ইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহবালাকোট মিডিয়ামিডিয়া

প্রকাশিত হলো || দু’আ মুমিনদের অস্ত্র

প্রকাশিত হলো..

বালাকোট মিডিয়া পরিবেশিত
দু’আ মুমিনদের অস্ত্র

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার রসুলের মাধ্যমে আমাদেরকে বিভিন্ন দু’আ শিক্ষা দিয়েছেন তার থেকে চেয়ে নেয়ার জন্য। সকল বিপদে-আপদে, শত্রুর মোকাবেলায়, জিহাদের ময়দানে সরবক্ষেত্রে এটা মুমিনদের ও মুজাহিদদের জন্য একটি হাতিয়ার।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:
“আর স্মরণ কর সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট কাতর কন্ঠে সাহায্যের আবেদন করেছিলে, আর তিনি তোমাদের সেই আবেদন কবুল করেছিলেন, (আর তিনি বলেছিলেন) আমি তোমাদেরকে এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবো, যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে। আর আল্লাহ এটা শুধু তোমাদের সুসংবাদ দেয়ার জন্য এবং তোমাদের মনে প্রশান্তি আনয়নের জন্য করেছেন, সাহায্য শুধু আল্লাহর তরফ থেকেই আসে, আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।”
(সুরা আনফাল, ৮: ৯-১০)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা অন্যত্র আরো বলেন:
“এবং তোমার প্রতিপালক বলেনঃ তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। বস্তুত, যে অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (যে আমাকে ডাকে না এবং আমার একত্ববাদে বিশ্বাস করে না) নিশ্চয়ই তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”
(সুরা মু’মিন, ৬০)

“দু’আ মুমিনদের অস্ত্র” শির্ষক বইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪৫টি দোয়া রয়েছে। জিহাদের ময়দানের মুজাহিদদের জন্য এবং সকল মুজাহিদদের জন্য এখানে বিভিন্ন পরিস্থিতির সময়োপযোগী দু’আ গুলো পাবেন ইনশা-আল্লাহ।

PDF

https://banglafiles.net/index.php/s/8QqddQacKNp4mXN

https://archive.org/download/dua-muminer-ostro/.pdf

https://ia601507.us.archive.org/0/items/Dua-is-weapen-of-belivers-balakotMedia/DuaIsWeapenOfBelivers.pdf

http://www.mediafire.com/file/5g96grg9hg2yl1m/53.DuaIsWeapenOfBelivers.pdf/file

WORD

https://banglafiles.net/index.php/s/N3jdiBcKEFPQBZc

https://archive.org/download/dua-muminer-ostro/.docx

****************

 

দু‘আ মুমিনদের অস্ত্র

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার জন্য। সালাত এবং শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) উপর। অতপরঃ আলোচ্য গ্রন্থটি একজন অপিরিচত লেখকের লেখা বই “আযকার আল-জিহাদ” এবং মিজান আত-তুয়াইজিরি’র একটি খুতবা “আদ-দোয়া” থেকে নেয়া হয়েছে এবং অন্যান্য অতিরিক্ত তথ্য যেখানে সম্ভব সেখানে যোগ করা হয়েছে।

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার জন্য। সালাত এবং শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) উপর। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন।

وَاِ ذَا سَاَ لك عِبَا دِيْ عَنِّيْ فَاِ نِّيْ قَرِيْبٌۗاُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّا عِ اِذَا دَعَا نِ فَلْيَسْتَجِيْبُوْا لِيْ وَلْيُؤْمِنُوْا بِيْ لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُوْنَ

অর্থঃ “এবং যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে তখন তাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয়ই আমি নিকটবর্তী; কোন আহ্বানকারী যখনই আমাকে আহবান করে তখনই আমি তার আহবান সাড়া দিয়ে থাকি। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে , তা হলেই তারা সঠিক পথে চলতে পারবে।” (সুরা বাকারা, : ১৮৬)

 

অন্য আরেকটি আয়াতে তিনি সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ

وَكَاَ يِّنْ مِّنْ نَّبِيٍّ قٰتَلَۙمَعَهٗ رِبِّيُّوْنَ كَثِيْرٌۚفَمَا وَهَنُوْا لِمَاۤ اَصَا بَهُمْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَمَا ضَعُفُوْا وَمَا اسْتَكَا نُوْاۗوَا للّٰهُ يُحِبُّ الصّٰبِرِيْنَ

وَمَا كَا نَ قَوْلَهُمْ اِلَّاۤ اَنْ قَا لُوْا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَاِ سْرَا فَنَا فِيْۤ اَمْرِنَا وَ ثَبِّتْ اَقْدَا مَنَا وَا نْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ

فَاٰ تٰٮهُمُ اللّٰهُ ثَوَا بَ الدُّنْيَا وَحُسْنَ ثَوَا بِ الْاٰ خِرَةِۗوَا للّٰهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ

অর্থঃ “আর এমন অনেক নবী ছিলেন, যাদের সাথে প্রভুভক্ত  লোকেরা যুদ্ধ করেছিল; উপরন্তু আল্লাহর পথে যা সংঘটিত হয়েছিল তাতে তারা নিরুৎসাহিত হয় নি, শক্তিহীন হয় নি ও বিচলিত হয় নি এবং আল্লাহ ধৈর্যশীলগণকে ভালবাসেন।

আর একথা ব্যতীত তাদের অন্য কোন কথা ছিল না যে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আমাদের অপরাধ এবং আমাদের কাজের বাড়াবাড়িসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদের পা সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফিরদের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন। অন্তরন আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব পুরষ্কার প্রদান করলেন এবং পরকালে শ্রেষ্ঠতর পুরষ্কার দেবেন; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন।” (সুরা আলে ইমরান, : ১৪৬১৪৮)

তিনি সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরও বলেনঃ

اِذْ تَسْتَغِيْثُوْنَ رَبَّكُمْ فَا سْتَجَا بَ لَـكُمْ اَنِّيْ مُمِدُّكُمْ بِاَ لْفٍ مِّنَ الْمَلٰٓئِكَةِ مُرْدِفِيْنَ

وَمَا جَعَلَهُ اللّٰهُ اِلَّا بُشْرٰى وَلِتَطْمَئِنَّ بِهٖ قُلُوْبُكُمْۚوَمَا النَّصْرُ اِلَّا مِنْ عِنْدِ اللّٰهِۗاِنَّ اللّٰهَ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ

অর্থঃ আর স্মরণ কর, সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট কাতর কন্ঠে  সাহায্যের আবেদন করেছিলে, আর তিনি তোমাদের সেই আবেদন কবুল করেছিলেন, (আর তিনি বলেছিলেন) আমি তোমাদেরকে এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবো যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে। আর আল্লাহ এটা শুধু তোমাদের সুসংবাদ দেয়ার জন্য এবং তোমাদের মনে প্রশান্তি আনয়নের জন্য করেছেন, সাহায্য শুধু আল্লাহর তরফ থেকেই আসে, আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সুরা আনফাল, : ১০)

 

এবং আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আক্রমণের সময় বলতেনঃ

اللّٰهُمَّ أَنْتَ عَضُدِي، وَأَنْتَ نَصِيْرِي، بِكَ أَحُوْلُ وَبِكَ أَصُوْلُ، وَبِكَ أُقَاتِلُ

অর্থঃ “হে আল্লাহ, আপনি আমার সমথর্নকারী এবং আপনি আমার সাহায্যকারী, আপনার দ্বারা আমি শত্রুদেরকে তাড়িয়ে দেই এবং আপনার দ্বারা আমি তাদের উপর আক্রমণ করি এবং আপনার দ্বারা আমি যুদ্ধ করি।[সহিহ আবু দাউদ২২৯১, সহিহ আততিরমিজি২৮৩৬, সহিহ আলজামে৪৭৫৭, শায়খ আলবানি (রহ)’ মতে সহিহ]

অতপরঃ কোন একটা জাতি যখন তাঁর শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, হোক তা স্থলে, অন্তরীক্ষে বা জলে অস্ত্রই হল তাঁর একমাত্র হাতিয়ার। তাই বতর্মান বিশ্বে কোন একটি জাতি কতটা শক্তিশালী বা দুর্বল  এটা নিরুপিত হয় মূলত তাঁর ভান্ডারে কি পরিমাণ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ মজুদ আছে তার উপর।

কিন্তু এমন একটি অস্ত্র আছে যার কোন কারখানা পশ্চিমা বিশ্বে নেই অথবা এই অস্ত্র তৈরি করার কোন সুযোগ-সুবিধাও তাদের নেই; সর্বাধিক ক্ষতি সাধনের জন্য এটি সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। এটি একটি মর্যাদাবান অস্ত্র, যে অস্ত্রের উত্তরাধিকারী সবাই হতে পারে না,একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোকজন ব্যতীত।

তারা হল যারা তাগুতকে অস্বীকার করে এবং কেবল আল্লাহ (সুবঃ) ইবাদাত করে এবং আল্লাহর সাথে কোন শরীক স্থির করা ব্যতীত তাকে ডাকে এটি হল সেই মহৎ অস্ত্র যা যুগে যুগে নবীরাসুলগণ(🙂 এবং তাঁদের সঙ্গীসাথীগণ ব্যবহার করে আসছেন

এটি হল সেই অস্ত্র, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা নূহ (আঃ)কে ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন এবং তার জাতিকে মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে নিমজ্জিত করেছিলেন। এটি হল সেই অস্ত্র, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা মুসা (আঃ)কে রক্ষা করেছিলেন জালিম শাসক ফেরাউন থেকে, সালেহ (আঃ)কে রক্ষা করেছিলেন এবং তার জাতিকে ধ্বংস করেছিলেন। এটি হল সেই অস্ত্র, যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা আদ জাতিকে লাঞ্চিত করেছিলেন এবং হুদ (আঃ)কে তাদের উপর বিজয় দান করেছিলেন।

এবং এই সেই অস্ত্র যার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ (সাঃ)কে বিভিন্ন যুদ্ধে সম্মানিত করেছেন। এটি হল সর্বাধিক ক্ষতি সাধনকারী সেই অস্ত্র যার মাধ্যমে রাসুল (সাঃ) এবং সাহাবাগণ (রাদিঃ) তাদের সময়কার দুই সুপার পাওয়ার রোম ও পারস্যের উপর আক্রমণ করেছিলেন এবং তাদেরকে পরাজিত ও লাঞ্চিত করেছিলেন এবং আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ইসলামের জন্য বিজয় দান করেছিলেন ।

এই অস্ত্র ব্যবহার করার প্রসঙ্গে আল্লাহ (সুবঃ) বলেনঃ

وَا لَّذِيْنَ يُؤْتُوْنَ مَاۤ اٰتَوْا وَّ قُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ اَنَّهُمْ اِلٰى رَبِّهِمْ رٰجِعُوْنَۙ

অর্থঃ “এবং তোমার প্রতিপালক বলেনঃ তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। বস্তুত,যে অহংকারবশত আমার ইবাদাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (যে আমাকে ডাকে না এবং আমার একত্ববাদেবিশ্বাস করে না) নিশ্চয়ই তারা লাঞ্চিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সুরা মুমিন, ৬০)

তাই আমরা এখানে চাক্ষুস প্রমাণসহ ৪৫ টি অস্ত্র আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব

১মঃ

لَا يُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَاۗلَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْۗرَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِيْنَاۤ اَوْ اَخْطَأْنَاۚرَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَاۤ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَاۚرَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَا قَةَ لَنَا بِهٖۚوَا عْفُ عَنَّاۗوَا غْفِرْ لَنَاۗوَا رْحَمْنَاۗاَنْتَ مَوْلٰٮنَا فَا نْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ

অর্থঃ “হে আমার প্রতিপালক! যদি আমরা ভুলে যাই অথবা না জেনে ভুল করি সে জন্যআমাদেরকে দোষারোপ করবেন না; হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের পূবর্বর্তীদের উপর যেরূপ ভার অপর্ণ করেছিলেন, আমাদের উপর তদ্রুপ ভার অপর্ণ করবেন না;

হে আমাদের প্রভু যা আমাদের শক্তির অতীত ঐরূপ ভার বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেন না এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও মাজর্না করুন এবং আমাদেরকে দয়া  করুন; আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব আমাদেরকে কাফিরদের বিরুদ্ধে সাহায্য করুন।” [সুরা বাকারা২৮৬]

এটি সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত যে, আল্লাহ এই আয়াতে উল্লেখিত রাসুল(সাঃ) সাহাবায়ে কেরামের দোয়ার উত্তর দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ তাআলা বলেনঃআমি ইতোমধ্যে দোয়ার উত্তর দিয়ে দিয়েছি

(মুসলিম শরীফের বণর্নায় (১২৬) ইবেন আব্বাস (রাঃ) এটি বর্ণনা করেন) অন্য একটি বর্ণনায় আছেঃ আল্লাহ রাসুল (সাঃ) বলেন,

আল্লাহ বলেনঃ তুমি এই দোয়ার একটি অক্ষর পাঠ করবে

আর আমি তা কবুল করবো না এটা হতে পারে না” (বায়হাকি, আসসুনান আস সুগরা, ১০০২, ১০০৩)

২য়ঃ

قَالَ رَبِّ انْصُرْنِيْ عَلَى الْقَوْمِ الْمُفْسِدِيْنَ

অর্থঃ “হে আমার  প্রতিপালক! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন!”(সুরাআনকাবুত, ২৯:৩০)

এটি হচ্ছে সেই দোয়া যা লুত (আঃ) তার জাতির বিরুদ্ধে করেছিলেন তাই এই দোয়া কুফফারেদর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায় যদি তারা প্রকাশ্যভাবে ফাহেশা সমাজে ছড়াতে চায় যেমনঃ যিনা, ব্যভিচার এবং সমকামীতা ইত্যাদি

 

৩য়ঃ

اللّٰهُمَّ أعِنَا عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ كَسَبْعِ يُوْسُفَ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনিই তাদের উপর দূর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন যেভাবে আপনি ইউসুফ (আঃ)এর জাতির উপর সাত বছর দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিয়েছিলেন।” (সহীহ বুখারি৪৪৯৬, মুসলিম২৭৯৮)

৪র্থঃ

رَبَّناَ أعِنَا وَلَا تُعِنْ عَلَيْناَ،وَانْصُرْناَ وَلَا تَنْصُرْ عَلَيْناَ، وَامكُرْلنا وَلَا تَمْكُرْ عَلَيْناَ،وَاهدنا وَيَسِّر الهُدَى إِلَيْناَ، وَانْصُرْناَ عَلَى من بَغَى عَلَيْناَ

অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে সাহায্য করুন এবং আমাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন না। আমাদেরকে বিজয় দান করুন এবং আমাদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করবেন না!আমাদের জন্য পরিকল্পনা করুন এবং আমাদের বিরুদ্ধে কৌশল করবেন না! আমাদেরকেহেদায়েত দান করুন এবং হেদায়েত আমাদের জন্য সহজ করে দিন। এবং আমাদেরকে বিজয় দান করুন তাদের উপরে যারা আমাদের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করেছে।”

(মুসনাদে আহমাদ, /২২৭; আবু দাউদ, ১৫১০,১৫১১; আননাসাঈঃ আলইয়াওম ওয়াললাইল, ৬০৭; আততিরমিজি ৩৫৫১; ইবনে মাজাহ, ৩৮৩০ইমাম তিরমিজি (রহঃ)’ মতে হাসান সহিহ, ইবেন হিব্বান (রহঃ)’ মতে সহিহ)

 

 ৫মঃ

اللّٰهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ،{مُجْرِىَ السَّحَابِ}، سَرِيْعَ الْحِسَاب {هَازِمَ الأحْزَابِ}، اللّٰهُمَّ اهزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ {وَانْصُرْناَ  عليهم}

অর্থঃ “হে আল্লাহ! কিতাব নাযিলকারী, তড়িৎ হিসাব গ্রহনকারী । শত্রুবাহিনীকে পরাজিত এবং প্রতিহত করুন এবং তাদেরকে দমন ও পরাজিত করুন। তাদের মধ্যে  কম্পন সৃষ্টি করে দিন।”

(সহিহ আল বুখারি, ২৭৭৫, ৩৮৮৯, ৬০২৯, ৭০৫১; সহিহুল মুসলিম, ১৭৪১,১৭৪২)

 

৬ষ্ঠঃ

اللّٰهُمَّ انْصُرْناَ عَلَى مَنْ يَظْلِمُنَا، وخذْ مِن بِثَأْرِناَ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! যারা আমাদের উপর জুলুম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন, আমাদের পক্ষ তাদের থেকে প্রতিশোধ নিন।”

(ইমাম তিরমিজি থেকে বর্ণিত তুহফাত আলআহওয়াজি (১০/৫১) তে হাসান গারিব হিসেবে উল্লেখিত!আলমুস্তাদরাক(/১৫৪) আলহাকিম মুসলিমের শর্তে সহিহ বলেছেন)

 

৭মঃ

اللّٰهُمَّ قاَتِلُ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يَصُدُّنَ عَنْ سَبِيْلِكَ، وَيُكَذِّبُوْنَ رَسُلُكَ، وَلَا يُؤْمِنُوْنَ بوَعْدِكَ، اللّٰهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كلمتهم، وَأَلْق فِيْ قُلُوْبِهِمُ الرعبَ، وَاجْعَلْ عَلَيْهِمْ رِجْزَكَ وَعَذَابَكَ إِلَهَ الْحَقِّ، اللّٰهُمَّ قاَتِلُ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ أُوتُوا الْكِتَابَ.

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি সেই সব কাফিরদেরকে ধ্বংস করে দিন যারা আপনার পথে বাঁধা দান করে, রাসূলেদরকে অস্বীকার করে এবং আপনার ওয়াদাসমূহে বিশ্বাস করে না! তাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করে দিন,  তাদের অন্তরে ভয় ঢুকিয়ে দিন এবং তাদের উপর আপনার আযাব ও যন্ত্রণা নাযিল করুন যা তাদের জন্য প্রাপ্য  ছিল। হে মহান সত্তা, যিনি ইবাদাতের একমাত্র যোগ্য।হে আল্লাহ! তাদেরকে ধ্বংস করে দিন যাদের উপর পূর্বের কিতাব নাযিল করেছিলেন।”

(ইমাম আহমাদ (রহঃ) মারফু সূত্রে স্বীয় মুসনাদে একটি দীর্ঘ হাদিস উল্লেখ করেছেন, /৪২৪; ইবনে খুজাইমা, ১১০০)

৮মঃ

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدِّيْنِ وَ غَلَبَةِ الْعَدُوِّ وَ شَمَاتَةِ الْأعْرَاءِ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! ঋণে জর্জরিত হওয়া থেকে আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই, শত্রু দ্বারা পরাভূত হওয়া থেকে এবং শত্রু আমার উপর হাসাহাসি করবে তা থেকে আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই।”

(মুসনাদে আহমাদ /১৭৩; আননাসা, ৫৪৭৫,৫৪৮৭; সিলসিলা আসসাহিহাহ, ১৫৪১)

৯মঃ

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ أَنْ أمُوْتَ فِيْ سَبِيْلِكَ مُدْبِراً

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া অবস্থায় মৃত্যুবরন করা থেকে আশ্রয় চাই।”

(আবু দাউদ, ১৫৫২, ১৫৫৩; নাসাঈ, ৫৫৩১, ৫৫৩২; আলহাকিম সহিহ আখ্যায়িত করেছেন,আল মুস্তাদরাক, ১৯৪৮)

 

১০মঃ শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার সময় কী বলতে হয় ??

 

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا لَقِيْتُمْ فِئَةً فَا ثْبُتُوْا وَا ذْكُرُوا اللّٰهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَۚ

অর্থঃ “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন বাহিনীর সাথ প্রত্যক্ষ মোকাবেলায় অবতীর্ণ হবে, তখন দৃঢ় ও স্থির থাকবে এবং আল্লাহকে  বেশী বেশী স্মরণ করবে, আশা করা যায় যে তোমরা সাফল্য লাভ করবে।” (সুরা আনফাল, :৪৫)

 

১১তমঃ

وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَـالُوْتَ وَجُنُوْدِهٖ قَا لُوْا رَبَّنَاۤ اَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَّثَبِّتْ اَقْدَا مَنَا وَا نْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْکٰفِرِيْنَۗ

অর্থঃ “হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে পূর্ণ সবর দান করুন, আমাদের পা সমূহ অটল রাখুন এবং কাফির জাতির বিরুদ্ধে  আমাদেরকে সাহায্য করুন।” (সুরা বাকারা, :২৫০)

বনী ইসরাইলরা যখন জালুত এবং তার শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে অগ্রসর হয়েছিল তখন তারা এই দোয়া করেছিল

১২তমঃ

وَمَا كَا نَ قَوْلَهُمْ اِلَّاۤ اَنْ قَا لُوْا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَاِ سْرَا فَنَا فِيْۤ اَمْرِنَا وَ ثَبِّتْ اَقْدَا مَنَا وَا نْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ

فَاٰ تٰٮهُمُ اللّٰهُ ثَوَا بَ الدُّنْيَا وَحُسْنَ ثَوَا بِ الْاٰ خِرَةِۗوَا للّٰهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِيْنَ

অর্থঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আমাদের অপরাধ এবং আমাদের কাজের বাড়াবাড়িসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদের পা সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফিরদের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব পুরষ্কার প্রদান করলেন এবং পরকালে শ্রেষ্ঠতর পুরষ্কার দিবেন; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন।” (সুরাআলে ইমরান, :১৪৭১৪৮)

১৩তমঃ যখন মানুষ এবং জিন শত্রু দ্বারা ভয় দেখানো হয় তখন কি বলতে হয়

 

اَلَّذِيْنَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوْا لكم فَا خْشَوْهُمْ فَزَا دَهُمْ اِيْمَا نًاۖوَّقَالُوْا حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ

অর্থঃ “আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট, এবং তিনি উত্তম অভিভাবক।” (সুরা আলেইমরান, :১৭৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ

اَلَّذِيْنَ قَالَ لَهُمُ النَّا سُ اِنَّ النَّا سَ قَدْ جَمَعُوْا لكم فَا خْشَوْهُمْ فَزَا دَهُمْ اِيْمَانًاۖوَّقَا لُوْا حَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ

فَا نْقَلَبُوْا بِنِعْمَةٍ مِّنَ اللّٰهِ وَفَضْلٍ لَّمْ يَمْسَسْهُمْ سُوْٓءٌۙوَّا تَّبَعُوْا رِضْوَا نَ اللّٰهِۗوَا للّٰهُ ذُوْ فَضْلٍ عَظِيْمٍ

অর্থঃ “যাদেরকে লোকেরা বলেছিলঃ তোমাদের বিরুদ্ধে লোকজন সমবেত হয়েছে, অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় কর; কিন্তু  এতে তাদের বিশ্বাস  আরও বেড়ে গিয়েছিল এবং তারা বলেছিল আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট, এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। অতঃপর তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সম্পদসহ প্রত্যাবর্তিত হয়েছিল, তাদেরকে কোন  অমঙ্গল স্পর্শ করে  নি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল; আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” (সুরা আল ইমরান১৭৩১৭৪)

১৪তমঃ শত্রু ষড়যন্ত্র করলে তা থেকে বাঁচার জন্য যা বলতে হয়

 

فَسَتَذْكُرُوْنَ مَاۤ اَقُوْلُ لَـكُمْۗوَاُ فَوِّضُ اَمْرِيْۤ اِلَى اللّٰهِۗاِنَّ اللّٰهَ بَصِيْرٌ بِۢا لْعِبَا دِ

অর্থঃ আমি আমার ব্যাপারটা আল্লাহর উপর  সমর্পণ করছি; নিশ্চয়ই আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন। (সুরা গাফির, ৪০: ৪৪)

এখানে ফেরাউনের সম্প্রদায়ের সেই মুমিন ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে যিনি এক আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিলেন এবং তার সম্প্রদায়কে সৎ উপেদশ দিয়েছিলেন তিনি যখন আল্লাহর কাছেতার অবস্থার কথা বর্ণনা করে এই দোয়া করেন তখন আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছিলেন

কুরআনে এই ভাবে এসেছেঃ

فَوَقٰٮهُ اللّٰهُ سَيِّاٰتِ مَا مَكَرُوْا وَحَاقَ بِاٰلِ فِرْعَوْنَ سُوْٓءُ الْعَذَابِۚ

“অতঃপর, আল্লাহ তাকে তাদের ষড়যন্ত্রের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন এবং নিকৃষ্ট শাস্তি পরিবেষ্টন করল ফেরাউন সম্প্রদায়কে।” (সুরা গাফির, ৪০:৪৫)

 

১৫তমঃ শত্রু হত্যার জন্য খোঁজ করলে তা থেকে বাঁচার জন্য যা বলতে হয়

 

فَخَرَجَ مِنْهَا خَآئِفًا يَّتَرَقَّبُۖقَالَ رَبِّ نَجِّنِيْ مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি জালিম সম্প্রদায় থেকে আমাকে রক্ষা করুন।’”(সুরা কাসাস, ২৮:২১)

وَجَآءَ رَجُلٌ مِّنْ اَقْصَا الْمَدِيْنَةِ يَسْعٰىۖقَالَ يٰمُوْسٰۤى اِنَّ الْمَلَاَ يَأْتَمِرُوْنَ بِكَ لِيَـقْتُلُوْكَ فَاخْرُجْ اِنِّيْ لَـكَ مِنَ النّٰصِحِيْنَ

فَخَرَجَ مِنْهَا خَآئِفًا يَّتَرَقَّبُۖقَالَ رَبِّ نَجِّنِيْ مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ

অর্থঃ “নগরের প্রান্ত হতে এক লোক ছুটে আসল। সে বলল- ‘হে মূসা! পারিষদবর্গ তোমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে, কাজেই তুমি বাহিরে চলে যাও, আমি তো  তোমার মঙ্গলকামী।” ভীত সতর্ক অবস্থায় তিনি তথা হতে বের হয়ে পড়লেন এবং বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি জালিম সম্প্রদায় থেকে আমাকে রক্ষা করুন।’ (সুরা কাসাস-২০-২১)

১৬তমঃ যখন কোন রাস্তা অভিমুখে এগিয়ে যাওয়া হয় অথবা রাস্তা যদি অপরিচিত হয় তখন যা বলতে হয়

 

وَلما تَوَجَّهَ تِلْقَآءَ مَدْيَنَ قَالَ عَسٰى رَبِّيْۤ اَنْ يَّهْدِيَنِيْ سَوَآءَ السَّبِيْلِ

অর্থঃ আশা করি, আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করবেন। (সুরা কাসাস, ২৮:২২)

এখানে আল্লাহ (সুবঃ) হযরত মুসা (আঃ) এর কথা উল্লেখ করে বলেনঃ যখন মুসা(আঃ) মাদইয়ান অভিমুখে যাত্রা করেন তখন বললেনঃ “আশা করি, আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করবেন।”

১৭তমঃ যখন শত্রুদের সংখ্যা অনেক এবং মুসলিমদের সংখ্যা অনেক কম তখন কি বলতে হয়?

فَدَعَا رَبَّهٗۤ اَنِّيْ مَغْلُوْبٌ فَانتصر

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক! আমি তো পরাজিত, অতএব আমাকে সাহায্য করুন। (সুরা কামার, ১০)

আল্লাহ বলেন,

كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوْحٍ فَكَذَّبُوْا عَبْدَنَا وَقَا لُوْا مَجْنُوْنٌ وَّا زْدُجِرَ

فَدَعَا رَبَّهٗۤ اَنِّيْ مَغْلُوْبٌ فَانتصر

فَفَتَحْنَاۤ اَبْوَا بَ السَّمَآءِ بِمَآءٍ مُّنْهَمِر

অর্থঃ “এদের পূর্বে নূহ (আঃ) এর জাতিও মিথ্যারোপ করেছিল- তারা আমার বান্দার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল এবং বলেছিলঃ এ তো এক পাগল এবং তাকে ধমকিয়েছিল। অতঃপর সে তার প্রতিপালককে আহবান করে বলেছিলঃহে আমার প্রতিপালক! আমি তো পরাজিত, অতএব আমাকে সাহায্য করুন। তখন আমি আকাশের দুয়ার প্রবল বৃষ্টিসহ উন্মুক্ত করে দেই।” (সুরা কামার, ৯-১১)

১৮তমঃ যখন কিছু মুসলিম শত্রুদের বিশাল বাহিনী এবং তাদের শক্তি দেখে ভয় পেয়ে যায় তখন জ্ঞানী এবং খাঁটি ইমানদারগণ তাদেরকে এই আয়াত স্মরণ করিয়ে উৎসাহ দিবে

 کَمْ مِّنْ فِئَةٍ قَلِيْلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً کَثِيْرَةً بِۢاِذْنِ اللّٰهِ

অর্থঃ “কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাহিনী আল্লাহর ইচ্ছায় কত বিশাল বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে।” (সুরা বাকারা, :২৪৯)

আল্লাহ তালুত এবং তার মুজাহিদ বাহিনীর কথা কোরআনে উল্লেখ করে বলেনঃ

“অন্তরণ তালুত যখন সৈন্যদলসহ বের হয়েছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ একটা নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করবেন,  অতঃপর ওটা হতে যে পান করবে সে কিন্তু  আমার দলভুক্ত থাকবে না এবং যে নিজ হাত দ্বারা আঁজলা পূর্ণ করে নিবে তা ব্যতীত যে তা আস্বাদন করবে না সে নিশ্চয়ই আমার কিন্তু তাদের মধ্যে অল্প লোক ব্যতীত সবাই সেই নদীর পানি পান করল, অতঃপর যখন সে ও তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী সঙ্গীগণ তা অতিক্রম করে গেল তখন তারা বললঃ জালুত এবং তার সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করার ক্ষমতা আজ আমাদের নাই। পক্ষান্তরে, যারা বিশ্বাস  করতো যে তাদেরকে আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে তারা বলেছিলঃ কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাহিনী আল্লাহর ইচ্ছায় কত বিশাল বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে।” বস্তুত আল্লাহ সবরকারীদের সাথে রয়েছেন।” (সুরা বাকারা, :২৪৯)

 

 

১৯তমঃ

اَ لَاۤ اِنَّ نَصْرَ اللّٰهِ قَرِيْب

অর্থঃ “সতর্ক হও, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।” (সুরা বাকারা, :২১৪)

আল্লাহ (সুবঃ) বলেন,

“তোমরা কি মনে করে নিয়েছো যে; তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করেই ফেলবে? অথচ তোমাদের  অবস্থা এখনও তাদের মতো হয় নি যারা তোমাদের পূর্বে গত হয়ে গিয়েছে; তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল; এমনকি রাসূল ও তৎসহ বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ বলেছিলেন কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? সতর্ক হও, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।” (সুরা বাকারা, : ২১৪)

২০তমঃ যুদ্ধের ময়দানে বিপুল শত্রু বাহিনী  দেখে যা বলতে হয়

 

هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَرَسُوْلُهٗ وَصَدَقَ اللّٰهُ وَرَسُوْلُهٗ

অর্থঃ “এটা তো তাই ,আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) যার ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) সত্যই বলেছিলেন।” (সুরা আহযাব, ৩৩: ২২)

এখানে আলআহযাবের সময় মুমিনদের কথা বর্ণনা করে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

“মুমিনরা যখন শত্রু বাহিনীকে দেখলো তখন তারা বলে উঠলঃ এটা তো তাই ,আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) যার ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) সত্যই বলেছিলেন। আর এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য বৃদ্ধি পেল।” (সুরা আহযাব, ৩৩: ২২)

২১তমঃ যদি শত্রু দ্বারা রেইড হওয়ার আশঙ্কা করা হয় তখন মুসলিমরা কি দোয়া পড়বে ??

حٰمٓ

অর্থঃ হা- মীম। (সুরা গাফির, ৪০: )

রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, শত্রু বাহিনী তোমাদের উপর রাতে আক্রমন করবে, তখন তোমরা বলবে, “হা-মীম” তারা তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না।

(আত-তিরমিজি, ১৬৮২; আবু দাউদ, ২৫৯৭; তাহকিক করেছেন আল-হাকিম (২/১০৭); ইবনে কাসীর (রহঃ) স্বীয় তাফসিরে (৪/৬৯) উল্লেখ করে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন।)

২২তমঃ যদি শত্রু বাহিনী জমিনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং মুসলিমরা দুর্বল নির্যাতিত হয় তখন যে দোয়া পড়তে হয়

 

عَلَى اللّٰهِ تَوَكَّلْنَا ۚ رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً للقوم الظّٰلِمِيْنَ ۙ

وَنَجِّنَا بِرَحْمَتِكَ مِنَ الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ

অর্থঃ “আমরা আল্লাহরই উপর ভরসা করলাম, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই যালিমদের লক্ষ্যস্থল বানাবেন না। আর আমাদেরকে নিজ রহমতে এই কাফিরদের থেকে মুক্তি দিন।” (সুরা ইউনুস৮৫৮৬)

আল্লাহ (সুবঃ) বলেন,

“বস্তুত, মুসা (আঃ) এর প্রতি তার নিজ সম্প্রদায়ের  (প্রথমে) অল্প সংখ্যক লোকই ঈমান আনল, ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় ফেরাউন ও তার প্রধানবর্গের ভয়ে যে, তাদের উপর নির্যাতন করবে; আর বাস্তবিক পক্ষে ফেরাউন সে দেশের ক্ষমতাবান ছিল, আর সে ছিল সীমা অতিক্রমকারীদের অন্তর্ভুক্ত। আর মুসা (আঃ) বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান রাখ, তবে তোমরা তারই উপর ভরসা কর, যদি তোমরা মুসলিম হও। তারা বললঃ আমরা আল্লাহরই উপর ভরসা করলাম, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই যালিমদের লক্ষ্যস্থল বানাবেন না। আর আমাদেরকে নিজ রহমতে এই কাফিরদের থেকে মুক্তি দিন।” (সুরা ইউনুস, ১০:৮৩৮৬)

২৩তমঃ যুদ্ধ চলাকালীন সময় মুসলিমরা যদি ভয় করে যে, তাদের শত্রু সংখ্যা দেখে বিস্ময়াভিভূত হবে তখন যে দোয়া পড়বে

 

أللّٰهُمَّ أَنْتَ عَضُدُنَا، وَأَنْتَ نَصِيْرُنَا، بِكَ نحولُ وَبِكَ نصوْلُ، وَبِكَ نَقَاتِل

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সমথর্নকারী এবং আপনি আমাদের সাহায্যকারী, আপনার দ্বারা আমি শত্রুদেরকে  তাড়িয়ে দেই এবং আপনার দ্বারা আমি তাদের উপর আক্রমণ করি এবং আপনার দ্বারা আমি যুদ্ধ করি।”

(সহিহ আবু দাউদ, ২২৯১, সহিহ আততিরমিজি, ২৮৩৬; শায়খ আলবানি সহিহ বলেছেন)

২৪তমঃ প্রচন্ড ভয় পেলে  বা শত্রুর দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কা যদি খুব নিকটে চলে আসে তখন যা বলতে হয়

 لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ

অর্থঃ “আল্লাহ ব্যতীত ইবাদেতর যোগ্য অন্য কোন মাবুদ নেই।”

(সহিহুল বুখারি, ৩১,৩৪০৩, ৬৬৫০, ৬৭১৬; সহিহুল মুসলিম ২৮৮০)

২৫তমঃ যদি কেউ কোন ব্যক্তিকে ভয় করে তখন সে যা বলবে

 

 اللّٰهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِيْ نُحُوْرِهِم، وَنَعُوْذُ بِكَ مِنْ شُرُوْرِهِمْ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি শত্রুদের শত্রুতা ও তাদের ক্ষতি সাধনের মোকাবিলায় তোমাকে স্থাপন করছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে তোমার নিকট আশ্রয় কামনা করছি।”

(আবু দাউদ, ১৫৩৭; ইবনে হিব্বান রচিত আসসহিহ, ৪৭৬৫; ইমাম যাহাবি আলহাকিমের সাথে একমত হয়ে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন বুখারি মুসলিমের শর্তে; আননওয়াবি আলইরাকি সহিহ আখ্যায়িত করেছেন, শারহ আল মানাউয়িআলা আলজামিআসসাগির, /১২১)

 

২৬তমঃ যদি শত্রু বাহিনী চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং হত্যা করতে উদ্যত হয় তখন যে দোয়া পড়তে হয়

 

اللّٰهُمَّ اكْفِنِيْهِمْ بِمَا شِئْتَ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! এদের মোকাবিলায় আপনি আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। ইচ্ছামত স্বেরূপআচরণ করুন, যেরূপ আচারণের তারা হকদার।

(সহিহুল মুসলিম ৩০০৫)

এই দুআটি আসহাবুল উখদুদের ঘটনা হতে সংকলিত

 

২৭তমঃ যদি কুফফাররা মুসলিমদের বই ধ্বংস করে ফেলে অথবা অহংকার প্রদর্শন করে তখন যা বলতে হবে

 

اللّٰهُمَّ مَزِّقْهُم كُلّ مُمَزَّق

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে সবদিক থেকে ছত্রভঙ্গ করে দিন।”

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সাঃ) কিসরার বাদশাহর কাছে একটি চিঠি পাঠানোর জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে হুযাইফা আশ-শামি(রাঃ) কাছে একটি চিঠি দিয়ে বলেন তা বাহরাইনের গভর্নর এর কাছে পৌঁছে দিতে। বাহরাইনের গভর্নর যখন চিঠিটি কিসরার বাদশাহর কাছে পৌঁছে দিলেন তখন সে চিঠিটি পড়ার পর ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে।

আয-জুহুরি বর্ণনা করেন যে, আমি মনে করি, সাদ ইবনে আল-মুসাইব (রাঃ) বলেছেনঃ রাসুল (সাঃ) তখন আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে সবদিক থেকে ছত্রভঙ্গ করে দিন” (সহিহুল বুখারি ৬৪, ২৭৮১, ৪১৬২, ৬৮৩৬)

২৮তমঃ যদি কুফফাররা আল্লাহর স্মরণ থেকে মুসলিমদেরকে ভিন্নমুখী করতে চায় তখন যা বলতে হয়

 

مَلأ اللّٰهُ بُيُوْتَهُمْ وَقُبُوْرَهُمْ نَاراً

অর্থঃ “আল্লাহ! তাদের বাড়ি ও কবরসমূহ আগুন দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিক।”

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ আহযাবের যুদ্ধের সময় রাসুল (সাঃ) আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলেন, আল্লাহ তাদের বাড়ি ও কবরসমূহ আগুন দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিক। যেহেতু তারা আমাদেরকে এতো ব্যস্ত রেখেছে যে, আমরা এখনও আসরের সালাত আদায় করতে পারি নি অথচ সূর্য ডুবে যাচ্ছে।

(সহিহুল বুখারি, ২৭৭৩; সহিহুল মুসলিম, ৬২৭)

 

২৯তমঃ যখন মুসলিমরা তাদের শত্রুদের উপর আকস্মিক আক্রমণ করবে তখন যা বলতে হয়

 اللّٰهُ اَكْبَرُ، خَرِبَتْ خَيْبَرُ، أَناَ إِذَا

অর্থঃ “আল্লাহ সর্ব-শক্তিমান।খায়বার ধ্বংস হয়েছে। যখন আমরা কোন সম্প্রদায়ের নিকট পৌঁছি যুদ্ধের জন্য, এটি তাদের জন্য দুর্বিষহ সকাল যাদেরকে পূর্বে সতর্ক করা হয়েছিল ।”

(সহিহুল বুখারি, ৩৬৪, ৫৮৫, ৯০৫, ২৭৮৫; সহিহুল মুসলিম, ১৩৬৫)

৩০তমঃ যে মুসলিমদের গালিগালাজ করে এবং মুসলিমদের ক্ষতি করে তার বিরুদ্ধে যে  দোয়া করতে হয়

 

اللَّهُمَّ سَلِّطْ عَلَيْهِم كَلْبًا مِن كِلَابِكَ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! তাদের উপর নীচ প্রকৃতির লোকদের চাপিয়ে দিন। আপনার বান্দাদের মধ্যে থাকা নীচ লোকদের থেকে।”

বর্ণিত আছে যে,  রাসুল (সাঃ) উতবাহ ইবনে আবুলাহাবের বিরুদ্ধে দোয়া করেন যে, হে আল্লাহ! তাদের উপর নীচ প্রকৃতির লোকদের চাপিয়ে দিন। আপনার বান্দাদের মধ্যে থাকা নীচ লোকদের থেকে।তখন একটি সিংহ এসে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে   এবং তাকে হত্যা করে ফেলে যদিও সে তার সাথীদের মধ্যখানে ছিল। (আল ইসাবাহ, /৫২৭; ইবনে ক্কানি থেকে বর্ণিত তারমুজাম (১১৮৮); আলহাকিম সহিহ বলেছেন (মুস্তাদরাক, ৩৯৮৪); ইবনে হাজার (ফাতহুল বারি, /৩৯) বলেছেন এটি হাসান হাদিস)

৩১তমঃ

}اللّٰهُمَّ عَلَيْكَ { الكافرين

অর্থঃ “হে আল্লাহ! ! আপনি এই কাফিরকে ধ্বংস করে  দিন।”

এই দোয়া রাসুল (সাঃ) মক্কার কিছু কাফিরদের বিরুদ্ধে করেছিলেন। যখন রাসুল (সাঃ) কাবার ছায়ায় নামাজ আদায় করছিলেন তখন তারা তার পিঠের উপর উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিয়েছিল। তখন রাসুল (সাঃ) তাদের নাম ধরে ধরে আল্লাহর কাছে এই দোয়া করেছিলেন।

৩২তমঃ যখন কুফফাররা তাদের তাগুত প্রভুদের  এবং তাদের দুনিয়াবি সহায় সম্পত্তি নিয়ে গর্ব করে তখন তাদের বিরুদ্ধে যে দোয়া পড়তে হয়

اللّٰهُ أعْلَى وَأجَلُّ، اللّٰهُ مَوْلَانَا وَلاَ مَوْلَى لَكُمْ

অর্থঃ “আল্লাহ তায়ালা সুউচ্চ এবং মহিমাময়। আল্লাহই আমাদের অভিভাবক এবং তোমাদের কোনো অভিভাবক নাই।”

ওহুদের যুদ্ধ শেষে আবু-সুফিয়ান যখন আনন্দে উল্লাসিত হয়ে তাদের মূর্তিগুলোর  প্রশংসা করেছিল তখন রাসুল (সাঃ) সাহাবাদেরকে সম্বোধন করে বলেন, তোমরা উত্তর দিচ্ছো না কেন ?

তখন তারা বললেন, হে রাসুল (সাঃ) আমরা কি বলবো? তখন তিনি তাদেরকে বলেন, তোমরা বলঃ আল্লাহ তায়ালা সুউচ্চ এবং মহিমাময়। তখন আবু-সুফিয়ান আবার বলেছিল,আমাদের উযযা আছে তোমাদের উযযা নাই। তখন রাসুল আবার (সাঃ) সাহাবাদেরকে সম্বোধন করে বলেন, তোমরা উত্তর দিচ্ছো না কেন ? তখন তারা বললেন, হে রাসুল (সাঃ) আমরা কি বলবো? তখন তিনি তাদেরকে বলেন তোমরা বলঃ “আল্লাহই আমাদের অভিভাবক এবং তোমাদের কোনো অভিভাবক নাই।”

৩৩তমঃ শাহাদোতর মর্যাদা লাভ করার দোয়া

 

اللّٰهُمَّ ارْزُقْنِى شَهَادَةً فِيْ سَبِيْلِكَ

অর্থঃ “হে আল্লাহ!আমাকে আপনার পথে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন।”

(সহিহুল বুখারি, ১৭৯১; মুয়াত্তা ইমাম মালিক, ৯৮৯; আলহাকিমের তাহকিক অনুযায়ী সহিহ)

 

৩৪তমঃ যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর সাথে সাক্ষাতের আগে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে যে দোয়া করতে হয়

 

اللّٰهُمَّ آتِنَا مَا وَعَدْتَنا، اللّٰهُمَّ أنْجزْ لَنَا مَا وَعَدْتَنا، اللّٰهُمَّ إنْ تَهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةُ مِنْ أهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ تُعْبَدْ فِيْ الْأَرْضِ

অর্থঃ “হে আল্লাহ!আপনি আমাদেরকে তা দান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছিলেন! হে আল্লাহ, আপনার ওয়াদা পূর্ণ করুন যে ব্যাপারে  আপনি আমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন। হে আল্লাহ ! যদি আপনি ইসলামের এই দলটিকে ধ্বংস করে দেন তাহলে জমিনে আপনার ইবাদত করার মত কেউ থাকবে না।”

বদর যুদ্ধের দিন রাসুল (সাঃ) মুশরিক বাহিনীদের দিকে তাকালেন এবং দেখলেন যে, তাদের সংখ্যা আনুমানিক ১০০০ হবে অন্যদিকে, সাহাবীদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। রাসুল (সাঃ) কিবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে ২ হাত উপরে তোলেন  এবং আল্লাহর কাছে উচ্চস্বরে এই দোয়া করেনঃ

“হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে তা দান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছিলেন! হে আল্লাহ, আপনার ওয়াদা পূর্ণ করুন যে ব্যাপারে  আপনি আমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন। হে আল্লাহ ! যদি আপনি ইসলামের এই দলটিকে ধ্বংস করে দেন তাহলে জমিনে আপনার ইবাদত করার মত কেউ থাকবে না।”

তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেই যাচ্ছিলেন এবং ক্রমেই তার হাত উপরের দিকে উঠছিল। এমনকি তার কাঁধ থেকে চাদর পড়ে গিয়েছিল। তখন আবু বকর (রাঃ) রাসুল (সাঃ) কাছে আসলেন এবং তার কাঁধে আবার চাদর পরিয়ে দিলেন ও তার পেছনে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আপনার রবের নিকট আপনার মিনতি এমন যে, তিনি অবশ্যই তার ওয়াদা পূর্ণ করবেন।”

পরে আল্লাহ (সুবঃ) এই আয়াত নাযিল করেনঃ

“স্মরণ কর, সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট কাতর কন্ঠে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছিলে, আর তিনি সেই আবেদন কবুল করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, আমি তোমাদেরকে ১০০০ হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে।” (সুরা আনফাল, : )

 

৩৫তমঃ যখন মুসলিমরা কাফিরদেরকে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলবে অথবা যখন কাফিরদের কোন দূর্গ ভেদ করা হবে তখন যা বলতে হয়

 

لا اله الا الله، والله اكبر

অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের সত্য কোন মাবুদ নেই। আল্লাহ সর্ব-শক্তিমান। (সহিহুল মুসলিম, ২৯২০)

৩৬তমঃ যখন মুসলিমরা কাফিরদের হাতে বন্দি হয় বা যদি খুব কষ্টের মাঝে থাকে তখন যে দোয়া পড়তে হয়

 

اللهم أنْجِ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ، اللهم اشْدُدْ وطْأتَكَ عَلَى [الْكاَفِرِيْن]، اللهم اجْعَلْهاَ عَلَيْهِمْ سِنِيْنَ كَسِنِى يُوْسُفَ

অর্থঃ হে আল্লাহ, দূর্বল এবং নির্যাতীত মুসলিমদেরকে মুক্তি দান করুন। হে আল্লাহ! অবিশ্বাসীদের উপর আপনার শাস্তি চাপিয়ে দিন। হে আল্লাহ! তাদের উপর দূর্যোগ চাপিয়ে দিন ততদিন যতদিন আপনি ইউসুফ (আঃ) জাতির উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন।

আবু হুরায়রা (রাঃ) আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) রুকু থেকে উঠার পর দুই হাত উপরে উঠাতেন এবং বলতেন, “সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ, রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ” এবং পরে তিনি বন্দি লোকদের জন্য দোয়া করেছিলেন। এমনকি তিনি তাদের নাম উল্লেখ করে করে দোয়া করেছিলেন।যেমন তিনি (সা) বলেছিলেন,”হে আল্লাহ! আপনি মুক্তি দান করুন আল-ওয়ালিদ ইবনে আল- ওয়ালিদকে, সালামাহ ইবনে হিসাম, আইয়াস ইবনে আবি-রাবিয়াহ এবং সমস্ত দূর্বল এবং নির্যাতীত মুসলিমদেরকে। হে আল্লাহ! অবিশ্বাসীদের উপর আপনার শাস্তি চাপিয়ে দিন।হে আল্লাহ! তাদের উপর দূর্যোগ চাপিয়ে দিন ততদিন যতদিন আপনি ইউসুফ (আঃ) জাতির উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন। (বুখারি৭৭১ ,২৭৪৭, ৩২২২, ৫৮৪৭, ৬০৩০)

অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে,  মক্কার দূর্বল এবং নির্যাতীত মুসলিমদের মুক্তির জন্য  দোয়া করেছেন।

এক বর্ণনায় এসেছে

উনি বলেছেন, “হে আল্লাহ ! তাদেরকে মুক্তি দান করুন”। তিনি (সা) এ কথা এতোবার বলেছেন যে, তিনি সমস্ত বন্দী মুসলমানদের নাম উল্লেখ করেছেন। মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, তিনি এশার সালাতের শেষ রাকাতে এই দোয়া পড়তেন। (সহিহুল মুসলিম৫৭৫)

৩৭তমঃবিজয়ের পর আল্লাহ প্রশংসা করে যেসব দোয়া পড়তে হয়

 

يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوْا نِعْمَةَ اللّٰهِ عَلَيْكُمْ اِذْ جَآءَتْكُمْ جُنُوْدٌ فَاَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيْحًا وَّجُنُوْدًا لَّمْ تَرَوْهَا ۗ وَكَانَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرًا ۚ اِذْ جَآءُوْكُمْ مِّنْ فَوْقِكُمْ وَمِنْ اَسْفَلَ مِنْكُمْ وَاِذْ زَاغَتِ الْاَ بْصَارُ وَبَلَغَتِ الْقُلُوْبُ الْحَـنَـاجِرَ وَتَظُنُّوْ بِا للّٰهِ الظُّنُوْنَا ۗ هُنَا لِكَ ابْتُلِيَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَزُلْزِلُوْا زِلْزَا لًا شَدِيْدًا

وَاِذْ يَقُوْلُ الْمُنٰفِقُوْنَ وَالَّذِيْنَ فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَرَسُوْلُهٗۤ اِلَّا غُرُوْرًا

অর্থঃ স্মরণ কর, সেই সংকট মুহূর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের  প্রতিপালকের নিকট কাতর কন্ঠে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছিলে, আর তিনি সেই আবেদন কবুল করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, আমি তোমাদেরকে ১০০০ হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব যারা ধারাবাহিকভাবে আসবে যখন তারা সমাগত হয়েছিল উচ্চ ও নিম্নাঞ্চল হতে, চক্ষুসমূহ দৃষ্টিভ্রম হয়েছিল। প্রাণসমূহ হয়ে পড়েছিল কন্ঠাগত, তোমার আল্লাহ্ সম্পর্কে নানাবিধ  বিরূপ ধারনা পোষণ করছিলে। তখন মুমিনরা পরীক্ষিত হয়েছিল এবং তারা ভীষণভাবে প্রকম্পিত হয়েছিল এবং এ সময় মুনাফিকরা ও যাদের অন্তরে ব্যাধি ছিল, তারা বলেছিল আল্লাহ্ এবং তার রাসুল (সাঃ) আমাদেরকে  যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা প্রতারনা ব্যতীত আর কিছুই নয়। (সুরা আহযাব, ৩৩: ১২)

 

৩৭তমঃ বিজয়ের পর আল্লাহ প্রশংসা করে যেসব দোয়া পড়তে হয়

 

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُوا اللّٰهَ وَالْيَوْمَ الْاٰ خِرَ وَذَكَرَ اللّٰهَ كَثِيْرًا ۗ وَلَمَّا رَاَ الْمُؤْمِنُوْنَ الْاَ حْزَابَ ۙ قَا لُوْا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَرَسُوْلُهٗ وَ صَدَقَ اللّٰهُ وَرَسُوْلُهٗ ۖ وَمَا زَا دَهُمْ اِلَّاۤ اِيْمَا نًـا وَّتَسْلِيْمًا ۗ

مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَا لٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللّٰهَ عَلَيْهِ ۚ فَمِنْهُمْ مَّنْ قَضٰى نَحْبَهٗ ۙ وَمِنْهُمْ مَّنْ يَّنْتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوْا تَبْدِيْلًا ۙ لِّيَجْزِيَ اللّٰهُ الصّٰدِقِيْنَ بِصِدْقِهِمْ وَيُعَذِّبَ الْمُنٰفِقِيْنَ اِنْ شَآءَ اَوْ يَتُوْبَ عَلَيْهِمْ ۗ اِنَّ اللّٰهَ كَا نَ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا ۚ وَرَدَّ اللّٰهُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَا لُوْا خَيْرًا ۗ وَكَفَى اللّٰهُ الْمُؤْمِنِيْنَ الْقِتَا لَ ۗ وَكَا نَ اللّٰهُ قَوِيًّا عَزِيْزًا ۚ وَاَ نْزَلَ الَّذِيْنَ ظَاهَرُوْهُمْ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ مِنْ صَيَا صِيْهِمْ وَقَذَفَ فِيْ قُلُوْبِهِمُ الرُّعْبَ فَرِيْقًا تَقْتُلُوْنَ وَتَأْسِرُوْنَ فَرِيْقًا ۚ وَاَ وْرَثَكُمْ اَرْضَهُمْ وَدِيَا رَهُمْ وَ اَمْوَا لَهُمْ وَاَ رْضًا لَّمْ تَطَــئُوْهَا ۗ وَكَا نَ اللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرًا

অর্থঃ “তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতকে বিশ্বাস করে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণ স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুল (সাঃ) এর নিকট রয়েছে উত্তম আদর্শ। মুমিনরা যখন শত্রু বাহিনীকে দেখল তখন তারা বলে উঠলঃ এটা তো তাই, আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) যার ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) সত্যি বলেছিলেন। আর এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য বৃদ্ধি পেল।

মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদাৎ বরণ করেছে আর কেউ কেউ প্রতিক্ষায় আছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করে নি। কারণ আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে পুরষ্কৃত করবেন।  তাদের সত্যবাদীতার জন্য এবং তার ইচ্ছা হলে মুনাফিকদের শাস্তি দিবেন অথবা তাদেরকে ক্ষমা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।আল্লাহ্ কাফিরদেরকে তাদের পূর্ণ ক্রোধ সহকারে  ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোনো কল্যাণ অর্জন করতে পারে নি।  যুদ্ধে মুমিনদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী। কিতাবীদের মধ্যে যারা তাদেরকে সাহায্য করেছিল, তাদেরকে তিনি দূর্গ হতে অবতরণে বাধ্য করলেন এবং তাদের অন্তরে তিনি ভীতি সঞ্চার করলেন এবং এখন তোমরা তাদের কতককে হত্যা করেছো আর কতককে করেছো বন্দী। এবং তোমাদেরকে অধিকারী করলেন তাদের ভূমি, ঘরবাড়ি ও ধন সম্পদের এবং এমন ভূমির যা তোমরা এখনও পদানত কর নি। আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।” (সুরা আহযাব, ৩৩: ২১২৭)

 

৩৭তমঃ বিজয়ের পর আল্লাহ প্রশংসা করে যেসব দোয়া পড়তে হয়

 

لاَ إلَهَ إلاَّ الله وَحْدَهُ، أعَزَّ جُنْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَەُ، وَ غَلَبَ الْأحْزَابَ وَحْدَهُ، فلا شيء بَعْدَەُ.

অর্থঃ “আল্লাহ্ ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য সত্য কোন মাবুদ নেই। তিনি তার বাহিনীকে সম্মানিত করেছেন, তিনি তার বান্দাকে বিজয় দান করেছেন, তিনি একাই শত্রুদেরকে পরাজিত করেছেন এবং তার পরে আর কিছুই নেই।”

(সহিহুল বুখারি, ৩৮৮৮; সহিহুল মুসলিম, ২৭২৪)

৩৮তমঃ যুদ্ধ শেষে  আল্লাহ প্রশংসা করে যে দোয়া পড়া হয়

 

اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدْ كُلُّهُ، لا قَابِضَ لِمَا بَسَطْتَ، وَ لاَ بَسِطَ  لِمَا قَبَضْتَ، وَ لاَ هَادِيَ  لِمَا أضْلَلْتَ، و لاَ مُضِلَّ لِمَنْ هَدَيْتَ، وَ لاَ مُعْتِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَ لاَ مَانِعَ لِما أعْطَيْتَ، و لا مُقَرِّبَ لما بَاعَدْتَ، وَ لاَ مُبَاعِدَ لما قَرَّبْتَ، اللَّهُمَّ ابْسُطْ عَلَيْنَا مِن بَرَكَاتِكَ ورَحْمَتِكَ وَفَضْلِكَ وَرِزْقِكَ، اللَّهُمَّ إنِّي أسْأَلْكَ النَّعِيْمَ الْمُقِيْمَ الَّذِي لا يَحُولُ ولا يَزُولُ، اللَّهُمَّ إنِّي أسْأَلْكَ النَّعِيْمَ يَوْمَ الْعَيْلَةِ والأَمْنَ يَوْمَ الْخَوْفِ،. اللَّهُمَّ إنِّي عَائذٌ بِكَ من شَرٍّ ما أعْطَيْتَنَا وشَرٍّ ما مَنَعْتَ، اللَّهُمَّ حَبِّبْ إلَيْنَا الإِمَانَ وزَيِّنْهُ في قُلُوبِنا وكَرِّهْ إِلَيْناَ الْكُفْرَ والْفُسُوْقَ والْعِصْيانَ واجْعَلْنَا مِنْ الرَّاشِدِيْنَ، اللَّهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِيْنَ وأحْيناَ مُسْلِمِيْنَ وألْحِقْنَا بِالصَّالِحِيْنَ غَيْرَ خَزَايَا ولا مَفْتُوْنِيْنَ،اللَّهُمَّ قَاتِلْ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يُكَذِّبُوْنَ رُسُلَكَ و يَصُدُّونَ عَن سَبِيْلِكَ واجْعَلْ عَلَيْهِمْ رِجْزَكَ و عَذَابَكَ، اللَّهُمَّ قَاتِلْ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَهَ الْحَقِّ.

অর্থঃ “হে আল্লাহ্ ! সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য। হে আল্লাহ্ ! আপনি যা দিতে চান কেউ তা ফিরিয়ে নিতে পারে না আর আপনি যা দিতে চান না কেউ  তা দিতে পারে না।

আপনি যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন কেউ তাকে হেদায়েত  দিতে পারে না আর আপনি যাকে হেদায়েত দিয়েছেন কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আপনি যা দান করতে চান কেউ তাতে বাধা দান করতে পারে না আর আপনি যা দিতে চান না কেউ  তা দিতে পারে না । আপনি যাতে দূরত্ব স্থাপন করেছেন তা কেউ কাছে নিয়ে আসতে পারে না আর আপনি যা কাছে রেখেছেন তাতেকেউ দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে না।

হে আল্লাহ্ ! আমাদের উপর বর্ষণ করুন আপনার অনুগ্রহ, দয়া, সমর্থন এবং সংস্থান।

হে আল্লাহ্ ! আমি আপনার কাছে চিরস্থায়ী আনন্দ চাই যা কোন দিন শেষ হবে না ।

হে আল্লাহ্ ! ভয় এবং হীনতার দিনেআমি আপনার কাছে আনন্দ এবং নিরাপত্তা চাই। হে আল্লাহ্ ! আমি আপনার কাছে সেই মন্দ থেকে আশ্রয় চাই যা আমাদের সাথে দিয়েছেন এবং যা দিয়েছেন আপনার কাছে রেখেছেন।

হে আল্লাহ্ ! আমাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দিন ও ঈমানকে আমাদের অন্তরের জন্য পছন্দনীয় বানিয়ে দিন এবং কুফর, অবাধ্যতা ও খারাপ কাজকে আমাদের অন্তরে অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদেরকে হেদায়ত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন।

হে আল্লাহ্ ! আমাদেরকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দিন এবং মুসলিম হিসাবে জীবন দিন ও আমাদেরকে সৎ কর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করুন। বঞ্চিত ও লাঞ্চিতদের সাথে নয়। হে আল্লাহ্! তাদেরকে ধ্বংস করে দিন যাদের উপর পূর্বের কিতাব নাযিল করেছিলেন।”

৩৯তমঃ যে ঘোড়ার বা জাতীয় কিছুর উপর দৃঢ় থাকতে পারে না তার জন্য যে দোয়া পড়তে হয়

اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ، واجْعَلْهُ هَادِياً مَّهْدِيًا

অর্থঃ “হে আল্লাহ্ ! তাকে দৃঢ় রাখুন এবং তাকে একজন সঠিক পথ প্রদর্শক বানিয়ে দিন।”(সহিহুল বুখারি, ২৮৫৭, ২৯১১; সহিহুল মুসলিম, ২৪৭৫)

 

৪০তমঃ মুসলিম বাহিনীর কমান্ডার তার বাহিনীকে যেভাবে  কমান্ড করবেন

 

اغْزُوا بِسْمِ الله في سَبِيْلِ اللهِ قَاتِلْوا مَنْ كَفَرَ بِاالله اغْزُوا وَ لاَ تَغُلُّوا وَ لاَ تَغْدِرُوا وَ لاَ تُمَثِّلُوا وَ لاَ تَقْتُلُوْا وَلِيْدًا. وإذَا لَقِيْتَ عَدُوَّكَ مِن الْمُشْرِكِيْنَ فَادْعُهُمْ إلَى ثلاث خِصَالٍ أو خِلاَلٍ فَأَيِّتُهُنَّ ما أجابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُم وكُفَّ عَنْهُم ثُمَّ ادْعُهُم إلَى الإِسْلاَمِ فَإِنْ أجابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُم وكُفَّ عَنْهُم ثُمَّ ادْعُهُم إلَى التَّحَوُّلِ من دارِهِمْ إلى دَارِ الْمُهَاجِرِيْنَ وأخْبِرْهُم أنَّهُم إنْ فَعَلُوا ذلك فَلَهُمْ ما لِلْمُهَاجِرِيْنَ وَ عَلَيْهِم ما عَلى الْمُهَاجِرِيْنَ فَإنْ أبَوْا أَنْ يَتَحَوَّلُوا منهاَ فأخْبِرْهُم أنَّهُم يَكُونُونَ كَأَعْرَابِ المُسْلِمِيْنَ يَجْرِي عَلَيْهِم حُكْمُ اللهِ الَّذِي يَجْرِي عَلى الْمُؤمِنِيْنَ. و لا يَكُونُ لهُمْ فيُ الْغَنِيْمَةِ والْفَىءِ شَيْءٌ إلاَّ أنْ يُجَاهِدُوا معَ المُسْلِمِيْنَ فَإِنْهُمْ أبَوفَسَلْهُم الْجِزْيَةَ فَإنْ هم أجابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُم وكُفَّ عَنْهُم فَإِنْهُمْ أبَو فَسْتَعِنْ باللهِ وقَاتِلْهُمْ وإذا حَاصَرْتُ أهْلَ حِصْنٍ فأَرَادُوْكَ أن تَجْعَلَ لَهُمْ ذِمَّةَ الله وذِمَّةَ نَبِيِّهِ فلا تَجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّةَ الله و لا ذِمَّةَ نَبِيِّهِ ولَكِنْ اجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّتَكَ و ذِمَّةَ أصْحَابِكَ فَإنَّكُم أن تُخْفِرُوا ذِمَمَكُم و ذِمَمَ أصْحَابِكُم أهْونُ من أنْ تُخْفِرُوا ذِمَّةَ الله وذِمَّةَ رَسُولِهِ وإذا حَاصَرْتُ أهْلَ حِصْنٍ فأَرَادُوْكَ أن تُنْزِلَهُم على حُكْمِ الله فلا تُنْزِلَهُم على حُكْمِ الله ولَكِنْ أنْزِلْهُم على حُكْمِكَ فَإنَّكَ لا تَدْرِي أتُصِيْبُ حُكْمَ الله فِيْهِم أم لا..

অর্থঃ “আল্লাহর নামে আল্লাহর পথে তাদেরকে আঘাত কর এবং যুদ্ধ কর তাদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে। আঘাত কর! গনিমত নিয়ে  প্রতারণা কর না, যাদের সাথে প্রতিশ্রুতি আছে তা ভঙ্গ কর না, মৃত শরীর বিকৃত কর না এবং শিশুদের হত্যা কর না। এবং যখন তোমরা মুশরিকদের মধ্য হতে তোমাদের কোন শত্রুর মুখোমুখি হও তখন তাদের সামনে তিনটি প্রস্তাব রেখো।

অতঃপর তারা যদি এর যে কোন একটি মেনে নেয় তবে তোমরা তাদের উপর সীমালঙ্ঘন করা থেকে বিরত থাক।অতঃপর তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান কর, যদি এতে তারা সম্মত হয় তবে তোমরা তাদের কোন ক্ষতি করা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত কর। এরপর তাদেরকে তাদের ভূমি থেকে মুহাজিরদের ভূমিতে হিজরতের জন্য প্রস্তাব দাও এবং তাদেরকে এটা অবগত কর যে, তারা যদি হিজরত করে তবে তাদের সাথে সেই আচরণই করা হবে যা মুহাজিরদের সাথে করা হচ্ছে। আর যদি তারা হিজরত করতে অস্বীকৃতি জানায় তবে তাদেরকে বল যে, তোমরা হবে বেদুঈন মুসলিম; তোমাদের সাথে আল্লাহর সেই আইনই প্রযোজ্য হবে যা বিশ্বাসীদের জন্য প্রযোজ্য এবং তোমরা যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত গণিমত ও ফাই থেকে কোন অংশই পাবে না যদি না তোমরা যুদ্ধে অংশগ্রহন কর। আর যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় তেব তাদেরকে জিযিয়া প্রদান করতে বল, এতে যদি তারা সম্মত হয় তবে তোমরা তাদের কোন ক্ষতি করা থেকে বিরত থাক।

আর যদি তারা এতে অসম্মতি জানায় তবে তোমরা আল্লাহর সাহায্য চাও এবং তাদের সাথে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়। এবং যখন তোমরাকোন দূর্গ অবরোধ কর ও দূর্গের  অবরুদ্ধ লোকজন আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সঃ)সাথে কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চায় উত্তম এটাই যে, তাদেরকে তুমি তোমার এবং তোমার সাথীদের চুক্তিতে আবদ্ধ কর কারণ তোমার এবং তোমার সাথীদের সাথে চুক্তির ওয়াদা পূরণ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সঃ)সাথে কৃত চুক্তির ওয়াদা পূরণ অপেক্ষা অধিকতর সহজ।

আর কোন দূর্গকে অবরোধ করার পর যদি তারা এই মর্মে আর্জি পেশ করে যে, তাদেরকে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বের হওয়ার সুযোগ দাও তাহলে তোমরা তোমাদের নিজস্ব শর্তানুযায়ী  তাদের  বের হওয়ার সুযোগ দেবে কারণ এমন হতে পারে যে, তোমরা তাদের উপর আল্লাহর যে হুকুম তাঁর যথাযথ অনুসরণ করেত পারবে না।”

(সহিহুল মুসলিম, ১৭৩১; বুরাইদাহ (রাদিঃ) থেকে বর্ণিত, “রাসুল (সা) কোনো সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করা কালীন বাহিনীর নেতাকে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করতে এবং সাথে অবস্থিত মুসলিমদের সাথে ভালো আচরণ করতে বলতেন অতঃপর তিনি (সা) বলতেন, “আল্লাহ নামে যুদ্ধ কর আল্লাহর পথে…” ; আততারিখ, /৭০)

 

৪১তমঃ যুদ্ধের প্রস্তুতিকালে মুজাহিদদের নাশিদ যা হবে

 

اللَّهُمَّ لو لا أنْتَ ما اهْتَدَينَا……….. وَ لاَ تَصَدَّقْنا وَ لاَ صَلَّيْنا

فَأَنْزِلَنْ سَكِيْنَة عَلَيْنَا………. وثَبِّت الأَقْدَامَ إنْ لاَقَيْنا

إنَّ الأعْدَاءَ قَدْبَغَوا عَلَيْنَا………. إذَا أرَادُوا فِتْنَةً أبَيْنا

অর্থঃ ও আল্লাহ! যদি এটি আপনার জন্য না হত তাহলে আমরা সঠিক পথে পরিচালিত হতাম না,

না আমরা প্রাপ্ত হতাম গনিমতের, না আমরা প্রার্থনা করতাম।

সুতরাং আমাদের অন্তরে প্রশান্তি দিন,

এবং যখন আমরা শত্রুর মুখোমুখি হব তখন আমাদের পদ যুগলকে

দৃঢ় রাখুন,

আর শত্রু তো আমাদের উপর জুলুম করেছে,

আর যদি তারা আমাদের ফিতনায় ফেলতে  চায় তবে আমরা তাতে পতিত হতে অস্বীকৃতি জানাই।

৪২তমঃ

 

اللَّهُمَّ لو لا أنْتَ ما اهْتَدَينَا……….. وَ لاَ تَصَدَّقْنا وَ لاَ صَلَّيْنا

(نَحْنُ عنْ فَضْلِكَ ما اسْتَغْنَيْنا)……… فَاغْفِرْ فِدَاءً لَكَ ما اتَّقَيْنا

وثَبِّت الأَقْدَامَ إنْ لاَقَيْنا……… وألْقِيَنْ سَكِيْنَة عَلَيْنَا

إنَّا إذَا صِيحَ بِناَ أتَيْنَا……….. وبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا

অর্থঃ ও আল্লাহ! যদি এটি আপনার জন্য না হত তাহলে আমরা সঠিক পথে পরিচালিত হতাম না,

না আমরা প্রাপ্ত হতাম গনিমতের, না আমরা প্রার্থনা করতাম।

আমরা আপনার থেকে প্রাপ্ত  নিয়ামত থেকে অমুখাপেক্ষী নই,

তাই আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের যা বিসর্জন  তা তো আমাদের কৃতকর্মের জন্যই;

এবং যখন আমরা শত্রুর মুখোমুখি হব তখন আমাদের পদ যুগলকে দৃঢ় রাখুন,

আমাদের অন্তরে প্রশান্তি দিন

নিশ্চয়ই যখন আমাদেরকে (তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য) ডাকা হবে আমরা আসব।

এবং তারা (কাফিররা) চিৎকার করে আমাদের বিরুদ্ধে (অন্যদের থেকে) সাহায্য চায়।”

৪৩তমঃ

اللَّهُمَّ إنَّ الٌعَيْشَ عَيْشُ الآخِرَة

(فانصر المجاهدين على الأحزاب الكافرة)

نَحْنُ الَّذِيْنَ بَايَعُوا {……….. } عَلى الْجِهَادِ ما بَقِيْنَا أبَدَا

ও আল্লাহ!  নিশ্চয়ই আসল জীবন হল আখিরাতের জীবন’

(সুতরাং কাফির জোটের বিরুদ্ধে মুজাহিদদের বিজয়ী করুন)

‘আমরা তারাই যারা আমীরের (আমীরের নাম উল্লেখ করতে হবে) হাতে বাইয়াত দিয়েছি

আমৃত্যু জিহাদের জন্য ’

৪৪তমঃ যারা তীর বা বুলেট নিক্ষপ করে তাদের জন্য দোয়া করতে হয়

اللَّهُمَّ سَدِّد رَمِيْتَهم، وأجب دَعوتَهُم

অর্থঃ ও আল্লাহ!আপনি তাদের অস্ত্রকে  ধারালো করে দিন এবং তারা যা মিনতি করে তা তাদের প্রদান করুন।

এই বিচ্ছেদের জন্য তাদের এই মিনতি ছিল সফলতা।

(মুস্তাদরাকে হাকিম, /২৬, ৫০০; ইবনে আবি আসিম উল্লেখ করেছেনআসসুন্নাহ১৪০৮; আলমুখতারাহ, ১০০৭; আলহাকিম মুসলিমের শর্তে সহিহ বলেছেন এবং আজযাহাবি একমত হয়েছেন এবং সহিহ আখ্যায়িত করেছেন; আলআলবানি মিশকাত আল মাসাবিহ ফুটনোটে ঈফ আখ্যায়িত করেছেন, ৬০৬৯)

 

৪৫তমঃ

اللَّهُمَّ بَارِك في خَيْلِهِم ورِجَالِهِم

অর্থঃ ও আল্লাহ!আপনি তাদের ঘোড়া এবং মানুষের উপর অনুগ্রহ করুন।”

আমরা এই উদ্ধত সম্প্রদায়ের সাথে  আমাদের  কৃত চুক্তি ভঙ্গ করছি যে  চুক্তি সম্পাদনে আমরা ছিলাম আন্তরিক।

এটা এজন্য যে, খুবাইব ইবনে আদী (রাঃ) কাফিরদের হাতে শূলে চড়ার আগে এই মিনতি করেছিলেন যে,

 اللَّهُمَّ أحْصِهِم عَدَدًا

واقْتُلْهُم بَدَدًا

ولا تُبْق مِنْهُم أحَدًا

আল্লাহ! তাদের একজন একজন করে চিনে রাখুন!

এবং তাদের হত্যা করুন যখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়!

এবং এমনকি তাদের একজনকেও আপনি ছেড়ে দিবেন না

এজন্যই আল্লাহ্ আমাদের একত্রিত করেছেন, এবং আমাদের দুর্বলতার জন্য আমরা তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা  করি। যদি এতে কোন কল্যাণ থাকে তবে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে আর যদি এতে অকল্যাণ থাকে তবে তা আমাদের গাফিলতি এবং শয়তানের পক্ষ

হতে। এবং, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ থেকে মুক্ত।

দরুদ সালাম বর্ষিত হোক  আমাদের রাসূল (সাঃ), তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবীদের (রাঃ) উপর

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =

Back to top button