. এর নীতি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। যিনি আত্মসমর্পণের ওসলো অপরাধকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তাতে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। পাশাপাশি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবন্ধ লিখেছেন, যার শিরোনাম ছিল “দখলদারিত্বের অধীনে ক্ষমতায়ন কি জাতীয় কৃতিত্ব নাকি দখলদারিত্বের কৃতিত্ব?” তাতে তিনি ‍উল্লেখ করেছেন:

“এটা সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যখন কোন দখলদার কোন দেশের উপর তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তখন সে সর্বাগ্রে যে বিষয়টি অর্জন করতে চায়, তা হলো; নাগরিকদের বিষয়গুলি পরিচালনা করার জন্য একটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ খুঁজে পাওয়া। ফলে দখলদারদের জন্য প্রশাসনের বোঝা হালকা হয়ে যায়। আর সে সময়েই সে দখলদারিত্বের স্বার্থ সংরক্ষণ করে ফেলে। যা প্রকৃতপক্ষে জনগণের সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থের সাথে আমূল অসঙ্গতিপূর্ণ হয়ে থাকে। ফলশ্রুতিতে তা দখলদারের অধীনে তলিয়ে যায়। অন্ততপক্ষে এই বিষয়ে যা বলা যেতে পারে, তা হলো: অচিরেই এই ক্ষমতার (দখলদারদের অধীনে ক্ষমতায়নের) প্রথম অভিপ্রায় হবে; দখলদারিত্বের অনুমোদন দেয়া, তার জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে দখলদারকে সাহায্য-সহযোগিতা করা, দখলদারিত্বের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, স্থায়িত্ব সংরক্ষণ করা। আর সে এ সব কিছুই করবে; দখলদার কর্তৃক তার ক্ষমতার অস্তিত্ব নিশ্চিত করার বিনিময়ে।”

শহীদ আব্দুল আজীজ আর-রানতিসি রহ. অত্র প্রবন্ধে আরো উল্লেখ করেছেন:

“তাই আমরা এখানে দখলদারিত্বের অধীনে ও তার অনুমোদনক্রমে যে কোন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে তার বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারি। যেমন: তার জন্য দখলদার জেনারেল কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করা আবশ্যক। আর এ শর্তাবলী শুধুমাত্র এই দখলদারের পক্ষেই উপকারী বলে প্রমাণিত হবে। আমরা নিজেরা নিজেদের সাথে প্রতারণা করতে পারি না, তাই আসুন একটু চিন্তা করি যে, দখলদার তার স্বার্থের পরিবর্তে তার শত্রুর স্বার্থকে অগ্রগামী করতে পারে? নিপীড়িত ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর স্বার্থে দখলদার নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিবে এটা কল্পনাও করি না।”

শহীদ আব্দুল আজীজ আর-রানতিসি রহ. তার উল্লেখিত প্রবন্ধে আরো উল্লেখ করেছেন:

“দখলদারদের অধীনে ফিলিস্তিনি প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এই অর্জন দ্বারা ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনের জনগণের কতটুকু স্বার্থ অর্জিত হয়েছে?!!! যদি সেখানে কোন কিছু অর্জিত হয়েও থাকে, তবে কি তা দখলদারদের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সাফল্য অর্জনের সাথে তুলনাযোগ্য?”!!! (নিশ্চয় না)

অতঃপর এই বলে তার বক্তব্য শেষ করেছেন যে, ফিলিস্তিনি জনগণ: “এই বক্তব্যের উপর আস্থাশীল যে, দখলদারদের অধীনে ক্ষমতায়ন, তা মূলত দখলদারদেরই অর্জন বা সাফল্য, তা কখনো জাতীয় অর্জন হতে পারে না। এমনকি যদি তার উদ্দেশ্য বিশুদ্ধও হয়।”

শহীদ আব্দুল আজীজ আর-রানতিসি রহ. এর ইন্তেকালের পর অনেক বৎসর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, পাশাপাশি অবস্থাসমূহও অনেক পরিবর্তিত হয়ে গেছে। দাঁড়িপাল্লা বিপরীত দিকে উল্টে গিয়ে বিপরীতে পরিণত হয়েছে। হামাসের নেতৃত্ব যে কোন কার্যকারিতা থেকে ওসলোর অপরাধ প্রত্যাখ্যান করার চেষ্টা চালাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইসমাইল হানিয়ে ওসলো গ্যাং নেতা মাহমুদ আব্বাসের সামনে আনুগত্যের শপথ নিচ্ছেন, অতঃপর হামাস নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি তার শ্রদ্ধা ঘোষণা করে এবং মক্কা চুক্তিতে মাহমুদ আব্বাসকে তার পক্ষ থেকে আলোচনা করার অনুমোদনও প্রদান করে। অথচ তা একই প্ল্যাটফর্মে, হামাসের নেতৃত্ব সমস্ত ফিলিস্তিনকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চায় এবং যে কোন প্রকার বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে ইসরায়েলের বৈধতা দানকেও অস্বীকার করতে চায়। ফলে ১৯৬৭ সালের সীমানার উপর একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বীকৃতি ঘোষণা করেন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে কোন ধরণের জিহাদকে তাদের দুটি অপমানজনক ধারা হিসাবে সীমাবদ্ধ করেন। ইসরায়েলকে রক্ষা করবে এমন আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এবং ফিলিস্তিনের বিক্রেতা গাদ্দারের সাথে জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে তা করা হবে।

আমার বক্তব্য শেষ করার আগে খালিদ মিশালের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করতে চাই। তিনি বলেছিলেন: আমি আশা করি ফিলিস্তিনের পরিণতির ব্যাপারে প্রত্যেক শঙ্কিত ব্যক্তিমাত্রই সতর্কবাণী ছড়িয়ে দিবেন। যখন তিনি যে কোন নির্বাচনের ফলাফলকেই আকড়েঁ ধরার উপর জোড় দিয়েছেন। এই বক্তব্যটি মূলগতভাবেই ইসলামী শরীয়তের সাথে দ্বন্দ্বপূর্ণ। উপরন্তু তা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যা ২০০৮ সালে কার্টার বলেছিলেন, হামাস তাকে বলেছিল যে; তারা যদি ফিলিস্তিনি জনগণের গণভোটের দ্বারা একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তাহলে ইসরাইলকে শান্তির সাথে থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিবে।

সুতরাং ফিলিস্তিন ও বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইয়েরা আমার!

ফিলিস্তিন হামাস নেতৃত্বের বা ওসলো কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন কোন সম্পত্তি নয়। বরং তা ইসলামের ভূমি, যা কাফেররা জবরদখল করে রেখেছে। ফলশ্রুতিতে সকল মুসলিমের উপর তাকে মুক্ত করা ফরযে আইন। এমনকি যদি এক্ষেত্রে হাজারো গণভোট বা সমগ্র বিশ্ব তার বিরোধিতা করে তবুও।

সুতরাং ফিলিস্তিন ও বিশ্বের সকল মুসলিম ভাইয়েরা আমার!

নিশ্চয় ফিলিস্তিন সকল মুসলিমের নিকট আমানতস্বরূপ। মুসলমানদের বৈধ অধিকার এই সমস্ত খেল-তামাশা, ছল-চাতুরি ও তালগোল পাকানোর দ্বারা সংরক্ষিত হবে না। তাছাড়া তাদের মধ্যে কেউই ফিলিস্তিনের বিক্রেতা, ধর্মনিরপেক্ষ গাদ্দারদেরকে বৈধতা দেয় না।

হে মুসলিম উম্মাহ!

আজ এটি পূর্ব তুর্কিস্তান থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত এবং ককেশীয় শিখর থেকে মধ্য আফ্রিকা পর্যন্ত একই আক্রমণের আওতায় পড়ে। এই ক্রুসেডার চীনা সাফাভীদের আক্রমণের মুখোমুখী হওয়ার জন্য উম্মাহর একত্রিত হওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। পাশাপাশি কুরআন-হাদীসের শিক্ষা আঁকড়ে ধরারও কোন বিকল্প নেই। যেমন মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ

অনুবাদ: “হে মু‘মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান দৃঢ় করবেন।” (সূরা মুহাম্মাদ-৭)

وَإِن تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لا يَكُونُوا أَمْثَالَكُمْ

অনুবাদ: “যদি তোমরা বিমুখ হও, তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারা তোমাদের মত হবে না।” (সূরা মুহাম্মাদ-৩৮)

উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ের উপর আমল করতেই মহান আল্লাহ তা‘আলার তাওফিকে তোমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা আমেরিকার উপর তাদের ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম আক্রমণ করেছেন। (এ সবই আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহে সম্ভব হয়েছে) তাছাড়া যামানার মুজাদ্দিদ মুজাহিদ শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. ঘোষণা করেন: আমেরিকা কখনো নিরাপত্তার স্বপ্নও দেখতে পারবে না, যতক্ষণ না আমরা ফিলিস্তিনে ও সকল মুসলিম ভূমিতে বাস্তবেই শান্তিতে বসবাস করতে পারব।

এই লক্ষ্য নিশ্চিত করতে এবং এটিকে সমর্থন করার জন্য শহীদ ডা. আবদুল আজীজ রানতিসি রহ. “কেন আমরা আমেরিকাকে অবরোধ করব না?” এই শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। সেই প্রবন্ধের শুরুতে তিনি লিখেন:

“এটা আমাদের প্রভুর ন্যায়বিচার, যা তিনি আমাদের জন্য সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছেন; তা হলো-আমাদের শক্ররা আমাদের সাথে যেরূপ আচরণ করবে, আমরাও তাদের সাথে সেরূপ আচরণ করব। যেমনটি পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে-

فمن اعتدى عليكم فاعتدوا عليه بمثل ما اعتدى عليكم

অনুবাদ: “সুতরাং যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে, তোমরাও তাকে অনুরূপ আক্রমণ করবে।” (সূরা বাকারা-১৯৪)

অতঃপর শাইখ অবরোধের প্রকারভেদ বর্ণনা করেন। যা দ্বারা আমরা আমেরিকানদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করতে পারি। উদাহারণস্বরুপ: অর্থনৈতিক অবরোধ, ভীতির অবরোধ ও গণমাধ্যমের অবরোধ এবং পর্যটন অবরোধ প্রভৃতি।

যখন আমেরিকা ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিপাইন, শিশান, কাশ্মীর ও অন্যান্য দেশে কখনও সরাসরি হামলা করে আবার কখনও আমাদের শত্রুদেরকে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে, যেন তার পক্ষ্য থেকে আমাদেরকে আক্রমণ করে। এমন সময় শাইখ ‘ভীতির অবরোধের ব্যাখ্যায় বলেনঃ

“আমেরিকাকে ভীতি প্রদর্শন করে তাদের এ শত্রুতার সমুচিত জবাব দেয়া আমাদের দায়িত্ব। সুতরাং, যারা আমাদের নিরাপত্তা কেড়ে নিয়েছে তাদেরকে নিরাপদে ছেড়ে দেয়া আমাদের জন্য জায়েয হবে না। মুসলিম রাষ্ট্রসমুহের সবখানেই আমেরিকা প্রবেশ করেছে কেবল শত্রুতা নিয়ে। সম্প্রতি তারাই তো আমাদের উপর তাদের নিকৃষ্ট মানসিকতা থেকে উদ্ভূত গণবিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। তারাই আমাদের যুবকদেরকে খতম করে দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের অনুগত শাসকদেরকে লেলিয়ে দিতে উস্কানি দিয়েছে। তারাই খাদ্য গ্রাস করতে মুসলমানদের সাথে ‍যুদ্ধ করছে। তারাই তো মুসলমানদের সম্পদ লুট করেছে। তারাই মুসলমানদেরকে বিভিন্নভাবে অপমানিত করে চলেছে, এমনকি তা টেলিভিশনের পর্দায়ও করে চলেছে। যেমনটি গুয়ান্তানামো কারাগারে করা হয়েছিল। আর বর্তমানে ইরাকে চলছে। মুসলমানদের উপর আমেরিকানদের শত্রুতার বর্ণনা শেষ হবার নয়।

এটা বোঝার জন্য আমেরিকানদের এ বক্তব্যই যথেষ্ট যে, “প্রত্যেক মুসলিমই সন্ত্রাসী, তাই বিশ্বের প্রতিটি স্থানে তাদের খোঁজ করতে হবে”।

সুতরাং কেন আমরা তাদের পিছু লাগবো না? যেমনিভাবে তারা আমাদের পিছু লেগেছে। কেন আমরা তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করব না? যেমনিভাবে তারা আমাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করছে। আমরা তা করার অধিকার রাখি বৈ কি। এটা কি আমাদের বৈধ অধিকার নয় যে আমরা আমাদের দেহগুলোকে বোমা হিসাবে তৈরি করবো?

তাছাড়া আমরা এমন গণবিধংসী অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি যা দিয়ে তারা আমাদের শিশু-বাচ্চাদেরকে হত্যা করে থাকে। যতক্ষণ না এই হত্যাকারীরা মনে করে যে, আমাদের নিরাপত্তা ব্যতিত তারা কখনো নিরাপত্তার স্বাদ ভোগ করতে পারবে না”। শাইখ রহ. এর কথা এখানে শেষ হয়েছে।

সুতরাং ফিলিস্তিন ও বিশ্ব মুসলিম ভাইয়েরা আমার!

আমি আপনাদেরকে উদ্বুদ্ধ করছি এবং আপনাদের নিকট ফরিয়াদ জানাচ্ছি যে, যারা আপনাদেরকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আহ্বান করে থাকে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। কারণ, তা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে করা হবে, যে আইন ইসরায়েলকে রক্ষা করবে। পাশাপাশি তা ফিলিস্তিনের বিত্রেুতা গাদ্দারের সাথে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে করা হবে।

ফিলিস্তিন ও বিশ্বের মুসলিম ভাইয়েরা আমার!

ফিলিস্তিনের বিত্রেুতা গাদ্দারদেরকে আমাদের বয়কট করতে হবে। আমরা তাদেরকে বৈধতার স্বীকারোক্তি দিবো না। নিশ্চয় মাহমুদ আব্বাস গাদ্দার, বিশ্বাসঘাতক, ফিলিস্তিন বিত্রেুতা এবং ইসরাইলি গোয়েন্দা বিভাগের সেবক। যদিও হামাস নেতৃত্ব তাকে ভাই ও প্রেসিডেন্ট বলে আখ্যায়িত করে থাকে।

আমি কি আপনাদের নিকট পৌঁছিয়েছি?

হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين، وصلى الله  على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم. والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × two =

Back to top button