নির্বাচিতবাংলাদেশসংবাদ

বসুন্ধরাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযানের নামে র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে বর্বর ক্র্যাক-ডাউন চলছে

নিরাপদ সড়ক চাই’ শিক্ষাথীদের আন্দোলনকে প্রায় সবাই বলেছে এটা কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যায় সঙ্গত দাবি। তাহলে তাদের ওপর এই সহিংসতা কেন?
আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ গুন্ডাপান্ডাদের দিয়ে শিশু-কিশোরদের রক্তাক্ত করার পরেও ক্ষান্ত হয়নি সরকার। এখন চলছে র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে বর্বর ক্র্যাক-ডাউন।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ১৮ থানায় ৩৫টি মামলা দেয়া হয়েছে, যে মামলায় অজ্ঞাতনামা হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের জড়িত করা হবে এবং ইতিমধ্যে ৪৫ জনকে আটকের কথা পুলিশ স্বীকার করেছে এবং ২২ জন রিমান্ডে আছে। নিরপরাধ এসব শিক্ষার্থীদের আটক করার পর কোমরে দড়ি বেঁধে রিমান্ডে নিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে। সারাদেশ জুড়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হানাদারি অভিযানে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গ্রেপ্তার ছাত্র ফয়েজ আহম্মেদ আদনানের আইনজীবী এ কে এম মুহিউদ্দিন ফারুক আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি নিজে দেখেছেন, পুলিশ কীভাবে ছাত্রদের নির্যাতন করেছে। গ্রেপ্তার সবাই ছাত্র অথচ পুলিশ মামলায় তা উল্লেখ করেনি। তারা কোনো ভাঙচুর করেনি। গ্রেপ্তার ছাত্র আমিনুল, হাসানুজ্জামানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর আইনজীবী আদালতকে জানান, আগামী সপ্তাহে তাঁদের পরীক্ষা আছে। জামিন না পেলে তাঁদের শিক্ষা জীবন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। আর মাসাদ মরতুজা বিন আহাদের আইনজীবী কামরুদ্দিন আদালতকে বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রকে পুলিশ সেদিন মারধর করেছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। হাত ও ঘাড়ে জখম হয়েছে। ছাত্রদের আইনজীবীরা বলেছেন নিরীহ এসব ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে মারধর করেছে পুলিশ। অভিযানের নামে সরাসরি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর এক নির্মম আগ্রাসন চালানো হচ্ছে।
‘আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী স্কুল-কলেজ পড়ূয়াদের অভিভাবকরা অজানা আতঙ্কে উৎকন্ঠিত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সরকারের ক্রোধের আগুনে পড়া স্কুল পড়ূয়া সন্তানদের ওপর কী বিভীষিকা নেমে আসবে তা নিয়ে শিহরিত হয়ে উঠেছে অভিভাবকরা। বসুন্ধরাসহ ঢাকা মহানগরীতে হাজার হাজার সরকারিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা চিরুনী অভিযান চালিয়েছে।
সরকার এখন প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। এরা মানসিক বৈকল্যগ্রস্থ, ক্ষমতায় থাকার জন্য শিশু-কিশোরদের রক্ত ঝরাতেও দ্বিধা করেনি। শিশু-কিশোরদের জেগে ওঠাতে ভয় পেয়ে গেছে দুর্নীতিবাজ সরকার। কেননা এ আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁদের আসল চেহারা জনগণের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে। উপরন্তু শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সাথে যে ব্যবহার করেছে তাতে জনগণের সাথে বন্ধুত্বের নামে উপহাসের বিষয়টা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মিডিয়া শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগের এই সশস্ত্র হামলাকে সহিংস হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ছাত্রলীগ আন্তর্জাতিকভাবে টেরোরিস্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
কিন্তু সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে পুলিশসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো তাঁদের বর্বর ক্র্যাক-ডাউন ও অমানবিক অত্যাচারকে বৈধতা দেওয়ার জন্য সুর তুলেছে, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী পলাতকরা জঙ্গি গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য। তাই পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে এসব শিক্ষাথীদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের মানুষ জঙ্গিকে কোন সমস্যা মনে করে না কারণ তাদের দ্বারা কোন সাধারণ মানুষের জান মালের ক্ষতি হয় নাই। বাকী তাগুতদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে কেউ কেউ খারাপ মনে করে।
কিন্তু সরকারের যেসকল ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা পুলিশ ও তাগুত বাহিনীর ছত্রছায়ায় হেলমেট পরে রামদা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, প্রকৃতপক্ষে তারাই দেশ ও জনগণের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাড়িঁয়েছে। তারা প্রকাশ্যভাবে দেদারসে অপরাধ করে বুক ফুলিয়ে হাঁটছে। তাগুত সরকার তাদের বিচার করবে না, তাদের কাউকে আজ পর্যন্ত গ্রেফতার করা তো দূরের কথা ধর্ষণে সেঞ্চুরি করলেও বাহবা দিয়ে সোনার ছেলে এমনটি করতে নেই” বলতেও শোনা যায়!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + 11 =

Back to top button